ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ইয়সি সাই বেনায়ন | ||
জন্ম | ৫ মে ১৯৮০ | ||
জন্ম স্থান | ডিমোনা, ইসরাইল | ||
উচ্চতা | ১.৭৪ মি (৫ ফু ৯ ইঞ্চি) | ||
মাঠে অবস্থান | মধ্যমাঠের খেলোয়াড় | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | মাক্কাবি হাইফা | ||
জার্সি নম্বর | ৫১ | ||
যুব পর্যায় | |||
১৯৮৯-১৯৯২ | হ্যাপয়েল ডিমোনা | ||
১৯৯২-১৯৯৫ | হ্যাপয়েল বেয়ার শেভা | ||
১৯৯৫-১৯৯৬ | আয়াক্স যুবদল | ||
১৯৯৬-১৯৯৭ | হ্যাপয়েল বেয়ার শেভা | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
১৯৯৭-১৯৯৮ | হ্যাপয়েল বেয়ার শেভা | ২৫ | (১৫) |
১৯৯৮-২০০২ | মাক্কাবি হাইফা | ১৩০ | (৫৫) |
২০০২-২০০৫ | রেসিং সান্তাদার | ১০১ | (২১) |
২০০৫-২০০৭ | ওয়েস্ট হ্যাম | ৬৩ | (৮) |
২০০৭-২০১০ | লিভারপুল | ৯২ | (১৮) |
২০১০-২০১৩ | চেলসি | ১৪ | (১) |
২০১১-২০১২ | → আর্সেনাল (লোন) | ১৯ | (৪) |
২০১২ | → ওয়েস্ট হ্যাম (লোন) | ৬ | (০) |
২০১৩-২০১৪ | কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্স | ১৬ | (৩) |
২০১৪-২০১৬ | মাক্কাবি হাইফা | ৪৯ | (১১) |
২০১৬ | মাক্কাবি তেলআবিব | ২ | (০) |
জাতীয় দল‡ | |||
১৯৯৫ | ইসরাইল অ-১৬ | ? | (৬) |
১৯৯৬-১৯৯৭ | ইসরাইল অ-১৮ | ৮ | (১২) |
১৯৯৮-২০০১ | ইসরাইল অ-২১ | ১১ | (৫) |
১৯৯৮- | ইসরাইল | ||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ২৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ২৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ অনুযায়ী সঠিক। |
ইয়সি বেনায়ন (হিব্রু: יוסף שי "יוסי" בניון, জন্ম ৫ মে ১৯৮০) একজন ইজরাইলি পেশাদার ফুটবলার, যিনি মাক্কাবি তেল আবিব ক্লাব এবং ইসরাইল জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। তিনি আক্রমণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলে। তিনি ইসরাইলের ডিমোনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাকে ইসরাইলে 'দ্যা ডায়মন্ড অফ ডিমোনা' বলে ডাকা হয়। তিনি ইসরাইলের মরক্কান ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা 'ডুডু' হ্যাপয়েল ডিমোনা ক্লাবের হয়ে খেলেছেন।
১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি হ্যাপয়েল বেয়ার শেভার সিনিয়র দলে জায়গা পান। কিন্তু সেই মৌসুমেই তার দল লিগ থেকে অবনমন হয়ে যায়। লিগের শেষ ম্যাচে মাক্কাবি হাইফার বিপক্ষে ৯০ মিনিটে একটি পেনাল্টি কিক পান, তবে প্রতিপক্ষের গোলকিপার সেই কিক আটকে দেন। কিন্তু ফিরতি শটে গোল দেন বেনায়ন। বেনায়ন ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে ১৫ টি গোল দিয়ে ৪র্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।[১]
পরের মৌসুমে বেনায়ন মাক্কাফি হাইফা'তে যোগ দেয়। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে বেনায়ন ২৯ ম্যাচে ১৬ টি গোল দেয়। ১৯৯৮-২০০০ মৌসুমে বেনায়ন ৩৮ ম্যাচে ১৯ গোল দিয়ে লিগের ৩য় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। ২০০০-০১ মৌসুমে বেনায়ন মাক্কাবিকে চ্যাম্পিয়েন্সইপ জেতায় এবং ৩৭ ম্যাচে ১৩ গোল করে মৌসুমের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়। পরের মৌসুমে আবারও চ্যাম্পিয়েন্সিপ জয় করে মাক্কাবি হাইফা। মাক্কাবির হয়ে সেই মৌসুমে ৩৩ ম্যাচে ৭ গোল করেন বেনায়ন।
মাক্কাবি হাইফার হয়ে বেনায়ন সর্বমোট ৫৫ টি গোল করে।[১]
২০০২ সালে লা লিগার ক্লাব রেসিং সান্তান্দারে যোগ দেয় বেনায়ন। ২০০২-০৩ মৌসুমে ৩১ ম্যাচে ৫ টি গোল দেয়। পরের মৌসুমে ৩৫ ম্যাচে ৭ গোল দেয়। ২০০৪-০৫ মৌসুমে ৩৫ ম্যাচে ৯ গোল দেয়।[১] এবং দেপোর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে হ্যাট্রিক করে। রাশিয়ান ক্লাব সিএসকে মস্কো তাকে দলে নেয়ার জন্য ৫ মিলিয়ন ইউরো প্রস্তাব দেয়, কিন্তু বেনায়ন সেটা প্রত্যাখ্যান করে।
প্রিমিয়ার লিগে সদ্য উন্নীত হওয়া ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেড ২০০৫ সালের জুলাইয়ে ২.৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে বেনায়নকে দলে নায়।[২] বেনায়নের সাথে চুক্তি ৪ বছরের।[২] ১৯ আগস্ট ২০০৫ সালে ব্র্যাকবার্ন রোভার্সের বিপক্ষে ম্যাচের মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক হয়। ঐ ম্যাচে ওয়েস্ট হাম ৩-১ গোলে জয়লাভ করে।[৩] বেনায়ন ১২ সেপ্টেম্বরে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে তার ১ম প্রিমিয়ার লিগ গোল দেয়। ঐ ম্যাচে ৪-০ গোলে জয় পায় ওয়েস্ট হাম।[৪][৪] ২০০৬ সালের মে মাসে বেনায়ন ২০০৬ এফএ কাপ ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে খেলেন, ওয়েস্ট হাম সেই ম্যাচে ৩-৩ গোলে ড্র করার পর ট্রাইব্রেকারে ম্যাচটি হেরে যায়। ২০০৭ সালের ১৩ মে, ওল্ড ট্রাফর্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচে আত্মঘাতী গোল দেয় কার্লোস তেভেজ, ফলে ওয়েস্ট হাম সেই মৌসুমে অবনমন থেকে বেচে যায়।[৫][৬]
২০০৭ সালে বেনায়ন ৪ বছরের চুক্তিতে ওয়েস্ট থেকে লিভারপুলে যোগ দেয়।[৭][৮] ১২ জুলাইয়ে লিভারপুল তাদের ওয়েবসাইটে জানায় বেনায়নকে দলে আনতে ৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ হয়েছে।[৯] লিভারপুলের হয়ে তিনি ১১ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেন। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে রেডিং এর বিপক্ষে ১ম গোল দেয়। এফএ কাপে বেনায়ন নন-লিগের দল হাভান্ট এন্ড ওয়াটারলভিলের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করে। ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর উয়েফা চ্যাম্পিয়েন্স লিগে তুরুস্কের দল বেসিকতাসের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করে, ঐ ম্যাচে লিভারপুল ৮-০ গোলের বিশাল জয় পায়।
৬ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে মৌসুমের ১ম গোল দেন ব্যাকবার্নের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ৩-১ গোলে জয়লাভ করে লিভারপুল।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, উয়েফা চ্যাম্পিয়েন্স লিগের নক-আউট পর্বে বেনায়নের হেড থেকে দেয়া একমাত্র গোলে রিয়াল মাদ্রিদকে হারায় লিভারপুল।[১০][১১] ২০০৮-০৯ মৌসুমে বেনায়ন ৩৯ ম্যাচে ৯ গোল দেয়। ২০০৯ সালের ৬ জুলাই তিনি চুক্তির মেয়াদ ২ বছর বাড়ায়।[১২] ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বরে বার্নলির বিপক্ষে ম্যাচে ১ম প্রিমিয়ার লিগে নিজের হ্যাট্রিক পুরন করেন।[১৩]
২০১০ সালের ২ জুলাই বেনায়ন ৩ বছরের চুক্তিতে চেলসিতে যোগ দেয়।[১৪] তাকে দলে নিতে ৫.৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে চেলসি।[১৫] চেলসিতে এসে বেনায়ন বলেন "এটি একটি বড় ক্লাব এবং আমার মনে হয় সব খেলোয়াড়ের সপ্ন এটি। আশা করছি আমরা সাফল্য লাভ করবো।" বেনায়ায়ন ফ্রাঙ্কফুটের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের মাধ্যমে চেলসির হয়ে অভিষেক হয়। ২১ আগস্টে চেলসির হয়ে ১ম গোল দেয়। ঐ ম্যাচে চেলসি ৬-০ গোলে উইগানকে হারায়।[১৬] ২০১১ সালের ২৬ আগস্ট বেনায়ন সতীর্থ হুয়ান মাতাকে তার ১০ নম্বর জার্সি পড়ার প্রস্তাব দেয়।[১৭] এই নিয়ে ইসরাইলের অধিনায়ক বলেন "আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি মাতাকে তার পছন্দের ১০ নম্বর জার্সি দিবো। আমার জন্য এটি একটি নম্বর মাত্র, আমার পয়মন্ত ১৫ নম্বর নয়"
২০১১ সালে মালয়েশিয়ায় একটি প্রীতি ম্যাচে মালয়েশিয়া একাদশের বিপক্ষে প্রায় ৮৫ হাজার দর্শক তাকে টিটকারি করে।[১৮] একটি সুত্র জানায়, "মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়া ফিলিস্তিনের সমর্থক এবং ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে ইচ্ছুক নয়"। তাই এরকম ঘটনা ঘটেছে।
২০১১ সালের ৩১ আগস্টে বেনায়ন ১ বছরের জন্য আর্সেনালে লোনে যোগ দেয়। ১০ সেপ্টেম্বর বেনায়ন সোয়ানসি সিটির বিপক্ষে আন্দ্রে আরশাভিনের বদলি খেলোয়াড় হিসেবে ২য় আর্ধে নামেন। ২০ সেপ্টেম্বর আর্সেনালের হয়ে ১ম গোল দেন। লিগ কাপে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচে আর্সেনালকে নেতৃত্ব দেন, ঐ ম্যাচে আর্সেনাল ১-০ গোলে পরাজিত হয়। ২০১২ সালের ৩ মার্চ তার পুরনো ক্লাব চেলসির বিপক্ষে ৭৪ মিনিটে মাঠে নামেন এবং ২-১ গোলে জয়লাভ করে।
২০১২ সালের ৩১ আগস্ট বেনায়ন ওয়েস্ট হামে লোনে যোগ দেয়। নভেম্বরে নিউক্যাসেলের বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েন। ফলে ওয়েস্ট হামের হয়ে আর ম্যাচ খেলতে পারেনি। ডিসেম্বরে তাকে চেলসির কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। ওয়েস্ট হামের হয়ে মাত্র ৩ টি ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন।
২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর বেনায়ন কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সে যোগ দেয়। তার অভিষেক ম্যাচে লেস্টার সিটির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায় কিউপিয়ার। ২০১৪ সালের ২২ মার্চ ক্লাবের হয়ে ১ম গোল দেয়,ঐ ম্যাচে ৩-১ গোলে জয় পায় কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্স।
২০১৪ সালের ৬ জুন বেনায়ন ২ বছরের চুক্তিতে মাক্কাবি হাইফাতে যোগ দেয়। তাকে দলে নিতে ১ মিলিয়ন ডলার খরচ করে মাক্কাবি হাইফা।
১৯৯৬ সালে উয়েফা ইউরোপিয়ান অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়েন্সিপে বেনায়ন ইসরাইলের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বেনায়ন জাতীয় দলের হয়ে তার অভিষেক ম্যাচ খেলে পর্তুগালের বিপক্ষে ১৯৯৮ সালের ১৮ নভেম্বরে। উয়েফা ইউরো ২০০০ বাচাই-পর্বে সান ম্যারিনোর বিপক্ষে হ্যাট্রিকে ৮-০ গোলে জয়লাভ করে সান ম্যারিনো। ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বেনায়ন দলের সবচেয়ে গুরুত্তপুর্ন খেলোয়াড় ছিলো। বাছাইপর্বে তার অসাধারন খেলার ফলে ইসরাইল ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ২০০৮ উয়েফা ইউরো বাছাইপর্বে বেনায়ন ২ টি গোল করেন। ২০১০ সালের ২ সেপ্টেম্বরে বেনায়ন মাল্টার বিপক্ষে নিজের ২য় হ্যাট্রিক করে।