আলবের্তো ফুজিমোরি

আলবের্তো ফুজিমোরি
পেরুর ৪৫তম রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
২৮শে জুলাই, ১৯৯০ – ২২শে নভেম্বর, ২০০০
উপরাষ্ট্রপতিমাক্সিমো সান রোমান (১৯৯০)
রোকে মার্কেস (১৯৯৫)
ফ্রান্সিস্কো তুদেলা (২০০০)
পূর্বসূরীআলান গার্সিয়া
উত্তরসূরীবালেন্তিন পানিয়াগুয়া কোরাসাও
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম২৮শে জুলাই, ১৯৩৮
লিমা, পেরু
মৃত্যু১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪(2024-09-11) (বয়স ৮৬)
লিমা, পেরু
রাজনৈতিক দলকাম্বিও ৯০ (১৯৯০-১৯৯৯)
পেরু ২০০০ (২০০০)
সি কুম্পলে (২০০৬)
পিপল্‌স নিউ পার্টি (২০০৭)
দাম্পত্য সঙ্গীসুসানা হিগুচি (বিবাহচ্ছিন্ন)
সাতোমি কাতাওকা
ধর্মরোমান ক্যাথলিক
স্বাক্ষর

আলবের্তো কেনিয়া ফুজিমোরি (স্পেনীয়: [alˈβeɾto fuxiˈmoɾi] or [fu(ɟ)ʝiˈmoɾi]; জাপানি: 藤森謙也, ২৮শে জুলাই, ১৯৩৮ - ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৪)[] ১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পেরুর রাষ্ট্রপতি ছিলেন। []

ফুজিমোরি জাপান থেকে আগত অভিবাসী বাবা-মায়ের ঘরে পেরুর লিমা প্রদেশের মিরাফ্লোরেস জেলায় জন্ম নেন ২৮ জুলাই ১৯৩৮ সালে। [] তিনি পেরু ও জাপানের দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী। [] তিনি কৃষিবিজ্ঞান ও গণিতে পড়াশোনা করেন। ১৯৬১ সালে লিমাতে অবস্থিত উনিবের্সিদাদ নাসিওনাল আগ্রারিয়া লা মোলিনা (Universidad Nacional Agraria La Molina) থেকে কৃষি প্রকৌশলে সেরা ছাত্র হিসেবে স্নাতক হন। তিনি ১৯৬৪ সালে ফ্রান্সের স্ত্রাসবুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান পড়তে যান। ফোর্ড বৃত্তির অধীনে এরপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকন্সিন বিশ্ববিদ্যালয় যান এবং ১৯৬৯ সালে সেখান থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রী লাভ করেন। দেশে ফেরত এসে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দেন। ১৯৭৪ সালে সুসানা হিগুচিকে বিয়ে করেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর বা প্রধান হন। ১৯৮৭-৮৯ সালে ফুজিমোরি কোনসের্তান্দো (Concertando "একত্র হওয়া") নামের একটি টেলিভিশন শো উপস্থাপনা করেন, যাতে পরিবেশ ও কৃষির বিভিন্ন ইস্যু আলোচিত হয়।

পেরুর অর্থনীতির দুরবস্থা ও সেন্দেরো লুমিনোসো গেরিলাদের তৎপরতার বিরুদ্ধে তিনি ১৯৮৯ সালে কাম্বিও ৯০ (অর্থাৎ "পরিবর্তন ৯০") নামের একটি আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯০ সালের ১০ই জুনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সবাইকে অবাক করে তিনি নির্বাচিত হন। শাসনের শুরুর দিকে তার কঠোর অর্থনৈতিক নীতি অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ বাড়িয়ে দেয়, কিন্তু পরিশেষে সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিচারে নীতিগুলি অত্যন্ত সফল হিসেবে গণ্য হয়। নীতিগুলি পেরুর মুদ্রাস্ফীতি ১৯৯০ সালের ৭০০০% থেকে ১৯৯৪ সালে মাত্র ২২%-এ নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। এছাড়া অর্থনৈতিক অবক্ষয় থেমে ১৯৯৩ সালে ৭% বৃদ্ধি হার অর্জিত হয়। এছাড়াও তিনি মাওবাদী সেন্দেরো লুমিনোসো গেরিলাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে তিনি ১৯৯২ সালের এপ্রিলে একটি ক্যু ঘটান, যাতে তিনি কংগ্রেস বিলুপ্ত করে দেন এবং প্রশাসন ও বিচার বিভাগে পুরনো কর্মচারীদের সরিয়ে দিয়ে তার সমর্থকদের বসান। এছাড়াও তিনি পুনর্নিবাচন নিশ্চিত করতে সংবিধানে সংশোধন আনেন। পূর্ব এশীয় চেহারার জন্য তাকে পেরুর জনগণ ডাকণাম দেয় এল চিনো (El Chino)। তার নেয়া সংস্কারগুলির কৌতুককর নাম দেয়া হয়েছিল "ফুজিশক"।

১৯৯৫ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। কিন্তু এই দ্বিতীয় পর্বের শাসনে তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তীব্রতর হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে তিনি জাপানে পলায়ন করেন এবং সেখান থেকেই রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তী পেরু সরকার তার বিরুদ্ধে অনেকগুলি মামলা দায়ের করে এবং তাকে পেরুতে ফিরিয়ে এনে বিচারের চেষ্টা করতে থাকে। ২০০৫ সালে চিলিতে আসলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে ২০০৭ সালে তাকে পেরুর প্রশাসনের কাছে হতান্তর করে দেয়া হয়। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে একটি মামলার রায়ে আদালত তাকে ৬ বছরের কারাদণ্ড দেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Archived copy"। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৭ 
  2.  • Burt, Jo-Marie; Youngers, Coletta A. (২০১০)। "Peruvian precedent: the Fujimori conviction and the ongoing struggle for justice"। NACLA Report on the Americas43 (2): 6। এসটুসিআইডি 157981443ডিওআই:10.1080/10714839.2010.11722203Peru's vibrant human rights community, which fought tirelessly to confront impunity, end the Fujimori dictatorship 
  3. Champion, Margaret Y. (২০০৬)। Peru and the Peruvians in the Twentieth Century: Politics and Prospects। New York: Vantage Press। পৃষ্ঠা 476। আইএসবিএন 0-533-15159-7 
  4. Fujimori secures Japanese haven, BBC News, 12 December 2000. Retrieved 29 December 2007.