ভূগোল | |
---|---|
অবস্থান | বঙ্গোপসাগর |
স্থানাঙ্ক | ১২°৩০′ উত্তর ৯২°৪৫′ পূর্ব / ১২.৫০০° উত্তর ৯২.৭৫০° পূর্ব |
দ্বীপপুঞ্জ | আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ |
মোট দ্বীপের সংখ্যা | ৫৭২ |
প্রধান দ্বীপসমূহ | উত্তর আন্দামান দ্বীপ, ক্ষুদ্র আন্দামান, মধ্য আন্দামান দ্বীপ, দক্ষিণ আন্দামান দ্বীপ |
আয়তন | ৬,৪০৮ বর্গকিলোমিটার (২,৪৭৪ বর্গমাইল) |
সর্বোচ্চ উচ্চতা | ৭৩২ মিটার (২,৪০২ ফুট) |
সর্বোচ্চ বিন্দু | স্যাডল শিখর |
প্রশাসন | |
ভারত | |
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ |
রাজধানী শহর | পোর্ট ব্লেয়ার |
মিয়ানমার | |
প্রশাসনিক অঞ্চল | ইয়াঙ্গুন অঞ্চল |
রাজধানী | ইয়াঙ্গুন |
জনপরিসংখ্যান | |
জনসংখ্যা | ৩৪৩,১২৫ (২০১১) |
জনঘনত্ব | ৪৮ /বর্গ কিমি (১২৪ /বর্গ মাইল) |
জাতিগত গোষ্ঠীসমূহ | বামার শম্পেন মূল ভূখণ্ডের ভারতীয় জারোয়া ওঙ্গি সেন্টিনেলি বৃহৎ আন্দামানী |
অতিরিক্ত তথ্য | |
সময় অঞ্চল | |
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি) |
|
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | www |
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিমে ভারত, এবং উত্তর ও পূর্বে মিয়ানমার কে রেখে বঙ্গোপসাগরে মধ্যে দ্বীপপুঞ্জ গঠন করেছে। বেশিরভাগ দ্বীপগুলি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অংশ, এই দ্বীপপুঞ্জর উত্তরে কোকো দ্বীপপুঞ্জ সহ অল্প সংখ্যক দ্বীপ মিয়ানমারের অন্তর্ভুক্ত।
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বসবাস করে আন্দামানী জনজাতি, এদের মধ্যে জারোয়া এবং সেন্টিনেলী উপজাতি সহ বেশ কয়েকটি উপজাতি রয়েছে।[১] এগুলির মধ্যে কিছু দ্বীপ অনুমতি সাপেক্ষে ভ্রমণ করা যায়, উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ সহ অন্যান্য কিছু দ্বীপে প্রবেশ আইনত নিষিদ্ধ। সেন্টিনেলীরা সাধারণত ভ্রমণার্থীদের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ এবং অন্য যে কোনও মানুষের সাথে এদের খুব কম যোগাযোগ আছে। সরকার তাদের গোপনীয়তার অধিকার রক্ষা করে।[২]
আন্দামান নামের উৎসটি বিতর্কিত এবং এই সম্বন্ধে ভালো জানা যায়না।
ত্রয়োদশ শতাব্দীতে, আন্দামানের নাম, চীনা ভাষায় ঝাও রুগুয়া লিখিত ঝু ফান ঝি বইটিতে বলা হয়েছিল ইয়েন-টু মান (晏陀蠻)। [৩] কান্ট্রিস ইন দ্য সী বইয়ের ৩৮তম অধ্যায়ে, ঝাও রুগুয়া লিখেছেন যে, লামব্রি (সুমাত্রা) থেকে সিলোন (শ্রীলঙ্কা) যাওয়ার সময়, প্রতিকূল বাতাসের ধাক্কায় জাহাজগুলি আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের দিকে প্রবাহিত হয়ে গিয়েছিল।[৩][৪][৫] ১৫ তম শতাব্দীতে, উ বেই ঝিয়ের ঝেং হির ভ্রমণের সময়, মাও কুন মানচিত্রে আন্দামানকে নথিবদ্ধ করা হয়েছিল "আন-দে-ম্যান পর্বত" (安得蛮山) হিসাবে।[৬]
প্রাচীনতম প্রমাণিত প্রত্নতাত্ত্বিক দলিলগুলি প্রায় ২,২০০ বছর পূর্বেকার; তবে, বংশাণুবিজ্ঞান, সাংস্কৃতিক এবং বিচ্ছিন্নতা সমীক্ষা থেকে মনে হয়েছে যে দ্বীপপুঞ্জগুলিতে হয়তো মধ্য প্রস্তরযুগের প্রথমদিকে বসতি ছিল।[৭] সেই সময় থেকে আদিবাসী আন্দামানী জনজাতির লোকেরা আঠারো শতক পর্যন্ত যথেষ্ট বিচ্ছিন্নভাবে দ্বীপগুলিতে বাস করেছিল বলে মনে হয়।
প্রথম রাজেন্দ্র চোল (১০১৪ থেকে ১০৪২ খ্রিস্টাব্দ) আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দখল নিয়েছিলেন।[৮]
১৭৮৯ সালে, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি বৃহৎ আন্দামানএর দক্ষিণ পূর্ব উপসাগরে, চাথাম দ্বীপে, একটি নৌ-ঘাঁটি এবং কয়েদি উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। বসতিটি এখন পোর্ট ব্লেয়ার নামে পরিচিত (বোম্বাই মেরিন লেফটেন্যান্ট আর্কিবল্ড ব্লেয়ারের নামানুসারে, যিনি এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন)। দুই বছর পরে, উপনিবেশটি বৃহৎ আন্দামানের উত্তর-পূর্ব অংশে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং অ্যাডমিরাল উইলিয়াম কর্নওয়ালিসের নামানুসারে কর্নওয়ালিস বন্দর করা হয়েছিল। যাইহোক, কয়েদি উপনিবেশে অনেক রোগ এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটে এবং সরকার ১৭৯৬ সালের মে মাসে এটি বন্ধ করে দেয়।[৯][১০]
১৮২৪ সালে, কর্নওয়ালিস বন্দর, প্রথম বার্মিজ যুদ্ধে সৈন্য বহনকারী যুদ্ধজাহাজের বহরের মিলনস্থান ছিল।[১১] ১৮৩০ এবং ১৮৪০ এর দশকে, আন্দামানে অবতরণকারী বিধ্বস্ত জাহাজের নাবিকদের প্রায়শই স্থানীয়রা আক্রমণ করে হত্যা করেছিল এবং দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীদের নরখাদক মনে করা হত। ১৮৪৪ সালে একই ঝড়ে পড়ে, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের সময়, রনিমেড এবং ব্রিটন এর ক্ষতি, এবং স্থানীয়দের দ্বারা অবিচ্ছিন্নভাবে আক্রমণ, ব্রিটিশ সরকারকে সাবধান করে তুলেছিল।[১২] সরকার, ১৮৫৫ সালে, দ্বীপপুঞ্জের উপর কয়েদি উপনিবেশে সহ আরেকটি বসতি স্থাপনের প্রস্তাব করেছিল, তবে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের ফলে এর নির্মাণে বিলম্ব হয়। কিন্তু, বিদ্রোহের পর ব্রিটিশরা এত সিপাহীকে বন্দী করে যে, আন্দামানে নতুন বসতি এবং জেলের প্রয়োজন জরুরিভাবে দেখা দিয়েছিল। বন্দীদের শ্রম ব্যবহার করে ১৮৫৭ সালের নভেম্বর মাসে পোর্ট ব্লেয়ারে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। এই সময় নিকটস্থ একটি নোনা জলাকে পরিহার করে কাজ শুরু হয়েছিল, মনে করা হয়েছিল এটি কর্নওয়ালিস বন্দরের পূর্ববর্তী অনেক সমস্যার উৎস।
১৮৫৯ সালের ১৭ই মে আন্দামানের আরেকটি বড় দিন ছিল। বৃহৎ আন্দামানী উপজাতি এবং ব্রিটিশদের মধ্যে অ্যাবারডিনের যুদ্ধ হয়েছিল। যারা প্রাণ হারিয়েছিল তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে আন্দামান জল ক্রীড়া কমপ্লেক্সে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়েছে। বিদেশী আগ্রাসনের ভয়ে এবং সেলুলার জেল থেকে পালানো আসামির সহায়তায়, বৃহৎ আন্দামানীরা ব্রিটিশ ঘাঁটি আক্রমণ করেছিল। কিন্তু তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছিল এবং সদলে নিহত হয়। পরে, জানা গিয়েছিল যে দুধনাথ নামে একজন পালিয়ে আসা আসামি পক্ষ পরিবর্তন করে উপজাতিদের পরিকল্পনা সম্পর্কে ব্রিটিশদের জানিয়ে দেয়। আজ, উপজাতিটি জনসংখ্যা প্রায় ৫০ জন এবং তাদের মধ্যে ৫০% এরও কম প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছে। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের সরকার এই উপজাতির সংখ্যা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে।[১৩][১৪]
টীকা
When sailing from lan-wu-li to si-lan, if the wind is not fair, ships maybe driven to a place called Yen-to-man. This is a group of two islands in the middle of the sea, one of them being large, the other small; the latter is quite uninhabited. ... The natives on it are of a colour resmbling black lacquer; they eat men alive, so that sailors dare not anchor on this coast.
Andamanese, Tamil and Malayalam are the major languages spoken here
উৎস