আসাদ হ্রদ بحيرة الأسد | |
---|---|
![]() আসাদ হ্রদ (বামে), তাবকা ড্যাম (মাঝে) এবং বাথ ড্যাম (ডানে), ছবিটি ১৯৬৬ সালের জুন মাসে তোলা হয়েছে, ছবিটির উপরের দিকের বাম অঞ্চল উত্তর দিক নির্দেশ করছে | |
![]() আসাদ হ্রদের বিস্তৃত অঞ্চলের মানচিত্র | |
অবস্থান | রাক্কা |
স্থানাঙ্ক | ৩৬°০০′ উত্তর ৩৮°১০′ পূর্ব / ৩৬.০০০° উত্তর ৩৮.১৬৭° পূর্ব |
ধরন | আধার |
প্রাথমিক অন্তর্প্রবাহ | ফোরাত |
প্রাথমিক বহিঃপ্রবাহ | ফোরাত |
অববাহিকার দেশসমূহ | সিরিয়া, তুরস্ক |
নির্মিত | ১৯৬৮ |
প্রথম প্লাবিত | ১৯৭৪ |
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য | ৮০ কিমি (৫০ মা) |
সর্বাধিক প্রস্থ | ৮ কিমি (৫ মা) |
পৃষ্ঠতল অঞ্চল | ৫২৫ কিমি২ (২০৩ মা২) |
পানির আয়তন | ১০ কিমি৩ (২.৪ মা৩) |
দ্বীপপুঞ্জ | জাযিরাত আল-থাওরাহ |
জনবসতি | আল-থাওরাহ |
আসাদ হ্রদ (আরবি: بحيرة الأسد, বুহায়রাত আল-আসাদ) ফোরাত নদীর একটি পানির আধার, যা সিরিয়ার রাক্কা প্রদেশে অবস্থিত। তাবকা ড্যাম বন্ধ হয়ে গেলে ১৯৭৪ সালে এটি তৈরি করা হয়। আসাদ হ্রদ সিরিয়ার সবচেয়ে বড় হ্রদ, যেটির ধারণক্ষমতা প্রায় ১১.৭ ঘনকিলোমিটার (২.৮ মা৩) এবং এর উপরিতলের ক্ষেত্রফল প্রায় ৬১০ বর্গকিলোমিটার (২৪০ মা২)। এর আশপাশে অনেক খাল রয়েছে। এই খালগুলো আসাদ হ্রদ থেকে পানি নিয়ে ফোরাত নদীর চারপাশের অঞ্চলে সেচকার্য চালানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। উল্লেখ্য, আসাদ হ্রদ আলেপ্পো শহরের পানির চাহিদা মেটায়। এটিকে ঘিরে মৎস্যশিল্পের প্রসার ঘটেছে। আসাদ হ্রদের তীরকে নানান অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে।
ফোরাত নদীর সিরীয় অঞ্চলে, ১৯২৭ সালে সর্বপ্রথম একটি বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, কিন্তু এটি বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর, ১৯৫৭ সালে, ফোরাত নদীতে একটি বাঁধ নির্মাণের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং ১৯৬০ সালে, পশ্চিম জার্মানির সাথে অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৬৫ সালে পুনরায়, সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[১] প্রকল্পটিতে তাবকা বাঁধের জন্য একটি হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার স্টেশন এবং ৬,৪০,০০০ হেক্টর (২,৫০০ মা২) অঞ্চল জুড়ে, ফোরাত নদীর উভয়পাশে সেচকার্য পরিচালনার জন্য বৃহৎ পরিকল্পনা ছিল।[২][৩] ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত এর নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকে। ১৯৭৪ সালে, ফোরাত নদীর নাব্যতা হ্রাসের মাধ্যমে বাঁধটির কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। হাফেয আল-আসাদের শাসনকালে, কৃষিকাজের উন্নয়নের নীতির আলোকে, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।[৪] ১৯৭৫ সালে, ইরাক অভিযোগ করে যে, তাবকা বাঁধের কারণে ফোরাত নদীর নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে এবং ইরাক তাবকা বাঁধের ওপর বোমা ফেলার হুমকিও দেয়। এরপরে, সৌদি আরব ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় এই বিতর্কের অবসান ঘটে।[৫]
আসাদ হ্রদের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১১.৭ ঘনকিলোমিটার (২.৮ মা৩) এবং এর উপরিতলের ক্ষেত্রফল ৬১০ বর্গকিলোমিটার (২৪০ মা২) যা এটিকে সিরিয়ার বৃহত্তম হ্রদের মর্যাদা দিয়েছে। যদিও, এর প্রকৃত ধারণক্ষমতা ৯.৬ ঘনকিলোমিটার (২.৩ মা৩) এরও কম যার উপরিতলের ক্ষেত্রফল ৪৪৭ বর্গকিলোমিটার (১৭৩ মা২)।[৬] নির্মাণের পর, প্রস্তাবিত সেচকার্যের পরিকল্পনা নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল, বিশেষ করে হ্রদের আশপাশে উচ্চমাত্রার জিপসাম ছিল একটি প্রধান সমস্যা। এছাড়াও নির্ধারিত স্থানে কৃষকদের অনিচ্ছা, খালসমূহের নানান স্থানে ভেঙ্গে পড়ার মতো সমস্যা গুলোও ছিল অন্যতম। ফলে, ১৯৮৪ সালে, মাত্র ৬০,০০০ হেক্টর (২৩০ মা২) পরিমাণ জমিতে সেচ করা হয়েছিল।[৭]