ঈদুল গাদীর | |
---|---|
সৌদি আরবের হেজাজের রাবিগ-এর নিকটবর্তী মসজিদে মিক্বাতাল-জুহফাহ; এখানেই কোথাও গাদীর খুমের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হয়। | |
অন্য নাম | ইওমুল মিসাক (চুক্তির দিন) |
পালনকারী | মুসলিম (শিয়া ও সুফি) |
ধরন | শিয়া ইসলাম |
তাৎপর্য | মুহাম্মদের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে আলীর মনোনয়নের দিন |
পালন | প্রার্থনা, উপহার আদান-প্রদান, ভোজনোৎসব, দোয়া নুৎবা পাঠ |
তারিখ | জ্বিলহজ্জ ১৮ |
ঈদুল গাদীর (আরবি: عید الغدیر) হচ্ছে শিয়া মুসলমানদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উৎসবগুলোর অন্যতম। শিয়াদের মধ্যে কথিত আছে যে, এই দিন অর্থাৎ ১৮ জ্বিলহজ্জ তারিখে ইসলামের নবী মুহাম্মদ গাদীর খুমের ভাষণে তাঁর চাচাতো ভাই ও জামাতা আলী ইবনে আবী তালিবকে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। হাদীস অনুসারে এই ঈদটির নামকরণ করা হয়েছে "ঈদ-আল্লাহ আল-আকবার" (ফার্সি: عیدالله الاکبر) (অর্থাৎ, সর্বশ্রেষ্ঠ ঐশী ঈদ),[১] "ঈদ আহলে বাইত মুহাম্মদ" [২][৩] এবং আশরাফ আল-আ‘আদ" (অর্থাৎ সর্বোচ্চ ঈদ)। [৪][৫]
হিজরতের দশ বছর পর নবি মুহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের (সাহাবি) তার সাথে বিদায় হজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। ইসলামী পন্ডিতরা বিশ্বাস করেন যে সত্তর হাজারেরও বেশি সাহাবি মুহাম্মদের সাথে এই হজে অংশগ্রহণ করেন। জিলহজ মাসের চতুর্থ দিনে মক্কা নগরীতে প্রবেশের জন্য লক্ষাধিক মুসলমান উপস্থিত হন। [৬][৭] এই হজ থেকে প্রত্যাবর্তনকালে, গাদির খুম নামে পরিচিত একটি স্থানে ১০ হিজরি সালের ১৮ জিলহজ (মার্চ, ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ) তারিখে নবি মুহাম্মদ একটি সুপরিচিত খুতবা প্রদান করেন। এই সময় তিনি তার চাচাতো ভাই এবং জামাতা আলী ইবনে আবী তালিব সম্পর্কে বলেন,
“ | যাদের কাছে আমি মাওলা, আলীও তাদের মাওলা।[৮][৯] | ” |
যদিও 'মাওলা' শব্দের অর্থ "বন্ধু" বা "অভিবাবক" সহ বিভিন্ন অর্থ রয়েছে এবং অনেক সাহাবী সম্পর্কেই মুহাম্মদ এরকম প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেছেন, তবুও শিয়ারা দাবি করে যে এই বক্তব্যের মাধ্যমে মুহাম্মদ তাঁর জামাতা আলী ইবনে আবী তালিবকে উত্তরাধিকারী তথা পরবর্তী খলিফা মনোনীত করেছেন। [১০] ফলস্বরূপ, খুতবাটি শিয়াদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হয়। তাই তারা প্রতিবছর এই দিন অর্থাৎ ১৮ জিলহজ তারিখে ঈদুল গাদির পালন করে।[১১][১২]
বিশ্বব্যাপী শিয়া মুসলমানরা বিভিন্ন রীতিনীতি পালনের মাধ্যমে 'একটি আনন্দের দিন' হিসেবে এই দিনটি উদ্যাপন করে। [১৩][১৪] ইরান[১৫][১৬][১৭], ভারত, পাকিস্তান, আজারবাইজান,[১৮] ইরাক,[১৯][২০] সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, লেবানন, বাহরাইন এবং সিরিয়া সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শিয়া সম্প্রদায় এই অনুষ্ঠান পালন করে। এছাড়াও ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স ইত্যাদি দেশের প্রবাসী শিয়া মুসলিমরা ঈদ উল-গাদির উদ্যাপন করে। [২১][২২][২৩][২৪]