আমাল ক্লুনি (জন্ম ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮)[১]আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারে[২] বিশেষজ্ঞ ডটি স্ট্রিট চেম্বারের একজন লেবানিজ-ব্রিটিশ ব্যারিস্টার।তার খদ্দেরদের মধ্যে আছে,বিদেশী রাষ্ট্রে কাছে হস্তান্তরের[৩] বিরুদ্ধে যুদ্ধরত উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান এসাঞ্জ,ইউক্রেনের সাবেক প্রধান মন্ত্রি ইউলিয়া টাইমোসেঙ্কো[৪],মিশরীয়-কানাডীয় সাংবাদিক মোহামেদ ফাহমি এবং নোবেল বিজয়ী নাদিয়া মুরাদ।
২০১৯ সালে ক্লুনি ব্রিটিশ ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ অফিস কর্তৃক গণমাধ্যম স্বাধীনতার উপর বিশেষ দূত নিযুক্ত হন।[৫]
আমাল আমালুদ্দিন বোইরুতের লেবাননে জন্মগ্রহণ করেন।তার নামের প্রথমাংশ আরবি আমাল থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ "আশা"।[৬] লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় যখন তার বয়স মাত্র দুই বছর তখন তার পরিবার লেবানন ত্যাগ করে এবং বাকিমহামসায়ারের জেরাডস ক্রসে স্থায়ি হয়।[৭] বাকলাইনের(কউফ জেলার একটি গ্রাম)[৮][৯][১০][১১][১২][১৩] লেবানিজ ড্রুজ পরিবার থেকে আগত তার বাবা রামজি আমাল উদ্দিনের এমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বোইরুতের এমবিএ ডিগ্রি ছিল এবং তিনি কমেট ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ছিলেন।তিনি ১৯৯১ সালে লেবাননে ফিরে যান।[১৪][১৫] উত্তর লেবাননের ত্রিপলির মুসলিম সুন্নি পরিবার থেকে আসা তার মা বারিয়া মিনকাস প্যান-আরব পত্রিকা আল-হায়াৎ এর বিদেশি সম্পাদক ছিলেন এবং তারকা অতিথি বুকিং,প্রচারণামূলক ফটোগ্রাফিও অনুষ্ঠানের প্রচারে বিশেষজ্ঞ একটা বড় কোম্পানির অংশ পাবলিক রিলেশন কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল কমুনিকেশন এক্সপার্ট এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[১৬]
ক্লুনির মা বারিয়া আলামুদ্দিন একজন সুপরিচিত রাজনৌতিক সাংবাদিক।[১৭] তিনি বলেন," আমাল কে গর্ভে ধারণ ছিল একটা কঠিন বিষয়,যেহেতু তার প্ল্যাসেন্টা প্রাইভিয়ার সুমস্যা ছিল এবং তিনি দু'মাস হাসপাতালে কাটিয়েছিলেন।এক পর্যায়ে আমাকে বলা হয়েছিল আমি যেন বাচ্চাটা না রাখি।আমি বলেছিলাম না।আমি তার চেহারা এবং সে দেখতে কেমন হতে যাচ্ছে তা নিয়ে স্বপ্ন দেখতে লাগলাম। অবশেষে আমি তাকে ঠিক যেভাবে দেখেছিলাম সেভাবেই জন্ম নিল।তার জন্ম হল লেবাননের গৃহযুদ্ধের মধ্যে স্থবিরতার কালে,সুতরাং তার বাবা তার নাম রাখলেন আমাল-যা আশার আরবী।
ক্লুনির তিন ভাইবোন আছে -একবোন তালা এবং তার বাবার প্রথম বিয়ে[১৮] থেকে তার দুই সৎ ভাই সামের ও জিয়াদ।
ক্লুনি বাকিংহামশায়ার এর লিটেল চালফন্ট এ অবস্থিত মেয়েরদের গ্রামার স্কুল ড চ্যালনার'স হাই স্কুলে লেখা-পড়া করেন।তারপর তিনি সেন্ট হুগস কলেজ, অক্সফোর্ড এ লেখ-পড়া করেন ,সেখান থেকে তিনি এক্সিবিসন[১৯] ও স্রিগলে পুরস্কার লাভ করেন[২০]।২০০০ সালে ক্লুনি হুগস কলেজ,অক্সফোর্ড থেকে আইন শাস্ত্রে(অক্সফোর্ডের এলএলবি সমতুল্য)[২১] বিএ ডিগ্রি লাভ করে স্নাতক হন।
পরবর্তি বছর,২০০১ সালে তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল রে এলএলএম পড়ার জন্য ভর্তি হন।বিনোদন আইনে দক্ষতার জন্য তিনি জ্যাক জে কাটজ স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন।[২২][২৩] নিউইয়র্কে থাকার সময়ে এক সেমিস্টার তিনি সেকেন্ড সার্কিটের ইউনাইটেড স্টেটস কোর্ট অব আপিল এর তখনকার বিচারক সোনিয়া সতোমায়র এর অফিসে কাজ করেন।[২৪]
ক্লুনি ইউনাইটেড স্টেটস ও ইউনাইটেড কিংডমে আইন ব্যবসা করার যোগ্যতা সম্পন্ন।তিনি নিউইয়র্কে ২০০১ সালে এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলস এ ২০১০ সালে বারে প্রবেশ করেন।তিনি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস ও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট সহ হগের আন্তর্জাতিক আদালতে ওকালতি করেছেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) অমল ক্লুনিকে দারফুরের সুদানী সংঘাতের জন্য বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করে।
ক্লুনি সেন্ট হাঘস কলেজ,অক্সফোর্ড এ পড়াশোনা করেন,সেখানে তিনি এক্সিবিসন এবং স্রিগলে পুরস্কার লাভ করেন। ক্লুনি নিউইয়র্ক স্কুল অব ল থেকে বিনোদিন আইনে দক্ষতার জন্য জ্যাক জে ক্যাটয স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন।
ক্লুনি ২০১৫ সালের বারবারা ওয়াল্টারের মোস্ট ফ্যাসিনেটিং পারসন নির্বাচিত হন।[২৫] ২০১৪ সালে ব্রিটিশ ফ্যাশন এওয়ার্ডে সেরা ব্রিটিশ স্টাইলের জন্য ডেভিড বেকহ্যাম,কেট মস,কিরা নাইটলি এবং এমা ওয়াটসনের সাথে সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন।[২৬]
ক্লুনি, ক্লুনি ফাউণ্ডেশন ফর জাস্টিস এর প্রেসিডেন্ট ,যা তিনি আদালত কক্ষে, সম্প্রদায়ে এবং শ্রেণিকক্ষে ন্যায়বিচার এগিয়ে নিতে ২০১৬ সালের শেষ দিকে তার স্বামী জর্জ ক্লুনির সাথে সহ -প্রতিষ্ঠা করেন।ক্লুনি আমাল ক্লুনি মেধা-বৃত্তি চালু করার জন্য অংশীদ্বার হয়েছিলেন, যা চালু করা হয়েছিল প্রতি বছর একজন লেবাননিয় মেয়েকে লেবানন থেকে ইউনাইটেড ওয়াল্ড কলেজ ডিলিজান এ পাঠিয়ে দু'বছর ব্যাপি আন্তর্জাতিক ব্যাকালরেট পোগ্রামে ভর্তি করতে।[২৭]
আমাল এবং তার স্বামী ইয়াজিদি ছাত্র হাজিম আভডাল এর পৃষ্ঠপোষন করেন যার সাথে নাদিয়া মুরাদের সাথে কাজের মাধ্যমে ক্লুনির দেখা হয়,যেহেতু আভডাল ইয়াজদা তে কাজ করতো।সে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো তে যাচ্ছে।.[২৮]
২০১৮ সালে স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে গোলাগুলির পরে ক্লুনি মার্চ টু আউয়ার লাইফ কে ৫০০০০০ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বলেন তারা সেখানে উপস্থিত থাকবেন।[২৯]
আমাল ক্লুনি ইংরেজি,ফরাসি এবং আরবি ভাষায় সাবলিল ভাবে কথা বলতে পারেন।[৩০][৩১] তার বাবা একজন লেবাননিয় ড্রুজ[৩২] এবং তার মা লেবাননিয় সুন্নি মুসলিম। কিছু নথিতে ক্লুনিকে ড্রুজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও অসহবর্নে বিবাহে ড্রুজের বাধা,তার মায়ের মুসলিম ধর্ম বিশ্বাস এবং অ-ড্রুজ ক্লুনির সাথে তার বিয়ের কারণে তিনি নিজেকে কোনমতেই সেই ধর্মের অংশ মনে করতে পছন্দ করেন না।[৩৩][৩৪] তিনি তার ধর্ম নিয়ে জনসমুক্ষে আলোচিনা করেন নি যদিও তার স্বামি হলিউড রিপোর্টারের কাছে এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে আমাল ক্লুনি "সম্প্রদায়বিহীন.........আদৌ ধার্মিক নন।"[৩৫]
তিনি ২৮ এপ্রিল ২০১৪ তে অভিনেতা জর্জ ক্লুনির সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।[৩৬] ব্রিটিশ বিনোদন পত্রিকা ডেইলি মেইল কর্তৃক তার বাগদত্তার মায়ের ধর্মিয় কারণে তাদের বিয়ের বিরোধিতার দাবি করার পর জর্জ ক্লুনি পত্রিকাটির সমালোচনা করেন।[৩৭] যখন বিনোদন পত্রিকাটি এই মিথ্যা সংবাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে,ক্লুনি তাদের ক্ষমাপ্রার্থনা প্রত্যাখান করেন।তিনি বলেন"সবচেয়ে বাজে রকমের বিনোদন পত্রিকা।যারা পাঠকের ক্ষতিসাধন করে মিথ্যা খবর তৈরি করে।[৩৮]
৭ আগস্ট ২০১৪ তে লন্ডনের রয়াল বরোঘ অব কেন্সিংটন এন্ড চেলসিয়াতে এই জুটি বিয়ের অনুমতিপত্র লাভ করেন।.[৩৯] দুদিন পূর্বে[৪০] ভেনিসে[৪১][৪২][৪৩] বড় রকমের বিবাহ উৎসবের পর,২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তে ভেনিসের সিটি হলে[৪৪][৪৫][৪৬] তারা বিয়ে করেন।ক্লুনির বন্ধু রমের সাবেক মেয়র ওয়ালতার ভেলট্রনি তাদের বিয়ে দেন।[৪৭] বিয়েটি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার পেয়েছিল।[৪৮] অক্টোবর ২০১৪ তে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে ১০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যে ইংল্যান্ডের[৪৯] সোনিং আই তে থেমস নদীর একটি দ্বীপে ক্লুনি দম্পতি মিলস হাউস কিনেছেন।[৫০]
ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তে সিবিএস টক শো দ্যা টক এ প্রচার করা হয় যে ক্লুনি অন্তঃসত্ত্বা এবং তিনি ও তার স্বামী যমজ বাচ্চা আশা করছেন।[৫১] বন্ধু ম্যাট ডেমন এন্টারটেইনমেন্ট টুনাইট কে অন্তসত্তার বিষয় টি নিশ্চিত করেন।[৫২] জুন ২০১৭ তে তিনি কন্যা এলা ও পুত্র আলেজান্ডারের জন্ম দেন।[৫৩]
↑Amal Clooney - the most wanted woman in Britain, Matthew Bell tries to hang out with Mrs Clooney, Tatler, Tuesday, 19 January 2016: '"I remember her as humane and brainy," adds Ghil'ad Zuckermann (গিলাদ জাকারমান), now a professor of linguistics at the University of Adelaide, Australia, who was also at St Hugh's with Amal. "Students were talking about Amal even then, especially those from Middle Eastern backgrounds. I remember being told around 1997 about her famous journalist mother."'