ইছামতী জেলা | |
---|---|
পশ্চিমবঙ্গের জেলা | |
সার্বভৌম রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
বিভাগ | প্রেসিডেন্সি |
প্রতিষ্ঠা | ২০২২ |
সরকার | |
• লোকসভা নির্বাচনী এলাকা | বনগাঁ |
• এমপি | শান্তনু ঠাকুর (বিজেপি) |
আয়তন | |
• মোট | ৮৩৮.১৭ বর্গকিমি (৩২৩.৬২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১০,৬৩,০২৮ |
• জনঘনত্ব | ১,৩০০/বর্গকিমি (৩,৩০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | বাংলা, ইংরেজি |
জনসংখ্যা-বিষয়ক | |
• সাক্ষরতা | ৮০.৫৭% (২০১২-১৩)[১] |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
ইছামতী জেলা পশ্চিমবঙ্গের প্রেসিডেন্সি বিভাগের একটি প্রস্তাবিত জেলা।[২][৩] জেলাটি উত্তর ২৪ পরগণা জেলা থেকে বনগাঁ মহকুমাকে পৃথক করে গঠন করা হবে।[৪][৫]
জেলার উত্তর ও পূর্ব সীমানা ভারত-বাংলাদেশ অন্তর্জাতিক সীমান্ত গঠন করে। দক্ষিণ সীমানা বসিরহাট ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সঙ্গে যুক্ত এবং পশ্চিম সীমানা রানাঘাট জেলার সঙ্গে সীমান্ত গঠন করে। এই জেলার জনসংখ্যা ২০১১ সালের ভারতের আদমশুমারি অনুসারে ১০,৬৩,০২৮ জন ছিল। প্রস্তাবিত এই জেলার একমাত্র পুরসভা এলাকাটি হল বনগাঁ। মূলত ঔপনিবেশিক যুগে ইংরেজ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বনগাঁ মহকুমার মোট আয়তন বর্তমান জেলার আয়তন হয়ে উঠেছে, জেলার মোট আয়তন হল ৮৩৮.১৭ বর্গকিমি (৩২৩.৬২ বর্গমাইল)। জেলার নাম জেলার প্রধান নদী ইছামতী নদীর নাম থেকে নেওয়া হয়েছে।
১৮৮৩ সালে বনগাঁ মহকুমাটিকে নদিয়া জেলা থেকে যশোহর জেলার হস্তান্তরিত করা হয়।[৬][৭] ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় যশোহর জেলার অন্তর্গত বনগাঁ ও গাইঘাটা থানা এলাকা নিয়ে গঠিত বনগাঁ মহকুমা ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং অবশিষ্ট যশোহর জেলা চলে যায় পূর্ব বাংলায়।[৮]
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২২ সালের ১ অগস্ট বনগাঁ মহকুমা নিয়ে ইছামতী জেলার ঘোষণা করেন।[২][৪][৫]
প্রস্তাবিত ইছামতী জেলাটি নিম্ন গাঙ্গেয় বদ্বীপের অবস্থিত ইছামতী-রায়মঙ্গল সমভূমির অংশ। এই অঞ্চলের মাটি পরিপক্ক কালো বা বাদামি দোঁয়াশ থেকে পলল প্রকৃতির। প্রস্তাবিত জেলার পূর্বাঞ্চলে ইছামতী নদী প্রবাহিত।[৯]
প্রস্তাবিত ইছামতী জেলার ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকগুলির বর্তমান চিত্র নিম্নরূপ:[১০][১১][১২][১৩]
সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক | সদর | আয়তন কিমি২ |
জনসংখ্যা (২০১১) |
তফসিলি জাতি % | তফসিলি উপজাতি % | হিন্দু % | মুসলমান % | সাক্ষরতার হার % |
জনগণনা নগর |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
বাগদা | বাগদা | ২৩৩.৪৭ | ২৪২,৯৭৪ | ৫৪.৮১ | ৫.৩৩ | ৮২.০০ | ১৭.৪২ | ৭৫.৩০ | - |
বনগাঁ | বনগাঁ | ৩৩৬.৭০ | ৩৮০,৯০৩ | ৪৬.৬০ | ৩.৬১ | ৭৮.১৭ | ১৮.৪৭ | ৭৯.৭১ | - |
গাইঘাটা | চাঁদপাড়া বাজার | ২৪৩.৩০ | ৩৩০,২৮৭ | ৪৯.১৩ | ১.৭৬ | ৯৩.২৭ | ৬.৪২ | ৮৩.৩২ | ৭ |
প্রস্তাবিত ইছামতী জেলার ভূখণ্ডের অন্তর্গত একমাত্র পৌরশহরটির বিবরণ নিচে দেওয়া হল:[১৩][১৪]
পুরসভা | আয়তন (কিমি২) | জনসংখ্যা (২০১১) |
হিন্দু % | মুসলমান % | বস্তির জসংখ্যা % |
দরিদ্র পরিবার % (২০০৬) | সাক্ষরতা% (২০০১) |
---|---|---|---|---|---|---|---|
বনগাঁ | ১৫.৫৭ | ১০৮,৮৬৪ | ৯৬.৬৬ | ২.৮৫ | ১৪.৫৩ | ৩৭.৪৫ | ৮৪.১৬ |
প্রস্তাবিত ইছামতী জেলার অন্তর্গত ভূখণ্ডে তিনটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অধীনে মোট ৩৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে:[১৫]
প্রস্তাবিত এই জেলায় সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। জেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহ পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এছাড়া, জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি যথাক্রমে পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ ও পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
জেলাটিতে মোট ৪ টি মহাবিদ্যালয় রয়েছে। দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় ১৯৪৭ সালে বনগাঁ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি জেলার প্রচিন্তন প্রাচীনতম মহাবিদ্যালয়। নহাটা যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল স্মৃতি মহাবিদ্যালয় ১৯৮৫ সালে, ডক্টর বি আর আম্বেদকর শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয় ২০০৫ সালে ও পি.আর ঠাকুর গভর্নমেন্ট কলেজ ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পি আর ঠাকুর গভর্নমেন্ট কলেজটি জেলার একমাত্র সরকারি মহাবিদ্যালয়[১৬] এবং অন্য তিনটি সরকার থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত মহাবিদ্যালয়। এই মহাবিদ্যালয় ৪ টি পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। তবে, পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্বে পি আর ঠাকুর গভর্নমেন্ট কলেজ ব্যতীত অন্য তিনটি মহাবিদ্যালয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল।
জেলার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়টি চাঁদপাড়ার নিকট দেবীপুর গ্রামে অবস্থিত। এটি ২০১৯ সালে ১১ই জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[১৭] বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী শিক্ষাঙ্গনটি ৮.৮ একর (০.০৩৬ বর্গকিমি) জুড়ে বিস্তৃত। বর্তমানে শিক্ষাঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো নির্মাণাধীন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অস্থায়ী শিক্ষাঙ্গন পি.আর ঠাকুর গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে পরিচালিত হচ্ছে।
প্রস্তাবিত ইছামতী জেলার প্রধান হাসপাতাল হল ডাঃ জীবন রতন ধর মহকুমা হাসপাতাল। এটি ২৫০ টি শয্যা নিয়ে গঠিত।[১৮] এছাড়াও, এই জেলায় ৩০ টি শয্যা বিশিষ্ট দুটি গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে, যথা- বাগদা গ্রামীণ হাসপাতাল ও চাঁদপাড়া গ্রামীণ হাসপাতাল।[১৮]