লেখক | হ্যারিয়েট বিচার স্টো |
---|---|
মূল শিরোনাম | Uncle Tom's Cabin; or, Life Among the Lowly |
অঙ্কনশিল্পী | হ্যামেট বিলিংস (১ম সংস্করণ) |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
ধরন | উপন্যাস |
পরবর্তী বই | আ কি টু আঙ্কল টম্স কেবিন (১৮৫৩) |
আঙ্কল টমস্ কেবিন (ইংরেজি: Uncle Tom's Cabin) হ্যারিয়েট বিচার স্টো লিখিত কালজয়ী উপন্যাস।[১][২] ধারাবাহিকভাবে পত্রিকায় ছাপা হওয়ার পর ১৮৫২ সালের ২০শে মার্চ এই উপন্যাসটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। এই বইয়ের মূল উপজীব্য বিষয় হচ্ছে তৎকালীন আমেরিকার দাসপ্রথা।[৩]
স্টো ,কানেক্টিকাটে জন্ম নেওয়া একজন হার্টফোর্ড ফিমেল সেমিনারির শিক্ষীকা ও একজন সক্রিয় দাসপ্রথা বিরোধী বাক্তি , আঙ্কেল টম চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন, দীর্ঘকাল থেকে নিপীড়িত কৃষ্ণাঙ্গ দাস যাকে কেন্দ্র করে গল্পের অন্যান্য চরিত্রগুলো বিকশিত হয়েছে। এই অনুভূতিসম্পন্ন উপন্যাসটি দাসপ্রথার বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরে যখন আরও জোর প্রদান করে যে খ্রিস্টপ্রেম দাসত্ব প্রতিরোধ করতে পারে। [৪][৫][৬]
আঙ্কল টমস কেবিন ১৯ শতকের সর্বচ্চ বিক্রিত উপন্যাসের বই এবং পবিত্র বাইবেলের পর সব থেকে বেশি বিক্রিত বই।[৭][৮] ১৮৫০ সালে দাসপ্রথা বিলপের এই বই-এর ভূমিকা গুরুত্বপুর্ন মনে করা হয়[৯] এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই বইয়ের প্রায় ৩ লক্ষ কপি এবং যুক্তরাজ্যে প্রায় ১০ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে। আটটি মূদ্রণ যন্ত্র একাধারে কাজ করেও এই বইয়ের চাহিদা মেটাতে ব্যার্থ হয়েছিলো। প্রকাশের ৩ বছর পর ১৮৫৫ সালে এটিকে "বুক অব দ্যা ডে" ঘোষণা করা হয়।[১০] এই বইয়ের প্রভাব এতই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় যে, আব্রাহাম লিঙ্কন স্টো-এর সাথে দেখা করে বলেছিলেন,"তাইলে এই ক্ষুদ্র সেই নারী যে এই মহান যুদ্ধ শুরু করেছিলো।"[১১]
এই বইয়ের মাধ্যমে কৃষ্ণাঙ্গদের সম্পর্কে অনেক প্রচলিত ধারণা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।[১২] এর মধ্যে রয়েছে স্নেহপুর্ন, কৃষ্ণাঙ্গ ধাত্রী, কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের পিকানিন্যানি; আঙ্কল টমসের রুপে দেখানো হয়েছে একজন দায়িত্ববান, কর্মনিষ্ঠ, অনুগত দাস। সাম্প্রতিককালে, বইটির নেতিবাচক সমালোচনা বইটির "দাসপ্রথা বিরধী" চেহারাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।[১৩]
স্টো, কানেকটিকাটে জন্মনেওয়া হার্ডফোর্ট মহিলা সেমিনারির একজন শিক্ষিকা এবং দাসপ্রথা বিরোধী এক্টিভিস্ট, দ্বিতীয় পলাতক দাস আইনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ১৮৫০ সালে উপন্যাসতি লেখেন। বইটির কিয়দাংশ মায়িনের ব্রান্সউইকে লেখা হয়েছিলো, যেখানে স্টো-এর স্বামী কেলভিন এলিস স্টো তাঁর শিক্ষাকেন্দ্র বওডুইন কলেজে শিক্ষারত ছিলেন।
স্টো ১৮৪৯ সালের জোসিয়া হেনসন নামের কানাডা নিবাসী এক সাবেক দাসের জবানবন্দী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বইটি লেখেন। হেনসন, আইজ্যাক রাইলির মালিকানাধীন ৩,৭০০ একরের খামারে কাজ করতেন। খামারতি মেরিল্যান্দের উত্তর বেথসেবায় অবস্থিত ছিলো।[১৪] হেনসন ১৮৩০ সালে উচ্চ কানাডা (বর্তমান অন্তারিও) প্রদেশে পালিয়ে যান। তিনি সেখানে অন্য দাসদের বসতি স্থাপনে ও আন্মনির্ভর হতে সহায়তা করেন। সেখানেই হেনসন নিজের স্মৃতিকথা লেখেন। ১৮৫৩ সালে স্টো হেনসন দ্বারা অনুপ্রাণিত হওয়ার কথা স্বীকার করেন।[১৫] স্টো-এর উপন্যাস বহুল বিক্রিত হওয়ার পর হেনসন তাঁর স্মৃতিকথা পুণঃমূদ্রন করেন, এবং ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে লেকচার দিতে ভ্রমণ করেন। স্টো এর লেখা থেকেই হেনসনের অন্তারিওর বাড়ির নামকরণ হয় "আঙ্কল টমস কেবিন"। হেনসনের মূল কেবিন (রাইলির মালিকানাধীন) এর বর্তমানে কোন অস্তিত্ব নেই, এটি বর্তমানে একতি রান্নাঘর যা ২০০৬ সালে মেরিল্যান্দের মন্টগোমারি কাউন্টি কিনে নেয়।[১৬][১৭] ২০২০ সালে এখানে একটি জাদুঘর স্থাপন করা হয়।
উপন্যাসের অনেক তথ্য থিওডর ডোয়াইট ওয়েল্ড ও গ্রিমকে বোনদের লেখা থেকে নেওয়া হয়েছে।[১৮] স্টো-এর বয়ান মতাবেক তিনি অনেক তথ্যই পলাতক দাসদের জবানবন্দী থেকে নিয়েছেন। ১৮৫৩ সালে স্টো বই-এর নানান তথ্যসূত্র ও অনুপ্রেরণা উল্লেখ করে একটি বই প্রকাশ করেন।[১৯] যদিও পরে প্রমাণিত হয়েছে স্টো তাঁর উল্লেখকৃত বইয়ের অনেকগুলোই পড়েননি।
আঙ্কল টমস কেবিন প্রথম "দি ন্যাশনাল এরা" নামক একটি দাসপ্রথা বিরোধী সাময়ীকিতে ৪০ সপ্তাহ ব্যাপী সিরিয়াল হিসেবে প্রকাশিত হয়। ১৮৫১ সালের ৫ জুন এটি প্রথম প্রকাশিত হয়।[২০] প্রথমে একটি সংক্ষিপ্ত লেখা হিসেবে কয়েক সপ্তাহ চালানোর জন্য এটি লেখা হয়। স্টো লেখাটি বর্ধিত করেন এবং সাথে সাথেই তা লোকপ্রিয় হয়ে ওঠে। এর জনপ্রিয়তা দেখে প্রকাশন জন পি. জোয়েট স্টো এর সাথে এতিকে বই হিসেবে প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করেন। এটি বই হিসেবে জনপ্রিয় হবে কিনা সে বিষয়ে স্টো এর সন্দেহ থাকলেও পরে তিনি বই প্রকাশে সম্মতি দেন।
প্রকাশক প্রথাভেঙ্গে হ্যামেট বিলিং-কে দিয়ে একসাথে প্রথম ছয় পাতার চিত্রমুদ্রণ করান।[২১] ১৮৫২ সালের ২০ মার্চ এটি বই হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয় এবং প্রথম দিনেই ৩ হাজার কপি বিক্রি হয়। খুব তাড়াতাড়ি সকল মুদ্রিত বই বিক্রি হয়ে যায়। এরপর বাজারে আর কয়েকটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়।(এরমধ্যে ছিলো হ্যামেট বিলিং এর আঁকা ১১৭ পাতার চিত্র সম্বলিত সংস্ককরণ)[২২]
প্রকাশের প্রথম বছরেই ৩ লক্ষ কপি বিক্রিত হয়। এরপর কয়েক বছর বইটির মুদ্রণ বন্ধ ছিলো। জোয়েট ব্যাবসা থেকে বাহির হয়ে পরেন। এবং ১৮৬২ এর নভেম্বরে টিকনর এন্ড ফিল্ড পুণঃমুদ্রণ করলে এর পুণরায় চাহিদা দেখা দেয়।[২৩]
বইটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হতে থাকে। আমেরিকাতে বাইবেলের পর এটিই ছিলো দ্বিতীয় সর্বচ্চো বিক্তিত বই। ১৮৫২ সালে যুক্তরাজ্যে বইটির ২ লক্ষ কপি বিক্রিত হয়।[২৪]
বইটির কাহিনী শুরু হয় ঋণের ভারে লোকসানে থাকা আর্থার শেলবি নামক এক কেন্টাকির খামার মালিককে নিয়ে। যদিও শেলবি দম্পতির দাসদের সাথে ঋদ্যতা পূর্ণ সম্পর্ক ছিলো তবুও লোকশান কমাতে মি. শেলবি ঠিক করেন তিনি দুইজন দাসকে মি. হার্লির কাছে বিক্রি করবেন, যাদের একজন আঙ্কল টমস, স্ত্রী ও সন্তান আছে এমন এক মধ্যবয়স্ক দাস এবং আরেকজন হ্যারি, এমিলি শেলবির পরিচারিকা এলিজার সন্তান। এলিজা এতে ক্ষুব্ধ হয়, কারণ তাঁকে ওয়াদা করা হয়েছিলো তাঁর ছেলেকে বিক্রি করা হবে না। এমিলির ছেলে জর্জ শেলবি টমকে যেতে দিতে চায়না, কারণ তাঁর কাছে টম একজন বন্ধু ও পরামর্শদাতা।
এলিজা আড়াল থেকে মি. ও মিসেস. শেলবিকে তম ও হ্যারিকে বিক্রির কথা বলতে শোনে এবং পালানোর প্রতিজ্ঞা করে। উপন্যাসে বলা হয়েছে এলিজা পালাতে চায় কারণ সে তাঁর একমাত্র সন্তানকে হারানোর ভয় পায় (তাঁর আগের দুই সন্তান জন্মদানের সময় মারা যায়)। এলিজা রাতের আধারে তাঁর মালকিনের প্রতি ক্ষমা চেয়ে লেখা একটা চিঠি রেখে পালিয়ে যায়।
আর টম বিক্রিত হওয়ার পর, মি. হার্লি তাঁকে মিসিসিপি নদীতে একটি নৌকায় নিয়ে যায়, তাঁকে দাসবাজারে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। নৌকায় টমের সাথে ইভা নামের এক দেবুতূল্য ছোট মেয়ের দেখা হয় এবং তাদের মাঝে বন্ধুত্ব হয়। ইভা নদীতে পরে যায় এবং টম তাঁকে বাচাতে নদীতে ঝাপ দেয়। কৃতজ্ঞতাস্বরূপ, ইভার বাবা অগাস্টিন সেন্ট ক্লেয়ার টমকে কিনে নেয় এবং তাঁকে নিজের নিউ অর্লিয়ন্সের বাড়িতে কাজ দেয়। ইভা ও টমের মাঝে তাদের গভীর খ্রিস্ট ধর্ম চেতনার ফলে নিবিড় সম্পর্ক গরে ওঠে।
পালানোর সময় এলিজার সাথে তাঁর স্বামী জর্জ হ্যারিসের দেখা হয়, যে আগেই পালিয়েছিলো। তাঁরা কানাডাতে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু টম লকার নামে এক স্লেভ হান্টার যাকে মি.হার্লি ভাড়া করেছিলো সে ওদের খোজ পেয়ে যায়। শেষপর্যন্ত লকার আর তাদের দলবল এলিজার পরিবাররকে আটকে ফেলতে সক্ষম হয়। জর্জ লকারকে গুলি করতে বাধ্য হয়। লকার মারা যেতে পারে ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে এলিজা জর্জকে লকারকে কোয়াকারে সেবাসুশ্রুজার জন্য নিয়ে যেতে রাজি করায়।
নিউ অর্লিয়ন্সে, সেন্ট ক্লেয়ার দাসত্ব নিয়ে তাঁর উত্তরের কাজিন ওফেলিয়ার সাথে তর্ক করে। ওফেলিয়া দাসপ্রথার বিরোধী হলেও তিনি কৃষ্ণাঙ্গদের বিষয়ে সংস্কারগ্রস্থ। সেন্ট ক্লেয়ার বিশ্বাস করেন তিনি পক্ষপাতদুষ্ট নন যদিও তিনি দাস মালিক। নিজের কথা প্রমাণ করতে তিনি টপসি নামে এক কালো তরুন দাসকে ক্রয় করেন এবং ওফেলিয়াকে তাঁকে শিক্ষা দিতে বলেন।
দুই বছর পর, ইভা প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে। মৃত্যুর আগে ইভা স্বর্গের একটি দৃশ্য দেখতে পায়, যা সে তাঁর আশেপাশের লোকদেরকে বলে। ইভার মৃত্যুতে সকলে নিজেদের চরিত্র সংশোধন করার প্রতিজ্ঞা করে, ওফেলিয়া তাঁর কুসংস্কার পরিত্যাগের, টপসি নিজেকে আরো উন্নত করার এবং সেন্ট ক্লেয়ার টমকে মুক্ত করার প্রতিজ্ঞা করে।
নিজের ও্যাদা পুর্ন করার আগেই সেন্ট ক্লেয়ার একটি সরাইখানার বাইরে ছুরিকাঘাতে নিহন হন। তাঁর স্ত্রী স্বামীর প্রতিজ্ঞা ত্যাগ করে এবং টমকে নিলামে তোলে। যেখানে সাইমন লেগ্রি নামের এক ধুর্ত খামার মালিক তাঁকে কিনে নেয়। টমকে আরেক নতুন দাসী এমিলিনের সাথে লুইজিয়ানাতে নিয়ে যাওয়া হয়। এমিলিনকে লেগ্রি যৌনদাসী হিসেবে ব্যাবহারের উদ্দেশ্যে ক্রয় করে।
টম অন্য দাসদের চাবুকাঘাত করতে অস্বীকৃতি জানালে লেগ্রি টমকে অপছন্দ করতে শুরু করে। লেগ্রি টমকে চাবুক দিয়ে পেটায় যাতে টমের ইশ্বরের প্রতি আস্থা ভেঙ্গে পড়ে। অত্যাচারের পরও টম বাইবেল পড়া ছাড়তে অস্বিকৃতি জানায় এবং অন্য দাসদের সহায়তা করতে থাকে। খামারে থাকাকালীন, তমের ক্যাসি নামের আরেক দাসির সাথে দেখা হয়। ক্যাসিকে লেগ্রি যৌন দাসি হিসেবে ব্যাবহার করতো। ক্যাসি টমকে তাঁর গল্প বলে। তাঁকে তাঁর ছেলে ও মেয়ে থেকে আলাদা করা হয়েছিলো তাদের বিক্রি করার সময়। আর আরেকটি সন্তান হয়েছিলো, কিন্তু সে তাঁকে হত্যা করে, কারণ তাঁর পক্ষে আবার সন্তানের সাথে বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ভোগ করা সম্ভব ছিল না।
কোয়াকারে সুস্থ হয়ে টম লকারের চারিত্রিক পরিবর্তন হয়। সে জর্জ, এলিজা ও হ্যারিকে এরি হৃদ পার হয়ে কানাডা যেতে এবং মুক্ত হতে সহায়তা করে। লুইজিয়ানাতে খামারের কষ্টে আশাহীনতায় মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে। যাইহোক সে যিশু ও ইভার দর্শন পায়। যা তাঁর বিশ্বাসকে পুণরোজ্জিবিত করে এবং সে মৃত্যু অবধি অটল খ্রিস্টান থাকে। সে ক্যাসিকে পালিয়ে যেতে উৎসাহ দেয়, এবং ক্যাসি এমিলিনকে নিয়ে পালিয়ে যায়। টম ক্যাসি আর এমিলিন কোথায় পালিয়েছে বলতে অস্বীকার করলে লেগ্রি তাঁর ওভারশিয়ারদের তমকে হত্যার নির্দেশ দেয়। মৃত্যুকালে টম তাঁর ওভারশিয়ারদের ক্ষমা করে দেয়, যারা বর্বরের মত তাঁকে পিটিয়েছিলো। টমের চারিত্রিক মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে হত্যাকারী ওভারশিয়ারদ্বয় খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করে। জর্জ শেববি (আর্থার শেলবির ছেলে) তমের স্বাধীনতা ক্রয় করতে উপস্থিত হয়, কিন্তু টমের সাথে দেখা হওয়ার কিছুক্ষণের মাঝেই টম মারা যায়।
স্বাধীনতার পথে নিজেদের নৌযাত্রায় ক্যাসি আর এমিলিনের দেখা হয় জর্জের বোন মাদাম দে থক্সের সাথে এবং তাকেও নিজেদের সাথে কানাডাতে নিয়ে যায়। মাদাম দে থক্স এবং জর্জ হ্যারিস শৈশবে আলাদা হয়ে গিয়েছিলো। ক্যাসি আবিষ্কার করে এলিজাই তাঁর হারানো মেয়ে যাকে শৈশবে বিক্রি করা হয়েছিলো। তারপর তাদের পরিবার একত্রিত হয় এবং ফ্রান্স হয়ে তাঁরা লাইবেরিয়াতে (সাবেক দাসদের জন্য গড়েতলা আফ্রিকান দেশ) পৌছায়। জর্জ শেলবি কেন্টাকির খামারে ফিরে যায়, এবং সব দাসদের মুক্ত করে দেয়। জর্জ শেলবি টমের কেবিনের দিকে তাকিয়ে সবাইকে টমের বলিদান মনে রাখতে বলে। সে আঙ্কল টমের মতো ধার্মিক খ্রিস্ট জীবন যাবনের সিদ্ধান্ত নেয়।
আঙ্কেল টম উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। যাকে প্রথমে এক অভিজাত, অতিসহিষ্ণু খ্রিস্টান হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। সাম্প্রতিকালে তাঁর নাম শেতাঙ্গদের কাছে বিক্রিত হয়ে যাওয়া আফ্রিকান-আমেরিকানদের বিশেষণ হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে। স্টো তাঁর লেখায় টমকে আদর্শ অভিজাত চরিত্রের অধিকারী হিসেবে দেখিয়েছেন।
এলিজা মিসেস শেলবির ব্যক্তিগত দাসী। যে তাঁর ৫ বছরের ছেলেকে (যাকে হার্লির কাছে বিক্রি করা হয়েছিলো) নিয়ে কানাডায় পালিয়ে যায়। ওহায়তে তাঁর সাথে তাঁর স্বামী জর্জের দেখা হয়। তাঁরা একসাথে প্রথমে কানাডা হয়ে ফ্রান্সে এবং শেষমেশ লাইবেরিয়াতে পৌছায়।
ইভানজেলিন সেন্ট ক্লেয়ার (বা ইভা) অগাস্টিন সেন্ট ক্লেয়ারের কন্যা। টমের সাথে ইভার নৌকায় দেখা হয়। ইভার মৃত্যু সকলকে নিজেদের চরিত্রকে উন্নত করার অনুপ্রেরণা জোগায়।
সাইমন লেগ্রি এক অত্যাচারি দাস মালিক। উপন্যাসের প্রধান খল চরিত্র। তাঁর নির্দেশে টমকে হত্যা করা হয়।
* টপসি- তরুণী দাস। বাহ্যিক জ্ঞানশূন্য। ইভার ভালোবাসা তাঁকে পরিবর্তিত করে।
দাসপ্রথা কুৎসিত ও দানবীয় রূপটিই এই উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু। স্টো এখানে আরো কিছু বিষয়, যেমনঃ মাতৃত্বের মূল্যবোধ, খ্রিস্টীয় ক্ষমা সংস্কৃত্ তুলে ধরেছেন, কিন্তু সেগুলো মূখ্য হয়ে ওঠেনি। স্টো দেখিয়েছেন দাসপ্রথা কীভাবে একটি পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
আঙ্কল টমস কেবিনের বই, নিদর্শন এবং দুর্লভ কিছু বস্তু ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এলবার্ট এন্ড শার্লি স্মল স্পেশাল কালেকশন লাইব্রেরি ও অস্টিনের টেস্কাস বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যারি র্যানসম সেন্টারে সংগৃহীত আছে।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |