ইন্দোনেশিয়া |
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ |
---|
ইন্দোনেশিয়া-সলোমন দ্বীপপুঞ্জ সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এর একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। দুই দেশের মাঝে আরও আগে থেকেই কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ইন্দোনেশিয়ায় সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এর এই দূতাবাস স্থাপিত হয়। ইন্দোনেশিয়ায় সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এর স্থায়ী দূতাবাস থাকলেও, সলোমন দ্বীপপুঞ্জে, ইন্দোনেশিয়ার কোন স্থায়ী দূতাবাস বা কনস্যুলেট নেই। পোর্ট মোরেসবি তে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের নিকটেই, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ সম্পর্কিত কূটনৈতিক দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে এবং পোর্ট মোরেসবি তে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার এই দূতাবাসের মাধ্যমেই, ইন্দোনেশিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ সম্পর্কিত কূটনৈতিক এবং অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করে।[১] প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জন্য ইন্দোনেশিয়া একটি সম্ভাবনাময় সত্ত্বা। কারণ আসিয়ান এবং এশীয় অঞ্চলের বাণিজ্যে প্রবেশ এবং শক্ত অবস্থান গঠনের জন্য ইন্দোনেশিয়া ভৌগলিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, অন্য কথায় এই অঞ্চলের প্রবেশদ্বার।আবার একইভাবে ইন্দোনেশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে আগ্রহী, যার জন্য সলোমন দ্বীপপুঞ্জ একটি সম্ভাবনাময় দেশ।[২] উভয় দেশই মেলানেশিয়ান স্পিয়ারহেড গ্রুপ (এমএসজি) এর সদস্য[৩]
২০১৩ সালে আগস্ট মাসে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী, গর্ডন ডারসি লিলো এক রাষ্ট্রীয় সফরে ইন্দোনেশিয়ায় যান। সেই সফরে তিনি ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি, সুসিলো বামবাং ইয়ুধনো এর সাথে বৈঠক করেন। গর্ডন ডারসি লিলো হলেন, ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়া সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এর প্রথম প্রধানমন্ত্রী।[৪]
২০১২ সালে, দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭.২৮ শতাংশ। ২০১২ সালেই, এই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৫.৮৮ মিলিয়ন (১.৫৮৮ কোটি) মার্কিন ডলার। তবে, এই দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে এবং প্রতিবছরই বাণিজ্য ভারসাম্য ইন্দোনেশিয়ার পক্ষে থাকে। ২০১২ সালে দুই দেশের বাণিজ্যে, ইন্দোনেশিয়ার পক্ষে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ৯.১ মিলিয়ন (৯১ লক্ষ) মার্কিন ডলার। [৫] শক্তি, মৎস্য চাষ, উন্নয়নে এবং সংস্কৃত প্রভৃতি ক্ষেত্রে, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, ইন্দোনেশিয়ার সাথে কাজ করে।
২০১৬ সালে এই দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এর সাধারণ সভায়, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এর প্রধানমন্ত্রী মনাসসেহ সোগাভারে, ইন্দোনেশিয়া নিয়ন্ত্রিত পাপুয়া প্রদেশ এবং পশ্চিম পাপুয়া প্রদেশ এ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন। একই সাথে তিনি উক্ত প্রদেশগুলোর স্বাধীনতার দাবি তোলেন। ভানুয়াতু, নাউরু, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, টুভালু এবং টোংগা এর সাথে মিলে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এই প্রস্তাব তোলে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
তবে ইন্দোনেশিয়া এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এবং উপর্যুক্ত অভিযোগকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সার্বোভৌমত্ব এর উপর হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তোলে। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়া মনে করে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এর এই বিবৃতি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইন্দোনেশিয়ার বিচ্ছিনতাবাদী দলের সমর্থনের জন্য করা হয়েছে। [৬] ইন্দোনেশিয়া পরবর্তীতে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং ভানুয়াতুর নিজস্ব অভ্যন্তরীণ সমস্যার বিষয়টি তুলে, তা নিয়ে দেশ দুটিকে তিরস্কার করে।[৭]