এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
লুইস ক্যারলের লেখা অ্যালিস' অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড (১৮৬৫) এবং থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস (১৮৭১) নামক দুটি শিশু উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল অ্যালিস।
প্রথম বইটিতে মধ্য-ভিক্টোরীয় সময়কালে অ্যালিস নামে একটি বাচ্চা মেয়ে আকস্মিকভাবে একটি খরগোশের গর্তের মধ্যে পড়ে গিয়ে, এক আজবদেশে পৌঁছে যায়। এরপর সেই অচেনা স্থানে অ্যালিসের কিছু রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কাহিনি বর্ণনা করা হয় বইটিতে। দ্বিতীয় বইটিতেও তার একটি দুঃসাহসিক কাহিনি বর্ণিত হয়েছে, সেখানে সে একটি আয়নার মধ্য দিয়ে ভিন্ন জগতে প্রবেশ করে। দ্য আইসিস-এ ক্যারোল, তার বন্ধু, রবিনসন ডাকওয়ার্থের সাথে বিভিন্ন সময়ে নৌকাভ্রমণকালে লিডেল বোনেদের মনোরঞ্জনের জন্য যেসব গল্প বলেছিলেন, সেখান থেকেই অ্যালিস নামক চরিত্রটির জন্ম হয়েছিল। অবশ্য চরিত্রটির নামের সঙ্গে অ্যালিস লিডেল-এর নামের মিল থাকলেও সাহিত্যিকরা কাহিনিগুলোকে লিডেল-এর ওপর ভিত্তি করে রচিত বলে মানেন না। ক্যারলের স্নেহময়ী, নম্র, সভ্য, বিশ্বাসী এবং অদম্য কৌতূহলী অ্যালিসকে[১] অনেকসময় চতুর ও কর্তৃত্বের প্রতি সন্দেহপ্রবণ হিসেবে দেখা গেছে। যদিও বহু ব্যাখ্যাকার তার ব্যক্তিত্বে অনেক দোষও খুঁজে পেয়েছেন। অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর প্রথম খসড়া অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন আন্ডারগ্রাউন্ড-এ তার বাহ্যিক রুপের যা বিবরণ ছিল, অ্যালিস-এর দুটি বইতে রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট জন টেনিয়েল-এর তুলির আঁচড়ে তা বদলে যায়।
অ্যালিসকে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিভূ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। তার চরিত্রকে উনিশ শতকের প্রচলিত শিশু মুখ্য চরিত্রের অবসান হিসেবে ধরা হয়। অ্যালিসের দুটি অ্যাডভেঞ্চার গল্পের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই চরিত্রকে ভিত্তি করে বহু গল্প, ব্যঙ্গরচনা এবং অ্যালিসের মতো সমগোত্রীয় চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে অনেক গল্প রচিত হয়েছে। তার চরিত্রকে নানা আঙ্গিকে বিশ্লেষণ করা হয়। এ ছাড়া অ্যালিস চরিত্রকে কেন্দ্র করে বহু চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, যার মধ্যে একটি হল ওয়াল্ট ডিজনির প্রভাবশালী চলচ্চিত্রটি (১৯৫১)।
অ্যালিস মধ্য-ভিক্টোরীয় যুগের একটি কাল্পনিক শিশু চরিত্র।[২] অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড (১৮৬৫) গল্প অনুযায়ী, যেদিন অ্যালিস খরগোসের গর্তের মধ্য দিয়ে আজবদেশে পৌঁছায় অর্থাৎ ৪ঠা মে-তে অ্যালিসের বয়স সাত বছর ধরা হয়।[৩][৪] পরবর্তী গল্পে ৪ঠা নভেম্বরে যখন আয়নার মধ্য দিয়ে সে আজবদেশে পৌঁছায়[৩] তখন সে তার বয়স সাড়ে সাত বছর বলে। অ্যালিসের দুটো গল্পেই লেখক কেন্দ্রীয় চরিত্রের বাহ্যিক রূপ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। তবে তার কাল্পনিক জীবনের নানা দিক সম্বন্ধে গল্পদুটি থেকে বহু তথ্য জানা যায়। যেমন-তার বাড়িতে রয়েছে তার একটি দিদি, একটি পোষা বিড়াল ডিনা, একটি বৃদ্ধা নার্স ও একজন গৃহশিক্ষিকা, যিনি তাকে সকাল ৯টার সময় পড়াতেন।[৫] এ ছাড়া নেপথ্য কাহিনি থেকে জানা যায় যে, কোনো একসময় সে দিবা স্কুলেও পড়তে গিয়েছিল।[৫] গল্পের বর্ণনা থেকে বোঝা যায় যে, অ্যালিস উচ্চবিত্ত[৬][৭], মধ্যবিত্ত[২] বা বুর্জোয়া শ্রেণির[৮] একজন সদস্য।
‘অ্যালিস অন দ্য স্টেজ’(এপ্রিল, ১৮৮৭)-এ অ্যালিসের ব্যক্তিত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে ক্যারল বলেছেন যে, সে “স্নেহশীল এবং নম্র”, “ সবার কাছে বিনয়ী”, “বিশ্বাসী” এবং “অত্যন্ত কৌতূহলী ও জীবনকে পূর্ণরূপে উপভোগ করতে আগ্রহী, যা কেবলমাত্র শৈশবের আনন্দময় দিনগুলোতেই দেখা যায়, যখন সবকিছুই নতুন ও ন্যায্য মনে হয় এবং পাপ ও দুঃখকে ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই মনে হয় না!”[১] বিশ্লেষকরা তাকে ‘নিষ্পাপ’[৯], ‘কল্পনাপ্রবণ’[১০], ‘অন্তর্মুখী’[১০], ‘সাধারণত সুসভ্য’[২][১১], ‘ক্ষমতাধারী ব্যক্তিত্বের সমালোচক’[২] এবং বুদ্ধিমতী[৯] বলে উল্লেখ করেন। অনেকে আবার তার চরিত্রে দোষও পেয়েছেন। তারা বলেছেন যে, আজবদেশে জন্তু-জানোয়ারদের সাথে কথা বলার সময় প্রায়শই সে নির্দয়ের মতো ব্যবহার করেছে[১২], বিল দ্য লিজার্ডকে লাথি মারার মতো হিংসাত্মক কাজ করেছে[১৩] এবং তার অভদ্র প্রত্যুত্তর এবং সংবেদনশীলতার অভাবের মাধ্যমে তার সামাজিক লালনপালন সম্বন্ধে জানা যায়[১৩]। ডনাল্ড র্যাকিনের মতে, “তার শ্রেণি ও কাল আবদ্ধ কুসংস্কার, তার তীব্র চাঞ্চল্য ও শিশুসুলভ কান্না, তার খুঁতখুঁতেপনা ও আত্মবিশ্বাসী অজ্ঞতা, কখনো কখনো তার ভয়ঙ্কর কপটতা, তার সাধারণ অক্ষমতা ও বিহ্বলতা এবং দুটো অভিযানের শেষের কঠিন মুহূর্তকে কাপুরুষের ন্যায় ছেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও বহু পাঠক অ্যালিসকে নিয়ন্ত্রণ, অধ্যবসায়, সাহস এবং পরিণত সুবুদ্ধির একটি কাল্পনিক প্রতিমূর্তি হিসেবে দেখে।”[৮]
অ্যালিস চরিত্রটিকে অ্যালিস লিডেল হিসেবে প্রতিপন্ন করার ব্যাপারটা যথেষ্ট বিতর্কিত। বহু সমালোচক চরিত্রটিকে অ্যালিস লিডেল[১২][১৪] বা তার দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে মনে করেন[১৫]। অন্যদিকে আবার এর বিরোধে অনেকে বলেন যে, ক্যারল তার গল্পের মুখ্য চরিত্র ও লিডেলকে পৃথক মনে করেন।[১৬][১৭] ক্যারলের মতে, তার চরিত্রটি বাস্তবের কোনো শিশুর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়নি, এটি সম্পূর্ণ একটি কাল্পনিক চরিত্র।[১৮]
অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর প্রথম খসড়া অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স আন্ডারগ্রাউন্ড-এ অ্যালিস চরিত্রটির প্রথম আবির্ভাব।[১৯] ১৮৬২ সালের ৪ঠা জুলাইয়ের এক সন্ধ্যায় বন্ধু রবিনসন ডাকওয়ার্থ-এর সাথে নৌকাভ্রমণকালে লিডেল বোনেদের মনোরঞ্জনের জন্য গল্প বলা শুরু করেন।[১৯] এই ধারা পরবর্তী নৌকাবিহারেও বজায় ছিল এবং এখান থেকেই এই আন্ডারগ্রাউন্ড কাহিনিটির উৎপত্তি।[২০] পরে দশম বর্ষীয়া অ্যালিস লিডেলের আবদারে ক্যারল গল্পটিকে লিখিত রুপ দেন, যা ১৮৬৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সম্পন্ন হয়।[২০] আন্ডারগ্রাউন্ড গল্পে ৩৭টি ছবি রয়েছে[২০], যার মধ্যে ২৭টিতে অ্যালিস রয়েছে[২১]। ছবির অ্যালিসের সঙ্গে অ্যালিস লিডেলের খুব সামান্য মিল থাকায় ধরা হয় যে অ্যালিসের ছোটো বোন এডিথকে হয়তো এই ছবির জন্য মডেল হিসেবে নেওয়া হয়েছিল।[২২] ক্যারলের অ্যালিস টিউনিক পরে অন্যদিকে লিডেল বোনেরা সেলাই করা কাপড় পরত।[২৩] গল্পের ছবিগুলিতে প্রাক-রাফায়েলীয় চিত্রকর দান্তে গেব্রিয়েল রোসেটি এবং আর্থার হিউজ-এর যথেষ্ট প্রভাব লক্ষ করা যায়। ১৮৬৪ সালের নভেম্বরে ক্যারল তার হাতে লেখা অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স আন্ডারগ্রাউন্ড বইটি অ্যালিস লিডেলকে উপহার দেন।[২৪]
অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর ছবি আঁকার জন্য জন টেনিয়েল £১৩৮ পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন, যা কিনা ক্যারলের বার্ষিক রোজগারের এক-চতুর্থাংশ ছিল এবং এটি তিনি নিজের জন্যই দিয়েছিলেন।[২৫] বইটিতে কাজ করার পূর্বেই টেনিয়েল ব্যঙ্গ-কৌতুক জাতীয় পত্রিকা পাঞ্চ-এর একজন সফল ও বিখ্যাত অঙ্কনশিল্পী ছিলেন[২৬]। অন্যদিকে ক্যারলের তখন সাহিত্যিকরূপে কোনো খ্যাতি ছিল না।[২৭] টেনিয়েল সম্ভবত আন্ডারগ্রাউন্ড-এর ছবিগুলোর ভিত্তিতেই অধিকাংশ ছবি এঁকেছেন।[২৮] ক্যারল এক্ষেত্রে টেনিয়েল-এর কাজের তত্ত্বাবধান করতেন[২৮] এবং ছবি-সংক্রান্ত বহু পরামর্শ দিতেন, যার মধ্যে একটি হল যে, অ্যালিসের চুল লম্বা ও হাল্কা রঙের হওয়া উচিত[২৯]। অ্যালিসের জামাকাপড় ছিল মধ্য-ভিক্টোরীয় যুগের মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মেয়ের মতো।[৩০] অ্যালিসের 'পিনাফোর', টেনিয়েল-এর আঁকা অ্যালিসের জামার একটি অংশ, যা পরবর্তীকালে চরিত্রটির পরিধানের একটি বিশেষ বৈশিষ্টে পরিণত হয়, তার ‘কর্মতৎপরতা এবং আনুষ্ঠানিকতার বালাইকে তোয়াক্কা না করার ইঙ্গিত বহন করে’।[৩১] টেনিয়েল-এর আঁকা অ্যালিস তার পাঞ্চ পত্রিকায় প্রকাশিত অন্তত আটটি ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুন দ্বারা প্রভাবিত, যেগুলি ১৮৬০ থেকে শুরু করে পরবর্তী চার বছর ধরে প্রকাশিত হয়েছিল।[৩০] ১৮৬০-এর কার্টুন, যার চরিত্রের সঙ্গে অ্যালিসের পরিহিত কাপড়ের অনেক মিল রয়েছে, তার পরিধানে ছিল, ফুল স্কার্ট, ফ্যাকাশে মোজা, চ্যাপটা জুতো এবং খোলা চুলের ওপর বাঁধা একটি ফিতা।[৩০] কার্টুনের চরিত্রটি ছিল একজন মধ্যবিত্তীয় হাসিখুশি মেয়ে।[৩২] তাকে অ্যালিসের মতোই "একজন শান্তিবাদী, হস্তক্ষেপকারী নয় এমন, ধৈর্যশীল এবং নম্র, অন্যের আগ্রাসনের ধীর-স্থিরভাবে জবাবদানকারী" ব্যক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে।[৩৩]
অ্যালিসের পরবর্তী গল্প থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস-এ ছবি আঁকার জন্য টেনিয়েল পারিশ্রমিক বাবদ £২৯০ নেন, যা একইভাবে ক্যারল নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে দেন।[২৫] তবে পরবর্তী গল্পে টেনিয়েল অ্যালিসের পরিধানে সামান্য পরিবর্তন আনেন, যেমন অ্যালিসের সাদামাটা মোজা পরিবর্তিত হয়ে হয় আড়াআড়ি ডোরাকাটা এবং পিনাফোর অলংকৃত ও ফিতাযুক্ত হয়।[৩০]
লাল এবং শ্বেত রানির মতোই প্রথমদিকে অ্যালিসের পরনে ছিল ক্রিনোলিনযুক্ত চেসম্যানলাইক স্কার্ট, কিন্তু ক্যারল সেই পরিধানশৈলী বাতিল করেন।[৩৪] তার পরিহিত রানির মতো পোশাক এবং রেলগাড়িতে পোলিশ-শৈলীর বাস্ল (bustle)-যুক্ত পরিধান তৎকালীন প্রচলিত রুচিকেই ব্যক্ত করে।[৩০] প্রাক-রাফায়েলীয় চিত্রকর জন মিলাস-এর ‘মাই ফার্স্ট সারমন’ (১৮৬৩) এবং ভিক্টোরীয় চিত্রকর অগাস্টাস লিওপোল্ড এগ-এর ‘দ্য ট্রাভেলিং কম্প্যানিয়ন’ (১৮৬২)-এর চরিত্রগুলির পরিধানের সঙ্গে রেলগাড়িতে অ্যালিসের পরিধানের মধ্যে বেশ কিছু মিল দেখতে পাওয়া যায়।[৩৫] অ্যালিসের ছবি আঁকার সময় টেনিয়েল মডেল ব্যবহার করতে অস্বীকার করায় ক্যারল ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন যে, মডেল ব্যবহার না করারা জন্য ছবিগুলোতে অ্যালিসের পা ও মাথা সঠিক অনুপাতে হয়নি।[৩৬]
১৮৮১-এর ফেব্রুয়ারিতে ক্যারল অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর রঙিন ও বড়ো বড়ো চিত্রযুক্ত সরলীকৃত সংস্করণ দ্য নার্সারি ‘অ্যালিস’-এর প্রকাশের সম্ভাবনার বিষয়ে প্রকাশকের সাথে যোগাযোগ করেন।[৩৭] এই সংস্করণের জন্য টেনিয়েল অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর ২০টি ছবিকে রং করেন এবং তাতে কিছু পরিবর্তনও আনেন।[৩৮] এই ছবিগুলোতে অ্যালিসকে স্বর্ণকেশী (blonde) দেখানো হয়েছে, যেখানে তার জামার রং হল হলুদ এবং মোজার রং নীল।[৩৯] এই ছবিগুলোতে তার পাটযুক্ত জামা থাকে এবং পিঠের দিকে ফিতে থাকে, এর পাশাপাশি চুলেও ফিতা থাকে।[৪০] এডমন্ড ইভান্স এই রঙিন ছবিগুলোর ছাপানোর জন্য ক্রোমোজাইলোগ্রাফির সাহায্য নেন, যেখানে কাঠের ব্লকের মাধ্যমে রঙিন ছবি তৈরি করা হয়।[৪০]
গ্রীষ্মের প্রেক্ষাপটে রচিত অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর সূচনা হয় নদীতীরে বসে থাকা দিদির সাথে অ্যালিসের। ঘটনাচক্রে একটি শ্বেত খরগোসকে পিছু করতে গিয়ে সে একটি খরগোসের গর্তে পড়ে গিয়ে আজবদেশে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে নানান অদ্ভুত চরিত্রের সাথে তার দেখা হয় এবং বহুবার তার আকার বদলে যায়। অবশেষে দিল Knave of Hearts-এর বিচারে সে নিজেকে সাক্ষী হিসেবে পায়। এরপর রাজা এবং রানি দ্বারা পরিত্যাগের আদেশ পেলে অ্যালিসের সাথে তাদের বাদানুবাদ ঘটে এবং সে জানায় যে তারা তাসের পাতা ছাড়া কিছুই নয়। তর্কাতর্কির ফলে তারা অ্যালিসের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার পরমুহূর্তে অ্যালিস নিজেকে নদীতীরে পায় এবং বুঝতে পারে যে সে স্বপ্ন দেখছিল।
শরৎকালের প্রেক্ষাপটে রচিত থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস শুরু হয় বাড়ির মধ্যে পোষা বিড়াল ডিনার সাথে অ্যালিস-এর খেলা দিয়ে। ঘটনাচক্রে সে আয়নার মধ্য দিয়ে একটি অদ্ভুত জগতে পৌঁছায়, যেখানে সে জীবন্ত দাবার গুটির দেখা পায়। ক্রমে বিভিন্ন অদ্ভুত চরিত্রের সাথে দেখা করার পর অবশেষে সে রানি হয় এবং রানির অভিষেক পর্বে সে অংশগ্রহণ করে, যদিও পরে সেখানে বিশৃঙ্খলতা তৈরি হয়। ইতোমধ্যে লাল রানিকে ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে অ্যালিস নিজেকে বাড়ির মধ্যে পায়, যেখানে একটি বিড়ালছানাকে সে জড়িয়ে থাকে। সে বুঝতে পারে যে সে স্বপ্ন দেখছিল। গল্পটি শেষ হয় অ্যালিসের একটি সন্দেহ দিয়ে-স্বপ্নটি তার ছিল না লাল রাজার।
অ্যালিসকে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিভূ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।[৪১] অ্যালিসের গল্পের বইগুলো এখনও ছাপা হয়ে থাকে[৪২] এবং প্রথম বইটি একশোটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে[৪৩]। অ্যালিস অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সময়কে উপেক্ষা করে বর্তমানেও বিখ্যাত বইয়ের তালিকায় নিজের জায়গা করে তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রেখেছে।[৪৪] ২০১৫ সালের এক ব্রিটিশ সমীক্ষা অনুযায়ী শিশু সাহিত্যের শীর্ষ ২০টি জনপ্রিয় চরিত্রের মধ্যে একটি হল অ্যালিস।[৪৫] তার নামে এমনকি একটি হেয়ারব্যান্ড-ও বাজারে উপলব্ধ রয়েছে, যা হুবহু টেনিয়েল-এর আঁকা অ্যালিসের হেয়ারব্যান্ডের মতো।[৪৬] অ্যালিসের গল্পদুটির অব্যাহত জনপ্রিয়তার ফলে একে কেন্দ্র করে বহু পরিমার্জনা, গল্প ও শৌখিন দ্রব্য নির্মিত হয়েছে।[৪১] মধ্য-ভিক্টোরীয় যুগের প্রথম দিক থেকেই সাহিত্যিক ক্ষেত্রে এর প্রভাব লক্ষ্ করা যায়। এইসময় অ্যালিসের গল্পশৈলীর অনুকরণে বহু উপন্যাস ও সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর ব্যঙ্গরচনা নির্মিত হয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যালিসের গল্পে ব্যবহৃত কোনো বিষয়কে নতুনভাবে পেশ করার প্রবণতাও দেখা যায়।[৪৭] এই ধরনের রচনায় স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে অ্যালিসের মতো চারিত্রিক গুণসম্পন্ন (সাধারণত ভদ্র, স্পষ্টবাদী ও আত্মবিশ্বাসী) এক বা একাধিক প্রধান চরিত্রকে দেখা যায়।[৪৮]
ক্যারলের জীবদ্দশাতেই অ্যালিসের দুটো বই বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য লাভের পাশাপাশি সমালোচকদের দ্বারা বহুল প্রশংসিত হয়েছিল।[৪৯] ১৮৯৮ অবধি অ্যালিস অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর ১৫০,০০০-এর বেশি এবং থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস-এর ১০০,০০০-এর বেশি কপি মুদ্রিত হয়।[৪৯] ভিক্টোরীয় যুগের পাঠকরা অ্যালিসের বইদুটিকে হালকা মেজাজের বিনোদন হিসেবে নিত যেখানে অন্যান্য শিশু পাঠ্যবইয়ের মতো নীতিকথার বাড়াবাড়ি থাকত না।[৫০] অ্যালিসের বইয়ের পর্যালোচনা করতে গিয়ে দ্য স্পেকটেটর পত্রিকায় অ্যালিসকে ‘একটি মনোমুগ্ধকারী ছোটো মেয়ে [……] যার কথাবার্তার ধরন উত্তম প্রকৃতির’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, অন্যদিকে দ্য পাব্লিশার্স সার্কুলার তাকে ‘সাদাসিধে, স্নেহশীল মেয়ে’ হিসেবে প্রশংসা করেছে।[৫১] বহু পর্যালোচক বইটিতে টেনিয়েল-এর ছবিগুলোকে বাড়তি পাওনা হিসেবে দেখেছেন, এপ্রসঙ্গে দ্য লিটারারি চার্চম্যান টেনিয়েল-এর আঁকা অ্যালিসকে এর চারপাশে ঘিরে থাকা কিম্ভূতাকার চরিত্রের মধ্যে একটি কমনীয় পরিত্রাণ হিসেবে লক্ষ্য করেছেন।[৫২] পরবর্তীকালে বহু সাহিত্য সমালোচক অ্যালিসের চরিত্রটিকে অদ্ভুত কিংবা উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়কালে প্রচলিত শিশু মুখ্য চরিত্রের অবসান হিসেবে দেখেছেন।[৫৩] রিচার্ড কেলি চরিত্রটিকে ক্যারল কর্তৃক ভিক্টোরীয় যুগের অনাথ শিশুচরিত্রের পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে সৃষ্ট একটি নায়ক হিসেবে দেখেছেন। কেলির মতে, অ্যালিসকে অবশ্যই পরিবার থেকে অনেক দূরে ওয়ান্ডারল্যান্ড-এ নিজের ওপর আস্থা রাখতে হয়েছে, তবে এখানে একজন পিতৃমাতৃহীনা শিশুচরিত্রের ধরাবাঁধা নৈতিক ও সামাজিক কাহিনির ঘনঘটার পরিবর্তে ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর কিম্ভূতাকার অধিবাসীদের মধ্যে থেকে নিজের প্রকৃত স্বরূপকে বাঁচিয়ে রাখার বুদ্ধিদীপ্ত সংগ্রাম বর্ণিত হয়েছে।[৫৪] অ্যালিসন লুরি বলেছেন যে, অ্যালিস মধ্য-ভিক্টোরীয় যুগের একপেশে আদর্শ বালিকার ধারণাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেঃ অ্যালিস প্রচলিত আদর্শের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো ধাতের মেয়ে ছিল না, এবং সে ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর হোমরা-চোমরাদের রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল।[৫৩]
১৯৩০ থেকে ১৯৪০-এর মধ্যে অ্যালিসের গল্পদুটি ফ্রয়েডের মনোঃসমীক্ষণ তত্ত্বের আলোকে সমালোচিত হয়।[৫৫] ফ্রয়েডের অনুগামীরা অ্যালিস অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ডে সংঘটিত ঘটনাগুলিকে লেখকের আকাঙ্ক্ষা ও ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন হিসেবে দেখেছেন,[৫৬] কেন-না গল্পগুলো কোনো ভাবনাচিন্তা ছাড়া স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলা হয়েছিল[৫৭]। ১৯৩৩ সালে অ্যান্থনি গোল্ডস্মিড তার পেশ করা ‘the modern idea of Carroll as a repressed sexual deviant’ তত্ত্বে বলেছেন যে, গল্পদুটিতে অ্যালিস আসলে ক্যারলের প্রতিরূপ ছাড়া কিছুই নয়।[৫৮] তবে গোল্ডস্মিডের এই বহুচর্চিত তত্ত্বকে আজগুবিও বলা যেতে পারে।[৫৮] যাই হোক না কেন ফ্রয়েডীয় অনুগামীরা গল্পদুটিতে ক্লাসিক্যাল ফ্রয়েডীয় শব্দের বহু আলঙ্কারিক প্রয়োগের হদিশ পেয়েছেন, যেমন- যোনিরূপী খরগোসের গর্ত, লিঙ্গরূপী অ্যালিস, অ্যাম্নিওটিক তরলরূপী অস্রুর জলাশয়, স্নায়বিক বিকারগ্রস্ত মাতৃতুল্য এবং পুরুষত্বহীন পিতৃতুল্য চরিত্র, শিরশ্ছেদ (নপুংস্করণ)-এর ভয়, দ্রুত ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ইত্যাদি।[৫৯]
‘টেনিয়েল-এর একমাত্র শ্রেষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে পরিচিত ওয়াল্ট ডিজনি ১৯৫১ সালে অ্যালিসকে কেন্দ্র করে একটি প্রভাবশালী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যা পপ্ সংস্কৃতির জগতে অ্যালিসের চরিত্রকে স্থাপন করতে সাহায্য করেছিল। যদিও এর আগে টমাস ক্রয়েল-এর প্রকাশিত অ্যালিসের দুটি বইয়ের অননুমোদিত মার্কিনি সংস্করণে নীল জামা পরিহিতা স্বর্ণকেশী অ্যালিসকে দেখানো হয়েছিল, তবুও সম্ভবত প্রথমবার ডিজনির চলচ্চিত্রে এহেন চরিত্র চিত্রণের মাধ্যমে জনমানসে তার এই রূপ পরিচিতি লাভ করে। ম্যারি ব্লেয়ার-এর আঁকা চিত্র এবং টেনিয়েল-এর কার্টুনগুলোর ভিত্তিতে ডিজনির সংস্করণে অ্যালিসের চরিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রথমদিকে চলচ্চিত্রটি তেমন সাফল্য না পেলেও পরবর্তীকালে কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে এটি প্রবল জনপ্রিয়তা লাভ করে, তারা চলচ্চিত্রটিকে মাদকে সিক্ত বর্ণনা হিসেবে দেখে। তবে ১৯৭৪ সালে মাদকের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই এই বার্তা দিয়ে চলচ্চিত্রটি আবার মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটিকে ঘরোয়া মনোরঞ্জন হিসেবে প্রচার করা হলেও, মাদকের সঙ্গে তার সম্পর্কের ব্যাপারটাকে অননুমোদিত ব্যাখ্যা হিসেবে দেখা হয়।
ক্রমাগত নবরুপে ও ভাবনায় পেশ করার দরুন একুশ শতকেও অ্যালিসের জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রয়েছে। Men in Wonderland-এ ক্যাথেরিন রবসন লিখেছেন যে, “তার যাবতীয় বিভিন্ন ও সংশ্লিষ্ট রূপ, তা আন্ডারগ্রাউন্ড কিংবা থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস হোক, পাঠ্য কিংবা দৃশ্যগত হোক, চিত্র কিংবা ফোটোগ্রাফ হোক, ক্যারলের শ্যামাঙ্গিনী কিংবা টেনিয়েলের স্বর্ণকেশী কিংবা বাস্তবের অ্যালিস লিডেলের মতো ডিজনির শান্তশিষ্ট মেয়ে হোক […] যে-কোনো রূপেই এবং তার প্রথম আবির্ভাবের মতোই বর্তমানেও সর্বব্যাপী অ্যালিস, একটি চূড়ান্ত সাংস্কৃতিক প্রতিভূ। রবার্ট ডুগলাস-ফেয়ারহার্স্ট অ্যালিসের কালচারাল স্ট্যাটাসকে ‘একটি আধুনিক অতিকথার মতো আরও কিছু’-এর সঙ্গে তুলনা করে, তার চরিত্রকে “বিমূর্ত আশা ও ভয়ের” একটি খালি ক্যানভাসের মতো বলেছেন যা চরিত্রকে গভীর অর্থ প্রদান করে। জো জ্যাক এবং ইউজিন গিডেন্স বলেছেন যে, চরিত্রটি পপ কালচারে নিজের স্থান অধিকার করে রেখেছে, যেখানে “নীল জামা পরিহিতা অ্যালিস মাথার খুলি ধারণকারী হ্যামলেটের মতো সর্বব্যাপী”, যা ওয়ান্ডারল্যান্ড কিংবা থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস না পড়েই জনমানসে একটা অদ্ভুত জায়গা করে নিয়েছে। তারা আরও বলেছেন যে, এর মাধ্যমে পরবর্তী রচনাগুলির ক্ষেত্রে সৃজনশীল স্বাধীনতা আসে যেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই মূল গল্পগুলোকে উপেক্ষা করা যেতে পারে।
জাপানের পপ সংস্কৃতিতে অ্যালিসের একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে অ্যালিসের গল্পদুটির অব্যাহত জনপ্রিয়তার জন্য টেনিয়েলের চিত্রকর্ম এবং ডিজনির চলচ্চিত্রকে অনেকাংশে দায়ী করা হয়ে থাকে। জাপানের যুব সংস্কৃতি তাকে “একটি বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করে থাকে ঠিক যেমনটি ১৯৬০-এর দশকে আমেরিকান ও ব্রিটিশরা করেছিল হিপি-দের ক্ষেত্রে”। জাপানি ফ্যাশানে বিশেষত ললিতা ফ্যাশানে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে অ্যালিসের অবদান কম নয়। জাপানে তার জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ হল সে শোজো আদর্শকে অঙ্গীভূত করেছে, এটি মেয়ে সংক্রান্ত একটি জাপানি চিন্তাধারা যেখানে মেয়েটি ‘বাহ্যিক দিক থেকে স্নেহশীল ও নিষ্পাপ এবং অন্তর থেকে যথেষ্ট স্বাধীনচেতা মনভাবাপন্ন হয়।
অ্যালিসের দুটো বই-ই বহুবার নবরূপে অলঙ্কৃত হয়েছে। ১৯০৭ সালে অ্যালিস’ অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এর গ্রন্থস্বত্বের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই আটটি পৃথক নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে একটিতে চিত্রকর আর্থার রেখ্যাম দ্বারা আর্ট নুভু (Art Nouveau ) শিল্পরীতিতে অঙ্কিত চিত্র সংযোজিত হয়। এ ছাড়াও ১৯০৭-এ প্রকাশিত অন্যান্য সংস্করণে যেসব চিত্রকররা তাদের অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন চার্লস রবিনসন, ডব্লিউ এইচ ওয়াকার, টমাস মেব্যাংক, এবং মিলিসেন্ট সোয়ার্বি। এর পাশাপাশি বিখ্যাত চিত্রকরের মধ্যে ছিলেন ব্লাঞ্চে ম্যাকমানুস (১৮৯৬); পিটার নুয়েল (১৯০১), যিনি একরঙা (monochrome) ছবি আঁকেন; মেবেল লুসি অ্যাটওয়েল (১৯১০); হ্যারি ফার্নিস (১৯২৬); এবং উইলি পোগানি (১৯২৯), যিনি আর্ট ডেকো শিল্পরীতিতে চিত্র অঙ্কন করেন।
১৯৩০-এর পরবর্তীকালের উল্লেখযোগ্য অঙ্কনশিল্পী হলেন এডগার থার্স্টান (১৯৩১); ডি আর সেক্সটন (১৯৩৩) এবং জে মর্টন সেল (১৯৩৩), এঁরা দুজনেই তাদের চিত্রে অ্যালিসের পূর্বতন বৈশিষ্ট্যকে ফুটিয়ে তোলেন; মেরভিন পিক (১৯৫৪); র্যাল্ফ স্টেডম্যান (১৯৬৭), যিনি তার চিত্রকর্মের জন্য ১৯৭২ সালে ফ্রান্সিস উইলিয়াম মেমোরিয়াল পুরস্কারে ভূষিত হন; সালভাদোর দালি (১৯৬৯), যিনি তার আঁকায় পরাবাস্তববাদের প্রয়োগ ঘটান এবং পিটার ব্লেক, যিনি তার আঁকায় জলরঙের ব্যবহার করেন। ১৯৭২ সাল নাগাদ অ্যালিস অ্যাডভেঞ্চার্স ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড-এ ৯০জন এবং থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস-এ ২১জন অঙ্কনশিল্পী তাদের চিত্রের মাধ্যমে বইগুলি সাজান। ১৯৮০-এর দশক, ১৯৯০-এর দশক এবং ২০০০-এর দশকের প্রথমদিকের উল্লেখযোগ্য অঙ্কনশিল্পী হলেন ব্যারি মোজার (১৯৮২); গ্রেগ হিল্ডব্র্যান্ড (১৯৯০); ডেভিড ফ্রাঙ্কল্যাণ্ড (১৯৯৬); লিসবেথ জোয়ারগার (১৯৯৯), যিনি অ্যালিসের ছবিগুলো আঁকার ক্ষেত্রে জলরঙের ব্যবহার করেন; হেলেন অক্সেনবারি (১৯৯৯)যিনি অ্যালিসের গল্পের ছবি আঁকার জন্য দুটি পুরস্কার পেয়েছিলেন--১৯৯৯ সালে কার্ট মাস্লার পুরস্কার এবং ২০০০ সালে কেট গ্রিনাওয়ে মেডেল; আমেরিকান অঙ্কনশিল্পী ডিলস ম্যাকগ্র যিনি অ্যালিসের চিত্রগুলি অঙ্কন করার ক্ষেত্রে বিমূর্ত ভাবনার প্রয়োগ ঘটান।