এক্সপো ১৯৮৩ মিউনিখ | |
---|---|
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
বিআইই-শ্রেণী | উদ্যানবিদ্যা প্রদর্শনী |
নাম | আন্তর্জাতিক উদ্যানবিদ্যা প্রদর্শনী |
অংশগ্রহণকারী | |
দেশসমূহ | ২৩ |
অবস্থান | |
দেশ | জার্মানি |
শহর | মিউনিখ |
স্থানাঙ্ক | |
সময়রেখা | |
উদ্বোধন | ২৮ এপ্রিল ১৯৮৩ |
অবসান | ৯ অক্টোবর ১৯৮৩ |
উদ্যানবিদ্যা প্রদর্শনী | |
পূর্ববর্তী | আমস্টারডাম-এ আমস্টারডাম ১৯৮২ |
পরবর্তী | লিভারপুল-এ লিভারপুল ১৯৮৪ |
Internet | |
ওয়েবসাইট | bie-paris |
আন্তর্জাতিক উদ্যান প্রদর্শনী ৮৩ (জার্মান: Internationale Gartenbauausstellung 83, ইন্টারন্যাশনাল গার্টেনবাউসস্টেলং ৮৩) হল একটি উদ্যান উৎসব। এই উৎসবে ১৭০টি দেশ ও প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল। আন্তর্জাতিক উদ্যানবিদ্যা প্রদর্শনী, ব্যুরো ইন্টারন্যাশনাল ডেস এক্সপোজিশন (বিআইই) দ্বারা স্বীকৃত। এটি জার্মানির মিউনিখের ওয়েস্টপার্কে ১৯৮৩ সালের ২8 এপ্রিল থেকে ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। রালফ জিগেল প্রদর্শনীর দাপ্তরিক গান হিসেবে ফ্লাওয়ার সেরেনেড (Flower Serenade) লেখেন; হুগো স্ট্রাসার এবং তার অর্কেস্ট্রা গানটি রেকর্ড করেন।[১] জার্মান ফেডারেল পোস্ট অফিস শৈলীযুক্ত ফুল দিয়ে একটি বিশেষ ডাকটিকেট প্রকাশ করে।
প্রদর্শনীর জন্য ৬০ হেক্টর (১৫০ একর) জায়গা জুড়ে ওয়েস্টপার্ক নির্মিত হয়েছিল। প্রকৃতি স্থপতি পিটার ক্লুসকা সাবালপাইন উপত্যকার আকৃতির মতো এটির নকশা করেন। স্থানটি পূর্বে পরিত্যক্ত শিল্পভূমি ও কৃষিজমি ছিল।
প্রদর্শনীর সময়, ওয়েস্টপার্কের চারপাশে ঘেরাও দেয়া হয়, এবং প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। উদ্যানটির ভেতরে পাঁচটি স্টেশনসহ ৬ কিলোমিটার (৩.৭ মা) ক্ষুদ্র রেলপথ দর্শকদের আনা নেয়ার জন্য তৈরি করা হয়। আর প্রদর্শনীতে যাওয়ার জন্য একটি নতুন সাবওয়ে শাখা তৈরি করা হয়েছিল। উদ্যানের পাশে এই সাবওয়ে শাখার সাথে তিনটি স্টেশন যুক্ত ছিল। উদ্যানটির পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিমে তিনটি পার্কিং লট নির্মিত হয়েছিল।[১] বাসের জন্য একটি পার্কিং লট খানিকটা বড় ছিল।
প্রদর্শনীর মূল আকর্ষণ ছিল ২৩টি আন্তর্জাতিক উদ্যান, সারা বিশ্ব থেকে উদ্যানপালক এবং প্রকৃতি স্থপতিরা এই উদ্যানগুলির নকশা করেন।[২] সবাই নিজেদের ঐতিহ্য অনুযায়ী একটি ছোট ভবন নির্মাণ করে এর আশপাশে নিজেদের স্থানীয় উদ্ভিদ রোপণ করেন। এশিয়ার চারটি দেশ দীর্ঘস্থায়ী উদ্যান নির্মাণ করে, তাদের মধ্যে দুটি দেশ জার্মান বণিকদের সহায়তায় বাগানগুলি নির্মাণ করে। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ইউরোপীয় কোন বাগান প্রদর্শনীতে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছিল। তারা নিজেদের ঐতিহ্য অনুসারে প্রাচীরযুক্ত বাগান তৈরি করেছিল। মিউনিখের ভগিনী শহর সাপ্পোরো, হিয়ান যুগের একটি জাপানি বাগানের আদলে বিভিন্ন উদ্ভিদের সমন্বয়ে বিশেষ বাগান তৈরি করেছিল। থাইল্যান্ড গৌতম বুদ্ধের মূর্তি দিয়ে একটি সালা প্রতিষ্ঠা করেছিল। এটি ছিল জার্মানিতে গৌতম বুদ্ধের প্রথম মূর্তি।[৩] নেপাল কাঠের তৈরি একটি প্যাগোডা তৈরি করেছিল। নেপালের সেরা কাঠখোদাইকারীরা এটি তৈরি করে। প্যাগোডাটি নেপালে তৈরি করার পর জার্মানিতে আনা হয়েছিল। ২০০ বছরের মধ্যে এটিই নেপালের কাঠখোদাইকারীদের দ্বারা তৈরি একটি সম্পূর্ণ কাঠের প্যাগোডা ছিল।[২][৪] এশিয়ার এই চারটি দেশের উদ্যানগুলো প্রদর্শনীর পর সংরক্ষণ করা হয়। এবং বাকি অংশগ্রহণকারীদের উদ্যানগুলো প্রদর্শনী শেষে ভেঙ্গে ফেলা হয়।
প্রদর্শনীর ঐতিহ্যবাহী অংশগুলি বিশেষ বিশেষ স্থানে বরাদ্দ ছিল। এই অংশগুলোকে অর্ধ-বৃত্তাকার গোলাপ বাগান, বার্ষিক উদ্ভিদের মাঝে এবং অন্যান্য শয্যায় স্থান দেয়া হয়। প্রদর্শনী এলাকায় খেলার মাঠ, দুটি রেস্টুরেন্ট, দুটি ভাল্লুক বাগান এবং বনভোজনের জন্যও নির্দিষ্ট এলাকা ছিল যেখানে দর্শকরা তাদের নিজস্ব খাদ্য ও পানীয় আনতে পারত।
প্রথমবারের মতো জার্মানদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রকৃতি ও পরিবেশগত সুরক্ষার বিষয়গুলি প্রদর্শনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। জলপথের পূর্ব অংশে, পানি একটি জলাভূমিতে গিয়ে পড়ে এবং এখানে বিভিন্ন শাকসব্জির বাগানও রয়েছে। জলাভূমিটি ঘাসের চাপড়া দিয়ে নির্মাণ করা হয়। এই ঘাসের চাপড়াগুলো সেইসকল নির্মাণকাজের এলাকা থেকে তুলে আনা হয়েছে যেখানে নির্মাণকাজের জন্য বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।[৫] বাভারিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয় এগুলো স্থানান্তরে ভূমিকা পালন করে।[৬]