ইন্দোনেশিয়া |
তিউনিসিয়া |
---|
ইন্দোনেশিয়া-তিউনিসিয়া সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং তিউনিসিয়া এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এই দুই দেশের সম্পর্ক আরব বসন্ত এর সময়ের পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেই আন্দোলনের সময়, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়াকে একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে উল্লেখ করে এবং দাবি করে যে মুসলিম অধ্যুষিত দেশেও গণতন্ত্র সম্ভব। অপর দিকে, ইন্দোনেশিয়াও তিউনিসিয়ার এই দাবিকে সমর্থন করে এবং তিউনিসিয়ার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রুপান্তরের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর জোর দেয়। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, তিউনিসিয়াকে এই ব্যাপারে সহায়তা করার আগ্রহ ব্যাক্ত করে।[১] পরবর্তীতে ইন্দোনেশিয়া, তিউনিসিয়াকে, বিশ্বের কোন দেশের গণতান্ত্রিক পন্থায় রুপান্তরের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করে।[২] ১৯৫০ এর দশকে দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। যদিও সেই সময় তিউনিসিয়া কোন স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল না এবং তারা ফ্রান্স এর অধীন একটি অঞ্চল ছিল। সে সময়, ইন্দোনেশিয়া, ফ্রান্সের নিকট থেকে তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার জন্য সমর্থন দেয়। তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিস এ ইন্দোনেশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় তিউনিসিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া এবং তিউনিসিয়া, উভয় দেশই অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এবং জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এর মত আন্তর্জাতিক এবং বহুমাত্রিক সংস্থার সদস্য।
তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার পূর্বেই ইন্দোনেশিয়া এবং তিউনিসিয়া এর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তিউনিসিয়া ১৯৫৬ সালে ফ্রান্স এর কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু এর পূর্বেই তিউনিসিয়া-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫১ সালে তিউনিসিয়ার স্বাধীনতাযোদ্ধা হাবিব বোরগুইবা জাকার্তা সফরে আসেন। এরপর তার অনুরোধে, ১৯৫২ সালে ইন্দোনেশিয়ায় তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার জন্য, জাকার্তায় তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার প্রতিনিধির একটি অফিস খোলা হয়। এই অফিসের লক্ষ্য ছিল, ফ্রান্সের কাছ থেকে, তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার ব্যাপারে এশিয়ার দেশগুলোর সমর্থন আদায়।[৩]
ইন্দোনেশিয়ান সেন্ট্রাল স্ট্যাটিস্টিকস এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১১ সালে, ইন্দোনেশিয়া এবং তিউনিসিয়ার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) মার্কিন ডলার। এই ক্ষেত্রে বাণিজ্য ভারসাম্য ব্যাপকভাবে ইন্দোনেশিয়ার পক্ষে ছিল। তিউনিসিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৮৪.৭৭ মিলিয়ন (৮.৪৭৭ কোটি) মার্কিন ডলার।[৪] তিউনিসিয়ায়, ইন্দোনেশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলো হল, লুব্রিকেন্ট তেল, বাদ্যযন্ত্র, রাবার, কাগজ, প্লাস্টিক, আসবাবপত্র, জুতা, কফি, মশলা প্রভৃতি। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ায়, তিউনিসিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হল; খেজুর, কমলা, সার, খণিজ ফসফেট, কাঁচ, প্লাস্টিক, জলপাইয়ের তেল প্রভৃতি।