অ্যাপোলো ৮ | |||||
---|---|---|---|---|---|
অভিযানের প্রতীক | |||||
অভিযানের পরিসংখ্যান | |||||
অভিযানের নাম | অ্যাপোলো ৮ | ||||
পরিচালনা মডিউল | সি.এম ১০৩ | ||||
সার্ভিস মডিউল | এস.এম. ১০৩ | ||||
লুনার মডিউল | Ballast: LM Test Article B ১৯,৯০০ পা (৯,০০০ কেজি)[১] | ||||
নভোযানের ভর | ৬৩,৬৫০ পা (২৮,৮৭০ কেজি)[২] CM:১২,৩৯২ পা (৫,৬২১ কেজি) SM:৫১,২৫৮ পা (২৩,২৫০ কেজি) | ||||
ক্রুর আকার | ৩ | ||||
কল সাইন | Apollo 8 | ||||
উৎহ্মেপণ যান | শনি ৫ এস.এ. ৫০৩ | ||||
উৎহ্মেপণ প্যাড | LC 39A, Kennedy Space Center ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র | ||||
উৎহ্মেপণ তারিখ | ১২:৫১:০০, ২১ ডিসেম্বর ১৯৬৮ (ইউটিসি) | ||||
চান্দ্র কক্ষ পরিভ্রমণ | ১০ | ||||
চান্দ্রের কক্ষে যাপিত সময় | 20 h 10 m 13 s | ||||
অবতরণ | ১৫:৫১:৪২, ২৭ ডিসেম্বর ১৯৬৮ (ইউটিসি) North Pacific Ocean ৮°৮′ উত্তর ১৬৫°১′ পশ্চিম / ৮.১৩৩° উত্তর ১৬৫.০১৭° পশ্চিম[৩] | ||||
অভিযানের সময়কাল | 6 d 03 h 00 m 42 s | ||||
ক্রুদের ছবি | |||||
Left to right: Lovell, Anders, Borman | |||||
সম্পর্কিত অভিযান | |||||
|
অ্যাপোলো ৮ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোলো মহাকাশ কর্মসূচির অন্তর্গত দ্বিতীয় মনুষ্যবাহী অভিযান। সংশ্লিষ্ট মহাকাশযানটি ১৯৬৮ সালের ২১শে ডিসেম্বর পৃথিবী হতে উৎক্ষিপ্ত হয় এবং প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশযান হিসেবে পৃথিবীর কক্ষপথ ত্যাগ করে পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছায় এবং অভিযানশেষে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসে। তিনজন মহাকাশচারী - কমান্ডার ফ্রাঙ্ক বর্মেন, কমান্ড মডিউল পাইলট জেম্স লভেল্ এবং লুনার মডিউল পাইলট উইলিয়াম অ্যান্ডারস্ প্রথম মানব হিসেবে পৃথিবীকে একটি সম্পূর্ণ গ্রহ হিসেবে দেখার এবং কৃত্রিম উপগ্রহের উপর যাবার সৌভাগ্য অর্জন করেন। তাঁরা চাঁদের দূরবর্তী অংশগুলো দেখার সৌভাগ্যও অর্জন করেন। ১৯৬৮ সালের এই অভিযানটি স্যাটার্ন ৫ রকেটের সাহায্যে নিক্ষিপ্ত তৃতীয় মহাকাশযান এবং প্রথম নিক্ষিপ্ত মনুষ্যবাহী মহাকাশযান। একই সাথে এটি জন এফ. কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে নিক্ষিপ্ত প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশযান।
প্রথমে এই অভিযানকে দ্বিতীয় চান্দ্র মহাকাশযান পরীক্ষা করার পরিকল্পনা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালের আগস্ট মাসে এই অভিযানকে আরো উন্নত রূপ দেয়ার পরিকল্পনা হয়। অর্থাৎ মহাকাশচারীরা তাদের প্রস্তুতির জন্য মাত্র তিন মাস সময় পেয়েছিলেন। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে এত বড় এবং উচ্চাভিলাষী অভিযানের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা সত্যিই দুরূহ ব্যাপার ছিল। তাই তাঁদের সময় ও শৃঙ্খলার জন্য সাধারণের চেয়ে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।
চাঁদে পৌঁছানোর জন্য অ্যাপোলো ৮ মহাকাশযানের তিন দিন প্রয়োজন হয়। মহাকাশযানটি চাঁদের কক্ষপথে ২০ ঘণ্টায় দশবার আবর্তন সম্পন্ন করে। এই সময়ে অভিযাত্রীরা বড়দিন উদযাপন করে এবং বুক অফ জেনেসিস পাঠ করে। এই অনুষ্ঠান একটি স্যাটেলাইট চ্যানেলের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয় যা ঐ সময়ের অধিকাংশ দর্শক দেখে।
অ্যাপোলো ৮-এর অভিযান সফল হলে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ. কেনেডির লালিত স্বপ্নটির (১৯৭০ সালের আগে চাঁদের বুকে মানুষের পদার্পণ) বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করে এবং এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাপোলো ১১ চাঁদের উদ্দেশ্যে অভিযান চালানোর ভরসা পায়।
অ্যাপোলো ৮ ১৯৬৮ সালের ২৭শে ডিসেম্বর নিরাপদে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অবতরণ করে।
মহাকাশচারীর নাম | পদবী |
---|---|
ফ্রাঙ্ক এফ. বোর্মেন, ২ | পরিচালক (কমান্ডার) |
জেমস্ এ. লভেল্ | কমান্ড মডিউল পাইলট |
উইলিয়াম এ. অ্যান্ডারস | চান্দ্রযানের পাইলট |
চান্দ্রযানের পাইলট হল একটি অফিসিয়াল পদবী যা অভিযানের তৃতীয় পাইলটের দেয়া হয় (ব্লক ২ অভিযানে) সেক্ষেত্রে চান্দ্রযান থাকুক আর নাই থাকুক।
এই অভিযানের কর্মকর্তারা অভিনব ছিলেন এই জন্য, যে এই অভিযানের পরিচালক অন্য কর্মকর্তাদের চেয়ে খুব বেশি অভিজ্ঞ ছিলেন না। শুধু তাই নয়, এটিই প্রথম অভিযান যেখা্নে একজন মহাকাশচারী পূর্বে পরিচালক (কমান্ডার) হিসেবে কাজ করলেও এই অভিযানে পরিচালক হিসেবে কাজ করেননি। কারণ লভেল্ পূর্বের জেমিনি ১২ অভিযানে পরিচালক হিসেবে অভিযান পরিচালনা করেন।
সাহায্যকারী মহাকাশচারীর নাম | পদবী |
---|---|
নিল এ. আর্মস্ট্রং | পরিচালক (কমান্ডার) |
এডুইন এ. আল্ড্রিন | কমান্ড মডিউল পাইলট |
ফ্রেড ডব্লিউ হেইজ | চান্দ্রযানের পাইলট |
যেকোনও চন্দ্র অভিযানে, কমান্ড মডিউল পাইলটের বা সি.এ্ম.পি ( Command Module Pilot or CMP) দায়িত্ব দেয়া হয় নেভিগেটরকে। পক্ষান্তরে লুনার মডিউল পাইলটের বা এল.এম.পি দায়িত্ব দেয়া হয় অভিযান প্রকৌশলীকে, অপরাপর যন্ত্রপাতি দেখাশোনার দায়িত্ব এবং আরো বেশকিছু দায়িত্ব তার উপর বর্তায়। লভেল কমান্ড মডিউল পাইলটের সাহায্যকারী দায়িত্ব পালন করার কথা এবং মাইকেল কলিন্স-এর প্রধান কমান্ড মডিউল পাইলটের দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও কলিন্স জুলাই, ১৯৬৮-তে বদলি হন, কারণ তার সার্ভিকাল ডিস্ক হারনিয়েশন হয় এবং তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এডুইন আল্ড্রিনকে সাহায্যকারী এল.এম.পির দায়িত্ব দেয়া হয়। যখন লভেলকে প্রধান সি.এম.পির দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন কারই সি.এস.এম ১০৩ (যে মহাকাশযান এই অভিযানে ব্যবহৃত হয়) পরিচালনার অভিজ্ঞতা ছিল না। কাজেই আল্ড্রিনকে সি.এম.পির দায়িত্ব দেয়া হয় এবং ফ্রেড হেইজকে সাহায্যকারী এল.এম.পির জন্য আনা হয়। নিল আর্মস্ট্রং অ্যাপোলো ১১ অভিযান পরিচালনা করেন, আল্ড্রিন এল.এম.পির দায়িত্বে ফিরে আসেন এবং মাইকেল কলিন্সকে সি.এম.পির দায়িত্ব দেউয়া হয়।
পৃথিবীতে এই অভিযান পরিচালনার জন্য মহাকাশচারীদের এবং যারা তা নয় এমন পরিচালক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের আনা হয়। এই সাহায্যকারী কর্মকর্তারা কেউই উঁচুদরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিল না, কিন্তু তারা বিভিন্ন আলোচনায় উপস্থিত ছিল এবং এরই মাধ্যমে তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়। তারা ক্যাপসুল কমান্ডার হিসেবেও কাজ করেন। অ্যাপোলো ৮ অভিযানের এইসব মহাকাশচারীরা ছিলেনঃ জন এস. বুল, ভেন্স ডি. ব্রান্ড, গেরাল্ড পি. কার এবং কেন ম্যাটিংলি। তারা তিন শিফটে কাজ করতেন এবং প্রত্যেক শিফটে একজন ফ্লাইট প্রকৌশলী থাকতেন। তারা হলেনঃ ক্লিফ চার্লসওয়ার্থ (সবুজ দল), গ্লেন লুনি (কালো দল) এবং মিল্টন উইন্ডলার (মেরুন দল)।
অভিযানের ত্রিভুজাকৃতির এই চিহ্ন অ্যাপোলো ৮ অভিযানের মহাকাশযানের আকারের প্রতীক বহন করে। লাল রঙের চাঁদ ও পৃথিবীকে ঘিরে রাখা 8 (আট)-এর মত দেখতে এই চিহ্ন অভিযান সংখ্যা নির্দেশ করে। এই ৪ (আট) চিহ্নের উপর তিন মহাকাশচারীর নাম লেখা আছে। এই প্রতীকের ডিজাইন করেন লভেল স্বয়ং। তিনি মাত্র কয়েকদিনের জন্য ডিজাইন করা শিখে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে হাউজটন যাবার পথে টি-৩৮ বিমানের পিছনের সিটে বসে এই প্রতীক আঁকেন। এই প্রতীকের গ্রাফিক কাজ করেন হাউজটনের শিল্পীরা এবং অ্যা্নিমেশন শিল্পী উইলিয়াম ব্র্যাডলি।
অ্যাপোলো ৮ অভিযানটি ১৯৬৮ সালের শেষদিকে হয়। তবুও এই অভিযান সারা বিশ্বে যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। এই বছরে রাজনৈতিক বিভিন্ন সমস্যা, তার উত্তরণ ঘটলেও টাইম ম্যাগাজিন তাদের বর্ষসেরা মানব-এর জন্য অ্যাপোলো ৮-এর তিন মহাকাশচারীকেই বেছে নেয়। তারাই প্রথম মানুষ হিসেবে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। এই অভিযানের গুরুত্ব একজন সাধারণ মানুষের সামান্য টেলিগ্রাম থেকেই সহজে নির্ণয় করা যায়। সেই টেলিগ্রাম বোরমেন গ্রহণ করেন এবং সেখানে লেখা ছিলঃ
“ | ধন্যবাদ অ্যাপোলো ৮, তুমি ১৯৬৮-কে বাঁচালে। | ” |
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এই যে এই অভিযান পৃথিবীর উদয়মান ছবি তোলে। এটাই প্রথম ছবি, যেখানে কোন ব্যক্তি ক্যামেরার পিছনে থেকে পৃথিবীর ছবি তোলে। এই ছবিটি লাইফ ম্যাগাজিনের পৃথিবী পরিবর্তনকারী একশত ছবি-এর অন্যতম। ১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি ডাকটিকিট (স্কট # ১৩৭১) প্রবর্তন করে এই অভিযানকে স্মরণ করে। এই ডাকটিকিটে সেই বিখ্যাত উদয়মান পৃথিবীর ছবি ছিল।
বর্তমানে এই বিখ্যাত অভিযানের মহাকাশযান-এর অবস্থান শিকাগোর বিজ্ঞান ও শিল্প জাদুঘর-এ। এছাড়াও সেখানে রয়েছে লভেল ও বোরমেনের দান করা অভিযানের বেশকিছু ব্যক্তিগত জিনিস। বোরমে্নের সেই অভিযানে পরিহিত পোশাক এই জাদুঘরে রয়েছে। অপরদিকে লভেলের পোশাক রয়েছে নাসার গ্লেন গবেষণা কেন্দ্র-এ ও অ্যান্ডারসের পরিহিত পোশাক রয়েছে যুক্তরাজ্য-এর লন্ডন-এর বিজ্ঞান জাদুঘর-এ।
এই নিবন্ধটিতে নাসা থেকে পাবলিক ডোমেইন কাজসমূহ অন্তর্ভুক্ত যা পাওয়া যাবে এখানে ।
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) – The mass for LTA-B was less than that of a flying LM, because it was essentially a boilerplate decent stage. A fully loaded, flight-ready LM, like the Eagle from Apollo 11, weighed ৩৩,২৭৮ পা (১৫,০৯৫ কেজি), including propellants.
এই নিবন্ধটিতে নাসা থেকে পাবলিক ডোমেইন কাজসমূহ অন্তর্ভুক্ত যা পাওয়া যাবে এখানে ।