ইংলিশ বিংলিশ | |
---|---|
পরিচালক | গৌরী শিন্দে |
প্রযোজক |
|
চিত্রনাট্যকার | গৌরী শিন্দে |
কাহিনিকার | গৌরী শিন্দে |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | অমিত ত্রিবেদী |
চিত্রগ্রাহক | লক্ষণ উতেকর |
সম্পাদক | হেমন্তী সরকার |
প্রযোজনা কোম্পানি | হোপ প্রোডাকশন্স |
পরিবেশক | ইরোস ইন্টারন্যাশনাল |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৩৪ মিনিট[১] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি তামিল |
নির্মাণব্যয় | ₹২৬ crore[২][ভাল উৎস প্রয়োজন] |
আয় | ₹৯১.৪২ crore (see below) |
ইংলিশ বিংলিশ (হিন্দি: इंग्लिश विंग्लिश) হচ্ছে ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় হিন্দি-তামিল দ্বিভাষী নাট্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির পরিচালক ছিলেন গৌরী শিন্দে এবং প্রযোজক ছিলেন চারজনঃ সুনীল, বালকি, রাকেশ এবং দামানী। চলচ্চিত্রটির কাহিনী লিখেছিলেন গৌরী নিজেই।
চলচ্চিত্রটি একজন বিবাহিত অর্ধ-শিক্ষিত নারীর ইংরেজি ভাষা শেখার ব্যাপারে আগ্রহ নিয়ে, শ্রীদেবী শশী নামের এক গৃহিণীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন এবং তার স্বামী চরিত্রে ছিলেন আদিল হুসেইন যার নাম ছিলো সতীশ। চলচ্চিত্রটিতে আরো ছিলেন প্রিয়া আনন্দ এবং অজিত কুমার[৩][৪], এছাড়াও চলচ্চিত্রটি যেহেতু দ্বিভাষী তাই এটার হিন্দি সংস্করণে অজিত কুমারের করা চরিত্রে তার জায়গায় অমিতাভ বচ্চন ছিলেন।[৫]
শশী গোড়বোলে একজন অর্ধশিক্ষিত গৃহিণী, তার স্বামী শিক্ষিত এবং বড় ব্যবসায়ী। শশীর ছেলেমেয়েরা ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়ে পড়ে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক-অধ্যক্ষ সবাই ইংরেজি ভাষায় কথা বলে বিধায় শশীর তাদের সঙ্গে কথা বলতে সমস্যা হয়, শশী তাদের সঙ্গে নিজস্ব ভাষায় কথা বলে (চলচ্চিত্রটির তামিল সংস্করণে শশী তামিলভাষী আর হিন্দি সংস্করণে হিন্দিভাষী)।
শশীর বোন মনু যুক্তরাষ্ট্রে থাকে, তার মেয়ের বিয়েতে শশীর পরিবার দাওয়াত পায়, শশী আগেই যুক্তরাষ্ট্র চলে যায় তবে যুক্তরাষ্ট্র যেয়ে সে সেই দেশের ভাষা জানেনা বলে ঐ দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য চার সপ্তাহের একটি ইংরেজি প্রশিক্ষণ ক্লাসে ঐ দেশেই যোগ দেয়।
মনুর বিয়ের অনুষ্ঠানে পরে শশীর স্বামী আর ছেলেমেয়েরা এসে যোগ দেয় এবং শশী ততদিনে ইংরেজি ভাষা হাল্কাপাতলা ভাবে রপ্ত করে ফেলেছে এবং শশী পরে তার পরিবারসমেত আবার ভারতে ফিরে আসে।
চলচ্চিত্রটির গল্প পরিচালক গৌরী শিন্দের নিজের মা'র জীবন কাহিনী থেকে কিছুটা অনুপ্রাণিত ছিলো, গৌরীর মা একজন মারাঠি ভাষী মানুষ ছিলেন, তিনি পুনেতে থাকতেন এবং তার নিজের বাড়িতে তিনি আচার বানাতেন, আর সেই আচারগুলো আশেপাশের মানুষগুলোকে খাওয়াতেন এবং পরে অল্প অল্প করে বিক্রি করতে করতে এটা দ্বারা একটি ব্যবসা দাঁড় করিয়ে দেন। শিন্দের মা ইংরেজি ভাষা জানতেন না, তিনি খুবই দূর্বলভাবে ইংরেজি বলতেন কথা বলার সময়, এটা গৌরীকে তার বিদ্যালয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতো; গৌরী তার মাকে দুঃখিত বলার জন্য ইংলিশ বিংলিশ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।[৬] ২০১১ বা তার আগেই চলচ্চিত্রটি বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন গৌরী এবং কারা কারা মুখ্য অভিনেত্রী-অভিনেতা থাকবে, সহ-অভিনয়শিল্পী থাকবে সবই গৌরী নিজেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন। অভিনেত্রী শ্রীদেবীকে পুনরায় বড় পর্দায় দেখে মানুষরা আনন্দিত হয়েছিলো (যারা শ্রীদেবীর ভক্ত ছিলো) কারণ শ্রীদেবী প্রায় ১৫ বছর চলচ্চিত্র জগত থেকে দূরে ছিলেন; ইরোস ইন্টারন্যাশনাল চলচ্চিত্রটির সত্ত্ব কিনে নিয়েছিলো ২০০ মিলিয়ন রূপী দিয়ে।
অভিনেত্রী প্রিয়া আনন্দের এটিই ছিলো প্রথম চলচ্চিত্র যেটি হিন্দি ভাষার, প্রিয়া আগে তামিল এবং তেলুগু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এসেছিলেন। গৌরী শিন্দে আগে বিজ্ঞাপন বানাতেন এবং তিনি এই ইংলিশ বিংলিশ দ্বারাই সর্বপ্রথম চলচ্চিত্র পরিচালনার কাজে হাত দিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রটি হিন্দি-তামিল দ্বিভাষী হিসেবে মুক্তি দেওয়া হয়।[৩] পরে আবার তেলুগু ভাষার একটি ডাবকৃত সংস্করণও মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি তামিল ভাষায় বানানোর কারণ ছিলো যে পরিচালক গৌরী শিন্দের স্বামী আর. বালকি একজন তামিল জাতির মানুষ ছিলেন, মূলত স্বামীর অনুরোধেই গৌরী চলচ্চিত্রটি তামিল ভাষায় বানিয়েছিলেন, তাছাড়া অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মাতৃভাষাও তামিল ভাষা ছিলো।
চলচ্চিত্রটিতে অমিতাভ বচ্চনের একটি চরিত্র ছিলো তবে সেটি ছিলো হিন্দি সংস্করণে, তামিল সংস্করণের জন্য অভিনেতা অজিত কুমারকে ডাকা হলে তিনি বিনা পারিশ্রমিকেই রাজী হয়ে যান চলচ্চিত্রটিতে ছোটো একটি ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য, যেটি একটি বিমান যাত্রীর চরিত্র এবং কিছুক্ষণ শ্রীদেবী চরিত্রের সঙ্গে কথা বলে, অজিত শ্রীদেবীর একজন গোঁড়া ভক্ত ছিলেন সেজন্যে তিনি চলচ্চিত্রে কোনো পারিশ্রমিক ইচ্ছে করেই নেননি আর বিমান ভাড়া তিনি তার নিজের টাকা থেকেই দিয়েছিলেন।[৭]
২০১২ সালের ১৪ই জুন তারিখে ইংলিশ বিংলিশ চলচ্চিত্রটির প্রথম প্রিভিউ ছাড়া হয় মানুষদের জন্য। ইরোস ইন্টারন্যাশনাল চলচ্চিত্রটির ফার্স্ট লুক ইউটিউবে ছেড়ে দেয়, টুইটারেও পোস্টার আপলোড করে। একই দিনেই হিন্দি এবং তামিল দুই ভাষারই টিজার ছাড়া হয়, ওখানে দেখানো হয় যে অভিনেত্রী শ্রীদেবী কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র অনুমোদন পর্ষদের প্রত্যায়নপত্রের দিকে তাকিয়ে আছেন, পত্রটি ইংলিশ বিংলিশ চলচ্চিত্রেরই, শ্রীদেবীর পড়তে কষ্ট হচ্ছে - এরকম দেখানো হয়, এই টিজারটি মোট দুই মিনিটের ছিলো।[৮][৯] টিজার দেখে সাধারণ মানুষের অনেক ভালো লেগেছিলো, চলচ্চিত্রটির পক্ষে তখন থেকেই একটা ইতিবাচক সাড়া পড়ে যায়।[১০] ২০১২ সালের ১৩ই আগস্ট শ্রীদেবীর জন্মদিনের দিন চলচ্চিত্রটির পূর্ণ ট্রেলার ছাড়া হয়, এক সপ্তাহের ভেতরেই চলচ্চিত্রটির ট্রেলার দশ লাখ মানুষ দেখে ফেলে।[১১] দর্শকরা শ্রীদেবীর অভিনয় দেখে তার (শ্রীদেবী) পক্ষে কথা বলে এবং হিন্দুস্তান টাইমস সংবাদপত্রে শ্রীদেবীর প্রশংসা করে শিরোনাম লেখা হয় - "শ্রীদেবী ইংলিশ বিংলিশে জাদু করেছেন"।[১২]
চলচ্চিত্রটির হিন্দি এবং তামিল সংস্করণ সহ তেলুগু সংস্করণ যথাক্রমে মুম্বই, চেন্নাই এবং হায়দ্রাবাদে খুব ভালো করে প্রচার করা হয়। শ্রীদেবী পরিচালক গৌরী শিন্দের সঙ্গে কৌন বনেগা ক্রোড়পতি এবং ঝলক দিখলা জা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। চলচ্চিত্রটির জন্য হিন্দি, তামিল ও তেলুগু সংস্করণের জন্য পৃথক পোস্টার ব্যবহার করা হয়। তামিল ও তেলুগু সংস্করণের পোস্টারে 'ইংলিশ বিংলিশ' শিরোনামে ইংরেজির পাশাপাশি তামিল ও তেলুগু অক্ষর দিয়ে লেখা হয়। এই পোস্টারই দক্ষিণ ভারতের সেসব ভাষাভাষি অঞ্চলের প্রেক্ষাগৃহে ব্যবহার করা হয়।
সকল গানের গীতিকার স্বনন্দ কিরকিরে; সকল গানের সুরকার অমিত ত্রিবেদী।
হিন্দি | |||
---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "ইংলিশ বিংলিশ" (পুরুষ) | শিল্পা রাও | ০৪ঃ৩৪ |
২. | "ঢাক ঢুক" | অমিত ত্রিবেদী | ০৫ঃ০৩ |
৩. | "ম্যানহাটান" | ক্লিনটন সেরেজো, বিয়াঙ্কা গোমেজ | ০৪ঃ৩৬ |
৪. | "গুসতাখ দিল" | শিল্পা রাও | ০৫ঃ৩৯ |
৫. | "নবরাই মাঝি" | সুনিধি চৌহান, স্বনন্দ কিরকিরে, নাতালি ডি লুকিও, নীলাম্বরি কিরকিরে | ০৪ঃ২৩ |
৬. | "ইংলিশ বিংলিশ" (নারী) | অমিত ত্রিবেদী | ০৪ঃ৩২ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ২৮ঃ৪৭ |
সকল গানের গীতিকার পা. বিজয়; সকল গানের সুরকার অমিত ত্রিবেদী।
তামিল | |||
---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "ইংলিশ বিংলিশ" (নারী) | শিল্পা রাও | ০৪ঃ৩৪ |
২. | "ধিক্কু ধিক্কু" | বেনী দয়াল | ০৫ঃ০৩ |
৩. | "ম্যানহাটান" | বেনী দয়াল, বিয়াঙ্কা গোমেজ | ০৪ঃ৩৬ |
৪. | "আলাইপায়ুদে" | হংসিকা আইয়ার | ০৫ঃ৩৯ |
৫. | "উনমাচি উনমাচি" | স্নেহা উরেশ, বিজয় প্রকাশ, চন্দন বালা, লাবণ্য পদ্মনবন | ০৪ঃ২৩ |
৬. | "ইংলিশ বিংলিশ" (পুরুষ) | বেনী দয়াল | ০৪ঃ৩২ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ২৮ঃ৪৭ |
চলচ্চিত্রটি টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এবং বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়, এছাড়াও এটা নিউ ইয়র্ক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়।
ইংলিশ বিংলিশ ২১ সেপ্টেম্বর,২০১২ ভারত জুড়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এটির হিন্দি, তামিল ও তেলুগু সংস্করণ যথাক্রমে ৭৩৯, ১১০ ও ৪৭টি বড়পর্দায় মুক্তি পায়। তিন সপ্তাহ পর ৫ অক্টোবর, ২০১২ তে চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী মুক্তি দেয়া হয়।
পেশাদারী মূল্যায়ন | |
---|---|
পর্যালোচনা স্কোর | |
উৎস | মূল্যায়ন |
IBNLive | |
Glamsham | |
Bollywood Hungama | |
BollywoodLife | |
Koimoi | |
BizAsia | |
Music Aloud |
আইবিএনলাইভ ডট ইন চলচ্চিত্রটির সঙ্গীতকে ৫ নম্বরের মধ্যে সাড়ে তিন (৩.৫) দেয় আর তারা বলে যে, চলচ্চিত্রটিতে নতুন ধরনের গান না থাকলেও আপনাকে খুশী করার উপাদান আছে।[১৩] বিবিসি নিউজ সঙ্গীত পরিচালক অমিত ত্রিবেদীর এক ম্যাঁ অউর এক তু, দেব.ডি এবং ইশকজাদের তুলনায় এটিকে অত ভালো না বললেও বলে যে, অমিত এখানেও সঙ্গীত পরিচালনায় মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। বলিউড হাঙ্গামা সহ বলিউড লাইফ এবং কইমই চলচ্চিত্রটির সঙ্গীতের প্রশংসা করেছিলো।[১৪]
পুরস্কার | অনুষ্ঠান | বিষয়শ্রেণী | প্রাপক/মনোনয়নপ্রাপ্ত | ফলাফল |
---|---|---|---|---|
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | ৫৮তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ নবাগত পরিচালক বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | গৌরী শিন্দে | বিজয়ী |
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | আর. বালকি | মনোনীত | ||
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | শ্রীদেবী | মনোনীত | ||
জি সিনে পুরস্কার | জি সিনে পুরস্কার (২০১৩) | শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জি সিনে পুরস্কার | শ্রীদেবী | মনোনীত |
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জি সিনে পুরস্কার | আর. বালকি | মনোনীত | ||
আইফা পুরস্কার | আইফা পুরস্কার (২০১৩) | শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে আইফা পুরস্কার | আর. বালকি | মনোনীত |
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে আইফা পুরস্কার | শ্রীদেবী | মনোনীত | ||
স্ক্রিন পুরস্কার | স্ক্রিন পুরস্কার (২০১৩) | শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে স্ক্রিন পুরস্কার | শ্রীদেবী | মনোনীত |
Budget: ₹২৬ crore