আশিক বনায়া আপনে | |
---|---|
পরিচালক | আদিত্য দত্ত |
প্রযোজক |
|
রচয়িতা | আনজান সাগরি |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | হিমেশ রেশমিয়া |
চিত্রগ্রাহক | এ. কে. এন. সেবাস্টিয়ান |
সম্পাদক | ইরফান শেখ |
পরিবেশক | শগুন ফিল্ম ক্রিয়েশনস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১১৫ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ৫ কোটি টাকা |
আয় | ১৭ কোটি টাকা |
আশিক বনায়া আপনে হিন্দি: आशिक बनाया आपने; বাংলা: প্রেমিক করেছি তুমি) হলো ২০০৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় হিন্দি প্রণয়ধর্মী-সহিংসতাবাদী চলচ্চিত্র। এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন ইমরান হাশমী, সোনু সুদ, তনুশ্রী দত্ত ও নবীন নিশ্চল। এই ছবিটি অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তের অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। শগুন ফিল্ম ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত এই ছবি প্রকৃতপক্ষে ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হলিউড চলচ্চিত্র ট্যাংগলড ছবির পুনর্নির্মাণ।
করণ (সোনু সুদ) স্নেহাকে (তনুশ্রী দত্ত) ভালোবাসে। কিন্তু অন্তর্মুখী করণের পক্ষে নিজের ভালোবাসা ব্যক্ত করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। করণের অনুভূতিগুলি অনেকের কাছে স্পষ্ট হলেও সে শুধু স্নেহাকে হাসতে দেখেই খুশি থাকে। কখনও সাহস সঞ্চয় করে তাকে নিজের মনের কথা বলতে পারে না। একটি পার্টিতে স্নেহাকে আমন্ত্রণ জানায় করণ। সেই পার্টিতেই স্নেহার সঙ্গে আলাপ হয় সুদর্শন ও দুষ্টবুদ্ধি ভিকির (ইমরান হাশমী) সঙ্গে।
ভিকি হল করণের ছেলেবেলার বন্ধু। স্বভাবের দিক থেকে সে করণের ঠিক বিপরীত। সে মিশুকে এবং এক কুখ্যাত ছিনাল। ভিকি যখন করণ ও স্নেহার সঙ্গে একই কলেজে ভর্তি হয়, তখন তিন জনেরই জীবন পরিবর্তিত হয়। ভিকির প্রতি স্নেহার মনে একটি আকর্ষণবোধ জন্মায়।
ভিকির অভিসন্ধির কথা জানতে পেরে ভয় পায় করণ। সে স্নেহার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু ভিকি তাকে বলে যে এইবার সে সত্যিই স্নেহার প্রেমে পরেছে। এটা আন্তরিকতাহীন প্রেমের ভান নয়। করণের মনে হয়, একমাত্র যে মেয়েটিকে সে ভালোবেসেছিল, তাকে সে হারালো। কিন্তু সে এও জানত যে, এই ব্যাপারে সে কিছুই করতে পারবে না। যদিও জীবন চলতে থাকে। তিনজনের মধ্যে বন্ধুত্বের এক বিশেষ বন্ধন গড়ে ওঠে। ভিকিও চাঁদনি নামে কলেজের আরেকটি মেয়ের সঙ্গে করণের সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে।
দু’জনের মধ্যে সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। এমন সময় এক রাতে এক দুর্ঘটনা তাদের সম্পর্ক ভেঙে চুরমার করে দিল। সেদিন ভিকি চাঁদনিকে প্রেম নিবেদনরত অবস্থায় ধরা পড়ল। সব কিছু বদলে গেল। বিশ্বাস ভেঙে পড়ল। মোহ ও বিভ্রান্তি আসন্ন হয়ে পড়ল। স্নেহা হতবুদ্ধি হয়ে ভেঙে পড়ল। ভিকি স্নেহার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু করণ মাঝপথে বাধা দিলে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। স্নেহা তাদের থামায় এবং করণের পক্ষ নেয়। ভিকি চলে যায়। কিন্তু যাওয়ার আগে দাবি করে যায় যে, স্নেহা সবসময় তারই থাকবে। এক রাতে ভিকি স্নেহাকে ফোন করে এবং বিদ্বেষপূর্ণ বার্তা পাঠায়। তারপর তার দরজায় টোকা দিয়ে জানলা দিয়ে একটি পাথর ছুঁড়ে দেয়। সেই পাথরের সঙ্গে বাঁধা চিরকুটে লেখা ছিল স্নেহা তারই। স্নেহা বিভ্রান্ত হয়। সে করণের কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে যায়। পরে দেখা যায় ড্রাগ কেনাবেচার দায়ে ভিকি কারারুদ্ধ হয়। এদিকে করণ শেষ পর্যন্ত সাহস সংগ্রহ করে স্নেহাকে প্রেম নিবেদন করে এবং স্নেহার বাবাও তাদের সম্পর্কে সম্মতি জানায়।
এক রাতে স্নেহা ও করণ একসঙ্গে রয়েছে। জামিনে ছাড়া পাওয়া ভিকি সেই সময় তাদের জীবনে আবার প্রবেশ করে। এইবার সে সঙ্গে আনে চাঁদনিকে। ভিকি করণকে বাধ্য করে সত্যি ঘটনা স্নেহার কাছে স্বীকার করতে। জানা যায়, স্নেহার প্রতি ভালোবাসা এবং ভিকির প্রতি ঈর্ষা কোনওটিই করণ কোনওদিন কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দু’জনকে একসঙ্গে দেখে সে তাদের জীবনে প্রবেশ করে এবং ঠিক করে স্নেহা ও নিজের জীবন থেকে সে ভিকিকে সরিয়ে দেবে এবং স্নেহার বিশ্বাস অর্জন করতে সে ভিকিকে ফাঁসাবে। জানা যায়, করণই চাঁদনিকে ড্রাগ দিয়ে এমন একটি ভিকিকে প্রলুব্ধ করায় যখন স্নেহা দু’জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলবে। পরে ভিকির ফোন চুরি করে সেটি দিয়ে করণ স্নেহাকে হেনস্থা করে। পরে সে-ই স্নেহার দরজায় টোকা মেরে তার জানলায় পাথর ছোঁড়ে। ভিকি যে তার এক বন্ধুর জন্য ড্রাগ রাখত সেই কথা করণ জানত। তাই পুলিশকে ঘুষ দিয়ে সে করণকে গ্রেফতার করায়।
করণের অপকর্মের কথা শুনে স্নেহা হতবুদ্ধি হয় এবং ভয় পায়। বলে, এখন সে করণকে ঘৃণা করে। তারপর করণ একটি বন্দুক নিজের কপালে ঠেকিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ভিকি ও স্নেহা যখন তাকে থামাতে যায়, করণ ভিকিকে লক্ষ্য করে গুলি করে। কিন্তু গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে চাঁদনির গায়ে লাগে এবং চাঁদনির মৃত্যু ঘটে। ভিকি ও করণের মধ্যে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে। মারামারির শেষে স্নেহা গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তাদের তিন জনকেই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে আসে। শেষে দেখা যায়, চাঁদনিকে হত্যার অপরাধে করণ গ্রেফতার হয়। কিন্তু সে স্নেহার কাছে ক্ষমা চায় এবং যেতে যেতে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে যায়। স্নেহা মিলিত হয় ভিকির সঙ্গে এবং একে অপরকে নিজেদের ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করে।
এই ছবির সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবামের মাধ্যমেই হিমেশ রেশমিয়া বলিউডে গায়ক হিসাবে পদার্পণ করেন। ভারতীয় বাণিজ্য ওয়েবসাইট বক্স অফিস ইন্ডিয়ার হিসাব অনুযায়ী, এই অ্যালবামটির প্রায় ২০,০০০,০০০ কপি বিক্রি হয়। "আশিক বনায়া আপনে" গানটি হেট স্টোরি ৪ ছবিতে হিমেশ রেশমিয়া ও নেহা কক্করের কণ্ঠে পুনঃসৃজিত হয়েছিল।[১]
সকল গানের গীতিকার সমীর আনজান; সকল গানের সুরকার হিমেশ রেশমিয়া।
ট্র্যাক তালিকা | |||
---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | শিল্পী(বৃন্দ) | দৈর্ঘ্য |
১. | "আশিক বনায়া আপনে" | হিমেশ রেশমিয়া ও শ্রেয়া ঘোষাল | ৬:০৪ |
২. | "মার জওয়ান মিত জওয়ান" | অভিজিৎ সাবন্ত ও সুনিধি চৌহান | ৪:২৮ |
৩. | "আপ কী কাশিশ" | হিমেশ রেশমিয়া, কৃষ্ণা বেউরা ও আহির | ৫:৩৩ |
৪. | "দিল নশিন দিল নশিন" | কে. কে. | ৬:৩২ |
৫. | "দিল্লাগি মেঁ জো বীত যায়ে" | সোনু নিগম, শান, হিমেশ রেশমিয়া, জয়েশ গান্ধী ও বসুন্ধরা দাস | ৪:১৪ |
৬. | "আশিক বনায়া আপনে" (রিমিক্স) | হিমেশ রেশমিয়া | ৪:৩২ |
৭. | "দিল নশিন দিল নশিন" (রিমিক্স) | কে. কে. | ৪:৩২ |
৮. | "আপ কী কাশিশ" (রিমিক্স) | হিমেশ রেশমিয়া ও আহির | ৪:৪১ |
ছবিটি অধিকাংশ সমালোচকের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই লাভ করে। দ্য হিন্দু পত্রিকার সমালোচক জিয়া উস সালাম লেখেন যে, ইমরান হাশমী অভিনয় করেছেন "এমন যান্ত্রিক সাচ্ছন্দ্যে যে কেউ যদি মনে করেন কোনও রোবট কাজ করে চলেছে তবে তাঁকে মাফ করে দেওয়া যায়।".[২] রিডিফ.কম এই ছবির কাহিনিকে ‘পর্বতের মতো প্রাচীন’ বলে মন্তব্য করে।[৩] বলিউড হাঙ্গামার তরণ আদর্শ লেখেন যে, ছবিটি "দেখে মনে হয় দৃশ্যাবলির কোলাজ, যা মধ্যমেধার প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ একটি ছবিতে সন্নিবেশিত হয়েছে।"[৪]