আর্সেলরমিত্তাল অরবিট | |
---|---|
![]() এপ্রিল, ২০১২ সালে আর্সেলরমিত্তাল অরবিটকে স্ট্র্যাটফোর্ড হাই স্ট্রীট (এ১১৮) থেকে দেখা যাচ্ছে। | |
![]() | |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
অবস্থা | নির্মাণাধীন |
ধরন | পর্যবেক্ষণ টাওয়ার |
অবস্থান | অলিম্পিক পার্ক, লন্ডন, যুক্তরাজ্য |
প্রাক্কলিত সমাপন | মে, ২০১২ |
নির্মাণব্যয় | £১৯.১ মিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং |
স্বত্বাধিকারী | অলিম্পিক পার্ক লিজেসি কোম্পানী (সম্পূর্ণ নির্মাণের পর) |
উচ্চতা | ১১৫ মি (৩৭৭ ফু) |
নকশা ও নির্মাণ | |
স্থপতি | অনিশ কাপুর ও সেসিল বলমন্ড |
নির্মাতা | আর্সেলরমিত্তাল ও লন্ডন উন্নয়ন সংস্থা |
অবকাঠামোবিদ | অরূপ |
আর্সেলরমিত্তাল অরবিট (ইংরেজি: ArcelorMittal Orbit) স্ট্রাটফোর্ডের লন্ডনের অলিম্পিক পার্ক এলাকায় অবস্থিত পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। স্টীলের তৈরী এ ভাস্কর্যটি যুক্তরাজ্য তথা ব্রিটেনের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রীয় শিল্পকর্মরূপে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিতব্য লন্ডন অলিম্পিকের স্মারক হিসেবে স্ট্রাটফোর্ড এলাকায় রাখা হবে।[১]
অক্টোবর, ২০০৮ সালে লন্ডনের মেয়র বরিস জনসন এবং তেজা জোয়েল আসন্ন ২০১২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের জন্য লন্ডনের স্ট্র্যাটফোর্ড এলাকার সৌন্দর্য্য আনয়ণে অতিরিক্ত কিছু উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরফলে লন্ডনবাসীসহ পর্যবেক্ষণগণ বিস্ময়ে অভিভূত হবেন ও কৌতূহল নিবারণ করবেন।[২]
এ উপলক্ষে ২০০৯ সালে অলিম্পিক টাওয়ার নির্মাণের লক্ষ্যে একটি নকশা প্রতিযোগিতা আহ্বান করা হয়। এতে ৫০জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।[৩] জনসন বলেন যে তার প্রাথমিক চিন্তাধারা অরবিট বা দুর্গের তুলনায় বেশ নমনীয় ছিল। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের চমকপ্রদ প্রস্তাবনা গ্রহণের ফলে তা ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়।[২]
অক্টোবর, ২০০৯ সালে গণমাধ্যমে অনির্ধারিত সূত্রে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে এ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে স্টীল শিল্পের বৃহৎ অংশীদার ও ব্রিটেনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি লক্ষ্মী মিত্তাল প্রকল্পে সংযুক্তির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে জানা যায়। এতে তিনি £১৫ মিলিয়ন পাউন্ডের অর্থসংস্থানের সাথে সম্পৃক্ত থাকবেন। বরিস জনসন আইফেল টাওয়ার বা স্ট্যাচু অফ লিবার্টি'র ন্যায় কিছু একটা চাচ্ছিলেন।[৪][৫]
প্রজেক্টে মিত্তালের অংশগ্রহণের প্রেক্ষাপটে জানুয়ারি, ২০০৯ সালে ডেভোসে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল ও নৈশভোজনে অংশ নেন।[৬] আলাপ-আলোচনার এক পর্যায়ের শেষ ৪৫ সেকেন্ডে জনসন মিত্তালকে প্রস্তাবনা দিলে তিনি খুব দ্রুতলয়ে স্টীল সরবরাহে রাজী হন।[২] পরবর্তীকালে মিত্তাল প্রজেক্টে অংশগ্রহণের ব্যাপারে বলেন যে,[৭]
আমি কখনো এ ধরনের বৃহৎ প্রজেক্টে অংশগ্রহণের ব্যাপারে এতোটা আশাবাদী হইনি। আমি ধারণা করেছিলাম যে, বোধহয় আমাকে অল্প কিছুসংখ্যক স্টীল সরবরাহ করতে হবে। এক হাজার টন কিংবা ততোধিক টন দিয়ে হয়তোবা টাওয়ারটি সম্পন্ন হবে। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে ভাস্করসহ আমি অণুধাবণ করি যে শুধুমাত্র স্টীল সরবরাহ করলেই চলবে না, পুরো প্রজেক্টটিই সম্পূর্ণ করতে হবে। শুধুমাত্র আলাপ-আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেই ১৫ মাসের মতো সময় ব্যয়িত হয়েছে।
এরপর জনসন বলেছেন যে, প্রকৃতপক্ষে আর্সেলরমিত্তাল শুধুমাত্র স্টীল দান করেই নয়, বরং আরো অনেক কিছু করেছে।[২]
১১৫ মিটার বা ৩৭৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট আর্সেলরমিত্তাল অরবিটের পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামোটি ১১ মে, ২০১২ সালে সংবাদ সংস্থাসহ আপামর জনগণের জন্যে অবমুক্ত করা হয়।[৮] অনীষ কাপুর ও সেসিল বলমন্ডের পরিচালনায় প্রজেক্টটি অরবিট শিরোনামে নামাঙ্কিত হলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে মিত্তালের আর্সেলরমিত্তাল কোম্পানী সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করায় নাম পরিবর্তিত হয়ে আর্সেলরমিত্তাল অরবিট রাখা হয়।[৩] শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে কলোসাস অব স্ট্র্যাটফোর্ড অথবা হাবল বাবল নাম রাখার প্রস্তাবনা এসেছিল।[৯]
শুরুতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে টাওয়ারের উচ্চতা হবে ১২০ মিটার বা ৩৯০ ফুট।[৯][১০][১১][১২] কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে এর উচ্চতা দাঁড়ায় ১১৪.৫ মিটার বা ৩৭৬ ফুট যা যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।[১৩] পূর্বে যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ ভাস্কর্য এস্পায়ারের উচ্চতা ছিল ৬০ মিটার।
টাওয়ার কর্তৃপক্ষ আশা করছে যে এখানে প্রতি ঘণ্টায় ৭০০ ব্যক্তির সমাগম ঘটবে।[১৪] অলিম্পিক গেমস চলাকালে ব্যক্তি ও শিশুদের প্রবেশ মূল্য ধার্য্য করা হয়েছে যথাক্রমে £১৫ ও £৭ পাউন্ড। পরবর্তীতে অবশ্য প্রবেশ মূল্য কমিয়ে দেয়া হবে।[১৩] এছাড়াও, টাওয়ারে খাবার গ্রহণেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছে।[১৩]