ডেভলপার | মাইক্রোসফট কর্পোরেশন |
---|---|
প্রোগ্রামিং ভাষা | সি, সি++[১] |
ওএস পরিবার | মাইক্রোসফট মোবাইল |
কাজের অবস্থা | চলতি |
সোর্স মডেল | বন্ধ-সোর্স |
প্রাথমিক মুক্তি | |
সর্বশেষ মুক্তি | ৮.১ আপডেট ২ (৮.১০.১৫১৪৮.১৬০)[২] / ২ জুন ২০১৫ |
ভাষাসমূহ | ১৩০ ভাষায়[৩] |
প্যাকেজ ম্যানেজার | উইন্ডোজ ফোন স্টোর এক্সএপি উইন্ডোজ ফোন ৮ এবং পরবর্তী সংস্করণগুলোতে |
প্ল্যাটফর্ম | কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগণ (ভিত্তি এআরএম ৭ম সংস্করণ বা পরবর্তী) |
কার্নেলের ধরন | মনোলিথিক (উইন্ডোজ সিই) (উইন্ডোজ ফোন ৭) হাইব্রিড (উইন্ডোজ এনটি) (উইন্ডোজ ফোন ৮) |
ব্যবহারকারী ইন্টারফেস | গ্রাফিকাল (মেট্রো ইউআই) |
লাইসেন্স | বাণিজ্যিক প্রোপ্রিয়েটারি সফটওয়্যার |
ওয়েবসাইট | www |
উইন্ডোজ ফোন (ইংরেজি: Windows Phone) হল এক ধরনের মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম যা উন্নয়ন করে থাকে মাইক্রোসফট
উইন্ডোজ মোবাইলের উত্তরসূরি,[৪] যদিও পূর্বেকার প্ল্যাটফর্মের সাথে এটি বেমানান।[৫] এন্টারপ্রাইজ বাজারের পরিবর্তে এর মূল লক্ষ্য ভোক্তা বাজার।[৬] এটি প্রথম চালু করা হয় ২ ০১০ সালের অক্টোবরে এবং ২০১১ সালের প্রথম ভাগে এটি এশিয়াতে মুক্তি পায়।[৭] উইন্ডোজ ফোনের সর্বশেষ সংস্করণ হল উইন্ডোজ ফোন ৮.১, যা ২০১৫ সালের ২ জুন মুক্তি দেওয়া হয়।
উইন্ডোজ ফোনের সাথে মাইক্রোসফট “মডার্ন” একটি নতুন ধরনের ব্যবহারকারী মাধ্যম তৈরি করেছে (পূর্বে “মেট্রো” নামে পরিচিত ছিল)।[৮] এছাড়াও এই সফটওয়্যার তৃতীয়-পক্ষ এবং মাইক্রোসফটের সেবাসমূহের সাথে সংহত।[৯]
মাইক্রোসফট বর্তমানে উইন্ডোজ ফোনের পরবর্তী সংস্করণের জন্য কাজ করছে, যার সাংকেতিক নাম “উইন্ডোজ ফোন ব্লু” (পূর্বে ছিল “উইন্ডোজ ফোন অ্যাপোলো প্লাস”[১০])। এর সাম্ভব্য নাম হতে পারে উইন্ডোজ ফোন ৮.১ বা উইন্ডোজ ফোন ৮.৫।[১১]
উইন্ডোজ ফোনের প্রধান সমস্যা হল অ্যাপলিকেশনের অভাব।[১২][১৩][১৪]
উইন্ডোজ মোবাইলের কাজ শুরু করা হয় ২০০৪ সালে। সে সময় এর সাংকেতিক নাম ছিল “ফোটোন”। কিন্তু কার্যক্রম খুব ধীর গতিতে হতে থাকে এবং চূড়ান্তভাবে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।[১৫] ২০০৮ সালে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ মোবাইল গ্রুপ পুনরায় সংগঠিত করে এবং একটি নতুন মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমের উপর কাজ শুরু করে।[১৬] এটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ২০০৯ সালে, তবে কিছুদিন দেরি হওয়ার কারণে অন্তবর্তীকালীন সংস্করণ হিসেবে উইন্ডোজ মোবাইল ৬.৫ মুক্তি দেয় মাইক্রোসফট।[১৭]
উইন্ডোজ ফোনের উন্নয়ন খুব দ্রুত সংঘটিত হয়। তবে নতুন এই অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ মোবাইলের অ্যাপলিকেশনগুলো সমর্থন করে না। মাইক্রোসফটের মোবাইল ডেভলপার এক্সপেরিয়েন্সের জ্যেষ্ঠ পণ্য ব্যবস্থাপক ল্যারি লিবারম্যান ইউইককে বলেন, “যদি আমাদের আরও সময় এবং সম্পদ থাকত, তাহলে আমরা হয়ত পূর্বেকার সংস্করণের সাথে সামঞ্জস্য রাখার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু করতে পারতাম।”[১৮] লিবারম্যান বলেন যে মাইক্রোসফট মোবাইল বাজারকে নতুনভাবে দেখার চেষ্টা করছে।[১৮]
২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, স্পেনের বার্সেলোনায় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে উইন্ডোজ ফোন ৭-এর ঘোষণা করা হয় এবং ২০১০ সালের ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে এটি মুক্তি পায়। ২০১১ সালের মে মাসে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ফোন ৭-এর হালনাগাদ সংস্করণ “ম্যাংগো” মুক্তি দেয়। এই সংস্করণের সাথে জুড়ে দেওয়া হয় ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৯-এর মোবাইল সংস্করণ। এই সংস্করণ ডেক্সটপ সংস্করণের মতই ওয়েব এবং গ্রাফিক্স সমর্থন করে। এছাড়া এতে রয়েছে তৃতীয়-পক্ষ অ্যাপ্লিকেশনের মাল্টি-টাস্কিং,[১৯][২০] পিপল হাবের জন্য টুইটার একত্রীকরণ,[২১][২২][২৩] এবং উইন্ডোজ লাইভ স্কাইড্রাইভ সংযোগ।[২৪]
২০১২ সালে একটি ছোটোখাটো সংস্করণ মুক্তি পায় যা “ট্যাঙ্গো” নামে পরিচিত। এতে পূর্বেকার সংস্করণের ত্রুটিগুলোকে সারানো হয় এবং হার্ডওয়্যারের প্রয়োজনীয়তা খর্ব করা হয়। ফলে একটি যন্ত্রে উইন্ডোজ ফোন চালানোর জন্য ৮০০ মেগাহার্জের সিপিইউ এবং ২৫৬ মেগাবাইট র্যামই যথেষ্ট।[২৫]
২০১৩ সালের জানুয়ারিতে উইন্ডোজ ফোন ৭.৮ মুক্তি পায়। এতে উইন্ডোজ ফোন ৮-এর কিছু বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়। যেমনঃ স্টার্ট স্ক্রিন হালনাগাদ করা হয়, বর্ণবিন্যাসের বিকল্প দ্বিগুন করা হয় এবং বিং ইমেজ অফ দ্য ডে চিত্রটিকে লক স্ক্রিনের ওয়ালপেপার হিসেবে রাখার সুবিধা প্রদান করা হয়। উইন্ডোজ ফোন ৭.৮-এর উদ্দেশ্য ছিল উইন্ডোজ ফোন ৭-এর পুরানো ফোনগুলোকে বেশিদিন টিকিয়ে রাখা। কেননা, হার্ডওয়্যার সীমাবদ্ধতার কারণে এগুলোকে উইন্ডোজ ফোন ৮-এ হালনাগাদ করা সম্ভব নয়। অবশ্য, এখনও অনেক ব্যবহারকারীর কাছে উইন্ডোজ ফোন ৭.৮-এর হালনাগাদ পৌছায়নি।
মাইক্রোসফট ঘোষণা করেছে যে উইন্ডোজ ফোন ৭.৮ পরবর্তীকালেও হালনাগাদ করা হবে, যেহেতু উইন্ডোজ ফোন ৭ এবং উইন্ডোজ ফোন ৮ কিছু সময় একই সাথে বিদ্যমান থাকবে। এতে উইন্ডোজ ফোন সমর্থিত বিভিন্ন মূল্যের মোবাইল ফোন বাজারে পাওয়া যাবে।
২০১২ সালের ২৯ অক্টোবর মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ফোন ৮ অবমুক্ত করে, যা উইন্ডোজ ফোন অপারেটিং সিস্টেমের দ্বিতীয় প্রজন্ম। উইন্ডোজ ফোন ৮-এ পূর্বেকার উইন্ডোজ সিই ভিত্তিক স্থাপত্যের পরিবর্তে উইন্ডোজ এনটি কার্নেল ব্যবহার করা হয়েছে। উইন্ডোজ ফোন ৭ সমর্থিত স্মার্টফোনে উইন্ডোজ ফোন ৮ হালনাগাদ করা বা চালানো সম্ভব নয়। তবে উভয় সংস্করণ একই ধরনের অ্যাপ্লিকেশন সমর্থন করে।
উইন্ডোজ ৮-এ উইন্ডোজ ৭ বা ৭.৫ এর চেয়ে উন্নতমানের হার্ডওয়্যার সমর্থন করে। এটি মাল্টি-কোর প্রসেসর এবং উচ্চ মাপের পর্দা সমর্থন করে।[২৬] উইন্ডোজ ফোন ৭ এবং ৭.৫ উচ্চমানের হার্ডওয়্যার সমর্থন না করায় প্রায়ই সমালোচিত হয়ে থাকে, কিন্তু উইন্ডোজ ফোন ৮ এর নতুন হার্ডওয়্যার একে গুগল এবং অ্যাপলের স্মার্টফোনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা করার ক্ষমতা প্রদান করেছে।[২৭]
২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি, লন্ডনে একটি সংবাদ সম্মেলনে, মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী স্টিভ বালমার এবং নকিয়ার প্রধান নিবার্হী স্টিফেন ইলোপ কোম্পানি দুটির মধ্যকার অংশীদারত্বের কথা ঘোষণা করেন। এই অংশীদারত্বের অধীনে নকিয়ার প্রাথমিক অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে সিম্বিয়ানের জায়গা দখল করে উইন্ডোজ ফোন।[২৮] এর মাধ্যমে স্মার্টফোন বিশ্বে এনড্রয়েড এবং আইওএস এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয় উইন্ডোজ ফোন। ইলোপ এনড্রয়েডের পরিবর্তে উইন্ডোজ ফোনকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে “পৃথকীকরণকে” তুলে ধরেন।
এই অংশীদারত্বে যেসব সেবাগুলি একীভূত করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:[২৮]
নকিয়ার প্রথম উইন্ডোজ ফোন লুমিয়া ৮০০ এবং লুমিয়া ৭১০ ২০১১ সালের অক্টোবরে ঘোষিত হয়।[২৯][৩০] ২০১২ কনজুমার ইলেক্ট্রনিক শো-তে নকিয়া লুমিয়া ৯০০ অবমুক্ত করার ঘোষণা দেয়, যাতে রয়েছে ৪.৩ ইঞ্চি এএমওএলইডি ক্লিয়ারব্যাক ডিসপ্লে, ১.৪ গিগাহার্টজের প্রসেসর এবং ১৬ গিগাবাইটের সংরক্ষণাগার।[৩১] লুমিয়া ৯০০ প্রথম উইন্ডোজ ফোনগুলোর অন্যতম যেগুলো এলটিই সমর্থন করে এবং এটি ২০১২ সালের এপ্রিলের ৮ তারিখে অবমুক্ত হয়।[৩২] লুমিয়া ৬১০ নকিয়ার প্রথম উইন্ডোজ ফোন যা ম্যাঙ্গো অপারেটিং সিস্টেমে (উইন্ডোজ ফোন ৭.৫ রিফ্রেশ) পরিচালিত হয়। এই মডেলটির মূল লক্ষ ছিল উঠতি বাজার।
২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর, মাইক্রোসফট কর্তৃক নকিয়ার মোবাইল বিভাগ অধীগ্রহণের ঘোষণা প্রদান করা হয়।[৩৩][৩৪][৩৫]
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)