আলংফ্রা

ইয়াঙ্গুন জাদুঘরের সামনে আলংফ্রার মূর্তি।

আলং-ফ্রা বা আলংপায়া (বর্মী ভাষায়: အလောင်းဘုရား; জন্ম: ১৭১৪, মোকসোবোমিয়ো শোয়েবো, মিয়ানমার; মৃত্যু: ১৩ই এপ্রিল, ১৭৬০, কিনওয়া, মার্তাবান প্রদেশ, মিয়ানমার) [] ছিলেন ১৭৫২ থেকে ১৭৬০ পর্যন্ত মিয়ানমারের কোনবং সাম্রাজ্যের সম্রাট। [] তিনি মিয়ানমারকে একত্র করে কোনবং রাজবংশের পত্তন করেন। আলং-ফ্রা একটি বর্মী শব্দ যার অর্থ "বিজয়ী"। ব্রিটিশেরা ১৮৮৬ সালের ১লা জানুয়ারি উত্তর বার্মা দখল করার আগ পর্যন্ত কোনবং রাজবংশ ক্ষমতায় ছিল। আলংফ্রা ইরাবতী নদীর ব-দ্বীপে অবস্থিত মনদের স্বাধীন রাজ্য পেগু-ও বিজয় করেছিলেন।

জীবনী

[সম্পাদনা]

আলংফ্রা মিয়ানমারের তৎকালীন রাজধানী আভার উত্তরে অবস্থিত ছোট শহর মোকসোবোমিয়ো (বর্তমান শোয়েবো)-তে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৫২ সালে পেগু রাজ্যের মন রাজা বিনিয়া দালা আভা শহর দখল করেন এবং মিয়ানমারের টংগু রাজবংশের পতন ঘটান। আলংফ্রা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি নিজেকে ১৫শ শতকের এক মিয়ানমার রাজার বংশধর দাবী করেন এবং মোকসোবোমিয়োতে মিয়ানমারের নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। ১৭৫৩ সালে তিনি আভা শহর মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন এবং দক্ষিণ মিয়ানমারে অভিযান চালান। ১৭৫৫ সালে মন রাজ্যে এক ঝটিকা অভিযানের শেষ পর্যায়ে তিনি মন জেলেগ্রাম দাগনে একটি নতুন বন্দর স্থাপন করেন, পরবর্তীকালে যার নাম রাখা হয় ইয়াঙ্গুন। ১৭৫৭ সালে তিনি পেগু শহর দখল করেন এবং বিনিয়া দালাকে বন্দী করেন। এভাবে প্রাক্তন টংগু রাজবংশের শাসনাধীন সমস্ত এলাকাতে আলংফ্রা বর্মী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন।

ফরাসিরা মন জাতির লোকদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেছিল। এ কারণে আলাউংপায়া ব্রিটিশদের সমর্থনের জন্য আগ্রহী ছিলেন। ১৭৫৭ সালে তিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে এক চুক্তি করেন, যাতে কোম্পানিকে বহু বাণিজ্যিক সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু ব্রিটিশরা ইতোমধ্যে ভারতে ফরাসিদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল, এবং সেজন্য মিয়ানমারে ফরাসিদের সাথে দ্বিতীয় একটি যুদ্ধের ব্যাপারে আগ্রহী ছিল না। ১৭৫৯ সালে নেগ্রাইস-এ রাজার সৈন্যরা স্থানীয় বিদ্রোহে মদদ দেবার অভিযোগে ব্রিটিশ বণিকদের গণহত্যা করে। এই ঘটনার পর ব্রিটেন ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।

থাইল্যান্ড (তৎকালীন শ্যামদেশ) আক্রমণ ছিল আলংফ্রার জীবনের শেষ অভিযান। তিনি তাভয় শহরের মধ্য দিয়ে তার সেনাবাহিনীকে দক্ষিণদিকে তেনাসেরিমে নিয়ে যান এবং এরপর উত্তর দিকে শ্যামদেশের রাজধানী আয়ুথিয়ার দিকে রওনা হন। ১৭৬০ সালের এপ্রিল মাসে তিনি শহরটি সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলেন। এই অবরোধের সময় তিনি গুরুতর আহত হন, এবং সেনাবাহিনী নিয়ে মিয়ানমারে ফেরত আসার পথে তিনি মারা যান।

আরো দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Alaungpaya | Burmese Empire, Monarchy, Unification | Britannica"www.britannica.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৬ 
  2. "King Alaungpaya"www.myanmars.net (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৬