আবু তাম্মাম أبو تمام | |
---|---|
জন্ম | ৭৮৮ |
মৃত্যু | ৮৪৫ |
পরিচিতির কারণ | হামাসাহ |
আবু তাম্মাম (আরবি: أبو تمام), পুরোনাম হাবিব ইবনে আওস আল-তা'ই (আরবি: حبيب بن أوس الطائي) (৭৮৮–৮৪৫) ছিলেন আব্বাসীয় যুগের এক আরব কবি, যিনি এক খ্রিষ্টান পরিবারে জন্মেছিলেন ও খ্রিষ্ট ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।[১] তিনি আরবি কবিতা সংকলন হামাসাহ এর জন্য পরিচিত।
আবু তাম্মাম জন্মেছিলেন সিরিয়ার জসিমে। ধারণা করা হয়ে থাকে, তিনি তার যৌবন অতিবাহিত করেছিলেন সিরিয়ার হোমসে। তিনি শৈশবে কায়রোর এক মসজিদে পানি বিক্রি করতেন বলে গল্প প্রচলিত আছে। তার কাব্যপ্রতিভার প্রথম বিকাশ ঘটে মিশরে। সেখানে তিনি নাম করতে না পারায় তিনি দামেস্ক ও পরবর্তীতে মসুল গমন করেন।[২] সেখানে তিনি আব্বাসীয় খলিফা আল-মামুনের পৃষ্ঠপোষকতা প্রার্থনা করেন। কিন্তু, তার কাব্যপ্রতিভা খলিফাকে আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এরপর তিনি খেলাফতের পূর্বাংশে গমন করেন এবং অবশেষে আর্মেনিয়ার গভর্নর খালিদ ইবনে ইয়াজিদ আল-শায়বানির পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন। তার কাব্যপ্রতিভা গভর্নরকে যতবার মুগ্ধ করত, ততবার গভর্নর তাকে দশ হাজার দিরহাম করে প্রদান করতেন।[৩]
আল-মামুনের মৃত্যুর পর নতুন খলিফা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণকারী আল-মুতাসিম তার কাব্যপ্রতিভায় মুগ্ধ হন। ৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে তিনি মূলত বাগদাদে বাস করতে থাকেন। আল-মুতাসিমের দরবারে স্থান হয়েছিল আবু তাম্মামের।
বাগদাদ থেকে তিনি খোরাসান গমন করেছিলেন। সেখানে তিনি আবদুল্লাহ ইবনে তাহির আল-খোরাসানির পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন। ৮৪৫ সালের দিকে তিনি সিরিয়ার মারারাত উন-নুমানে ছিলেন। সেখানে তিনি আরব কবি বুহতুরির (আনু. ৮২০–৮৯৭) সাথে মিলিত হন। আবু তাম্মাম মসুলে ৮৪৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[৪]
আবু তাম্মাম তার সময়ের বিখ্যাত আরবি কবিতাগুলো নিয়ে হামাসাহ (আরবি: حماسة, বাংলা: প্রেরণাদান) নামে কবিতা সংকলন প্রকাশের জন্য পরিচিত।[২] তিনি কবিতাগুলো সংগ্রহ করেছিলেন আবু আল-ওয়াফা ইবনে সালামার সুবিশাল গ্রন্থাগার থেকে।[৫] কবিতা সংকলনটি দশ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছিল।
আবু তাম্মামের কবিতায় ঐতিহাসিক ঘটনা ও ব্যক্তিদের কাহিনি ফুটে উঠেছে। তার কবিতায় রয়েছে মুতাজিলা মতবাদেরপ্রাধান্য।[৫]
কবি অ্যাডোনিসের মনে করেন যে, আবু তাম্মাম লেখনীর মাধ্যমে দুনিয়া গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাব্যচর্চা শুরু করেছিলেন। তিনি আরো মনে করেন যে, কবিতার পংক্তির সাথে কবির সম্পর্কে আবু তাম্মাম প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্কের মত ঘনিষ্ঠ মনে করতেন এবং কবিতা রচনাকে প্রেমিক প্রেমিকার অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সাথে তুলনা করতেন।[৬]