ধর্মহীনতা |
---|
একটি ধারাবাহিকের অংশ |
![]() |
আস্তিক্যবাদ বিরোধিতা (ইংরেজি: Antitheism) হচ্ছে আস্তিক্যবাদ এর বিরোধিতা করা।[১] এ পদ বাচ্যের ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিস্তৃত সীমা রয়েছে। সাধারণ ধর্মনিরপেক্ষ প্রসঙ্গ অনুযায়ী আস্তিক্যবাদ বিরোধিতা হলোঃ যে কোন প্রকার দৈবশক্তিতে বিশ্বাসের স্পষ্ট বিরোধিতা করা।
১৭৮৮ সালে এ পদবাচ্য প্রথম ইংরেজিতে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।[২] ধাতুগত অর্থ বিবেচনা করলে এর প্রথম অংশ এন্টি এবং শেষ অংশ থিসিজম এসেছ গ্রিক ভাষা থেকে, যার অর্থ যথাক্রমে বিরোধী আস্তিকতা, অর্থাৎ আস্তিক্যবাদ বিরোধিতা
অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান প্রতি আস্তিক্যবাদ এর সংজ্ঞায় উল্লেখ করেছে, যে ব্যক্তি ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিশ্বাসের বিরোধিতা করে তিনি প্রত্যাস্তিক্যবাদী। ১৮৩৩ সালে সর্বপ্রথম এই পদবাচ্যের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।[৩] যারা আস্তিক্যবাদকে বিপজ্জনক, ধ্বংসাত্মক এবং ক্ষতিকর কাজকে প্রণোদিত করার পিছনের কারণ মনে করেন, তারাই কালক্রমে প্রতি-আস্তিক্যবাদী হিসেবে বর্তমানে অভিহিত হন। ক্রিস্টোফার হিচেন্স উদাহরণ হিসেবে লেটার টু অ্যা ইয়াং কনট্রেইনে লিখেন, আমি শুধুমাত্র একজন নাস্তিক নই আমি একজন প্রতি আস্তিক্যবাদীও। আমি শুধুমাত্র সমস্ত ধর্ম অসত্য এ বিষয়টি বলেই নিজের কার্য শেষ করি না। আমি গির্জার ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রভাব এবং তার ক্ষতিকর অবস্থা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করে থাকি।"[৪]
প্রতি আস্তিক্যবাদের ভিন্ন সংজ্ঞা বিভিন্ন দার্শনিক দিয়েছেন। ফরাসি ক্যাথলিক দার্শনিক জ্যাকুয়াস মারিটেইন সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, "যেসব বিষয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত ঈশ্বরের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় তার বিরুদ্ধে সক্রিয় সংগ্রামই হলো প্রতি আস্তিক্যবাদিতা" (পৃষ্ঠা ১০৪)।
ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিরোধিতাকে অনেক সময় ডিসিথিজম নামেও অভিহিত করা হয়। ডিসিথিজম শব্দের অর্থ হলোঃ এক নির্দয় দৈবশক্তির প্রতি বিশ্বাস। মিসোথিজমের বিকল্প হিসেবে এই পদবাচ্য অনেক সময় ব্যবহার করা হয়। এর অর্থ হল "ঈশ্বরের সুস্পষ্ট ঘৃণা"র প্রকাশ।
ক্রিস্টোফার নিউ ১৯৯৩ সালে তার মানস পরীক্ষায় প্রত্যাস্তিক্যবাদ কে ভিন্ন ভাবে ব্যবহার করেন। তিনি তার প্রবন্ধে নিকৃষ্ট ঈশ্বরের অস্তিত্বের পক্ষে তর্ক করলে তা কীরূপ হবে তার কল্পনা করেন। তার মতে প্রত্যাস্তিক্যবাদীরাই এরূপ তর্ক উত্থাপন করবে। "আস্তিক্যবাদীরা যেমন পরম দয়ালু, পরম ক্ষমাশীল, সর্বজ্ঞ স্রষ্টার চিন্তা করেন এবং তাদের মতে সেই মহান সত্তা সম্পুর্ণরূপে ভালো। ঠিক একই রকম ভাবে যদি নিখুঁত শয়তান ঈশ্বরের প্রতিচ্ছবি আকা যায়, তবে সে শয়তান ঈশ্বরকে প্রত্যাস্তিক্যবাদীরা বিশ্বাস করবেন"। এমনটাই নিউয়ের অভিমত ছিল।[৫] পরবর্তীতে ওয়ালেস এ. মার্ফি তার কাজে নিউয়ের প্রত্যাস্তিক্যবাদের ব্যবহার পুনরায় ব্যবহার করেন।[৬]