আইগুনের চুক্তি | |||||||
![]() ১৭-১৯শ শতাব্দীর রুশ-চীনা সীমান্তে পরিবর্তন | |||||||
চীনা নাম | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 璦琿條約 | ||||||
সরলীকৃত চীনা | 瑷珲条约 | ||||||
| |||||||
রুশ নাম | |||||||
রুশ | Айгунский договор | ||||||
রোমানীকরণ | Aygunskiy dogovor |
আইগুনের চুক্তি (রুশ: Айгунский договор; প্রথাগত চীনা: 璦琿條約; সরলীকৃত চীনা: 瑷珲条约; ফিনিন: Àihún Tiáoyuē) ছিল ১৮৫৮ সালে রুশ সাম্রাজ্য ও চীনের চিং রাজবংশের মধ্যকার সুদূর পূর্ব রাশিয়া ও মাঞ্চুরিয়া (মাঞ্চু জাতির পৈতৃক জন্মভূমি) তথা বর্তমান উত্তরপূর্ব চীনের আধুনিক সীমান্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিক একটি ঐতিহাসিক চুক্তি।[১] এই চুক্তির ফলে স্ট্যানোভয় পর্বতমালা ও আমুর নদীর মধ্যকার ভূমি চীনের চিং থেকে রুশ সাম্রাজ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নারচিন্সকের চুক্তি (১৬৮৯) বাতিল হয়ে যায়। রাশিয়া মাঞ্চুরিয়া থেকে ৬,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (২,৩১,৬৬০ বর্গমাইল) ভূমি প্রাপ্ত হয়।[২][৩] যদিও ছিং সরকার প্রাথমিকভাবে চুক্তির বৈধতা স্বীকার করতে অস্বীকার করেছিল, আইগুন চুক্তির অধীনে রাশিয়ার দাবী ১৮৬০ সালের চীন-রাশিয়ান কনভেনশন অফ পিকিং এর অংশ হিসাবে নিশ্চিত করা হয়।[৪]
রাশিয়ার দ্বিতীয় ক্যাথেরিনের আমলে (১৭৬২ – ১৭৯৬), রাশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে নৌ শক্তি হতে চেয়েছিল। তারা তা অর্জন করতে কামচাতকা উপদ্বীপ দখল করে ১৭৪০ সালে পেট্রোপাভলভস্ক-কামচাটস্কিতে একটি নৌ ফাঁড়ি নির্মাণ করে, রুশ আলাস্কায় ও আমুর নদীর জলাশয়ের নিকট নৌ ফাঁড়ি রুশদের সেখানে গিয়ে বসতি স্থাপন ও আমুর অঞ্চলে শক্ত সামরিক উপস্থিতি তৈরি করতে উৎসাহিত করে। চীন কখনো এই অঞ্চলে কার্যকরীভাবে শাসন বা আঞ্চলিক সমীক্ষা পরিচালনা করেনি এবং রুশদের এই কার্যকলাপগুলো তারা লক্ষ্য করেনি।
১৮৫০ থেকে ১৮৬৪ সালে চীন তাইপিং বিদ্রোহে লড়াইয়ে ব্যস্ত ছিলো, সুদূর পূর্ব রাশিয়ার গভর্নর-জেনারেল নিকোলাই মুরাভিয়েভ অতীত বসতিস্থাপনের ভিত্তিতে আমুরের উপর বৈধ রুশ নিয়ন্ত্রণ জারি করতে মঙ্গোলিয়া ও মাঞ্চুরিয়ার সীমান্তে দশ হাজার পদাতিক বাহিনী নিয়ে সামরিক শিবির স্থাপন করে।[২] যখন এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে চীন দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে তখন মুরাভিয়েভ সেই সুযোগ লুফে নেয় এবং চীনের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধের আয়োজন করে তাদের হুমকির মুখে ফেলে দেয়।[৩] চিং রাজবংশ রাশিয়ার সাথে আলোচনায় যেতে রাজি হয়।[২]
দুই অঞ্চলের সামরিক গভর্নর রুশ প্রতিনিধি নিকোলাই মুরাভিয়েভ এবং চিং প্রতিনিধি ইশান চুক্তিটি আইগুন শহরে ১৮৫৮ সালের ২৮ মে তারিখে স্বাক্ষর করে।[৩]
চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে আমুর নদীর তীরে রুশ ও চীনা সাম্রাজ্যের মধ্যকার একটি সীমান্ত স্থাপিত হয়। (হেইলংজিয়াং নদীর পূর্বে চৌষট্টিটি গ্রামের চীনা ও মাঞ্চু অধিবাসীরা মাঞ্চু সরকারের অধীনে সেখানে বাস করার অনুমতি পেয়েছিলো।) আমুর, সুনগারি, এবং উসসুরি নদীগুলো শুধুমাত্র চীনা ও রুশ জাহাজগুলোর জন্য খোলা ছিলো। পশ্চিমে উসসুরি, উত্তরে আমুর এবং পূর্ব ও দক্ষিণে জাপান সাগর পরিবেষ্টিত অঞ্চলটি রাশিয়া ও চীন যৌথভাবে পরিচালিত করত যা ১৮১৮-এর চুক্তির ব্রিটিশ ও মার্কিনদের ওরেগন অঞ্চল পরিচালনার "যুগ্ম শাসন" ব্যবস্থার মত ছিল[২] (দুই বছর পর রাশিয়া এই ভূখণ্ডের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ লাভ করে)।[৫]
চীনে ১৯২০ এর দশকে চীনা জাতীয়তাবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের উত্থানের পরে,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এই চুক্তিকে একটি সমতাহীন চুক্তি হিসেবে দেখা হয়েছিলো।[৬]