আকিলিস পাপাপেত্রু | |
---|---|
জন্ম | আকিলিস পাপাপেত্রু ২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৭ ইরাক্লেইয়া সেরেস, সালোনিকা ভিলায়েত, অটোম্যান সাম্রাজ্য (বর্তমানে ইরাক্লেইয়া সেরেস, গ্রিস) |
মৃত্যু | আগস্ট ১২, ১৯৯৭ | (বয়স ৯০)
নাগরিকত্ব | গ্রিস, ফ্রান্স |
মাতৃশিক্ষায়তন | অ্যাথেন্স জাতীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | মাথিসন-পাপাপেত্রু-ডিক্সন সমীকরণ, মজুমদার-পাপাপেত্রু সমাধান,ভাইল-লুইস-পাপাপেত্রু ভূস্থানাঙ্ক |
দাম্পত্য সঙ্গী | কউলা |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা সাধারণ আপেক্ষিকতা |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | অ্যাথেন্স জাতীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ডাবলিন উচ্চশিক্ষা ইন্সটিটিউট, ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়, হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বার্লিন |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | পল পিটার এওয়াল্ড |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | হান্স ইউরগেন ত্রেদার, রদলফো গাম্বিনি |
আকিলিস পাপাপেত্রু (গ্রিক: Αχιλλέας Νικολάου Παπαπέτρου; ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৭ – ১২ আগস্ট, ১৯৯৭) একজন গ্রিক তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। তিনি মাথিসন-পাপাপেত্রু-ডিক্সন সমীকরণ[১], মজুমদার-পাপাপেত্রু সমাধান[২] এবং মহাকর্ষ তত্ত্বের ভাইল-লুইস-পাপাপেত্রু ভূস্থানাঙ্কের জন্য পরিচিত।
তিনি আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণের উপর কাজ করেছেন। তিনি অনেকদিন ঘুরন্ত বস্তুর সমাধান বের করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে, সেই সমাধান পরবর্তীতে রয় কের বের করেছিলেন।[৩] পাপাপেত্রু তখন প্রথম বিজ্ঞানী ছিলেন যিনি কেরের যুগান্তকারী সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।[৪][৫]
পাপাপেত্রু ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৭ তারিখে উত্তর গ্রিসের (মেসিডোনিয়া প্রদেশ) ইরাক্লেইয়া সেরেসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তার পরিবার সেরেস থেকে বিতাড়িত হয়েছিল, তবে যুদ্ধের পর তারা ফিরে আসে।
১৯২৫ সাল থেকে তিনি অ্যাথেন্স জাতীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্র প্রকৌশল ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল অধ্যয়ন করেছিলেন। তিনি ১৯৩০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছিলেন। শিক্ষার্থী থাকাকালীন তিনি গণিত বিভাগের সহকারী ছিলেন এবং প্রকৌশল হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন।[৬][৭]
১৯৩৪ সালে স্তুতগার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির মাধ্যমে পাপাপেত্রু পল পিটার এওয়াল্ডের অধীনে কঠিন অবস্থা পদার্থবিজ্ঞানর উপর স্নাতক শিক্ষা শুরু করেন। এভাবেই তিনি পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গবেষণা শুরু করেছিলেন। সেখানে তিনি হেল্মাত হনালের সাথে কাজ করেছিলেন। সাধারণ আপেক্ষিকতায় পাপাপেত্রুর আগ্রহ জাগাতে হেল্মাত হনালের অবদান রয়েছে। ১৯৩৫ সালে পাপাপেত্রু সেখানে Investigations on the dendrite growth of crystals এর উপর থিসিস করার মাধ্যমে পিএইচডি অর্জন করেন।[৮] এরপর ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের সহকারী হিসেবে তিনি অ্যাথেন্স জাতীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান।
১৯৪০-১৯৪৬ সালে তিনি অ্যাথেন্স জাতীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছিলেন। সেখানে তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতার উপর বক্তৃতা দিয়েছিলেন। গ্রিসে জার্মান অধিকরণের সময় তিনি একাকী কাজ করেছিলেন। বামপন্থি প্রতিরোধ আন্দোলনের সাথে সহানুভূতি প্রকাশ করায় যুদ্ধের পর তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এর ফলে, ১৯৪৬ সালে তিনি এরভিন শ্রোডিঙারের আহ্বানে ডাবলিন উচ্চশিক্ষা ইন্সটিটিউটে যোগদান করেন।
১৯৪৮ সাল থেকে তিনি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন। সেখানে লিওন রসেনফেল্ড তার সহকর্মী ছিলেন। সেখানে তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতার গতির সমীকরণের ক্ষেত্রে কাজ করেছিলেন।
১৯৫২-১৯৬১ সাল পর্যন্ত তিনি বার্লিনের জার্মান বিজ্ঞান একাডেমির গণিত গবেষণা ইন্সটিটিউটে গবেষক ছিলেন। ১৯৫৭ সাল থেকে তিনি হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন। সেখানে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে গেঅর্গ দাউতকোর্ট ও হান্স ইউরগেন ত্রেদার উল্লেখযোগ্য।
১৯৬০-১৯৬১ সালের মধ্যে তিনি একদল সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের বিজ্ঞানীদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। ১৯৬২ সাল থেকে তিনি পারিসের ইন্সটিটিউট হেনরি পইনকেয়ারে ছিলেন। একইসময়ে তিনি ফরাসি জাতীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা পরিচালক ছিলেন। তিনি মহাকর্ষীয় বিকিরণ সনাক্তকারী ক্ষেত্রে স্থিতিস্থাপক তরঙ্গ, স্থির আক্ষিক প্রতিসাম্য মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র এবং মহাকর্ষীয় ও তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ ক্ষেত্রসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজ করেছেন।
১৯৭৫ সালে তিনি ইন্সটিটিউট হেনরি পইনকেয়ারের তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা গবেষণাগারের পরিচালক হন। ১৯৭৭ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এরপরও তিনি বৈজ্ঞানিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৪-৬৫), ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭০-৭১) এবং বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শক বিজ্ঞানী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ফরাসি নাগরিকতা গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সাল থেকে তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতা ও মহাকর্ষ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন এর আয়োজক কমিটির সদস্য ছিলেন।
তিনি ১২ আগস্ট ১৯৯৭ তারিখে প্যারিসে মৃত্যুবরণ করেন।[৯]
আকিলিস পাপাপেত্রু দুটি বই প্রকাশ করেছেন।
তিনি শতাধিক নিবন্ধ প্রকাশ করেছেণ।