ইবনে জাওজি

ইবনে আল-জাওজা
উপাধিশাইখুল ইসলাম[]
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম৫১০ হিজরী/১১১৬ খ্রিস্টাব্দ
মৃত্যু১২ রমজান ৫৯৭ হিজরী/১৬ জুন ১২০১ (প্রায় ৭৪ বছর))
ধর্মইসলাম
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহাম্বলি
ধর্মীয় মতবিশ্বাসআশআরী

আব্দুর রহমান বিন আলি বিন মুহাম্মদ বিন আবুল ফারাজ বিন আল-জাওজি , প্রায়শই সংক্ষেপে ইবনুল জাওজি[] ( আরবি : ابن الجوزي, ইবনে আল-জাওজি'; ১১১৬ - ১৬ জুন ১২০১ খ্রিস্টাব্দ) বা সুন্নি মুসলমানদের কাছে ইমাম ইবনুল জাওজি ছিলেন একজন আরব মুসলমান আইনজ্ঞ, প্রচারক, বক্তা, ধর্মবিদ্যাবিদ, ইতিহাসবিদ, বিচারক, এবং সাস্কৃতিক ভাষাবিদ । তিনি হাম্বলি মাযহাব বাগদাদে শহরে প্রচারে অক্লান্ত ভূমিকা পালন করেছিলেন।

তিনি ধনী পরিবারের সন্তান ছিলেন এবং তিনি আবু বকরের বংশোদ্ভূত ছিলেন,[] ইবনুল জাওজীর ছেলেবেলা থেকেই পর্যাপ্ত জ্ঞান লাভ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। আর সেই যুগের সর্বাধিক খ্যাতিমান বাগদাদী আলেম ইবনে আল-জাগুনি (মৃত্যু ১১৩৩), আবু বকর আল-দিনাওয়ারী (মৃত্যু ১১১৭-৮), রায্যাক্ব আলী গিলানী (মৃত্যু ১২০৮), এবং আবু মনসুর আল-জাওয়ালিকা (মৃত্যু ১১৪৪-৫) সহ অনেক পন্ডিতদের অধীনে শিক্ষা নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। []

ইমাম ইবনে আল-জাওজি
১৮০৮ সালের বাগদাদের একটি চিত্র, যেটি 'এশিয়া ও আফ্রিকা ট্র্যাভেলস ইত্যাদি' মুদ্রণ সংগ্রহ থেকে নেওয়া (জে. পি. বারজে, ব্রিটিশ পাঠাগার); ইবনে আল জাওজা তাঁর পুরো জীবন দ্বাদশ শতাব্দীতে এই শহরেই কাটিয়েছিলেন
আইনজ্ঞ, ধর্মপ্রাচারক, ইতিহাসবিদ;
ইসলামের শাইখ, 'রাজা এবং রাজপুত্রদের মুখপাত্র, হাম্বলিদের ইমাম
শ্রদ্ধাজ্ঞাপনসুন্নি ইসলাম
প্রধান স্মৃতিযুক্ত স্থানবাগদাদ, ইরাক এ সবুজ রঙের গম্বুজ

‘ইবনুল জাওজি’ নামের নেপথ্যে

[সম্পাদনা]
দার উল কুতুব আল ইলমিয়াহ থেকে প্রকাশিত আর-রাদ 'আলাল মুতা'আসসিব আল-আনিদের প্রচ্ছদ।

তাঁর পূর্বপুরুষ জাফর ইরাকের বসরা নগরীর যে এলাকায় বসবাস করতেন, সে এলাকাটি জাওজি নামে পরিচিত ছিল। সেখানকার অধিবাসীদের জাওজি নামে আখ্যায়িত করা হতো। স্মর্তব্য, এলাকাটি ছিল নদীর পাড়ে।

ইতিহাসবেত্তা ও বিদগ্ধ আলেমগণের মতে, আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ ছিলেন সে যুগের বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও মুহাদ্দিস। ইমাম কাত্তানি তাঁর গ্রন্থের নির্বাচিত অধ্যায়ে লেখেন, ইবনুল জাওজি কুরাইশি তামিমি বকরি সিদ্দিকি বাগদাদি হাম্বলি একজন প্রসিদ্ধ বক্তা। তিনি বিভিন্ন শাস্ত্রে বহু গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় আড়াই শত। ‘আররিসালাতুল মুসতাত্রিফা’ গ্রন্থেও তিনি এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন।

জ্ঞানার্জন

[সম্পাদনা]

তিন বছর বয়সে তাঁর পিতা মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর পর তিনি কেবল বিশ দিনার ও দু’টি ঘর মিরাস হিসেবে প্রাপ্ত হন। এছাড়া মিরাস হিসেবে তিনি আর কিছুই পাননি। পিতার মৃত্যুর পর তিনি স্বীয় মাতা ও ফুফুর কাছে লালিত-পালিত হতে থাকেন। কিছুটা বয়স হলে তাকে হাফেজ মুহাম্মাদ ইবনে নাসিরের মজলিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর হাতেই তিনি কুরআনুল কারিম হিফজ করেন। ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত হাদিসসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইলম তাঁর কাছেই অর্জন করেন।

শিক্ষক ও শায়খবৃন্দ

[সম্পাদনা]

অল্প বয়সেই তিনি সে সময়কার সুপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত ও বুযুর্গ আলেম আবুল হাসান ইবনে যাগুনির সাহচর্যে ধন্য হন। এরপর আবু বকর দিনুরি ও কাজী আবু ইয়ালার কাছে ফিকাহ, মতানৈক্যপূর্ণ মাসআলায় ব্যুৎপত্তি, তর্কশাস্ত্র ও উসূলে হাদিসের জ্ঞান লাভ করেন। তাঁদের কাছে ইবনুল হোসাইন ও বারি’ এবং তাঁদের তবকাত অধ্যয়ন করেন। মাদরাসা নিযামিয়া বাগদাদের প্রসিদ্ধ উস্তাদ আলী ইবনে মুযরাকির কাছেও জ্ঞানার্জন করেন। তিনি ৮৭ জন শায়খ ও শিক্ষকের কাছে জ্ঞান লাভ করেছেন বলে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে :

  • আবুল ফযল মুহাম্মাদ ইবনে নাসির—তাঁর মামা এবং প্রথম শিক্ষক
  • আবু মানসূর আল জুয়ালিকি—তাঁর কাছে ব্যাকরণ ও ভাষাসাহিত্য শেখেন
  • ইবনুততিবির আল হারিরি—তাঁর কাছে হাদিস অধ্যয়ন করেন। এবং
  • আবু মানসুর ইবনে খায়রুন—তাঁর কাছে কেরাত শেখেন।

এভাবে তাঁর শিক্ষকতালিকায় ইরাকের বিখ্যাত অনেক শায়খ ও বিদ্বানের নাম রয়েছে।

ওয়াজের ময়দানে

[সম্পাদনা]

মুয়াফ্ফিকুদ্দিন আবদুল লতিফ বাগদাদি রহিমাহুল্লাহ বলেন, আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ খুবই সুললিত কণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। তাঁর চরিত্রমাধুরী ছিল অনুপম ও সুমিষ্ট। যথেষ্ট ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং যে কোনো লোককে প্রভাবিত করার এক আশ্চর্য গুণ ছিল তাঁর। লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম হতো তাঁর মাহফিলে। গাফেল লোকেরা তাতে নসিহত পেত। অজ্ঞরা শিখত দীন। পাপিষ্ঠরা তাওবা করত এবং মুশরিকরা দলে দলে যোগ দিত ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। তিনি তাঁর আলকাসাস গ্রন্থে লেখেন, ‘এক লাখেরও অধিক লোক আমার হাতে তাওবা করে সঠিক পথে ফিরে এসেছেন এবং এক লাখ লোক আমার হাতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।’

মোটকথা, আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ এর জীবনের অন্যতম আলোচিত দিক হচ্ছে তাঁর আধ্যাত্মিক ও বিপ্লবাত্মক ওয়াজ এবং দারসি মজলিস। তাঁর ওয়াজের মজলিস বাগদাদের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছিল। খলিফা, রাজা-বাদশা, মন্ত্রী ও বিশিষ্ট আলেমগণ যথেষ্ট আগ্রহ ও গুরুত্বসহকারে তাঁর মসলিসে উপস্থিত হতেন। আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ যাবতীয় বিদয়াত ও বিধ্বংসী আকিদা-বিশ্বাস ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে বুঝিয়ে খণ্ডন করতেন এবং সহিহ আকিদা ও সুন্নাতের সবিস্তার আলোচনা করতেন। স্বীয় অতুলনীয় বর্ণনাভঙ্গি ও অকাট্য যুক্তি-প্রমাণের কারণে বিদয়াতিরা তা খণ্ডন করতে পারত না।

অনুপম চরিত্র

[সম্পাদনা]

আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ প্রতি সপ্তাহে একবার কুরআন মাজিদ খতম করতেন। মসজিদ এবং ওয়াজের মজলিসের প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের হতেন না। শুধু তাই নয়; বাল্যকালেও কখনো কেউ তাকে ছোটদের সাথে খেলাধুলা করতে দেখেনি। হালাল হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত কিছু আহার করতেন না। এ অভ্যাস তাঁর মৃত্যু অবধি অব্যাহত ছিল। তিনি স্বীয় সাইদুল খাতির গ্রন্থে উল্লেখ করেন, ‘দীনি ইলমের সাথে আমার ভালোবাসা সেই ছোটবেলা থেকে। এ ছাড়া অন্য কোনো শাস্ত্র বা পেশায় আমি কোনো আগ্রহ দেখতে পাই না। স্বল্প জীবন, অল্প ক্ষমতা আর এই ক্ষুদ্র সাহস নিয়ে দীনি ইলমের খেদমত করে যেতে চাই। এ ছাড়া অন্যদিকে মনোযোগ দেয়ার আর কোনো সুযোগ রয়েছে কি?’

গ্রন্থ রচনার বিস্ময়

[সম্পাদনা]

আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ কেবল জবান দ্বারা ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমেই দীন ও ইলমি খেদমত আঞ্জাম দেননি; লেখালেখি ও গ্রন্থ রচনায় তাঁর অবদান আরও বিস্ময়কর। আল্লামা ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ এমন একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি ছোট-বড় সর্বমোট তিনশ’টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাফসির, হাদিস, ইতিহাস, গণিত, চিকিৎসা, ভাষা, সাহিত্যব্যাকরণ শাস্ত্রে তাঁর গ্রন্থগুলো যুগান্তকারী ও স্বতন্ত্র ভূমিকা রেখেছে।’

তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক উপকারী গ্রন্থ হচ্ছে পঠিতব্য তালবিসে ইবলিস, উয়ুনুল হিকায়াত এবং সর্বশেষ লিখিত কিতাব হচ্ছে সাইদুল খাতির। তাঁর রচিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কিতাবের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি :

১. আখবারু আহলির রুসূখ ফিল ফিকহি ওয়াত্ তাহদীস বিমিকদারিল মানসূখ মিনাল হাদিস ২.আখবারুল হুমাকা ওয়াল মুগাফ্ফিলীন, ৩.আখবারুয্ যারাফ ওয়াল মুতামাজ্জিনীন, ৪.আখবারুন নিসা, ৫.আল আযকিয়া, ৬.বুস্তানুল ওয়ায়েযীন ওয়া রিয়াযুস্ সামেয়ীন ,৭.তারীখে উমর ইবনুল খাত্তাব  রদিয়াল্লাহু আনহু, ৮.আত্তারীখ ওয়াল মাওয়ায়িয, ৯.তাবসারাতুল আখইয়ার ফী যিকরি নাইলি মিসরিন ওয়া ইখওয়ানিহী মিনাল আনহার, ১০.তুহফাতুল ওয়ায়িয ওয়া নুযহাতুল মালাহিয, ১১.আত্তাহকীক ফী আহাদীসিল খিলাফ, ১২.তাকভীমুল লিসান, ১৩.তালবীসে ইসলিস, ১৪.তালকীহু ফুহূমিল আসার, ১৫.তাম্বীহুন নায়িমিল গুমার আলা হিফযি মাওয়াসিমিল উমার ১৬.দাফউ শুবহাতিশ তাসবিহ ওর্য়ারাদ্দু আলাল মুজাসসিমা, ১৭.যাম্মুল হাওয়া, ১৮.আয্যাহবুল মাসবূক ফী সিয়ারিল মুলূক, ১৯.রূহুল আরওয়াহ, ২০.রুঊসুল কাওয়ারীর ফিল খুতাবি ওয়াল মুহাযারাত ওয়াল ওয়ায ওয়াত তাযকীর, ২১.যাদুল মাসীর ফী ইলমিত্ তাফসির, ২২.সালওয়াতুল আহযান, ২৩.মানাকিবু ইমীরিল মুমিনীন উমর ইবনি আবদিল আযিয, ২৪.সিফাতুস্ সাফওয়া বা সাফওয়াতুস্ সাফওয়া, ২৫.সাইদুল খাতির, ২৬.আত্তিব্বুর রুহানী, ২৭.আল কারামিতা, ২৮.আল কিসাস ওয়াল মুযাক্কিরূন, ২৯.লুফতাতুল কাবাদ ইলা নাসীহাতিল ওয়ালাদ, ৩০.আল মুদাহহিস ফী উলূমিল কুরআনি ওয়াল হাদিস, ৩১.মুলতিকাতুল হিকায়াত, ৩২.মানাকিবুল ইমাম আহমাদ, ৩৩.মানাকিবু বাগদাদ, ৩৪.মানাকিবুল হাসান আল বসরি, ৩৫.আল মুনতাযাম ফী তারীখিল মুলূকি ওয়াল উমাম, ৩৬.মাওলিদিন নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ৩৭.আল ওয়াফা বিআহওয়ালিল মুস্তাফা, ৩৮.ইয়াকূতাতুল মাওয়ায়িয,৩৯. উয়ুনুল হিকায়াত

আল্লামা ইবনুল জাওজি প্রণীত তাফসির-গ্রন্থসমূহ :

৪০.আল মুগনী ফিত্তাফসির, ৪১.যাদুল মাসীর ফী ইলমিত্তাফসির, ৪২.কিতাবুত তালখীস ৪৩.তাযকারাতুল আরীব ফী ইলমিল গারিব, ৪৪.তাইসীরুল বায়ান ফী ইলমিল কুরআন, ৪৫.ফুনূনুল আফনান ফী উলূমিল কুরআন, ৪৬.আল উজূহ্ ওয়ান নাযায়ির = নুযহাতুল উয়ূনিন নাযায়ির ফিল উজূহ ওয়ান নাযায়ির, ৪৭.মুখতাসারুল উজূহ ওয়ান নাযায়ির, ৪৮.নাসিখুল কুরআন ওয়া মানসূখুহু, ৪৯.আল মুসাফ্ফা বিআকফি আহলির রুসূখি মিন ইলমিন নাসিখি ওয়াল মানসূখ,৫০.আল ইশারাহ্ ইলা কিরাআতিল মুখতারাহ্, ৫১.আল মুনতাবিহ ফী উইয়ুলি মুশতাবাহ্, ৫২.আস্সাবআহ্ ফিল কিরাআতিস সাবআহ্, ৫৩.ওয়ারদুল আগসান ফী ফুনূনিল আফনান, ৫৪.গারিবুল হাদিস।

গায়রে উলুমে কুরআন বিষয়ক গ্রন্থাবলি :

৫৫.সুযূযুল উকূদ, ৫৬.আজীবুল খাতাব।

ভাষাজ্ঞানবিষয়ক গ্রন্থাবলি :

৫৭.তাকভীমুল লিসান, ৫৮.মুশকিলুস সিহাহ্,৫৯.আল মাকামাতুল জাওজিয়া ফিল মাআনিল ওয়াযিয়া,

তাঁর কিছু কিতাব সংক্ষিপ্তাকারে গ্রন্থিত করা হয়েছে। তন্মধ্যে-

৬০.মুখতাসারু মানাকিবি উমর ইবনে আবদিল আযিয,৬১.মুখতাসারু মানাকিবি বাগদাদ,৬২.তালকীসুত তাবসারাহ্,৬৩.মুখতাসারু লাকতুল মানাফি,৬৪.আশ্শিফা ফী মাওয়ায়িযিল মুলূকি ওয়াল খুলাফা।

ধর্মতত্ত্ববিদ্যা

[সম্পাদনা]

[]

ইতিহাসবিদেরা বলেন, আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ বৈচিত্র্যময় গুণে গুণী ও বহুমুখী প্রতিভার পাশাপাশি একজন বিদগ্ধ কবিও ছিলেন। তাঁর কবিতার এক বিশাল পাণ্ডুলিপি রয়েছে বলে তাঁরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু আমাদের কাছে তাঁর কবিতার কোনো বই পৌঁছেনি। তথাপি আলোচ্য গ্রন্থসহ তাঁর অধিকাংশ গ্রন্থে উদ্ধৃত ও উল্লিখিত চমৎকার কবিতামালা দেখে তাঁর কবিপ্রতিভা সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। এছাড়া আল্লামা ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ তাঁর বিখ্যাত আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ এর কবিতাগুচ্ছের বেশ কিছু পঙ্‌ক্তি উল্লেখ করেছেন।

পরিশেষে আল্লামা ইবনুল জাওজি রহিমাহুল্লাহ এর জন্য আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে অফুরন্ত রহমত কামনা করি। তাঁর জ্ঞান দ্বারা সকলে যেন উপকৃত হতে পারি সেই প্রার্থনা করছি। মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি আমল জারি ও বহমান থাকে।

যথা—১. সদকায়ে জারিয়া, ২. ইলম—যা দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয় ও ৩. নেককার সন্তান—যারা তাঁর জন্য দোয়া করতে থাকে। আমাদের প্রত্যাশা—আমাদের লেখক অত্র তিনটি মাধ্যমেই সাওয়াব পেতে থাকবেন।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Al-Dhahabi, Siyar A'lam al-Nubala'.
  2. Laoust, H., "Ibn al-D̲j̲awzī", in: Encyclopaedia of Islam, Second Edition, Edited by: P. Bearman, Th. Bianquis, C.E. Bosworth, E. van Donzel, W.P. Heinrichs.
  3. Ibn al-Jawzi, Sincere Counsel to the Seekers of Sacred Knowledge, Daar Us-Sunnah Publications Birmingham (2011), p. 88
  4. Ibn Rajab, Dhayl ʿalā Ṭabaqāt al-ḥanābila, Cairo 1372/1953, i, 401
  5. Swartz, Merlin. A Medieval Critique of Anthropomorphism, pg. 159. Leiden: Brill Publishers, 2001.
  6. উয়ুনুল হিকায়াত গ্রন্থের অনুবাদ সোনালী যুগের গল্পগুলো ১ম খণ্ড। বাংলাদেশ: মাকতাবাতু ইবরাহীম। ২০২০। পৃষ্ঠা ১১–১৬। আইএসবিএন 9782745134301 

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]