![]() | এই নিবন্ধটির তথ্যসূত্র উদ্ধৃতিদানশৈলী ঠিক নেই।(অক্টোবর ২০২০) |
ইয়াকব ডেভিড বেকেনস্তেইন (১ মে ১৯৪৭- ১৬ আগস্ট ২০১৫) মেক্সিকায় জন্ম নেওয়া একজন ইসরায়েলি আমেরিকান তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি কৃষ্ণবিবরের তাপগতিবিদ্যা এবং তথ্য ও অভিকর্ষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন।[১]
ইয়াকব বেকেনস্তেইন মেক্সিকো সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবারর নাম জোসেফ ও মাতার নাম এস্থার। তাঁরা পোলিশ ইহুদি, যারা মেক্সিকোয় অভিবাসী হন। [২] তিনি পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান। ইয়াকব ১৯৬৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন।[৩] এছাড়াও তিনি ইসরায়েলের নাগরিক। [৪]
বেকেনস্তেইন ব্রুকলিন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে (বর্তমান নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটেকনিক প্রকৌশল স্কুল) পড়াশোনা করেন। তিনি সেখান থেকে স্নাতক ও ১৯৬৯ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি জন আর্চিবল্ড হুইলারের ১৯৭২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। [৫]
ইয়াকব ও তার স্ত্রী বিলহার তিনজন সন্তান ছিল। তাদের সবাই (ইয়েহোনাদভ,উরিয়া ও রিভকা বেকেনস্তেইন) বড় হয়ে বিজ্ঞানী হন। ২০১৮ সালে ইয়োহোনাদভ ইসরায়েল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন। [৬] বেকেনস্তেইন একজন ধার্মিক ব্যক্তি ও ঈশ্বরে বিশ্বাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি বলেছেন, "আমি বিশ্বকে ঈশ্বরের সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করি। তিনি কতগুলো সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করেছেন এবং বৈজ্ঞানিক কাজের মাধ্যমে সেগুলো আবিষ্কার করতে আমি আনন্দ অনুভব করি।"[৭]
কৃষ্ণবিবরের নাক্ষত্রিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে বেকেনস্তেইন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র রচনা করেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- নো হেয়ার উপপাদ্য(ভর, ইলেকট্রনের আধান ও কৌণিক ভরবেগ- এই তিনটি জিনিসকে মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করে অভিকর্ষ ও তড়িৎচুম্বকত্ব সম্পর্কিত আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল সমীকরণের সকল কৃষ্ণবিবরীয় সমাধান নির্ণয় করা সম্ভব- এটাই এ উপপাদ্যের প্রতিপাদ্য), কৃষ্ণবিবরের নাক্ষত্রিক ঘটনাপ্রবাহ ও কৃষ্ণবিবরীয় তাপগতিবিদ্যার উপর তত্ত্ব উপস্থাপন। এছাড়াও বেকেনস্তেইন কোয়ান্টাম ভর ও বিশৃঙ্খলা-মাত্রার উপর প্রবন্ধ রচনা করেন।
তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিনের ডক্টরেটোত্তর ফেলো হিসাবে কাজ করেন। এরপর তিনি ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি পূর্ণ অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৮৩ সালে তিনি জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।
১৯৯০ সালে তিনি জেরুজালেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন। তিন বছরের মধ্যেই তিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পদে নিযুক্ত হন। ১৯৯৭ সালে তিনি ইসরায়েলের বিজ্ঞান ও কলা একাডেমির সদস্যপদে নির্বাচিত হন। [৮] ২০০৯-২০১০ সালে তিনি ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এর একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন।
ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি শহরে মারা যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ইয়াকব হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পোলাক অধ্যাপক পদে নিযুক্ত ছিলেন। [৯] ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর কয়েক মাস পূর্বে তিনি আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞান সমিতির আইনস্টাইন পুরস্কার লাভ করেন।[১০]"কৃষ্ণবিবরের বিশৃঙ্খল মাত্রার উপর তাঁর অভাবনীয় কাজ, যা কৃষ্ণবিবরীয় তাপগতিবিদ্যা নামে পদার্থবিজ্ঞানের একটি নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে ও কোয়ান্টাম বলবিদ্যা ও অভিকর্ষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করেছে"-এর স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এই পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৭২ সালে বেকেনস্তেইন সর্বপ্রথম বলেন-"কৃষ্ণ বিবরগুলোর সুসংজ্ঞায়িত বিশৃঙ্খলা মাত্রা থাকা উচিত।"বেকেনস্তেইনের মতে,কৃষ্ণ বিবরের বিশৃঙ্খলা মাত্রা এর দিগন্তসীমার আয়তনের সমানুপাতিক।