বিকল্প নাম | মারদিখ স্তূপ تل مرديخ |
---|---|
অবস্থান | ইদলিব প্রদেশ, সিরিয়া |
অঞ্চল | মধ্যপ্রাচ্য |
স্থানাঙ্ক | ৩৫°৪৭′৫৩″ উত্তর ৩৬°৪৭′৫৩″ পূর্ব / ৩৫.৭৯৮° উত্তর ৩৬.৭৯৮° পূর্ব |
ধরন | বসবাস |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠিত | ৩৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ |
পরিত্যক্ত | ৭ম শতক |
সময়কাল | ব্রঞ্জ যুগ |
সংস্কৃতি | কিশ সভ্যতা, |
স্থান নোটসমূহ | |
খননের তারিখ | ১৯৬৪–২০১১ |
প্রত্নতত্ত্ববিদ | পাওলো ম্যাথিও |
অবস্থা | ধ্বংসপ্রাপ্ত |
মালিকানা | সরকার |
জনসাধারণের প্রবেশাধিকার | হ্যাঁ |
ইবলা (আরবি: إبلا, আধুনিক: تل مرديخ, মারদিখ স্তূপ) সিরিয়ার প্রাচীন রাজ্যগুলোর মধ্যে একটি। বসতির কারণে এখানে একটি স্তূপ সৃষ্টি হয়েছে যেটি আলেপ্পো থেকে ৫৫ কিমি (৩৪ মা) দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে এবং মারদিখ গ্রামের কাছেই অবস্থিত। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দে এবং খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের প্রথম অর্ধাংশে ইবলা একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ইবলার প্রথম সম্রাজ্যের শাসনকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন বৈশ্বিক শাসন হিসেবে গণ্য করা হয়।
ব্রঞ্জ যুগের শুরুতে (খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০) যখন ইবলা প্রতিষ্ঠিত হয় তখন ইবলাতে খুব কম সংখ্যক মানুষের বসতি ছিল। ধীরে ধীরে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্রাজ্যে পরিণত হয় এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে এর বিস্তৃতি ঘটে। খ্রিস্টপূর্ব ২৩ শতকে ইবলা ধ্বংস হয়েছিল; পরে পুনরায় এটিকে তৈরি করা হয়।
ধারণা করা হয় "ইবলা" নামটির অর্থ "সাদা পাথর"।[১][২] খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ বছর পূর্বে ইবলা সভ্যতা গড়ে ওঠে;[৩][৪] ইবলা সভ্যতার আশপাশে নানান কৃষিভিত্তিক বসতি এটিকে আরো পূর্ণতা দান করে।
১৯৬৪ সালে, রোম লা সাপিয়েনজা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ পাওলো ম্যাথিওয়ের তত্ত্বাবধানে মারদিখ স্তূপে খনন কাজ শুরু করা হয়।[৫]
মারদিখ স্তূপে কিছু ফলক পাওয়া গিয়েছে। এই ফলকগুলো বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন তথ্যভাণ্ডারের মধ্যে অন্যতম এবং এগুলো বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন গ্রন্থাগারকেই নির্দেশ করে; এই ফলকগুলো কীভাবে বাস্তবে সাজানো হয়েছে এবং এর শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কেও যথেষ্ট তথ্য পাওয়া যায়।[৬] বড় ফলকগুলো মূলত তাকে রাখা ছিল, কিন্তু যখন মারদিখ স্তূপ বা প্রাসাদটি ধ্বংস করা হয় তখন ফলকগুলো মাটিতে পড়ে যায়।[৭] ঠিক কোথায় ফলকগুলো পড়েছে তার অবস্থান চিহ্নিত করে খননকারীরা বুঝতে পারেন ঠিক কোথায় এই ফলকগুলো রাখা ছিল; পরে আরও জানা যায় যে, ফলকগুলো মূলত বিষয় অনুসারে তাকে সাজানো ছিল।[৮]
প্রথম দিকে ইবলার প্রাসাদটিই অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করত।[৯] কিন্তু বিত্তবান পরিবাররা সরকারের আদেশ-উপদেশ ছাড়াই নিজেদের আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত।[১০] ইবলাতে বিনিময়প্রথার অর্থনীতি প্রচলিত ছিল; প্রাসাদটি হতে এর স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হতো।
সিরীয় গৃহযুদ্ধের কারণে ২০১১ সালের মার্চে ইবলায় খনন কাজ স্থগিত করা হয়[১১] এবং স্থানটি প্রতিপক্ষের হাতে পড়ায় বিপুল পরিমাণ সম্পদ চুরি হয়ে গিয়েছিল।[১২] প্রচুর সুরঙ্গ খোড়া হয় এবং মানুষের কবর পাওয়া যায়। এখানে অলঙ্কার ও মূল্যবান বস্তু খুঁজে পাওয়ার লোভে বিদ্রোহীরা মানুষের কবরগুলোও সরিয়ে ফেলেছিল।[১২] বিদ্রোহীদের খনন ছাড়াও স্থানটিতে স্থানীয় গ্রামবাসীরা মূল্যবান বস্তুর লোভে খনন কাজ চালিয়েছিল।[১২]