মুফতি আবদুর রহমান | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৯২০ |
মৃত্যু | ১০ নভেম্বর ২০১৫ | (বয়স ৯৪–৯৫)
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
জাতিসত্তা | বাংলাদেশী |
অঞ্চল | বাংলাদেশ |
আখ্যা | সুন্নি (ইসলাম) |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | ইসলামী অর্থনীতি, হাদীস, ইসলামিক বিচারব্যবস্থা |
উল্লেখযোগ্য কাজ | ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত |
আব্দুর রহমান চাটগামী (১৯২০-২০১৫), মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ আলেমফকিহুল মিল্লাত নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের দেওবন্দী বিশিষ্ট আলেম ছিলেন।[১][২] তিনি ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি।[৩][৪][৫][৬]
আবদুর রহমান ১৯২০ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ইমাম নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম চাঁন মিয়া।[৭] নাজিরহাট বড় মাদরাসা ও জামিয়া আহলিয়া মঈনুল ইসলাম হাটহাজারিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক লেখাপড়া করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে গমন করেন। ১৯৫০ সনে দারুল উলুম দেওবন্দে কওমী মাদরাসা পাঠ্যক্রমের সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদীস কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেন। দারুল উলুম দেওবন্দের ইফতা বিভাগে প্রথম ডিগ্রি লাভকারী মুফতি তিনি।[২]
ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আব্দুর রহমান রহ. কুতুবুল আলম হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ এর বিশেষ ছাত্র ছিলেন।
দেশে ফেরার পর পূর্ব এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র আল-জামিয়া আল ইসলামিয়ায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়ে কর্মজীবনের সূচনা করেন। ১৯৬২ সালে তিনি উত্তরবঙ্গে গমন করে সেখানে বহু মসজিদ ও মাদরাসা,মক্তব ও হেফজখানা প্রতিষ্ঠা করেন।এবং ১৮টি উত্তরাঞ্চলীয় জেলার সহস্রাধিক দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত তানযীমুল মাদারিস আদ্বীনিয়্যা বাংলাদেশ (উত্তরবঙ্গ) এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালে জামিয়া পটিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত একাধারে প্রধান মুফতি, সহকারী মহাপরিচালক ও শিক্ষা বিভাগীয় পরিচালকে সহ দাওরায়ে হাদীসে সর্বোচ্চ কিতাব বুখারী শরীফের ১ম খণ্ডের পাঠদান করেন। তখন দেশব্যাপী একশ’ সদস্য বিশিষ্ট ইফতা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। জামিয়াতুল ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম (জামিল মাদরাসা) বগুড়া সহ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ এবং জামিআতুল আবরার বসুন্ধরা রিভারভিউর প্রতিষ্ঠাতা তিনি।[৮]
ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংকিং-এর ক্ষেত্রেও অনন্য অবদান রাখেন। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ১৯৮৩ সালে স্থাপিত হলে তিনিই প্রথম শরীয়াহ বোর্ডের সদস্য মনোনীত হয়ে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। আমৃত্যু আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের শরীয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের কেন্দ্রীয় শরিয়াহ বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে তিনি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শরীয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনীত হন। দীর্ঘদিন তিনি সেন্ট্রাল শরীয়া বোর্ড ইসলামিক ব্যাংকস-এর ভাইস চেয়ারম্যানের ছিলেন। সোশাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক শরিয়াহ বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ও কাজ করেন।[৯][১০] অল্প সময়ের জন্য ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের শরিয়াহ উপদেষ্টা ছিলেন।[১১] মুফতি আবদুর রহমান আরব বিশ্ব তথা দুবাই, বাহরাইন, কাতার ইত্যাদি রাষ্ট্র এবং ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে বড় বড় ইসলামি অর্থনৈতিক সেমিনারে যোগ দেন।[৯]
দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত থাকার পর ১০ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে ঢাকার বসুন্ধরাতে মৃত্যুবরণ করেন।[৩] বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান তার মৃত্যুতে সমবেদনা প্রকাশ করেন।[৫][৬][১২] ২০২২ সালে ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আব্দুর রহমান রহ. স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।[১৩]