অ্যাডমিরাল আফজাল রহমান খান | |
---|---|
সামরিক পরিষেবা | |
শাখা | ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনী (১৯৩৫-'৪৭) পাকিস্তান নৌবাহিনী (১৯৪৭-'৬৬) |
কাজের মেয়াদ | ১৯৩৮-'৬৬ |
পদ | ভাইস অ্যাডমিরাল |
ইউনিট | অপারেশন্স শাখা |
কমান্ড | অধিনায়ক, পিএনএস তারিক এবং অধিনায়ক, পিএনএস টিপু সুলতান |
যুদ্ধ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫ |
পুরস্কার | হেলাল-এ-জুরাত |
আফজাল রহমান খান (১৯২১-২০০৫) পাকিস্তান নৌবাহিনীর একজন অ্যাডমিরাল ছিলেন যিনি আইয়ুব খানের শাসনামলে ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১]
নৌবাহিনী থেকে অবসর নেবার পর আফজাল আইয়ুব প্রশাসনে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছিলেন, ১৯৬৯ সালে জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক আইন জারী করলে আফজাল রহমান খান সরকারি কর্মের দায়িত্বের মেয়াদ পূর্ণ করেন। ব্রিটিশ ভারতীয় রাজকীয় নৌবাহিনীতে যোগদান করা আফজাল ১৯৩৮ সালে সাব-লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন পেয়েছিলেন।[১]
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫ চলাকালীন অ্যাডমিরাল আফজাল নৌবাহিনী প্রধান ছিলেন; তিনি পিএনএস গাজী (ডুবোজাহাজ) পাকিস্তান নৌবাহিনীতে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।[২]
আফজাল রহমান খান জন্মগ্রহণ করেন ১৯২১ সালের মার্চ মাসের ২০ তারিখে পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুদাসপুর জেলাতে।
ব্রিটিশ রয়্যাল নেভাল কলেজে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৩৮ সালে রাজকীয় ভারতীয় নৌবাহিনীতে সাব লেঃ হিসেবে কমিশন পাওয়া আফজাল ১৯৪৭ সালে লেঃ কমান্ডার ছিলেন যখন রাজকীয় পাকিস্তান নৌবাহিনী গঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আফজাল যুক্তরাজ্যে নৌ স্টাফ কোর্স করতে যান; এরপর আফজাল পাকিস্তান নৌবাহিনীতে আসেন এবং তার সার্ভিস নং পিএন-০৬ হয়, তিনি পাকিস্তান নৌবাহিনীর উর্ধ্বতন মুসলিম নৌ কর্মকর্তা হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনী থেকে আসেন।[৩] তিনি পাকিস্তান নৌবাহিনীর নতুন আনা জাহাজে বদলী হচ্ছিলেন এবং তার পদোন্নতিও দ্রুত হচ্ছিলো। ১৯৫০ সালে তিনি লেঃ কমান্ডার থেকে কমান্ডার হন, কমান্ডার পদবীতে তিনি পিএনএস টিপু সুলতান এবং পিএনএস তারিক যুদ্ধজাহাজের অধিনায়কত্ব করেন। '৫১ সালে ক্যাপ্টেন, '৫৩ সালে কমোডোর এবং '৫৮ সালে রিয়ার অ্যাডমিরাল হন, '৫৯ সালের ১ মার্চ তাকে ভাইস অ্যাডমিরাল এবং নৌপ্রধান করা হয়। পাকিস্তান নৌবাহিনীতে ডুবোজাহাজ আনার প্রচেষ্টা ১৯৫০-এর দশক থেকে চলছিলো, আফজাল ১৯৬০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জন্য একটি যুদ্ধ-সক্ষম ডুবোজাহাজ আনার ব্যবস্থা করতে সফল হন।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫-তে আফজাল নৌবাহিনী প্রধান ছিলেন এবং তিনি ভারতীয় নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে নৌযুদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন যার ফলশ্রুতিতে ভারতীয় নৌবাহিনীর অনেক ক্ষতি হয়েছিলো; যুদ্ধের পর তিনি রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের কাছ থেকে হিলাল-এ-জুরাত পদক প্রাপ্ত হয়েছিলেন।[৪] পাকিস্তান নৌবাহিনীর ইতিহাসে আফজাল ছিলেন সবচেয়ে বেশি মেয়াদে থাকা নৌবাহিনী প্রধান, তিনি ১৯৬৬ সালের ২০শে অক্টোবর অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ আহসানের কাছে নৌবাহিনীর শীর্ষ ক্ষমতা হস্তান্তর করেন এবং নৌবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি আইয়ুব প্রশাসনের বেসামরিক দায়িত্বে নিয়োজিত হন এবং '৬৯ সালে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সামরিক আইন জারির পর সরকারি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত হন।