ইন্দোনেশিয়া |
ওমান |
---|
ইন্দোনেশিয়া-ওমান সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং ওমান এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এই দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ১৯৭৮ সালে।
ইন্দোনেশিয়া এবং ওমান উভয় দেশই মুসলিমপ্রধান দেশ। এছাড়াও, উভয় দেশের রাষ্ট্রধর্মই ইসলাম। ধর্মের মিলের কারণেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, উভয় দেশের চিন্তাধারায় মিল পাওয়া যায়। পাশাপাশি এই দুই দেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নের ব্যাপারে একই অঙ্গীকারাবদ্ধ।[১] ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ইন্দোনেশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ওমানের একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। উভয় দেশই বিভিন্ন বহুমাত্রিক আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন: জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম), অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এর সদস্য।
১৩ শতকে, হদ্রোমাউত এবং ওমান অঞ্চলের আরব ব্যবসায়ীরা, বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে, পূর্বেদিকে ভারত, ইন্দোনেশীয় অঞ্চল, এমনকি চীন পর্যন্ত যান। ইন্দোনেশিয়ায় ইসলাম এর পরিচয় এবং প্রচারে, এইসকল ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৮ সালে এই দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। যদিও ২০১১ সাল পর্যন্ত উভয় দেশের কোনটিই নিজেদের দূতাবাস স্থাপন করে নি। ২০১১ সালে মাস্কাটে ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস স্থাপিত হয়।[২]
২০০০ সালের ১৭-১৮ জুন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি, আবদুর রহমান ওয়াহিদ, এক রাষ্ট্রীয় সফরে ওমানে যান।
ইন্দোনেশিয়া ওমানকে একটি সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে বিবেচনা করে। অপরদিকে, ওমান আসিয়ানে ইন্দোনেশিয়ার শক্ত অবস্থানকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে, বাণিজ্য সম্ভাবনা অনুসন্ধানে, ওমানের কয়েকজন ব্যবসায়ী ইন্দোনেশিয়া সফরে যান। ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী ২০০৮ সালে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৬৬.৪৫ মিলিয়ন (১৬.৬৫ কোটি) মার্কিন ডলারের। ২০১২ সালে যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৪৬৪.০৩ মিলিয়ন (৪৬.৪০ কোটি) মার্কিন ডলারে। ৪ বছরে বাণিজ্যমূল্যের এই বৃদ্ধির হার ছিল ২৭৯.৫ শতাংশ। [৩] তবে এই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। যার ফলে ২০১২ সালে ইন্দোনেশিয়ার উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ১১.৬৬ মিলিয়ন (১.১৬ কোটি) মার্কিন ডলার।
ওমানে, ইন্দোনেশিয়ার উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্য হল, কাঠ এবং কাঠ নির্মিত পণ্য, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, কাগজ, লোহা, টেক্সটাইল, আসবাবপত্র এবং খাদ্যদ্রব্য। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ায়, ওমানের উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্য হল খনিজ জ্বালানি, অজৈব রাসায়নিক পদার্থ, শিল্প পণ্য প্রভৃতি।[৩]
বর্তমানে ৩০ হাজার ইন্দোনেশীয় প্রবাসী নাগরিক ওমানে কাজ করছে এবং প্রায় সবাই প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা পান। এখন পর্যন্ত ইন্দোনেশীয় দূতাবাসের নিকট শ্রমিকদের কোনপ্রকার হয়রানি বা সমস্যার ঘটনা আসে নি।[৪] ওমান, ইন্দোনেশিয়ার কাছে, নিজেদের মানবসম্পদের উন্নয়নের জন্য আরও দক্ষ কর্মী পাঠানোর অনুরোধ করেছে। অনুরোধের ক্ষেত্রে ওমান কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে ওমানে কর্মরত অধিকাংশ ইন্দোনেশীয় কর্মী নিম্ন দক্ষ এবং তারা বাসাবাড়িতে কাজ করে।