এই জীবিত ব্যক্তির জীবনীমূলক নিবন্ধটির তথ্য যাচাইয়ের জন্য অতিরিক্ত সূত্র থেকে উদ্ধৃতিদান করা প্রয়োজন। (April 2014) |
আসফান্দিয়ার ওয়ালি খান اسفندیار ولي خان | |
---|---|
আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি এর সভাপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২০০৩ | |
পূর্বসূরী | এহসান ওয়াইন |
কাজের মেয়াদ ১৯৯৯ – ২০০২ | |
পূর্বসূরী | আজমল খট্টক |
উত্তরসূরী | এহসান ওয়াইন |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | চরসদ্দা, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পাকিস্তান | ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯
রাজনৈতিক দল | আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি |
বাসস্থান | ওয়ালীবাগ, চরসদ্দা, খাইবার-পাখতুনখোয়া, পাকিস্তান |
জীবিকা | রাজনীতিবিদ |
পাকিস্তানের পার্লামেন্ট |
আসফান্দিয়ার ওয়ালি খান (পশতু: اسفندیار ولي خان) (জন্ম ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) একজন পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ যিনি একজন গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক নেতা এবং পশতুন জাতীয়তাবাদী। জনাব খান পাকিস্তানের আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির সভাপতি। তার বাাবা খান আব্দুল ওয়ালী খান ছিলেন দলটির প্রথম সভাপতি। তিনি খান আবদুল গাফফার খানের নাতি, যিনি ’বাচা খান’ নামে বেশি পরিচিত ছিলেন। আব্দুল গাফফার খান ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ায় ব্রিটিশ শাসনামলে অহিংস পশতুন রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা যার নাম ছিল ‘খুদাই খিদমতগার’ ("খোদার দাস") এবং তিনি মহাত্মা গান্ধীর একজন সহচর ছিলেন। ব্রিটিশ রাজের শেষগুলিতে আসফান্দিয়ার খানের চাচা খান আবদুল জব্বার খান ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, এবং স্বাধীন পাকিস্তানের প্রথম দিকেও ঐ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আসফান্দিয়ার আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির বর্তমান সভাপতি এবং তিনি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে পাকিস্তানের সংসদে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংবিধানের ১৮তম সংশোধনীর সময় পিপিপি জোটের অংশীদার হিসেবে আসফান্দিয়ার ওয়ালী খান প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন পান এবং উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের নাম পরিবর্তন করে খাইবার পাখতুনখোয়া হয়।
আসফান্দিয়ার ওয়ালি খান পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া, পেশোয়ারের বাইরের একটি ছোট গ্রাম ‘চরসাদ্দায়’ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খান আবদুল ওয়ালী খান এবং তার প্রথম স্ত্রী তাজ বিবির জ্যেষ্ঠ পুত্র। ১৯৪৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা ১৯৫৪ সালে নাসিম ওয়ালি খানকে বিয়ে করেন। সঙ্গিন ওয়ালী খান ছিলেন তার সৎ ভাই এবং নাসিম ওয়ালী খানের বড় ছেলে যিনিও আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির একজন উচ্চপদস্ত নেতা।
আসফান্দিয়ার ওয়ালি খান তার প্রাথমিক শিক্ষা লাহোরের আইচিসন কলেজ থেকে, ইসলামিয়া কলেজিয়েট স্কুল থেকে হাই স্কুল এবং পেশোয়ারের পেশোয়ার পাখতুন খাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ সম্পন্ন করেন[১]।
আসফান্দিয়ার ওয়ালী খান ছাত্র কর্মী হিসেবে আইয়ুব খানের বিরোধিতায় যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে, আসফান্দিয়ার এর বিরুদ্ধে হায়াত শেরপাওে-এর হত্যার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল, যার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এনডব্লিউএফপিতে আসফান্দিয়ার একটি সশস্ত্র অভিযান চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। জুলফিকার আলী ভুট্টোর সরকার তাকে কারারুদ্ধ ও নির্যাতন করে এবং হায়দ্রাবাদ ট্রাইব্যুনালের অংশ হিসেবে ১৫ বছর কারাবাসের জন্য তিনি দোষী সাব্যস্ত হন[২]। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পেয়ে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি নির্বাচনী রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। আসফান্দিয়ার ওয়ালি খান ১৯৯০ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত হওয়ার আগে পাখতুন স্টুডেন্ট ফেডারেশনের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯৩ সালের নির্বাচনে তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হন। একটি আসনে তিনি ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির সংসদীয় নেতা হন এবং আন্তঃপ্রাদেশিক সমন্বয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে, তিনি প্রথমবারের মতো দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি বিরোধী সমস্ত দল একটি কৌশলগত জোট গঠন করেছিল, ফলে ২০০২ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন, যা ১৯৯০ সালে তার পিতার পরাজয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছিল। তার পরাজয়ের পর তিনি তার দলের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন, কিন্তু পরবর্তী দলীয় নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে তিনি ৬ বছর মেয়াদের জন্য সিনেটে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সংসদীয় নির্বাচনে তিনি জাতীয় পরিষদে পুনঃনির্বাচিত হন, যা তার দলকে প্রাদেশিক এবং জাতীয় উভয় পর্যায়েই ক্ষমতায় নিয়ে যায়। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে, তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে পাকিস্তানের বিখ্যাত দৈনিক ‘ডন’ দ্বারা রিপোর্ট করা হয়েছিল যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গোপন সফর করেছিলেন যেখানে তিনি মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের সাথে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন।
৩রা অক্টোবর ২০০৮-এ, গ্রামের বাড়িতে তিনি একটি আত্মঘাতী বোমা হামলার শিকার হন যখন তিনি ঈদ-উল-ফিতরের সময় অতিথিদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন। অল্পের জন্য তিনি এই হামলা থেকে রক্ষা পান। হামলার কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো হেলিকপ্টারে আসফান্দিয়ার ওয়ালী খান চরসাদ্দা ত্যাগ করেন।