ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | আনহেল ফাবিয়ান দি মারিয়া এর্নান্দেজ | |||||||||||||||||||
জন্ম | ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ | |||||||||||||||||||
জন্ম স্থান | রোজারিও, আর্জেন্টিনা | |||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৭৮ মিটার (৫ ফুট ১০ ইঞ্চি)[১] | |||||||||||||||||||
মাঠে অবস্থান | মধ্যমাঠের খেলোয়াড় | |||||||||||||||||||
ক্লাবের তথ্য | ||||||||||||||||||||
বর্তমান দল | ইয়ুভেন্তুস | |||||||||||||||||||
জার্সি নম্বর | ২২ | |||||||||||||||||||
যুব পর্যায় | ||||||||||||||||||||
২০০১–২০০৫ | রোজারিও সেন্ট্রাল | |||||||||||||||||||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | ||||||||||||||||||||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) | |||||||||||||||||
২০০৫–২০০৭ | রোজারিও সেন্ট্রাল | ৩৫ | (৬) | |||||||||||||||||
২০০৭–২০১০ | বেনফিকা | ৭৬ | (৭) | |||||||||||||||||
২০১০–২০১৪ | রিয়াল মাদ্রিদ | ১২৪ | (২২) | |||||||||||||||||
২০১৪–২০১৫ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ২৭ | (৩) | |||||||||||||||||
২০১৫–২০২২ | পারি সাঁ-জের্মাঁ | ১৯৭ | (৫৬) | |||||||||||||||||
২০২২– | ইয়ুভেন্তুস | ০ | (০) | |||||||||||||||||
জাতীয় দল‡ | ||||||||||||||||||||
২০০৭ | আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব ২০ | ১৩ | (৩) | |||||||||||||||||
২০০৮ | আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব ২৩ | ৬ | (২) | |||||||||||||||||
২০০৮– | আর্জেন্টিনা | ১২২ | (২৫) | |||||||||||||||||
অর্জন ও সম্মাননা
| ||||||||||||||||||||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ২১ মে ২০২২ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১ জুন ২০২২ তারিখ অনুযায়ী সঠিক। |
আনহেল ফাবিয়ান দি মারিয়া এর্নান্দেজ (স্পেনীয়: Ángel Fabián di María Hernández; জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮) একজন আর্জেন্টাইন ফুটবলার যিনি বর্তমানে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে ইতালির পেশাদার ফুটবলের শীর্ষ স্তর সেরিয়ে আ-এর ক্লাব ইয়ুভেন্তুস এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলে থাকেন। তার কয়েকটি ডাকনাম রয়েছে: ‘‘এল আনহেলিতো’’, ‘‘দি মাহিয়া’’, ‘‘এল ফ্লাকো’’, ‘‘এল পিবিতো’’ এবং ‘‘ফিদেও’’।[২]
২০০৫ সালে রোজারিও সেন্ট্রালে অভিষেকের মাধ্যমে দি মারিয়া তার পেশাদারী ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০০৭ সালে তিনি রাশিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব রুবিন কাজানে খেলার সুযোগ পান। প্রথম রাজি হলেও, পরে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।[৩] ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে দূর্দান্ত নৈপূন্যের কারণে তিনি বিভিন্ন ইউরোপীয় দলের নজরে আসেন এবং অবশেষে বেনফিকাতে যোগদান করেন।
২০০৭ সালের জুলাইয়ে বেনফিকাতে যোগ দেন দি মারিয়া। খুব দ্রুতই তিনি তার সামর্থের জানান দেন। ২০০৯ সালের অক্টোবরে, দি মারিয়া বেনফিকার সাথে ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নতুন করে চুক্তি সাক্ষর করেন। চুক্তিতে তার মূল্য রাখা হয় ৪০ মিলিয়ন ইউরো।[৪] এর কয়েকদিন পর দিয়েগো মারাদোনা তাকে আর্জেন্টিনার পরবর্তী সুপারস্টার বলে ঘোষণা করেন।[৫]
২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, লেইক্সোস এসসি এর বিপক্ষে দি মারিয়া তার প্রথম হ্যাট্রিক করেন। খেলায় বেনফিকা ৪–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৬]
৫ জুলাই, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, দি মারিয়া আবার বেনফিকাতে যোগ দেন।[৭]
২০১০ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন দি মারিয়া। ৭ জুলাই তিনি বুয়েনোস আইরেস থেকে সরাসরি মাদ্রিদে পৌছান[৮] এবং ৮ জুলাই মেডিকেল টেস্টে উত্তীর্ণ হন।[৯]
২০১০ সালের ৪ আগস্ট, ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় তার অভিষেক হয়। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–২ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[১০] ২২ আগস্ট হারকিউলিসের বিপক্ষে আরেকটি প্রীতি খেলায় দি মারিয়া রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তার প্রথম গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[১১] প্রাক মৌসুমের শেষ খেলায় অ্যাটলেটিকো পেনারোলের বিপক্ষে দি মারিয়া একক নৈপূন্যে একটি গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ২–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[১২]
২৯ আগস্ট, মায়োর্কার বিপক্ষে লা লিগায় তার অভিষেক হয়। খেলাটি গোলশূন্য ড্র হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর, সোসিয়েদাদের বিপক্ষে খেলায় তিনি লিগে তার প্রথম গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ২–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[১৩] এর দশ দিন পর চ্যাম্পিয়নস লিগে অক্সারের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলার একমাত্র গোলটি করেন দি মারিয়া।[১৪] ১৯ ডিসেম্বর, সেভিয়ার বিপক্ষে তিনি একটি বিতর্কিত গোল করেন। ২২ ডিসেম্বর, লেভান্তের বিপক্ষে খেলায় তিনি করিম বেনজেমার দুইটি গোলে এবং ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর একটি গোলে সহায়তা করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৮–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। চ্যাম্পিয়নস লিগের রাউন্ড অব ১৬ এর দ্বিতীয় লেগের খেলায় অলিম্পিক লিওনাইসের বিপক্ষে দি মারিয়া একটি গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে এবং সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালে পৌছায়।
চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে টটেনহামের বিপক্ষেও দি মারিয়া একটি গোল করেন। ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল, কোপা দেল রে’র ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলায় অতিরিক্ত সময়ের ৩১তম মিনিটে তাকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। দি মারিয়ার সহায়তায় খেলার একমাত্র গোলটি করেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ কোপা দেল রে শিরোপা জেতে। এটিই ছিল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দি মারিয়ার প্রথম শিরোপা।
২০১১–১২ মৌসুমের প্রথম দিক দি মারিয়ার খুব একটা ভাল যায়নি। গ্রীষ্মকালীন বিরতির পর লিগের দ্রুততার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। তবে তিনি খুব দ্রুতই উন্নতি করতে থাকেন। ২০১১ সালের অক্টোবর থেকে কাকা এবং ওজিলের চেয়ে তিনিই ছিলেন জোসে মরিনহোর প্রথম পছন্দ।[১৫]
২০১১ সালের ২৭ নভেম্বর, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে দি মারিয়া ৬০ মিনিট খেলেন এবং একটি গোল করেন, রিয়াল মাদ্রিদ ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ৩ ডিসেম্বর, লা লিগায় স্পোর্তিং দি গিয়নের বিপক্ষে তিনি একটি গোল করেন এবং দলকে ৩–০ ব্যবধানে জয় এনে দেন।
এই মৌসুমে দি মারিয়া প্রথম গোল করেন ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার বিপক্ষে ২০১২ স্পেনীয় সুপার কাপের প্রথম লেগের খেলায়। ভিক্টর ভ্যালদেসের ভুলের সুযোগ নিয়ে খেলার ৮৫তম মিনিটে তিনি এই গোল করেন, যদিও খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–২ ব্যবধানে পরাজিত হয়।[১৬]
যদিও এই মৌসুম তার সেরা সময় ছিলনা, তবুও তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে জলে উঠেছিলেন। বিশেষ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর গোলে সহায়তা করেন। লিগে তিনি বেশ কিছু গোলে সহায়তা করেন। তিনি মোট ৪৬টি খেলায় মাঠে নামেন এবং ৮টি গোল করেন, যার মধ্যে ছিল আতলেতিকো মাদ্রিদ এবং মালাগার বিপক্ষে গোল।
২০০৭ সালে, আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব ২০ দলে জায়গা পান দি মারিয়া। ২০০৭ দক্ষিণ আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপেও তিনি আর্জেন্টিনা দলে জায়গা পান। প্রতিযোগিতায় তিনি তিনটি গোল করেন এবং আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয়।
২০০৮ সালের ২৮ জানুয়ারি, দি মারিয়া এবং তার কয়েকজন অনূর্ধ্ব ২০ সতীর্থ বেইজিং অলিম্পিকের দলে ডাক পান। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলার অতিরিক্ত সময়ে ১০৫তম মিনিটে লিওনেল মেসির পাস থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে জয়সূচক গোল করেন তিনি। খেলায় আর্জেন্টিনা ২–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ২৩ আগস্ট, প্রতিযোগিতার ফাইনালে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলার একমাত্র গোলটি করেন দি মারিয়া এবং টানা দ্বিতীয়বারের মত ফুটবলে অলিম্পিক স্বর্ণপদক জেতে আর্জেন্টিনা।[১৭][১৮]
২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের ২৩ সদস্যের স্কোয়াডে জায়গা পান দি মারিয়া। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট, দি মারিয়া তার ক্যারিয়ারে প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঐ প্রীতি খেলায় আর্জেন্টিনা ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[১৯]
২০১১ কোপা আমেরিকায় কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা পেনাল্টি শুটআউটে উরুগুয়ের কাছে হেরে যায়। এরপরে ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির কাছে অতিরিক্ত সময়ে ১-০ গোলে হেরে আর্জেন্টিনা বিদায় নেয়। এরপর, টানা দুই বছর ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে হতাশার সম্মুখীন হয় দল। ২০১৮ সালে ফিফা বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হেরে আবারও বিদায় নিতে হয়। ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে পরাজয়ের মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা।
এর পরে তিনি ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা এবং ২০২২ সালে ফিফা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হন। এই দুই ফাইনালেই গোল করে দলকে চ্যাম্পিয়ন বানাতে তার অবদান অসামান্য।[২০]
২০২৪ সালের ১৫ই জুলাই কোপা আমেরিকা-এর ৪৮ তম আসরের ফাইনালে জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দল থেকে অবসর গ্রহন করেন।[২১]
২০১১ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে দি মারিয়া তার মেয়ে বন্ধু হোর্হেলিনা কার্দোসোকে বিয়ে করেন। হোর্হেলিনা থাকেন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। তাদের বিয়ের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দিয়েগো মারাদোনার কন্যা জিয়ান্নিনা মারাদোনা।
দি মারিয়ার বাবাও একজন ফুটবলার ছিলেন, যিনি রিভার প্লেটের রিজার্ভ দলে খেলতেন।
ক্লাব পর্যায়ের পারফর্ম্যান্স
ক্লাব | ম্যাচ | গোল | অ্যাসিস্ট |
---|---|---|---|
রোসারিও সেন্ট্রাল (আর্জেন্টাইনা) | ৬৬ | ৬ | ১৩ |
বেনফিকা (পর্তুগাল) | ৭৮ | ৩৬ | ২৮ |
রিয়াল মাদ্রিদ (স্পেন) | ১৭৮ | ৩৬ | ৮৫ |
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (ইংল্যান্ড) | ৩২ | ৪ | ১০ |
প্যারিস সাঁ জার্মাঁ (ফ্রান্স) | ২৯৪ | ৯৩ | ১১৯ |
জুভেন্টাস (ইতালি) | ৩৬ | ৫ | ৯ |
রোসারিও সেন্ট্রাল (আর্জেন্টাইনা) (ধার) | ১১ | ২ | ৪ |
মোট | ৭৯৫ | ১৮২ | ২৬৮ |
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পারফর্ম্যান্স (আর্জেন্টাইন)
প্রতিযোগিতা | ম্যাচ | গোল | অ্যাসিস্ট |
---|---|---|---|
ফিফা বিশ্বকাপ | ২৬ | ৪ | ৬ |
কোপা আমেরিকা | ৩৪ | ২ | ১১ |
ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ | ৫ | ১ | ১ |
বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব | ৬২ | ১০ | ২০ |
প্রীতি ম্যাচ | ৪২ | ৬ | ১১ |
মোট | ১৬৯ | ২৩ | ৪৯ |