আবদুর রহমান কাশগরী

আবদুর রহমান কাশগরী
আবদুর রহমান কাশগরী
জন্ম১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯১২
কাশগর, পূর্ব তুর্কিস্তান (বর্তমান শিনজিয়াং, চীন)
মৃত্যু৩রা এপ্রিল, ১৯৭১
ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান
সমাধি স্থানআজিমপুর নতুন কবরস্থান, ঢাকা, বাংলাদেশ
অঞ্চলব্রিটিশ ভারত, পূর্ব পাকিস্তান
পেশাশিক্ষকতা
শাখাসুন্নি
মূল আগ্রহশিক্ষকতা, কবিতা, আরবি ভাষা
লক্ষণীয় কাজআয-যাহরাত (কাব্যগ্রন্থ),
আল-হাদিকা (গদ্য ও পদ্য সঙ্কলন),
আল-মুফিদ (অভিধান)
শিক্ষায়তনদারুল উলুম নদওয়াতুল উলামা

আবদুর রহমান কাশগরী (১৯১২-১৯৭১)[] ছিলেন ব্রিটিশ ভারতপূর্ব পাকিস্তানের একজন বিশিষ্ট আলেম, ভাষাবিদ, কবি ও লেখক।[]

বাল্যকাল

[সম্পাদনা]

আবদুর রহমান কাশগরী পূর্ব তুর্কিস্তানের কাশগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন স্থানীয় শাসক। কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের পর অনেকের সাথে তার বাবা, বড় ভাই ও দুই বোনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের খামার ও অন্য সব সহায়সম্পদ দখল করে নেয়া হয়। শোকে তার মা মানসিক ভারসাম্য অনেকটা হারিয়ে ফেলেছিলেন। এই অবস্থায় তার এক মামার পরামর্শে মুসলিমদের একটি গেরিলা দলের সহায়তায় উদ্বাস্তুদের একটি দলের সাথে তিনি ভারতে চলে আসেন। তবে তার মা তার ভাইবোনদের ফেরার আশা করে কাশগর থেকে যান। আবদুর রহমান কাশগরীর বয়স ছিল এসময় চৌদ্দ-পনেরো বছর।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

কৈশোরে উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আসার পর আবদুর রহমান কাশগরী লখনৌয়ের নদওয়াতুল উলামার এতিমখানায় আশ্রয় পান।[] তিনি এখানে হাদিস, তাফসির, আরবি সাহিত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষালাভ করেছেন।[][] নদওয়াতুল উলামায় উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত করার পর লখনৌ সফরে আসা আবুল কাশেম ফজলুল হকের অণুরোধে ১৯৩৮ সালে[] কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।[] ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় যোগ দেন। এখানে তিনি হোস্টেল সুপারের দায়িত্বও পালন করেছেন। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম হলেন, মোহাম্মাদ ফখরুদ্দীন (শিক্ষক)

[]

রচনাকর্ম‌

[সম্পাদনা]

আবদুর রহমান কাশগরী কবি ও লেখক হিসেবে খ্যাত ছিলেন। তার রচিত আরবি আয-যাহারাত কাব্যগ্রন্থে দেশাত্মবোধ এবং প্যান ইসলামিজম চেতনার কথা রয়েছে। তিনি আল-মুফিদ নামে উচ্চমানের একটি আরবি-উর্দু‌-বাংলা অভিধান প্রণয়ন করেছিলেন।[][] আল-হাদিকা নামে তার লেখা একটি আরবি গদ্য ও পদ্যের সঙ্কলন রয়েছে।[] তার লিখিত আরবি সাহিত্যের অনেক বই মাদ্রাসায় পাঠ্য ছিল।[] তার অপ্রকাশিত রচনাবলীর মধ্যে রয়েছে মাহক্কুন নাকদ, শের ইবনি মুকবিল, ইযালাতুল খাফা আল খিলাফাতিল খুলাফা, ফারহাঙ্গে কাশগরী।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

আবদুর রহমান কাশগরী চিরকুমার ছিলেন।[][] শিক্ষকতা পেশাকে তিনি জীবিকা হিসেবে নেন এবং আমৃত্যু এই দায়িত্বে ছিলেন। মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রদেরকে তিনি সন্তান হিসেবে স্নেহ করতেন। নতুন বই কেনা ছিল তার শখ। এছাড়া তিনি বিড়াল পালন করতেন।[]

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

আবদুর রহমান কাশগরী ১৯৭১ সালের ৩রা এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[][] তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. আবদুর রহমান কাশগড়ী, বাংলাপিডিয়া
  2. জীবনের খেলাঘরে, মুহিউদ্দীন খান, মদীনা পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ১৫৩-১৫৮