小津安二郎 ইয়াসুজিরো ওজু | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১২ ডিসেম্বর ১৯৬৩ | (বয়স ৬০)
অন্যান্য নাম | জেমস মাকি ゼームス槇 |
পেশা | চলচ্চিত্র পরিচালক |
কর্মজীবন | ১৯২৯ – ১৯৬৩ |
ইয়াসুজিরো ওজু (ডিসেম্বর ১২, ১৯০৩, ডিসেম্বর ১২, ১৯৬৩) খ্যাতিমান জাপানী চলচ্চিত্রকার। তাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান মানবতাবাদী চলচ্চিত্রশিল্পীদের একজন মনে করা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে ছবি তৈরি করেছিলেন জাপানি পরিচালক ওজু। আন্তর্জাতিক সিনেমা সাম্রাজ্যের অন্যতম সম্রাট— ‘লেট স্প্রিং’, ‘আর্লি সামার’, ‘টোকিয়ো স্টোরি’-খ্যাত ওজু । জাপানের সামরিক প্রচারচিত্রের অঙ্গ হিসেবে ছবিটা তৈরির বরাত পেয়েছিলেন তিনি। অভিনয়ে প্রবাসী ভারতীয়রাই ছিলেন। ওজুর তোলা ছবি প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে গচ্ছিত ছিল। আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ককে নিয়ে প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি।
চলচ্চিত্র গবেষক পিটার বি হাই এবং নোবোরি শিগেকি দুজনেই জানিয়েছেন, সুভাষের সঙ্গে অন্তত এক বার সরাসরি কথা হয়েছিল ওজুর। ওঁরা একসঙ্গে বসেই ঠিক করেন, বর্মা হয়ে আইএনএ-র ভারতে পৌঁছনোর কাহিনি চিত্রায়িত করা হবে। ছবির নাম ‘অন টু দিল্লি’ সুভাষই ঠিক করে দেন। ঠিক কবে ওঁদের এই আলোচনা হল, সেই তারিখটা অবশ্য পরিষ্কার নয়। তবে সিঙ্গাপুরের ক্যাথে থিয়েটার ভবনই ছিল মূল কর্মকেন্দ্র। সেখানেই সুভাষ তাঁর প্রথম জনসভা করেন। ১৯৪৩-এর জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরে রাসবিহারী বসুর হাত থেকে আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়কত্ব গ্রহণ। ২১ অক্টোবর আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাও হল ক্যাথে থিয়েটারে। ওই বাড়িতেই আজাদ হিন্দ সরকারের বেতারকেন্দ্র এবং একাধিক দফতরের কার্যালয়। ওই বাড়ির ছ’তলাতেই ওজুর অফিসঘর।
মূল শুটিং শুরু করতে ১৯৪৪-এর ডিসেম্বর গড়িয়ে গেল । হয়তো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াও কিছু কিছু শুটিং স্বাধীন ভাবে করছিলেন ওজু। কারণ তিনি প্রথম কিছু দিন সেনা ব্যারাক, সেনা প্রশিক্ষণের ছবি তুলছিলেন। ব্রিটিশ বন্দিদের কাজে লাগিয়ে ১৯৪২-পূর্ব সিঙ্গাপুরের ছবি দেখাতে ব্রিটিশ সেনার টহলের দৃশ্যও তোলা হয়। আর ওজুর জীবনীকারেরা প্রায় সকলে এক বাক্যে এ-ও লিখছেন যে, ওজু সিঙ্গাপুরের সময়টা অনেকটাই কাটাচ্ছিলেন নিজের মতো করে। বই পড়ে, টেনিস খেলে, দেদার সিনেমা দেখে। ১৯৪৪-এর ডিসেম্বরে শুটিং থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট— ইম্ফল অভিযান ব্যর্থ হওয়া এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মাটিতে অন্তত জাপান আর যুদ্ধ চালাতে আগ্রহী নয়, এটা স্পষ্ট হওয়ার পরেও ছবির কাজ পুরোদমে চলছিল। তার কারণ সম্ভবত এই যে, সুভাষচন্দ্র তথা আইএনএ-র মনোবলে তখনও চিড় ধরেনি। ১৯৪৪-এর ডিসেম্বরেও সুভাষের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, তাইপেই, সায়গন আর সিঙ্গাপুর থেকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া যাবে।
জাপানের জয়ের আশা নিভে আসছে বোঝামাত্র ওজু শুটিং বন্ধ করেন।
সিঙ্গাপুরের সফরেই নেহরুর হাতে আসে ওজুর অসমাপ্ত, অসম্পাদিত ছবি। নেহরুর সফরে অসমাপ্ত ছবি তাঁর হাতে তুলে দেন মালয়ের এক ভারতীয় স্বাধীনতা-যোদ্ধা। নেহরু ভারতে ফেরার পরে ছবিটি শেষ করার দায়িত্ব নেন বল্লভভাই পটেল। পটেলের হয়ে প্রযোজনার দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছেন নাথলাল পারেখ। পূর্ণাঙ্গ ছবিটি ‘নেতাজী সুভাষ’ নামে ১৯৪৮ সালের ২৩ জানুয়ারি, অর্থাৎ স্বাধীন ভারতের প্রথম নেতাজি জয়ন্তীতে মুক্তি পায়।[১]
১৪টি চিত্রগৃহে মুক্তি পেল ‘নেতাজী সুভাষ’। আইএনএ-র মেজর জেনারেল শাহনওয়াজ খান এবং মেয়র সুধীরবাবু এ ছবির উদ্বোধন করেন। প্রথম সপ্তাহের প্রথম ও শেষ প্রদর্শনীর বিক্রীত অর্থ আজাদ হিন্দ ফৌজের শহিদদের দুঃস্থ পরিবারের সাহায্যার্থে দেওয়া হয়।