আহমদ আল-শুকিরি أحمد الشقيري | |
---|---|
১ম ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার চেয়ারম্যান | |
কাজের মেয়াদ মে ১৯৬৪ – ডিসেম্বর ১৯৬৭ | |
উত্তরসূরী | ইয়াহিয়া হামুদা |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | টেব্নিন, উসমানীয় সাম্রাজ্য | ১ জানুয়ারি ১৯০৮
মৃত্যু | ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮০ আম্মান, জর্ডান | (বয়স ৭২)
জাতীয়তা | ফিলিস্তিনি |
আহমদ আল-শুকিরি (জানুয়ারী ১, ১৯০৮ - ফেব্রুয়ারি ২৬, ১৯৮০) (আরবি: أحمد الشقيري) ছিলেন ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার প্রথম চেয়ারম্যান, যিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেছেন।
শুকিরি দক্ষিণ লেবাননের টেব্নিন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যর একজন তুর্কি মহিলা এবং তার বাবা একজন ফিলিস্তিনি আস'দ শুকিরি (১৮৬০-১৯৪০) (যিনি ১৯০৮ ও ১৯১২ সালে উসমানীয় সংসদের সাংসদ নির্বাচিত হন)।[১] আহমাদ তার মায়ের কাছ থেকে তুর্কি ভাষায় দীক্ষা লাভ করেন। জেরুজালেমের ব্রিটিশ আইন কলেজে আইন অধ্যয়ন করার পর তিনি ব্রিটিশ-ফিলিস্থিনি একজন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং মুক্তি সংস্থার সদস্য হন। ১৯৪৫ সালে তিনি ফিলিস্তিনি অফিস প্রতিষ্ঠার জন্য ওয়াশিংটন, ডি.সি. তে যান এবং ১৯৪৬ সালে আরব উচ্চতর কমিটিতে যোগ দেন।
শুকিরি ১৯৪৯ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে সিরিয়ার প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৫০-৫৬ সাল পর্যন্ত আরব লীগের সহকারী মহাসচিব, ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে সৌদি রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৪ সালের আরব লীগ শীর্ষ সম্মেলনে (কায়রো) তাকে ফিলিস্তিনি সত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যোগাযোগ শুরু করার আদেশ দেওয়া হয়।
১৯৬২ সালের ডিসেম্বরে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করে তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিশেষ রাজনৈতিক কমিটিকে বলেন যে জায়নবাদ মোকাবেলায় তাগুয়ারা আন্দোলন গঠিত হয়েছে এবং তিনি আশা করেন যে এটি লাতিন আমেরিকা এবং জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত নীতিগুলিতে ছড়িয়ে পড়বে।[২] আর্জেন্টিনা এবং চিলির প্রতিনিধিদলের কাছ থেকে তাগুয়ারা সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার পর তিনি পিছু হটেন, স্বীকার করেন যে তাগুয়ারা একটি ফ্যাসিবাদী আন্দোলন এবং পরিবর্তে দাবি করেন যে তাগুয়ারাকে ইজরায়েলের সাথে তুলনা করা বেশি উপযুক্ত।[৩]
১৯৬৪ সালের মে মাসে তিনি ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জুন মাসে ছয় দিনের যুদ্ধের পর ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি পদত্যাগ করেন। তার শত্রু এবং বিরোধীরা তাকে বলির পাঁঠা হিসাবে ব্যবহার করেছিল।[৪] ১৯৬৪ সালের ২৮ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত শুকিরি এবং ৩৯৬ জন মনোনীত প্রতিনিধি জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন, গাজা স্ট্রিপ, মিশর, কাতার, কুয়েত, লিবিয়া এবং ইরাক থেকে একটি ফিলিস্তিনি সম্মেলনে (পূর্ব জেরুজালেমের প্রথম ফিলিস্তিনি জাতীয় পরিষদ) যোগ দেন। প্রতিনিধিরা ফিলিস্তিনের মানচিত্র বহনকারী ব্যাজ পরেছিলেন এবং "আমরা ফিরে আসব" খোদাই করেছিলেন। দ্যা টাইমস রিপোর্ট করেছে যে জর্ডানের বাদশাহ হুসেইনের একটি প্রারম্ভিক ভাষণের পর শুকিরি প্রতিনিধিদের বলেন, "ফিলিস্তিনিরা ১৬ বছরের দুর্দশার সম্মুখীন হয়েছে এবং এখন সময় এসেছে যে তারা নিজেদের উপর নির্ভর করে ফিলিস্তিনকে ইজরায়েলিদের হাত থেকে মুক্ত করবে"। সম্মেলনে ফিলিস্তিনি আরবদের প্রতিনিধি হিসেবে পিএলও প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হয়। শুকিরি এবং তার সহকর্মীরা ফিলিস্তিনি জাতীয় তহবিল গঠনের ঘোষণা দেন এবং ১৯৬৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আলেকজান্দ্রিয়ায় দ্বিতীয় আরব শীর্ষ সম্মেলনে একটি সামরিক শাখা হিসেবে প্যালেস্টাইন লিবারেশন আর্মির ঘোষণা দেওয়া হয়। ইয়াহিয়া হামমুদা ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে পিএলওর চেয়ারম্যান হিসেবে শুকিরির উত্তরাধিকারী হন।
১৯৬৮ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে শুকিরি ফিলিস্তিনি উদ্দেশ্য এবং আরব ঐক্য নিয়ে বিশটিরও বেশি বই লিখেছিলেন। ১৯৮০ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারি আম্মানে ৭২ বছর বয়সে তিনি মারা যান।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]