ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | অ্যালান মেলভিল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | কার্নার্ভন, কেপ প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা | ১৯ মে ১৯১০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৮ এপ্রিল ১৯৮৩ স্যাবি, ট্রান্সভাল, দক্ষিণ আফ্রিকা | (বয়স ৭২)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি লেগ-ব্রেক, পরবর্তীতে অফ-ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | শুরুতে অল-রাউন্ডার, পরবর্তীতে কেবলমাত্র ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | কলিন মেলভিল (ভ্রাতা); ক্রিস্টোফার মেলভিল (ভ্রাতৃষ্পুত্র) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৫২) | ২৪ ডিসেম্বর ১৯৩৮ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৫ জানুয়ারি ১৯৪৯ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২৮/২৯-১৯২৯/৩০ | নাটাল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩০-১৯৩৩ | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩২-১৯৩৬ | সাসেক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩৬/৩৭-১৯৪৮/৪৯ | ট্রান্সভাল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ আগস্ট ২০১৭ |
অ্যালান মেলভিল (ইংরেজি: Alan Melville; জন্ম: ১৯ মে, ১৯১০ - মৃত্যু: ১৮ এপ্রিল, ১৯৮৩) নর্দার্ন কেপের কার্নার্ভন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নাটালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। কখনোবা ব্যাটিং উদ্বোধনেও তাকে দেখা যেতো। এছাড়াও, ডানহাতে লেগ ব্রেক ও গুগলি বোলার ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে অফ ব্রেকের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৩৮ থেকে ১৯৪৯ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ১১ টেস্টে অংশ নিয়েছেন।[১]
মাইকেলহাউসে অধ্যয়ন করেন মেলভিল। ছাত্রাবস্থাতেই ১৯২৮-২৯ মৌসুমে নাটালের পক্ষে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেন।[২] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের প্রথম খেলাতেই চমৎকার ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ট্রান্সভালের বিপক্ষে ৭১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নেন।[৩] ১৯২৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ইংল্যান্ড সফরের প্রাক্কালে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশগ্রহণ করেন। এটি ছিল তার নিজস্ব দ্বিতীয় খেলা। তিনি ১২৩ রান তুলেন ও নাটালের পক্ষে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জ্যাক সিডলের সাথে ২৮৩ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও খেলায় তিনি আরও চার উইকেট লাভ করেছিলেন।[৪] এ সাফল্যে তার বাবা সফরকারী দলের সাথে অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, পড়াশোনা চালিয়ে যাবার স্বার্থে ১৯২৯ সালের পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করবেন।[২]
অক্সফোর্ডে যাবার পূর্বে মেলভিল গাড়ী দূর্ঘটনার মুখোমুখি হন ও মেরুদণ্ডের তিন জায়গায় চিড় ধরে। পূর্ণাঙ্গভাবে সুস্থ হবার পর ১৯২৯ সালের শুরুতে অক্সফোর্ডে চলে যান।[২]
অক্সফোর্ডে ফ্রেসম্যান একাদশের প্রস্তুতিমূলক খেলায় মেলভিল অপরাজিত সেঞ্চুরি হাঁকান। এরপর থেকেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় দলের পক্ষে পরবর্তী চার বছর নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন। এছাড়াও প্রতি বছরই ব্লু লাভ করেন তিনি।
মে, ১৯৩০ সালে অক্সফোর্ডের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেন। কেন্টের বিপক্ষে ঐ খেলায় তিনি ৭৮ রান তুলেছিলেন।[৫] পরের খেলায় ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১১৮ রান তুলেন।[৬] তবে, খেলায় ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেননি তিনি। ৩২.৮৩ গড়ে ৫৯১ রান ও ১৯ উইকেট পেলেও রান দিয়ে ফেলেন বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ব্যাট বা বল হাতে তেমন সফলতা পাননি।[৭]
১৯৩৪-৩৫ মৌসুমের শীতকালে মেলভিল অ্যাপেন্ডিসাইটিসে আক্রান্ত হন।[৮] সুস্থ হবার পর ঐ মৌসুমে দলকে নেতৃত্ব দেন। কয়েকটি খেলায় অনুপস্থিতি স্বত্ত্বেও ব্যক্তিগতভাবে বেশ সফল মৌসুম অতিবাহিত হয় তার। ব্যাটিং গড়ে সাসেক্সের চ্যাম্পিয়নশীপে শীর্ষস্থানে ছিলেন। ৪০.৫১ গড়ে ১৯০৪ রান তুলেন তিনি।[৯] তবে, দলটির ক্ষেত্রে মিশ্র মৌসুম অতিবাহিত হয়। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে দলটি সপ্তম স্থানে অবস্থান করে। ১৯৩৫ মৌসুম শেষে সাসেক্সের অধিনায়কত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। ১৯৩৬ মৌসুমে সাসেক্সে অনিয়মিতভাবে খেলেন। তাস্বত্ত্বেও মৌসুমটি ছন্দোময় কাটে তার। ১৯৩৬ সালে ভারত একাদশের বিপক্ষে কাউন্টির পক্ষে সর্বশেষ খেলায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান তুলেন ১৫২।[১০] মৌসুম শেষ হলে তিনি ইংল্যান্ড ত্যাগ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যান। সেখানে তিনি জোহেন্সবার্গ স্টক এক্সচেঞ্জে চাকরি নেন।[২]
দক্ষিণ আফ্রিকায় জোহেন্সবার্গভিত্তিক ওয়ান্ডেরার্স ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্বভার লাভ করেন। ডিসেম্বর, ১৯৩৬ সালে ট্রান্সভালের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো খেলায় অংশ নেন। তবে ঐ মৌসুমে কারি কাপে ট্রান্সভালের সদস্যরূপে অংশগ্রহণ করেননি তিনি। পরের বছর কারি কাপের সাত খেলার মধ্যে ছয়টিতে অধিনায়কত্ব করেন।[১১] নাটালের সাথে দলকে যৌথভাবে শিরোপা বিজয়ের সাথে যুক্ত করেন তিনি। ব্যাট হাতে তিনি খুব কমই সফলকাম হয়েছেন। ১৫.৫৭ গড়ে ১০৯ রান তুলেন ও কোন বোলিং করেননি।[৯] অথচ ১৯৩৬ সালে ইংল্যান্ড থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রত্যাবর্তনকালীন তিনি বোলিং করতেন।
তার এই ক্রীড়াশৈলীর অবস্থান স্বত্ত্বেও মেলভিল দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন ও ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে দলকে নিয়ে ইংল্যান্ড সফরে যান। এ সিরিজের মাধ্যমেই তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ঐ সময়ে পাঁচ খেলা আয়োজন করা হতো। উইজডেন উল্লেখ করে যে, উভয় দলই ধীরগতিতে অগ্রসর হবার নীতি অবলম্বন করে। অসীম সময়ের টেস্ট হওয়ায় ফলাফলের সম্ভাবনা না হলে ১০ দিন পর ড্রয়ে পরিণত হবে।[১২] সিরিজের তৃতীয় খেলায় জয়লাভ করে ইংল্যান্ড দল ও বাদ-বাকী টেস্টগুলো ড্রয়ে পরিণত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দক্ষিণ আফ্রিকান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ১৯২৯ সালে তরুণ অবস্থায় পিঠের আঘাতের পুণরাবৃত্তি ঘটায় প্রশিক্ষণকালীন সময়েই তাকে বাদ দেয়া হয় এবং প্রায় এক বছর তিনি স্টিলের জ্যাকেট পরিধান করতে বাধ্য হন। উইজডেন লিখেছিল যে, ‘ধারণা করা হয় - তিনি আর কখনো ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’[২]
টেস্টের বাইরে মাত্র একটি সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন তিনি। সাসেক্সের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৪* রান তুলে দলকে ৫৫৫/৬-এ নিয়ে যান।[১৩] সামগ্রিকভাবে ঐ সফরে ৪০.৭১ গড়ে ১৫৪৭ রান তুলেন তিনি।[১৪] তবে টেস্টের দিক দিয়ে সফরটি ফলপ্রসূ হয়নি। মেলভিল তার অধিনায়কত্ব নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন ও ১৯৪৮ সালের উইজডেন সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।[২] মানসিক দিক দিয়েও তিনি স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন। উইজডেন মন্তব্য করে যে, মানসিক ও শারীরিক দিক দিয়ে তিনি বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রত্যাবর্তনকালে ২৭ পাউন্ড কম ওজন নিয়ে ফিরেন তিনি।[২] সফরের পর শীতকালে ট্রান্সভালের পক্ষে আরও কয়েকটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ শেষে অবসরের কথা ঘোষণা করেন তিনি।
১৯৪৮-৪৯ মৌসুমের শীতকালে জর্জ মানের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসে। দৃশ্যতঃ অবসরের জন্য প্রস্তুত ছিলেন মেলভিল। মৌসুমের শুরুতে ট্রান্সভালের পক্ষে নাটালের বিরুদ্ধে খেলতে অস্বীকৃতি জানান। দীর্ঘদিন কব্জিতে আঘাতের পর সুস্থ হলে ট্রান্সভালের সদস্যরূপে সফরকারী দলের বিপক্ষে খেলেন। প্রথম টেস্ট শুরুর পূর্বে খেলায় তিনি ৯২ করেন। উইজডেন মন্তব্য করে যে, ১৭৪ রান করা লেন হাটনের পর খেলায় তার ব্যাটিংটি সেরা ছিল।[১৫] তবে, মেলভিল খেলা শেষে ঘোষণা করেন যে, তার কব্জি আদৌ কাজ করছে না ও টেস্ট খেলার জন্য উপযুক্ত নন তিনি।[১৫] এক পক্ষকাল পর তৃতীয় টেস্টে খেলার সুযোগ পান ও ড্র হওয়া খেলায় তিনি ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে ১৫ ও ২৪ রান তুলেন।[১৬] এরপর তিনি সফরকারী দলের বিপক্ষে ট্রান্সভালের সদস্যরূপে অংশ নেন। কিন্তু কোন রান করতে না পারায় তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবনের সমাপন ঘটে।[১৭]
অবসর গ্রহণের পর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ব্যাপক প্রভাববিস্তার করেন তিনি। অনেক বছর দক্ষিণ আফ্রিকা দলের নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য হন। ১৮ এপ্রিল, ১৯৮৩ তারিখে ট্রান্সভালের স্যাবি এলাকায় ক্রুজার জাতীয় উদ্যানে ভ্রমণকালে ৭২ বছর বয়সে তার আকস্মিক দেহাবসান ঘটে।
ক্রীড়া অবস্থান | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী আর. জি. এস. স্কট |
সাসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৩৪-১৯৩৫ |
উত্তরসূরী এ. জে. হোমস |