আধুনিক পেন্টাথলন অলিম্পিক ক্রীড়ার অন্যতম ক্রীড়াবিষয়। অসি চালনা, ২০০ মিটার মুক্ত সাঁতার, শো জাম্পিং, চূড়ান্ত পর্যায়ের সম্মিলিত পিস্তল শ্যুটিং ও ৩২০০ মিটার ক্রস-কান্ট্রি দৌড় - এ পাঁচটি সম্পূর্ণ পৃথক বিষয় নিয়ে আধুনিক প্যান্টাথলন ক্রীড়া গঠিত।[১] ১৯১২ সাল থেকে এর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক থাকা স্বত্ত্বেও অদ্যাবধি অলিম্পিক গেমসের অন্যতম বিষয় হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। এছাড়াও, ১৯৪৯ সাল থেকে সাংবার্ষিকভিত্তিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে, এ ক্রীড়া বিষয়টি চার থেকে পাঁচদিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাস্বত্ত্বেও, ১৯৯৬ সালে দর্শকবান্ধবের লক্ষ্যে একদিনের মধ্যে সম্পন্নের চেষ্টা চালানো হয়।[১] অলিম্পিকের ইতিহাসে দীর্ঘ সময় অবস্থানের পরও আধুনিক অলিম্পিক গেমসে এর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বেশ কয়েকবার পরীক্ষার কাতারে ফালানো হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে লুজানেতে অনুষ্ঠিত আইওসির সাধারণ সভায় আধুনিক পেন্টাথলনকে অন্য ২৫টি গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়ার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের অলিম্পিক পর্যন্ত অলিম্পিক পরিকল্পনার আওতায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ইউনিয়ন ইন্তারন্যাশিওনাল দ্য পেন্টাথলন মডার্ন (ইউআইপিএম) এ ক্রীড়ার প্রধান পরিচালনা পরিষদ। বিশ্বের সবক'টি মহাদেশের ৯০-এর অধিক দেশের সংস্থাগুলোকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় নিয়ন্ত্রণ করছে।[২]
আধুনিক পেন্টাথলনের উৎপত্তি ইতিহাস অজানা রয়েছে। অন্যদিকে, আধুনিক অলিম্পিক গেমসের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারন পিয়ের দ্য কুবেরত্যাঁ এ ক্রীড়ার উদ্ভাবকরূপে নিজেকে দাবী করেছেন।[১] অন্যদিকে, ১৯১২ অলিম্পিকের সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি ভিক্টর বাল্ক যুক্তি সহকারে দেখিয়েছেন যে, সুয়েডীয় সামরিক বাহিনীতে দীর্ঘদিনের প্রচলিত বহু-ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সম্পৃক্ত বিষয়গুলোকে চলনসই মানদণ্ডের আকারে আধুনিক পেন্টাথলনে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন।[৩] গ্রিক শব্দ 'পেন্টাথলন' থেকে এ নামকরণ হয়েছে। এর শাব্দিক অর্থ দাঁড়ায় 'পাঁচ বিষয়ের প্রতিযোগিতা'।[১] কিন্তু প্রাচীন অলিম্পিকে ব্যবহৃত প্রকৃত পেন্টাথলনের সাথে আধুনিক পেন্টাথলনের বেশ পার্থক্য রয়েছে। ঐ সময়ে স্ট্যাডিওন ফুট রেস, কুস্তি, দীর্ঘলম্ফ, বর্শা ও চাকতি নিক্ষেপ বিষয় ছিল।
১৯১২ সালের অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো একক ক্রীড়া হিসেবে অন্তর্ভুক্তি ঘটে। সুয়েডীয় ক্রীড়াবিদ গস্তা লিলিহুক শিরোপা জয় করেন। ১৯৫২ সালে দলগত ক্রীড়া এতে যুক্ত হয়। কিন্তু ১৯৯২ সালে এটি বাদ পড়ে। আধুনিক পেন্টাথলন ফেডারেশনের সভাপতি ও জার্মান অধ্যাপক উইলহেম হেঞ্জের ব্যাপক প্রচেষ্টার পর ১৯৭৭ সালে স্যান এন্টোনিওতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ও ১৯৮১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে।[৪] ২০০০ সালে মহিলাদের বিষয়ও যুক্ত করা হয়।[১] প্রত্যেক বছরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় পুরুষ ও মহিলাদের ব্যক্তিগত ও দলগতসহ রিলে বিষয় রয়েছে। ২০১০ সাল থেকে মিশ্র রিলে বিষয়েরও সংযুক্তি ঘটেছে।
উইকিমিডিয়া কমন্সে আধুনিক পেন্টাথলন সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।