Al-‘Izz ibn ’Abd is-Salām | |
---|---|
উপাধি | সুলতানুল উলামা [১] শায়খুল ইসলাম[২] |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | হিজরি ৫৭৭ (১১৮১-১১৮২)[১] |
মৃত্যু | হিজরি ৬৬০ (১২৬২ খ্রিষ্টাব্দ)[১][৩] |
ধর্ম | Islam |
ইজ্জুদ্দীন আব্দুল আজিজ ইবনে আবদুস সালাম ইবনে আবুল কাসিম ইবনে আল-হাসান আল-দামেস্কি, সুলতানুল উলামা, আবু মুহাম্মদ আল-সুলামি ছিলেন ত্রয়োদশ শতাব্দীর বিখ্যাত মুজতাহিদ, ধর্মতত্ত্ববিদ, ফিকাহবিদ এবং তাঁর প্রজন্মের শীর্ষস্থানীয় শাফেঈ আলেম। [৪]
ইজ্জুদ্দীন ইবনে আবদুস সালাম ৫৭৭ হিজরিতে [৫]দামেস্কে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তৎকালীন দামেস্কের প্রথিতযশা আলেমদের থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেন। ইবনে আসাকির এবং জামালুদ্দীন হারাস্তানির কাছে উচ্চতর আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন, সাইফুদ্দীন আল-আমিদীর সান্নিধ্যে উসূল আল-ফিকাহ এবং ধর্মতত্ত্ব শিক্ষা করেন, তাসাওউফ-এর দীক্ষাগ্রহণ করেন সোহরাওয়ার্দী এবং আবুল হাসান আল-শাজিলির সান্নিধ্যে।
দামেস্কে উমাইয়া মসজিদের খুতবা প্রদানকারী (খতিব) হিসেবে তিনি পূর্বেকার খতিবদের অনেক প্রথা ভেঙে ফেলেছিলেন। যেমন, তিনি খতিবদের জন্য নির্ধারিত কালো হাবাকাবা না পরে খুতবা প্রদান করতেন, ছন্দোবদ্ধ ভাষায় খুতবা প্রদান করতেন না এবং খুতবার মধ্যে সুলতান ও শাহজাদাদের উদ্দেশ্যে প্রশংসাবাক্য পড়তেন না। বার্নস ক্রুসেড চলাকালীন দামেস্কের শাসক আস-সালিহ ইসমাইল খ্রিষ্টান ক্রুসেডার থিওবাল্ড অভ নাভারের সঙ্গে আঁতাতমূলক সন্ধি করলে ইজ্জুদ্দিন ইবনে আবদুস সালাম জুমআর খুতবায় তার নিন্দা করেন এবং খুতবা পরবর্তী মোনাজাতে তাঁর কল্যাণ কামনা করা থেকে বিরত থাকেন। ফলস্বরূপ তাকে কারাগারে বন্দী করা হয় এবং মুক্তি পেয়ে মিশরে চলে যায়। [৬]
দামেস্ক ত্যাগ করার পর ইজ্জুদ্দীন ইবনে আবদুল সালাম কায়রোতে স্থায়ী হন। এখানে তাকে প্রধান বিচারক ও জুমার নামাজের ইমাম নিযুক্ত করা হয়। ফলে জনগণের মাঝে তিনি এমন প্রভাব বিস্তার করেছিলেন যে কোনো ন্যায় ও অন্যায়ের বিচার তিনি ইসলামি আইনের মাধ্যমে সমাধা করতেন। [৬]
ইবনে আবদুল সালাম পরবর্তীতে বিচার বিভাগ থেকে পদত্যাগ করেন এবং মাদরাসায়ে সালেহিয়ায় ইসলামি আইনের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। মিশরের শাসক আল-মালিক আস-সালিহ কায়রোর কেন্দ্রস্থলে উচ্চ শিক্ষালয় হিসেবে এটি নির্মাণ করেন এবং মিশরে এটি ছিল প্রথম প্রতিষ্ঠান যেখানে চার মাজহাব একসঙ্গে শিক্ষা দেয়া হতো। জীবনীদাতারা ইঙ্গিত দেয় যে তিনিই প্রথম মিশরে কুরআন তাফসিরের শিক্ষা শুরু করেন। [৭]
ইবনে আবদুস সালামের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দরুণ তাঁকে সুলতানুল উলামা (পণ্ডিতদের সুলতান) উপাধি প্রদান করা হয়। [৮]
তিনি শাফেঈ আইনশাস্ত্র, কুরআনের আইনশাস্ত্র, তাফসির, ধর্মীয় আইনের পদ্ধতিগত মৌলিক বিষয়াদি, রাষ্ট্রীয় ও সরকারি আইনী মতামত এবং সুফিবাদের ওপর অনেক গ্রন্থ রচনা করেন। কাওয়ায়িদুল আহকাম ফি মাসালিহিল আনআম [৬] তাঁর অন্যতম সৃষ্টিকর্ম।
কুরআন
হাদিস / সিরাহ
ধর্মীয় বিশ্বাস
তাসাওউফ
উসুল
ফিকহ
আল-ফাতাওয়া আল-মিসরিয়াহ, আল-ফাতাওয়া আল-মুসিলিয়্যাহ, আত-তারগিব 'সালাত আল-রাগায়েব, বা অন্য শিরোনামে; আল-তারগীব 'সালাত আল-রাঘায়েব আল-মাওদু'আ ওয়া বায়ান মা ফিহা মিন মুখালাত আল-সুনান আল-মাশরুআহ বা অন্য শিরোনামে; রিসালাত ফী ধাম্ম সালাত আল রাগায়েব।
বিশিষ্ট হাদীস বিশেষজ্ঞ ও শাফেঈ ফকিহ জাকিউদ্দিন আল-মুনজিরি বলেন, " শাইখ ইজ্জুদ্দীন আসার আগে আমরা আইনী মতামত দিতাম ; এখন তিনি আমাদের মধ্যে রয়েছেন, আমরা আর তা করি না।" [৯]
কারাফি ইবনে আবদুস সালামকে "সুন্নতের আপোসহীন রক্ষাকারী হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যিনি ক্ষমতায় থাকা লোকদের ভয় পেতেন না" [১০]
বেশ কয়েকটি সূত্র জানায় যে ইবনে আবদুল সালাম পুরোপুরি শাফেঈ মাজহাবকে অতিক্রম করে ইজতিহাদের পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন। [১১]
ইজ্জুদ্দিন ইবনে আবদুস সালাম ৬৬০ হিজরিতে কায়রোতে মারা যান[১২]।