আইটিসি গ্র্যান্ড চোল হোটেল | |
---|---|
Grand Chola (centre), amidst surrounding buildings | |
![]() | |
হোটেল চেইন | আই টি সি ওয়েলকামগ্রুপ হোটেলস, প্যালেস এবং রিসোর্ট |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
অবস্থান | চেন্নাই, ভারত |
ঠিকানা | 63, Anna Salai, Guindy Chennai, Tamil Nadu |
কার্যারম্ভ | ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ |
স্বত্বাধিকারী | ITC Hotels |
ব্যবস্থাপক | ITC Welcomgroup |
উচ্চতা | ৪৯ মি (১৬১ ফু) |
কারিগরি বিবরণ | |
তলার সংখ্যা | ১৫ |
তলার আয়তন | ১৬,২৪,০০০-বর্গফুট (১,৫০,৯০০-বর্গমিটার) |
নকশা ও নির্মাণ | |
স্থপতি | SRSS Architects (Singapore) |
নির্মাতা | Larsen & Toubro |
অন্যান্য তথ্য | |
কক্ষসংখ্যা | ৬০০ |
স্যুট সংখ্যা | ১৪ |
রেস্তোরাঁ সংখ্যা | ১০ |
পার্কিং | ৮০০ কার |
ওয়েবসাইট | |
itchotels.in/ITCGrandChola |
দি আই টি সি গ্র্যান্ড চোলা চেন্নাই-এর একটি পাঁচ তারকা বিলাসবহুল হোটেল। মুম্বাই এর রেনেসাঁ মুম্বাই কনভেনশন সেন্টার এবং গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলের পর ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম হোটেল।[১] এই হোটেলটি চেন্নাই এর গিন্দী অঞ্চল এ অবস্থিত। এটি বিখ্যাত স্টারউড হোটেলস গ্রুপের "লাক্জারী কালেকশন" হোটেল গুলোর মধ্যে একটি। ১,৬০০,০০০ বর্গ ফুট জায়গার ওপর তৈরী এই হোটেলটি ভারতের সব চেয়ে বড় স্বতন্ত্র হোটেল।[২] এই হোটেলটি বানাতে ১২ মিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা খরচা হযেছিল। ১০০,০০০ বর্গ ফুট জায়গার মধ্যে ৩০,০০০ বর্গ ফুট জায়গা জুড়ে একটি স্তম্ভ বিহীন বলরুম নিয়ে দেশের বৃহত্তম কনভেনশন সেন্টার আছে এই হোটেলটিতে।
২০০০ সালে আই টি সি হোটেলস গ্রুপ আন্না সালাই অঞ্চলে কাম্পা কোলা ক্যাম্পাস এর মধ্যে ৮ একর জমি কেনে ৮০০ মিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা দিয়ে। প্রাথমিক ভাবে হোটেলটি নির্মাণের জন্য ৮,০০০-১০,০০০ মিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা খরচের পরিকল্পনা করা হযেছিল। ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ সালে তামিল নাডুর মুখ্য-মন্ত্রী, জয়ালালিতা, এই ১২,০০০ মিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা মূল্যর হোটেলটির উদ্বোধন করেন।[৩]
হোটেলটির নির্মাণ, দক্ষিণ ভারতের মন্দির শিল্পর অণুকরণে বানানো হযেছে। দক্ষিণ ভারতের মন্দির গুলোর মতন এই হোটেলটিতে চারটে প্রবেশ দ্বার আছে যার নামকরণ করা হযেছে যথাক্রমে 'বলবান' [উত্তর], 'সেম্বিয়ান' [পূর্ব], 'কিল্লি' [পশ্চিম], এবং 'চোলা' [দক্ষিণ]।
স্থাপত্য শিল্পের ভিত্তিতে এই হোটেল এ ৪৬২ খানা স্তম্ভ আছে,[৪][৫] যার মধ্যে বেশির ভাগ স্তম্ভতে হস্ত শিল্পর নকশার কাজ করা আছে যেটা কিনা তান্জোর এর বৃহদীশ্বারা মন্দিরের থেকে অণুপ্রাণিত। ৫৭ রকমের পাথরের সাথে হোটেলটিতে ১ মিলিয়ন বর্গ ফুটের ওপর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হযেছে যার জন্য এই কম্পানি ইতালি তে একটা মার্বেল এর খাদ কিনে নিয়েছিল এবং জাহাজ করে টন-টন পাথর চেন্নাই এ হোটেল নির্মাণের জন্য আমদানি করেছিল।[৬] মামাল্লাপুরাম এর ৪০০০ কারিগর এই হোটেলের জটিল পাথুরে কাজ গুলো সম্পন্ন করে।[৭] সামগ্রিক রূপে হোটেলটির নির্মাণ কার্য সম্পন্ন করতে পাঁচ বছর সময় লাগে।
হোটেলটি তৈরী করার সময় গাছ কাটা এড়ানোর জন্য প্রথম থেকেই তারা সব বিদ্যমান গাছকে তাদের জমির চারিদিকে রোপণ করে। পুরো হোটেল এর শক্তির প্রয়োজনীয়তা নবায়নযোগ্য উৎস মাধ্যমে পূরণ করা হয় যার মধ্যে বর্জ্য জলও একটি উৎস।[৮]
হোটেলটির ৬০০ খানা ঘর এর মধ্যে ৫২২টি ঘর এবং ৭৮ খানা সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। এই ঘর গুলোর মধ্যে ৩২৬ টি এক্সিকিউটিভ ক্লাব ঘর, ৩১ টি ইভা ঘর, ১৩২ টি টাওয়ার ঘর, ৪৮ টি আই টি সি ওয়ান ঘর, ১৪ টি ডিলাক্স সুট, একটি প্রেসিডেনশিয়াল সুট এবং একটি গ্র্যান্ড প্রেসিডেনশিয়াল সুট আছে।[৯][১০] ৬১৫ বর্গ ফুটের ওপর বিস্তৃত টাওয়ার ঘর গুলোর একটি বিশেষ প্রবেশদ্বার আছে এবং এটা দ্বিতীয় তলা থেকে সপ্তম তলা অবধি বিস্তারিত।[১১] ৪০৫ বর্গ ফুট বিস্তারিত এক্সিকিউটিভ ক্লাব ঘর গুলো তৃতীয় তলা থেকে এগারো তলা অবধি প্রথম উইং এ রয়েছে। হোটেলটিতে মোট ১০টি খাদ্য ও পানীয় গণ্তব্যস্থল আছে যেমন পেশাবারী, রয়াল ভেগা, মাদ্রাস প্যাভিলিয়ান, ক্যাফে মের্কারা, নাটমেগ, প্যান এশিয়ান, ইত্যাদি। হোটেলটিতে আউটডোর পুল, ৩টে উইং এ জিম এর ব্যবস্থা, জাকুজি, স্পা এবং একটি শপিং এর এলাকা সহ আরও অনেক অবসর সুবিধার ব্যবস্থাপনা আছে। হোটেলটিতে ৩টে সুইমিং পুল আছে যেগুলো ব্যাঙ্কেট হলের উপর অবস্থিত।[১২]
হোটেলের বাণিজ্যিক সুবিধার মধ্যে রেস্টুরেন্ট, হেল্থ স্পা, ৩০,০০০ বর্গ ফুটের ওপর তৈরী করা একটি ব্যাঙ্কেট হল আছে যেখানে ৬০০ অতিথির ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব। এ ছাড়াও একটি প্রদর্শনী স্থান, একটি ২,৬২৫ বর্গ ফুট বড় প্রেক্ষাগৃহ, ৪টে মিটিং রুম, ১০০ টি অতিথি আসন সম্পন্ন একটি প্রাইভেট মাল্টিপ্লেক্স এবং ১,০০০ গাড়ির জন্য ভূগর্ভস্থ পার্কিং এর ব্যবস্থা আছে এখানে।[১৩] এছাড়াও প্রাথমিকভাবে, হোটেলের ছাদের উপর একটি হেলিপ্যাডে অবতরণ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হযেছিল যেটা পরে অক্টোবর, ২০১১ সালে খারিজ হয়ে যায়।[১৪]
ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সালে হোটেলটিকে ৫ তারার তকমা দেওয়া হয় যেটা প্রাকৃতিক সমবায় ভবন গুলোর মধ্যে দেওয়া সর্বোচ্চ জাতীয় মূল্যনির্ধারণ এবং এই পুরস্কারে সম্মানিত করেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি, প্রণব মুখার্জী।[৮] হোটেলটা তার দুটো রেস্তোরাঁর জন্য টাইমস ফুড গাইড পুরস্কার ও পায়।