ইন্দোনেশিয়া |
ভেনেজুয়েলা |
---|
ইন্দোনেশিয়া-ভেনেজুয়েলা সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং ভেনেজুয়েলা এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ১৯৫৯ সালে ইন্দোনেশিয়া এবং ভেনেজুয়েলা এর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই ইন্দোনেশিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।[১] উভয় দেশই পর্যটন, প্রযুক্তি, রাসায়নিক দ্রব্য এবং প্রাকৃতিক গ্যাস খাতে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করার ব্যাপারে একমত হয়েছে।[২] ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে ইন্দোনেশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ভেনেজুয়েলার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া এবং ভেনেজুয়েলা উভয় দেশই বিভিন্ন বহুমাত্রিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন: বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও), জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এবং ফোরাম অব ইস্ট এশিয়া-লাতিন আমেরিকা কো-অপারেশন ইত্যাদি এর সদস্য।
১৯৫৯ সালের ১০ অক্টোবর এই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার প্রায় ১৮ বছর পর ১৯৭৭ সালে কারাকাসে ইন্দোনেশিয়া, ভেনেজুয়েলায় তাঁদের দূতাবাস স্থাপন করে। এর ৪ বছর পর ১৯৮১ সালে পাল্টা পদক্ষেপে, জাকার্তায় ভেনেজুয়েলা, ইন্দোনেশিয়ায় তাঁদের দূতাবাস স্থাপন করে।
২০০০ সালের ১২ আগস্ট, ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি, হুগো চাভেজ, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি, আবদুর রহমান ওয়াহিদ এর আমন্ত্রণে, এক রাষ্ট্রীয় সফরে ইন্দোনেশিয়ায় যান। সেই সফরে দুই নেতা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এর পরের মাসেই, ২০০০ সালের ২৬-২৮ সেপ্টেম্বর ওপিইসি সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি কারাকাসে যান। সেখানে সম্মেলনের বাইরে,আবদুর রহমান ওয়াহিদ , হুগো চাভেজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।[৩] ২০০৪ সালের সুনামিতে, সবচেয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আচেহ শহরে দ্রুত ত্রাণকাজ শুরু করার জন্য ভেনেজুয়েলা, ইন্দোনেশিয়াকে ২ মিলিয়ন (২০ লক্ষ) মার্কিন ডলার দান করে। এছাড়াও আচেহ শহরে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে ভেনেজুয়েলা, আচেহ শহরে ইন্সটিটিউট অব পলিটেকনিক অব ভেনেজুয়েলা-ইন্দোনেশিয়া প্রতিষ্ঠা করে, যার উদ্ভোদন হয় ২০০৯ সালে। [১]
ইন্দোনেশিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়। ২০০৩ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৪ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৩ সালে এই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৪.৯৩ মিলিয়ন (২.৪৯৩ কোটি) মার্কিন ডলারের। অপরদিকে ২০০৮ সালে গিয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯২.২৭ মিলিয়ন (৯.২২৭ কোটি) মার্কিন ডলারে।[১] ২০০৯ সালে এর পরিমাণ আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৯৬ মিলিয়ন (৯.৬ কোটি) মার্কিন ডলার, যা ছিল ২০০৩ সালের বাণিজ্যের মূল্যমানের তুলনায় ৪ গুন বেশি।[২] ভেনেজুয়েলায়, ইন্দোনেশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হল, টেক্সটাইল, তুলা, প্রাকৃতিক রাবার, আঁশ, কাঠজাত পণ্য, ইলেকট্রিক্যাল উপকরণ, জুতা এবং ক্রীড়া সামগ্রী। অপরদিকে ইন্দোনেশিয়ায়, ভেনেজুয়েলার প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে, প্লাস্টিক, চাক্রিক অ্যামাইড, সিলিকন ডাই অক্সাইড এবং অ্যালুমিনিয়াম। ২০০৯ সালে, এই দুই দেশের, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে, ইন্দোনেশিয়ার উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৭৯.১৯ মিলিয়ন (৭.৯১৯ কোটি) মার্কিন ডলার।[১]