আবাড়ি ஆவடி | |
---|---|
চেন্নাইয়ের অঞ্চল | |
আবাড়ি | |
স্থানাঙ্ক: ১৩°০৭′ উত্তর ৮০°০৬′ পূর্ব / ১৩.১২° উত্তর ৮০.১° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ![]() |
রাজ্য | ![]() |
জেলা | তিরুভেলুর |
মহানগর | চেন্নাই |
সরকার | |
• ধরন | নগর নিগম |
• শাসক | আবাড়ি নগরাক্ষি (ஆவடி நகராட்சி) |
আয়তন | |
• মোট | ৬৫ বর্গকিমি (২৫ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১০ মিটার (৩০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩,৪৫,৯৯৬ |
• জনঘনত্ব | ৫,৩০০/বর্গকিমি (১৪,০০০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | আবাড়ীয় |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | তামিল |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
যানবাহন নিবন্ধন | TN 12 (টিএন-১২) |
আবাড়ি দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই জেলার একটি অঞ্চল৷ চেন্নাই মহানগর অঞ্চলের অন্তর্গত একটি পুর নিগম এবং তামিলনাড়ুর ১৫তম সিটি কর্পোরেশন। লোকালয়টি পশ্চিম চেন্নাইয়ের অংশ এবং চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার (১৪ মাইল) পশ্চিম দিকে অবস্থিত।
এটি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ঠিকানা, যার চতুর্দিকে রয়েছে বড় বড় আত্মরক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান। লোকাচার একমাত্র রেল স্টেশন হলো চেন্নাই শহরতলি রেলওয়ের অন্তর্গত আবাড়ি রেলওয়ে স্টেশন৷ এখানে রয়েছে ভারী শকট কারখানা (এইচভিএফ), আগ্নেয়াস্ত্র কারখানা পরিষদ (ওডিএফ), একাধিক ইঞ্জিন কারখানা, যুদ্ধযান গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (সিভিআরডিই)৷ এটি পশ্চিম চেন্নাইয়ের সর্বাধিক জনবহুল ও উন্নয়নশীল এলাকা৷ পালেরিপট্টু নামে পরিচিত আবাড়ি হ্রদ বর্তমানে হ্রাসপ্রাপ্ত, পুরাতন নথিপত্র ছাড়া এর মূল আয়তনের খোঁজ দুষ্কর৷
আবাড়ি নামের যথাযথ উৎস অস্পষ্ট হলেও মনে করা হয় তামিল ভাষায় "আ", অর্থাৎ গরু ও "আড়ি" অর্থাৎ স্থান শব্দদুটির সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে আবাড়ি, যার অর্থ গোচরণ ক্ষেত্র৷[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আবার আরেকটি মতে আরমোরড ভেহিকেলস এন্ড এমিউনিশন ডিপো অব ইন্ডিয়া (Armoured Vehicles and Ammunition Depot of India)-এর সংক্ষিপ্ত করণে আবাড়ি নামটি এসে থাকতে পারে৷ তবে এই মতবাদটা একেবারেই নতুন, তা ছাড়া এই নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্রিটিশকালীন তথ্য পাওয়া যায় না৷[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ঊনবিংশ শতাব্দীর একাধিক ব্রিটিশ নথি অনুযায়ী ইংরাজীতে এর নাম ছিল "Avady", যা সংক্ষিপ্তকরণের গুজবকে নাকচ করে৷[১]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়কালে চেন্নাইয়ের (তৎকালীন মাদ্রাজ) উত্তর ও পশ্চিম দিকে পরিকাঠামো ও শিল্প সংক্রান্ত উন্নতি ঘটলে অটো পরিষেবা শুরু হয়৷[২] বর্তমানে এটি চেন্নাই অটো বলয়ের অন্তর্গত৷
১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি আবাড়িতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একটি অধিবেশন বসে,[৩] যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজতন্ত্র ও সামাজিক উন্নয়ন৷ জওহরলাল নেহেরু সহ মোরারজী দেসাই এবং কংগ্রেসের আরো অনেক গণ্যমান্য নেতা এই অধিবেশনে নিজেদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমাজতান্ত্রিক আদর্শের কথা তুলে ধরেন৷[৪][৫]
আবাড়ির অবস্থান ১৩°০৭′ উত্তর ৮০°০৬′ পূর্ব / ১৩.১২° উত্তর ৮০.১° পূর্ব স্থানাঙ্কে৷[৬] ব্লকের ক্ষেত্রফল প্রায় ৬৫ বর্গকিলোমিটার (২৫ বর্গমাইল) এবং সমুদ্রপৃৃৃষ্ঠ থেকে গড় উচ্চতা ১৭ মিটার (৫৬ ফুট)৷
আবাড়ি হ্রদ পালেরিপট্টু নামে পরিচিত৷ এটি ২০০ একর জমির ওপর বিস্তৃত ও ২.৬৪ কিলোমিটার (১.৬৪ মাইল) দীর্ঘ৷ মূল চেন্নাই শহর থেকে ২৩ কিলোমিটার (১৪ মাইল) পশ্চিমে[৭] তামিলনাড়ু হাউজিং বোর্ড ও তিরুমুল্লাইবায়ল অতিক্রম করে এর দেখা মেলে৷ এক কালে এই হ্রদের জলই ছিল সেচের উৎস৷ এই জলাশয় প্রতি বছর বহু পরিযায়ী পাখিকে আকর্ষিত করে৷ অবশ্য বিগত কিছু বছরে অবৈধ নির্মাণ ও জবরদখলের কারণে হ্রদের আয়তন হ্রাস পেয়েছে৷ ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে জুন তারিখে এই হ্রদ সংস্কার ওপ্রকৃতিবান্ধব উদ্যানে পরিণত করার জন্য ৩২ কোটি টাকা ধার্য করা হয়৷ এছাড়াও নবীকরণ পরিকল্পনার মধ্যে ছিল একটি ৩ কিমি দীর্ঘ হাঁটার রাস্তা, সেন্ট্রাল প্লাজা প্রভৃৃতি৷[৭][৮][৯]
এই লোকালয় দৈনিক ১৫০ মেট্রিক টন বর্জ্য তৈরি করতে সক্ষম৷ তিরুবেরকাড়ু ও পুন্তমল্লীর সাথে আবাড়িতে একত্রে প্রায় ১,২০,০০০ গৃৃহস্থলি থেকে ২১০ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য সংগৃৃহীত হয়৷ আবাড়ি পুর নিগমের অন্তর্গত সেক্কাড়ুতে ১৭.৭৮ একর ক্ষেত্রের সরকারি জমির ওপর এই পরিমাণ বর্জ্য একত্রিত হয়৷ ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে পুর নিগম ১০৯.৬ মিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা ব্যয়ে তেত্রিশটি ডিসেন্ট্রালাইজড কম্পোস্ট প্রোসেসিং প্ল্যাণ্ট নির্মাণের পরিকল্পনা নেন৷ প্রতিটি প্ল্যান্ট প্রতিবারে চার টন জীববিয়োজ্য বর্জ্য সারে পরিণত করতে সক্ষম৷ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি অবধি ১৭ টি প্ল্যান্ট কার্যকরী ছিল৷[১০]
পট্টাবিরাম ও আবাড়িতে এমটিএইচ সড়কের ওপর ১০ একফ বর্গফুট জায়গার ওপর ৫,০০,০০০ কার্যকরী জমিতে ২,৩০০ মিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা ব্যয়ে টাইডেল পার্ক তৈরি হচ্ছে৷ আশা করা যায় এটি ৩০,০০০ মানুষের কর্ম সংস্থান করবে৷ ২০২০ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাস থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে৷[১১][১২]
২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে আবাড়ি লোকালয়ের জনসংখ্যা ছিল ৩,৪৫,৯৯৬ জন, যেখানে প্রতি হাজার পুরুষে ৯৭০ জন নারী বাস করতেন।[১৪] মোট শিশু সংখ্যা ৩৬,০৯১ জন যেখানে শিশুপুত্র সংখ্যা ১৮,৪১৯ জন এবং শিশুকন্যা সংখ্যা ১৭,৬৭২ জন। জনসংখ্যা অনুপাতে তপশিলি জাতি এবং তপশিলি উপজাতি শতাংশ যথাক্রমে ১৬.১৬ ও ০.৬৩। শহরটির সাক্ষরতার হার ছিল ৯১.২৮ শতাংশ যা জাতীয় সাক্ষরতার হারের তুলনায় বেশি।[১৪] শহরে মোট পরিবার সংখ্যা ৮৭,৭৩৩ টি। মোট শ্রমজীবীর সংখ্যা ১,২৭,১৫২ জন, যার মধ্যে কৃষক ৭৮৭ জন, মূল কৃষিজীবী ১,০৯৫ জন গৃহস্থলী সংক্রান্ত শ্রমজীবী ১,৪৪৪ জন, অন্যান্য শ্রমজীবী ১,১১,০১৩ জন। মোট প্রান্তিক শ্রমজীবী সংখ্যা ১২,৮১৩ জন, যার মধ্যে প্রান্তিক কৃষক ২২১ জন, প্রান্তিক কৃষিজীবী ৩১০ জন, প্রান্তিক গৃহস্থলী সংক্রান্ত শ্রমজীবী ৪৪৯ জন, অন্যান্য প্রান্তিক শ্রমজীবী ১১,৮৩৩ জন।[১৫]
২০০১ খ্রিস্টাব্দে এই লোকালয়ে স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন ২,২৯,৪০৩ জন, ২০০১-২০১১ এই দশবছরে জনসংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷[১৬]
আবাড়ি রেলওয়ে স্টেশন চেন্নাই শহরতলি রেলওয়ের অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন৷[১৭] তামিলনাড়ু সরকার জাতীয়সড়ক দপ্তর ৪ঠা অক্টোবর ২০১৩ তারিখে ১.৬৮ বিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা ব্যয়ে চেন্নাই-তিরুতণি মহাসড়ককে ছয় লেন বিশিষ্ট করার পরিকল্পনা করেন৷[১৮] প্রথম পর্যায়ে চার লেনবিশিষ্ট ও মধ্যরেখা ১০০ ফুট করে পরবর্তী লেনের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে৷[১৯] আবাড়ি চেকপোস্টের নিকট জংশনটি চেন্নাই-তিরুতণি সড়কের সাথে আবাড়ি পুন্তমল্লী সড়ককে যুক্ত করে৷
নির্বাচন ক্ষেত্র সীমানা পুনর্নির্ধারণের পর আবাড়ি একটি বিধানসভা কেন্দ্রে পরিণত হয়৷ আবাড়ি পুর নিগম, তিরুনিন্দ্রবুর ও তিরুবেরকাড়ু নগর পঞ্চায়েত, নেমিলিচেরি, পট্টাবিরাম ও আংশিক পুন্তমল্লী এই কেন্দ্রের অন্তর্গত৷[২০] এটি তিরুভেলুর লোকসভা কেন্দ্রের অংশ৷
বর্ষ | বিজয়ী | দল |
---|---|---|
২০১১ | এস. আবদুল রহিম | আন্না দ্রাবিড় মুন্নেত্র কড়গম |
২০১৬ | কে. পাণ্ড্যরাজন | আন্না দ্রাবিড় মুন্নেত্র কড়গম |