ইন্দোনেশিয়া |
কুয়েত |
---|
ইন্দোনেশিয়া-কুয়েত সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং কুয়েত এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এছাড়াও এই দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্কেও নির্দেশ করে। ১৯৬৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, ইন্দোনেশিয়া ও কুয়েতের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১] উভয় দেশই মুসলিমপ্রধান দেশ। একই সাথে উভয় দেশের রাষ্ট্রধর্মই ইসলাম। তাই উভয় দেশই বিভিন্ন বাধা সত্ত্বেও ইসলামিক বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইসলামের প্রসার ঘটাতে আগ্রহী। ধর্মের মিলের কারণেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, উভয় দেশের চিন্তাধারায় মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে অর্থনীতি এবং বাণিজ্য খাতকেই প্রধানত গুরুত্ব দেয়া হয়। গুরুত্ব পাওয়া খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে শক্তি (তেল) এবং মানবসম্পদ রপ্তানি।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়, কুয়েতের একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে, কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটিতে ইন্দোনেশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। উভয় দেশই বিভিন্ন বহুমাত্রিক আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন: জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম), অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এর সদস্য।
২০০৬ সালের ২৯-৩০ এপ্রিল, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি, সুসিলো বামবাং ইয়ুধনো, কুয়েতের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে এক রাষ্ট্রীয় সফরে কুয়েতে যান। পরবর্তীতে, ২০০৭ সালের ৩০ মে হতে ১ জুন পর্যন্ত, কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী, মোহাম্মদ আল-আহমেদ আল-সাবাহ, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে এক রাষ্ট্রীয় সফরে ইন্দোনেশিয়া যান। তাঁর সেই সফরের সময় দুই দেশের সরকারের মাঝে বেশ কয়েকটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়।[১]
কুয়েতে, ইন্দোনেশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে, কাগজ, প্লাইউড, সিমেন্ট, রাবার, চারকোল, খাদ্যদ্রব্য, আসবাবপত্র, সিরামিক, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, দালানের উপকরণ, রান্নাঘরের উপকরণ, গৃহস্থালির সামগ্রী প্রভৃতি। অপরদিকে ইন্দোনেশিয়ায় কুয়েতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে প্রধান হল তেল এবং তেল উপজাত পণ্য; যেমন: ইথিলিন, পলিমার ইত্যাদি। তবে এছাড়াও কুয়েত, বিভিন্ন চামড়াজাত পণ্য, বস্তা এবং ব্যাগ ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি করে। ২০১০ সালে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১.৪৭ বিলিয়ন (১৪৭ কোটি) মার্কিন ডলারের[১] এর পাশাপাশি, কুয়েত ইন্দোনেশিয়ায়, ৭ বিলিয়ন (৭০০ কোটি) মার্কিন ডলার মূল্যের একটি তেল শোধনাগার নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। [২]
২০১২ সালে, কুয়েতে প্রায় ১৬,৭৫৪ জন ইন্দোনেশিয়ার প্রবাসী শ্রমিক কাজ করছিলেন। এর মধ্যে ১,৯৮২ জন ছিলেন দক্ষ শ্রমিক এবং তাঁরা তাঁদের দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন পেশাদার পদে কাজ করছিলেন। অপরদিকে বাকি ১৪,৫৯২ জন শ্রমিক ছিলেন অদক্ষ এবং তাঁরা মূলত গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। ২০১৩ সালে, কুয়েতে আরও ২০০০ পেশাদার চাকুরিতে পদ খালি ছিল এবং সেগুলোর জন্য ইন্দোনেশীয় শ্রমিকদের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।[৩]