ইয়স্তেন গার্ডার | |
---|---|
![]() ইয়স্তেন গার্ডার | |
জন্ম | অসলো, নরওয়ে | ৮ আগস্ট ১৯৫২
পেশা | ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার |
জাতীয়তা | নরওয়েজিয়ান |
ধরন | শিশুসাহিত্য, দর্শন[১] |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | দ্যা সলিটারি মিস্ট্রি, সোফিস ওয়ার্ল্ড, দ্যা অরিজিনাল গার্ল |
ইয়স্তেন গার্ডার (নরওয়েজীয় ভাষায়: Jostein Gaarder) (জন্ম: ৮ই আগস্ট, ১৯৫২) সমকালীন নরওয়েজীয় সাহিত্যিক এবং মানবাধিকারকর্মী।[২][৩] তার উপন্যাস ও গল্পগুলোতে শিশু-কিশোরদের দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। তিনি মূলত কিশোরের দৃষ্টি দিয়ে সবকিছু দেখতে পছন্দ করেন। তার রচনায় অধিসাহিত্য এবং অবিশ্বস্ত বর্ণনাকারীর পরিচয় পাওয়া যায়। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রশংসিত উপন্যাসের নাম সোফিস ভার্ডেন। তার সোফিস ভার্ডেন বইটি তিপ্পান্নটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং প্রায় তিন কোটি কপি বিক্রি হয়েছে।[৪]
ইয়স্তেন গার্ডার নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং মা ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা ও শিশু সাহিত্যিক। শিক্ষা ও লেখার দিকে তার ঝোঁক পরিবার থেকেই এসেছে। গার্ডার প্রথমে Oslo Katerdralskole-এ পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীকালে ইউনিভার্সিটি অফ অসলোতে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ক্যান্ডিনেভীয় ভাষা ও ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা করেন।
১৯৭৪ সালে বিয়ে করেন গার্ডার। প্রায় একই সময় থেকে লেখালেখি শুরু করেন। প্রথমে দর্শন ও ধর্মতত্ত্বের পাঠ্যবই লিখতেন। ১৯৮১ সালে সপরিবারে অসরো থেকে Bergen চলে যান। এ শহরে এসে হাই স্কুলে দর্শন পড়াতে শুরু করেন। বেশ কয়ক বছর এখানে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৮৬ সসলে তার প্রথম বই Diagnosen og andre noveller (ডায়াগণোসিস এবং অন্যান্য গল্প) প্রকাশিত হয়। এরপর ছোটদের জন্য দুটি বই লিখেন। ১৯৯০ সালে তার প্রথম পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস Kabalmysteriet (দ্য সলিটেয়ার মিস্টরি) প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাস একই সাথে Norwegian Literary Critics' Award এবং Ministry of Cultural and Scientific Affairs Literary Prize লাভ করে।
১৯৯১ সালে সোফিস ভার্ডেন প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসই এ পর্যন্ত তার লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রশংসিত উপন্যাস। দীর্ঘ তিন বছর ধরে নরওয়েতে এটি এক নম্বর বেস্ট সেলার ছিল। পৃথিবীর যে দেশেই প্রকাশিত হয়েছে সেখানেই প্রায় অনুরূপ সাফল্য লাভ করেছে। উপন্যাসের আদলে একটি দর্শন পাঠ্যবই হিসেবে এ ধরনের সাফল্য ছিল বিস্ময়কর। এই সফলতার পরই গার্ডার পুরোদমে লেখালেখি শুরু করেন। একই সাথে মানবতাবাদী কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে গার্ডার ও তার স্ত্রী Siri Dannevig মিলে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক সংগঠন "সোফি ফাউন্ডেশন" প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে প্রতি বছর "সোফি প্রাইজ" প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারের মূল্যমান ১০০,০০০ মার্কিন ডলার। পুরস্কার বিজয়ী ব্যক্তি বা সংস্থার যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে:
“ | that in a pioneering or a particularly creative way, has pointed to alternatives to the present development and/or put such alternatives into practice. | ” |
গার্ডার প্রতি এক বা দুই বছরে একটি করে বই প্রকাশ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে সপরিবারে অসলোতে বসবাস করছেন।
গার্ডারের সাহিত্যে এমন দুটি বিষয় লক্ষ্য করা যায় যার কারণে তার জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এই দুটি কারণেই তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে পেরেছেন। বিষয় দুটি হল: গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে বিস্তৃত দর্শন শিক্ষা এবং শিশু-কিশোরের দৃষ্টি দিয়ে লেখা।
সোফিস ভার্ডেনের মূল নামের পাশেই লেখা ছিল, দর্শনের ইতিহাস সম্পর্কে একটি উপন্যাস। পুরো উপন্যাসে সেই প্রাক-সক্রেটীয় যুগ থেকে শুরু করে একালের জঁ-পল সার্ত্র্ পর্যন্ত দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি বিষয়ই এতে উল্লেখ করা হয়েছে। তারপরও বইটি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। অবিশ্বস্ত বর্ণনাকারীর বিষয়টি এক্ষেত্রে অনেকাংশে সাহায্য করেছে।
সোফিস ভার্ডেন বইটি সোফি আমুন্ডসেন নামের ১৫ বছর বয়সী এক মেয়ের দৃষ্টিতে লেখা। গার্ডারের অন্যান্য গল্প-উপন্যাসেও এই ধারাটি লক্ষ্য করা যায়। Kabalmysteriet উপন্যাসের প্রধান চরিত্র Hans Thomas এর বয়স মাত্র ১২ বছর। আর বেশ কিছু গল্প তো ছোটদের জন্যই লেখা। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, শিশু-কিশোরের দৃষ্টি দিয়ে লেখা উপন্যাসগুলো সকল বয়ষের মানুষের মাঝেই সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে।