আনুকেত | |||||
---|---|---|---|---|---|
নীল নদের দেবী | |||||
![]() উঁচু ও পালকবিশিষ্ট মুকুট পরিহিতা নারী হিসেবে দেবী আনুকেতের চিত্রায়ণ | |||||
চিত্রলিপি |
| ||||
প্রধান অর্চনাকেন্দ্র center | এলিফ্যান্টাইন, সেহেইল | ||||
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||
সহোদর | খ্নুম এবং সাতেত |
মিশরের পুরাণে আনুকেত (অন্য বানান- আঙ্কেত, গ্রিকে আনুকিস) হলেন নীল নদের ব্যক্তিরূপ এবং ঐ নদের দেবী। তাকে মানা হত মিশরে নীল নদের প্রবাহের আরম্ভে এলিফ্যান্টাইন নামক স্থানে এবং নুবিয়ার সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে।
আনুকেত, দেবতা খ্নুম এবং দেবী সাতেত একত্রে একটি দৈবী ত্রয়ী গঠন করতেন। ধারণা করা হয় সাতেত তার বোন, ও খ্নুম তার সম্ভাব্য পতি[১]। আনুকেতকে পালকনির্মিত একটি মুকুট পরিহিতা নারী হিসেবে কল্পনা করা হত, যে বৈশিষ্ট্যটিকে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ নুবিয়ার সংস্কৃতির প্রভাব বলে মনে করেন। তার প্রতীকী পবিত্র পশু হল গ্যাজেল।
সেহেইল দ্বীপে তার উদ্দেশ্যে একটি মন্দির নির্মিত হয়। উদ্ধার করা অনুলিপি থেকে জানা যায় ঐ স্থানে ত্রয়োদশ রাজবংশের ফারাও তৃতীয় সোবেখোতেপের আমলে আনুকেতের উদ্দেশ্যে একটি বেদী তথা তীর্থক্ষেত্র বানানো হয়েছিল। এর অনেক পরে, অষ্টাদশ রাজবংশের রাজত্বকালে দ্বিতীয় আমেনহোতেপ দেবীর উদ্দেশ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ মন্দির উৎসর্গ করেন[২]।
নতুন রাজ্য চলাকালীন এলিফ্যান্টাইনে আনুকেতের বার্ষিক অর্চনার অঙ্গ ছিল নদীর পাড় বরাবর একটি শোভাযাত্রা। প্রাপ্ত অনুলিপি থেকে এই সময়ে অনুষ্ঠিত আনুকেত ও খ্নুম দেবতার পূজার বিবরণ পাওয়া যায়[৩]।
প্রথাগতভাবে নীল নদের বাৎসরিক বন্যা আরম্ভের সময় আনুকেতের উৎসব শুরু হত। নীলকে তার জীবনদায়ী জলের জন্য ধন্যবাদ জানাতে এবং দেবী আনুকেতের কৃপায় লব্ধ উর্বর পলিমাটির প্রতিদান দেওয়ার জন্য সেদিন লোকে পয়সা, সোনার জিনিসপত্র, গয়নাগাটি আর অন্যান্য মূল্যবান উপহার নদীর জলে বিসর্জন দিত। মিশরের অনেক অঞ্চলে কয়েক প্রজাতির মাছ পবিত্র বলে সেগুলো খাওয়ার উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা এই সময় নাগাদ উঠে যায়। বলা হয় নীল নদের বাসিন্দা যে কোনো মাছ দেবী আনুকেতের প্রতীক এবং তা খাওয়া প্রকৃতপক্ষে দেবীর অর্চনারই অঙ্গ।