২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১লা মার্চ এ কথা প্রকাশিত হয় যে, চলচ্চিত্র নির্মাতারা তিহার জেলে বন্দী একজন ধর্ষকের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।[৮][৯] ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে এই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে[৯][১০] ভারত সরকার ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা মার্চ বিচারালয় থেকে একটি নির্দেশিকা সংগ্রহ করে এই চলচ্চিত্রের সম্প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও[২] ঐ দিন বিবিসিযুক্তরাজ্যে চলচ্চিত্রটি সম্প্রচার করে।[১১] চলচ্চিত্রটি ইউটিউবেও আপলোড করা হলে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই মার্চ ভারত সরকারইউটিউব কর্তৃপক্ষকে ভারতে চলচ্চিত্রটিকে দর্শনের ওপর বাধাপ্রদানের নির্দেশ দেয়,[৪] যা ইউটিউব কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়।[১২]
২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর দক্ষিণ দিল্লি অঞ্চলে একটি গণধর্ষণ ঘটে।[১৩] ২৩ বছর বয়সী জনৈকা জ্যোতি সিং তার একজন বন্ধু অবীন্দ্র প্রতাপ পাণ্ডের সাথে লাইফ অব পাই নামক চলচ্চিত্র দেখে[১৪] একটি বেসরকারি বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন।[১৫] এই সময় সেই বাসেই তাকে গণধর্ষণ করাসহ অবীন্দ্র প্রতাপকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। পরে দুইজনকেই বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। ভারত ও সিঙ্গাপুরে বেশ কয়েকটি জটিল অস্ত্রোপচার করা হলেও জ্যোতি ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।[১৬]
এই ঘটনা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচিত হয়। এই ঘটনার ফলে জনমানসে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং মহিলাদের সুরক্ষার ব্যাপারে ভারত সরকারের অক্ষমতার কারণে বিরুদ্ধ সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।[১৭] একজন সতেরো বছরের কিশোরসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ আনা হয়। সম্ভবত আত্মহত্যার ফলে এঁদের মধ্যে একজনকে কয়েকদিন পরে জেলে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, যদিও তার পরিবারের পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ করা হয়।[১৮] চারজন অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হয় ও তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়[১৯] এবং অভিযুক্ত কিশোরকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।[২০]
ইন্ডিয়া'জ ডটার চলচ্চিত্রের জন্য মুকেশ সিং নামক একজন অভিযুক্ত ধর্ষকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। মুকেশ সিং তার সাক্ষাৎকারে বলেন যে, ধর্ষণের সময় মেয়েটি বাধা দেওয়ার চেষ্টা না করে শান্ত হয়ে ধর্ষণকাজে সহযোগিতা করলে ধর্ষণকারীরা তাকে খুন করতেন না।[n ১] তিনি পরে আরো বলেন যে ধর্ষণের জন্য পুরুষদের চেয়ে মহিলারাই বেশি দায়ী, কারণ তার মতে মহিলাদের কাজ গৃহস্থালির কাজ সামলানো, অশালীন পোশাক পরিধান করে গভীর রাত পর্য্যন্ত ডিস্কো বা বারে ঘুরে বেড়ানো নয়।[n ২]
ধর্ষণকারীদের আইনজীবী এ. পি. সিং একটি সাক্ষাৎকারে বলেন যে তার কন্যা বা ভগিনী প্রাক-বিবাহ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে নিজের ও পরিবারের সম্মান নষ্ট করলে তিনি নিজে পরিবারের সামনে তার গেয়ে পেট্রোল জাতীয় দাহ্য পদার্থ ঢেলে তাকে পুড়িয়ে মারবেন।[n ৩]
নবভারত টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই সাক্ষাৎকারের জন্য মুকেশ সিংকে ৪০,০০০ দেওয়া হয়। মুকেশ প্রথমে ২,০০,০০০ চাইলেও মধ্যস্থতা করে অর্থের পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়। এই অর্থ মুকেশের পরিবারকে প্রদান করা হয়।[২৩]
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১লা মার্চ, চলচ্চিত্র-নির্মাতারা ঘোষণা করেন যে তারা তিহার জেলে বন্দী একজন ধর্ষকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।[৮][৯] শীঘ্রই ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রচারিত হয়।[৯][১০] অভিযুক্তের বিতর্কিত বিবৃতি ভারতের জনমানসে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।[২৪]
দিল্লি পুলিশ ৩রা মার্চ চলচ্চিত্র-নির্মাতাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৫০৪, ৫০৫, ৫০৫(১)(বি), ৫০৯ দফায় এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের দফা ৬৬এ অনুসারে এফ.আই.আর. দায়ের করেন।[২৫] নিউ দিল্লি পুলিশের আর্থিক অপরাধ বিভাগের ডেপুটি কমিশনার রজনীশ গর্গ বলেন যে, এই সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ অত্যন্ত আপত্তিকর এবং সমাজে নারীদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করায় সুবিচার ও শান্তিরক্ষার স্বার্থে এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ ও সম্প্রচার রোধের অণুরোধ করে বিচারালয়ের নিকট আবেদন করা হয়েছে।[n ৪] ৪ঠা মার্চ বিচারালয় থেকে নির্দেশিকা লাভ করে ভারত সরকার এই চলচ্চিত্র সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।[২] এই দিন বিবিসিযুক্তরাজ্যে চলচ্চিত্রটি সম্প্রচার করে।[১১]
চলচ্চিত্রটি ইউটিউবেও আপলোড করা হলে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই মার্চ ভারত সরকারইউটিউব কর্তৃপক্ষকে ভারতে চলচ্চিত্রটিকে দর্শনের ওপর বাধাপ্রদানের নির্দেশ দেয়,[৪] যা ইউটিউব কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়।[১২]
৪ঠা মার্চ ভারতীয় সংসদে স্বরাষত্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন যে, দিল্লি গণধর্ষণের ঘটনা থেকে ব্যবসায়িক লাভের চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।[n ৫] সংসদীয় ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী এম. বেঙ্কইয়া নাইডু এই বিতর্কে বলেন যে, ভারতকে অপবাদ দেত্তয়ার উদ্দেশ্যে এই চলচ্চিত্রটিকে বিদেশে সম্প্রচারের চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সরকার এইদিকে নজর রাখছে।[n ৬] অন্যদিকে রাজ্যসভা সাংসদ জাভেদ আখতার এই চলচ্চিত্র নির্মাণ ও সম্প্রচারের পক্ষে মত দেন এবং বলেন যে, এই ধরনের চলচ্চিত্র কোটি কোটি মানুষকে ভাবতে বাধ্য করবে।[n ৭]
৫ই মার্চ তিহার জেল কর্তৃপক্ষ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন। তারা দাবী করেন যে, চলচ্চিত্র নির্মাতারা জেলের ভেতরে অভিযুক্তকে সাক্ষাৎকারের জন্য প্রদেয় অণুমতির শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। তারা এই সাক্ষাৎকারের দৃশ্যটি অপসারণের দাবীও জানান।[৩১] ৫ই মার্চ একটি সাক্ষাৎকারে জ্যোতির মাতা-পিতা সকলকে এই চলচ্চিত্র দেখার অণুরোধ জানান।[৩২] এই দিন অভিষেক কাপুর, সোনাল চৌহান, টুইঙ্কল খান্না, পুনিত মালহোত্রা ইত্যাদি বলিউড ব্যক্তিত্ব এই নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করেন।[৩৩]
↑"When being raped, she shouldn’t fight back. She should just be silent and allow the rape. Then they’d have dropped her off after ‘doing her’, and only hit the boy."[২১]
↑"A girl is far more responsible for rape than a boy … A decent girl won’t roam around at nine o’clock at night … Housework and housekeeping is for girls, not roaming in discos and bars at night doing wrong things, wearing wrong clothes."[১৫]
↑If my daughter or sister engaged in pre-marital activities and disgraced herself and allowed herself to lose face and character by doing such things, I would most certainly take this sort of sister or daughter to my farmhouse, and in front of my entire family, I would put petrol on her and set her alight.[২২]
↑These excerpts of the interview as published are highly offensive and have already created a situation of tension and fear among women in society. Therefore, in the interest of justice and maintenance of public order, an application was made in court seeking restraining order from publishing, transmitting, uploading and broadcasting the interview."[২৬]
↑Our government condemns the incident of December 16, 2012 in the strongest possible terms and will not allow any attempt by any individual, group or organisation to leverage such unfortunate incidents for commercial benefit. The respect and dignity of women, constitutes a core value of our culture and tradition. Our government remains fully committed to ensuring safety and dignity of women."[২৭][২৮]
↑We can ban the documentary in India but there is a conspiracy to defame India and the documentary can be telecast outside. We will also be examining what should be done."[২৯]
↑It's good that this documentary has been made. Crores of men in India have now come to know that they think like a rapist. If it is sounding dirty, they have to think."[৩০]