![]() আনুমানিক ১৯০৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে আর. ই. ফস্টার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | রেজিনাল্ড আরস্কিন ফস্টার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | মালভার্ন, ওরচেস্টারশায়ার, ইংল্যান্ড | ১৬ এপ্রিল ১৮৭৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৩ মে ১৯১৪ ব্রোম্পটন, লন্ডন, ইংল্যান্ড | (বয়স ৩৬)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | টিপ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৩৮) | ১১ ডিসেম্বর ১৯০৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৯ আগস্ট ১৯০৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৯৯-১৯১২ | ওরচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৯৭-১৯০০ | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৫ মে ২০১৭ |
রেজিনাল্ড আরস্কিন ফস্টার (ইংরেজি: R. E. Foster; জন্ম: ১৬ এপ্রিল, ১৮৭৮ - মৃত্যু: ১৩ মে, ১৯১৪) ওরচেস্টারশায়ারের মালভার্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ওরচেস্টারশায়ার ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মাঝারীসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। টিপ ফস্টার ডাকনামে পরিচিত ছিলেন তিনি ও ক্রীড়া সাহিত্যে সচরাচর আর. ই. ফস্টার নামে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন।[১] একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে ইংল্যান্ডের পক্ষে উভয় ধরনের ক্রীড়ায় অধিনায়কত্ব করার গৌরব অর্জন করেছেন।
ফস্টারদের সাত ভাইয়ের অন্যতম ছিলেন তিনি। তারা সকলেই মালভার্ন কলেজে অধ্যয়ন করেন। এছাড়াও তারা মালভার্নের পক্ষে ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেছেন। ওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলাকালীন তিনি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যানরূপে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন।
মালভার্ন কলেজে অধ্যয়ন শেষে অক্সফোর্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করেন। ১৮৯৭ সালে প্রথমবারের মতো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট ক্লাবে খেলেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল, র্যাকেট ও গল্ফে অক্সফোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন ফস্টার।[২] তবে মোটামুটি ভালো করলেও ১৮৯৯ সালের পূর্ব-পর্যন্ত নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হননি। তিনি তার সময়কালে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে অফ-সাইডে খুবই সুন্দর ও পরিপাটি ড্রাইভিং করার সক্ষমতা দেখান। ওরচেস্টারশায়ারে খেলাকালীন দলটি মাইনর কাউন্টির দল ছিল। ১৮৯৯ সালে প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি দল হিসেবে তাদের উদ্বোধনী মৌসুম অতিক্রান্ত করে। তিনি ও তার ভাই উইলফ্রিড ফস্টার উভয়েই হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে একটি খেলায় দুইটি শতরান করেন। তাদের এ কৃতিত্বটি অদ্যাবধি অক্ষত রয়েছে।[৩]
১৯০০ সালে অক্সফোর্ডের অধিনায়ক হিসেবে ১৭১ রান তুলেন।[৪] এরফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড স্থাপন করেন তিনি। জেন্টলম্যানের পক্ষে লর্ডসে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে অপরাজিত ১০২* ও ১৩৬ রান করেন। জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের সিরিজে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে জোড়া শতক করেন তিনি।[৫] ১৯০০ মৌসুমে অক্সফোর্ডের পক্ষে ৭৭.৪০ গড়ে সর্বমোট ৯৩০ রান তুলেন যা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেটে রেকর্ডবিশেষ।[৬]
পরের বছর ওরচেস্টারশায়ারের ফলাফলে তার সংগৃহীত দূর্দান্ত ইনিংসগুলো ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ৫৪.৩৬ গড়ে তিনি ১,৯৫৭ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। পরবর্তী বছরে ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে এমসিসি দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেননি ও ইংল্যান্ড দল নিঃসন্দেহে তার চমকপ্রদ ব্যাটিং নৈপুণ্য থেকে বঞ্চিত হয়। তাছাড়াও ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে একটি খেলায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকাসহ মে ও জুন, ১৯০২ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি সময় দিতে পারেননি। এরফলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার তাকে রাখা হয়নি।
১৯০৩ সালের জুন ও আগস্টে তিন খেলায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু ১৯০৩-০৪ মৌসুমে শীতকালীন অ্যাশেজ সফরে ইংল্যান্ড দলকে অধিনায়কের জন্য ছুটোছুটি করতে হয়। অপ্রত্যাশিতভাবে ফস্টার ইংল্যান্ড দলের বাইরে অবস্থান করেও অস্ট্রেলিয়া সফর আয়োজনে সক্ষমতা দেখান। যদিও আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, তিনি হয়তো অনুশীলনের অভাবে দলের বাইরে থাকবেন। ১১ ডিসেম্বর, ১৯০৩ তারিখে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফস্টার ২৮৭ রান তুলেন।[৭] এরফলে তিনি টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করতে কৃতিত্ব অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯৩০ সালে অ্যান্ডি স্যান্ডহাম তার সংগৃহীত এ রানকে অতিবাহিত করেন। অদ্যাবধি কোন একজন অভিষেক খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ রান এটি ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেশে বা বিদেশে যে-কোন দেশের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। পরবর্তীতে ১৯৩৮ সালে লেন হাটনের ৩৬৪ ও ২০১৫ সালে রস টেলরের ২৯০ রান তার এ সংগ্রহকে অতিক্রমণ করতে সক্ষম হয়েছিল।[৮] সেঞ্চুরি ছাড়াও ফস্টার এসসিজিতে অনুষ্ঠিত টেস্ট খেলায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান তুলেন। জানুয়ারি, ২০১২ সালে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লার্ক অপরাজিত ৩২৯* রান তুলেছিলেন।[৯] ফস্টার এরপর অবশ্য আর এ ধরনের কৃতিত্ব অর্জনে সক্ষম হননি। মেলবোর্নের চূড়ান্ত টেস্টের অনুপযুক্ত উইকেটে উভয় ইনিংসে তিনি সর্বোচ্চ রান করেন। দলীয় ৬১ রানের মধ্যে ১৮ ও ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে ৩০ রান তুলেন যাতে দলের সংগ্রহ ছিল ১০১।[১০]
পরবর্তী তিন মৌসুমে ফস্টার ক্রিকেটে সময় দিতে পারেননি। আগস্ট, ১৯০৫ সালে প্রথম খেলায় ২৪৬ রান তুলেন।[১১] কিন্তু জুন, ১৯০৭ সালের শুরু থেকে নিয়মিতভাবে দলে সময় দিতে থাকেন। তার ব্যাটিং গ্রীষ্মের অনুপযুক্ত উইকটেও সুন্দর থেকে সুন্দরতম হতে থাকে। ১৯০৬ সালে ষোলটি কাউন্টির মধ্যে ওরচেস্টারশায়ার দলের অবস্থান ছিল চৌদ্দতম। কিন্তু তিনি দলকে ইয়র্কশায়ারের সাথে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে যেতে সক্ষমতা দেখান। ১৯০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন খেলার সিরিজ খেলার জন্য অধিনায়ক মনোনীত হন। এক খেলায় জয়সহ দুই খেলায় ড্র করে তার দল। ১৯০৭-০৮ মৌসুমে অ্যাশেজ সফরের জন্য এমসিসির অধিনায়কত্বের প্রস্তাবনা থাকা স্বত্ত্বেও ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার ফলে একাগ্রচিত্তে মনোযোগ বিনষ্ট হবার আশঙ্কায় তিনি তা অস্বীকার করেন।
১৯০৭ সালে তৃতীয় টেস্ট শেষে তিনি কেবলমাত্র আরও দুইটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছেন। ১৯১০ সালে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১৩৩[১২] ও ১৯১২ সালে আরেকটি খেলায়। তবে, স্যাটারডে ক্লাব ক্রিকেটে তিনি তার প্রতিভাকে কখনো বিলীন হতে দেননি। ১৯০৯ সালে ক্লাব খেলার একটিতে মাত্র ৭৫ মিনিটে ২৬১ রান তুলতে পেরেছিলেন।
ফস্টার স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ছিলেন।[১৩] ১৯১৩ সালে স্পষ্টতঃই ফস্টারের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার বিষয়টি দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গেলেও আরোগ্যলাভে ব্যর্থ হন। এরপর মে, ১৯১৪ তারিখে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে।
১৯০০-এর দশকের শুরুতে ফস্টার করিন্থিয়ান্সের পক্ষে ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলেছেন। মালভার্ন কলেজের সাবেক ছাত্রদের নিয়ে গড়া দল ওল্ড মালভার্নিয়ান্সের পক্ষেও তিনি খেলেছেন।[১৪]
১৯০০ থেকে ১৯০২ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে পাঁচটি খেলায় অংশ নেন। ২৬ মার্চ, ১৯০০ তারিখে ওয়েলসের বিপক্ষে তার অভিষেক হয়। সাউদাম্পটনের ডেলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় খেলায় অংশ নেন ও তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। ঐ খেলায় তার দল ৩-০ ব্যবধানে জয়ী হয়।[১৫] ঐ একই খেলায় সি. বি. ফ্রাই ফুল-ব্যাকে খেলেছিলেন। ৩ মার্চ, ১৯০২ তারিখে ফস্টার তার শেষ খেলায় অংশ নেন। ঐ খেলায় তিনি দলের অধিনায়কত্ব করেন। খেলাটি গোলশূন্যভাবে ড্র হয়। তার স্বল্পকালীন ফুটবল খেলোয়াড়ী জীবনে ইংল্যান্ডের পক্ষে দুইটি গোল করেছিলেন।[১৬]
ঘরোয়া ক্রিকেটে তার অনবদ্য ক্রীড়াশৈলীর প্রেক্ষিতে ১৯০১ সালে ফস্টারকে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। উইজডেন তাদের প্রচ্ছদে উপ-শিরোনাম দেয়া হয় মি. আর. ই. ফস্টার এন্ড ফোর ইয়র্কশায়ারম্যান।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে তিনি ২৮৭ রান সংগ্রহ করেন।[৭] এরফলে সর্বোচ্চ টেস্ট রান তুলে বিশ্বরেকর্ড গড়েন তিনি।
ক্রীড়া অবস্থান | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী হ্যারি ফস্টার |
ওরচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯০১ |
উত্তরসূরী হ্যারি ফস্টার |
পূর্বসূরী পেলহাম ওয়ার্নার |
ইংরেজ ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯০৭ |
উত্তরসূরী আর্থার জোন্স |
পূর্বসূরী আর্নেস্ট নিডহাম |
ইংরেজ ফুটবল অধিনায়ক ১৯০২ |
উত্তরসূরী ফ্রাঙ্ক ফোরম্যান |
রেকর্ড | ||
পূর্বসূরী বিলি মারডক |
বিশ্বরেকর্ড - টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ২৮৭ ব অস্ট্রেলিয়া, সিডনি, ১৯০৩-০৪ |
উত্তরসূরী অ্যান্ডি স্যান্ডহাম |