উইলিয়াম গোপালাওয়া විලියම් ගොපල්ලව வில்லியம் கோப்பல்லாவ | |
---|---|
১ম শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ২২ মে, ১৯৭২ – ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ | |
প্রধানমন্ত্রী | জুনিয়াস রিচার্ড জয়েবর্ধনে সিরিমাভো বন্দরনায়েকে |
কাজের মেয়াদ ২ মার্চ, ১৯৬২ – ২২ মে, ১৯৭২ | |
জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক | |
কাজের মেয়াদ ১৬ আগস্ট ১৯৭৬ – ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | মাটালে, ব্রিটিশ সিলন | ১৭ সেপ্টেম্বর ১৮৯৬
মৃত্যু | ৩১ জানুয়ারি ১৯৮১ কলম্বো, শ্রীলঙ্কা | (বয়স ৮৪)
রাজনৈতিক দল | নির্দলীয় রাজনীতিবিদ |
দাম্পত্য সঙ্গী | সিলাওয়াথি গোপালাওয়া (রামবুকওয়েলা) (১৯২৮–১৯৭৭; তার মৃত্যু) |
সন্তান | ৫ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ধর্মরাজা কলেজ সেইন্ট অ্যান্থনি'স কলেজ |
উইলিয়াম গোপালাওয়া, এম.বি.ই (সিংহলি: විලියම් ගොපල්ලව, তামিল: வில்லியம் கோப்பல்லாவ) (১৭ই সেপ্টেম্বর,১৮৯৬ – ৩১ জানুয়ারি ১৯৮১) ছিলেন,১৯৬২ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত, সিলনের শেষ গভর্নর জেনারেল এবং ১৯৭২ সালে সিলন প্রজাতন্ত্র ঘোষণাকালে ও শ্রীলঙ্কা নামগ্রহণ কালে হয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার এক ও একমাত্র অনির্বাহী রাষ্ট্রপতি। ১৯৭২ এর আগ পর্যন্ত সিলন ছিল একটি কমনওয়েলথ রাজ্য; রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ছিলেন রাষ্ট্রের নিয়মতান্ত্রিক প্রধান এবং সিলনের রাণী। এসএলএফপির সিরিমাভো বন্দরনায়েকে, ইউএনপির ডাডলি সেনানায়েকেসহ বিভিন্ন সরকারের আমলে তিনি গভর্নর জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছেন।
উইলিয়াম গোপালাওয়ার জন্ম ১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৬ সালে, মাটালের উপশহর দুল্লেভে মহা ওয়ালাউভা, আলুবিহারে'তে। মাতা টিকরি কুমারিহামি দুলেভের সূত্রে তিনি দুল্লেভে দিশ্যাভা'র সাথে যুক্ত,যা ছিল ১৮৮৫-এ অনুষ্ঠিত ক্যান্ডি সম্মেলনে সিংহলীদের প্রতিনিধি হিসেবে স্বাক্ষরকারী পক্ষ। মাত্র তিন বছর বয়সে তিনি তার পিতাকে (টিকরি বান্দারা গোপালাওয়া) হারান।[১]
দুল্লেভে গ্রামীণ বিদ্যালয় এবং ক্যান্ডির সেইন্ট জন'স কলেজ থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ক্যান্ডির ধর্মরাজা কলেজ ও সেইন্ট অ্যান্থনি'স কলেজে সম্পন্ন হয় তার মাধ্যমিক শিক্ষা। প্রথমোক্ত প্রতিষ্ঠানে তিনি স্কাউটিং শেখেন।[১] ১৯১৭ সনে ক্যামব্রিজ সিনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষার পর তিনি মাটালেতে ফিরে আসেন এবং বুদ্ধিস্ট ইংলিশ স্কুলে টিউটোরিয়াল স্টাফ হিসেবে যোগদান করেন। ছাত্রদের কল্যাণার্থে সেখানে একটি পাঠাগার এবং স্কাউট দল গঠনেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
১৯২০ সালে উইলিয়াম কলম্বোর সিলন ল কলেজে যোগ দেন এবং ১৯২৪ সালে প্রোক্টর ও নোটারি পাব্লিক হিসেবে নিবন্ধিত হন। তার আইনি জীবন শুরু হয় বার্নার্ড আলুবিহারের অধস্তন হিসেবে,ক্যান্ডির উপপ্রধান বারে। ১৯২৪ থেকে শুরু করে ১৯৩৯ সালে ক্যান্ডির পৌরসভা কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর্যন্ত মাটালে,ডাম্বারা এবং ক্যান্ডিতে তিনি আইনিচর্চা অব্যাহত রাখেন।
১৯২৬ সালে গোপালাওয়া মাটালে গ্রাম-কাউন্সিল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে জয়লাভ করেন এবং ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত টানা তেরো বছর কাউন্সিলে তার দায়িত্ব পালন করেন। মাটালে গ্রাম-কাউন্সিলে চেয়ারম্যান পদে তিনি পাঁচ বছর অবস্থান করেন। সেসময় তিনিই ছিলেন সিলনের সর্বকনিষ্ঠ গ্রাম-কাউন্সিল চেয়ারম্যান।
১৯৩৬ সালে মাটালে আসনে রাষ্ট্রীয় পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন। ১৯৩৯ সালে ক্যান্ডি পৌরসভা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয় এবং গোপালাওয়া ক্যান্ডির পৌরসভা কমিশনার নিযুক্ত হন।পুরো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৫০ এর ভয়াবহ বন্যার সময় অত্যন্ত বিচক্ষণ ভূমিকা পালন করেন।১৯৫১ সালে তিনি কলম্বো পৌরসভা কাউন্সিলের কমিশনার নিযুক্ত হন এবং ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৩ করোনেশন অনার্সে তিনি মেম্বার অফ দা অর্ডার অফ দা ব্রিটিশ এম্পায়ার বা এম.বি.ই. উপাধি লাভ করেন।
১৮ই জুন,১৯৫৮ সালে এস.ডব্লিউ.আর.ডি. বন্দরনায়েকে সরকার গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে,তার দুই বছর পর গোপালাওয়া সেখানকার দ্বিতীয় দূত নিযুক্ত হন। ৭ই সেপ্টেম্বর,১৯৬১তে তিনি যখন চীনে কর্মরত,তখন তাকে দায়িত্ব পুনর্বিন্যস্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত করা হয়,যেখানে তিনি ১৯৬২ সাল পর্যন্ত কর্মরত থাকেন।
বছরের শুরুতে সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় অলিভার গুনাতিলেকের সম্পৃক্ততা উদ্ঘাটনের পর, ১৯৬২ সালে তিনি সিলনে ফেরত আসেন। তার জামাতার বোন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সিরিমাভো বন্দরনায়েকে গোপালাওয়াকে সিলনের গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত করেন।দ্বিতীয় সিলনীয় এবং প্রথম বৌদ্ধ ব্যক্তি হিসেবে তিনি গভর্নর জেনারেল, অর্থাৎ নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত গোপালাওয়া তার দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৫ সালের নির্বাচনে ইউএনপির জয়লাভের পর সাংবিধানিক নিয়মরক্ষার্থে তিনি তাদের সরকার গঠনে আমন্ত্রণ জানান। ইউএনপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি; পরাজিত এসএলএফপি, যে দল তাকে গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত করেছিলো,তারাও চেয়েছিলো তিনি যেন এই কাজে গড়িমসি করেন। জাতীয় জীবনের এই ক্রান্তিলগ্নে গোপালাওয়া দলের স্বার্থের ঊর্ধ্বে জনমত এবং সংবিধানকে স্থান দেন। তার এই বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নেতৃত্বশূন্যতার বিরাট সংকট সৃষ্টি হতে দেয় নি।২২শে মে,১৯৭২ সালে সিলন যখন শ্রীলঙ্কা প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে,গোপালাওয়া স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন। ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮—এ তিনি অব্যাহতি লাভ করেন। সাংবিধানিক পরিবর্তনের পর প্রধানমন্ত্রী জুনিয়াস রিচার্ড জয়াবর্ধনে নির্বাহী রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হন।
একজন ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ হয়েও সকল ধর্মের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। হিন্দুদের পার্বণ, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান কিংবা বড়দিন অনুষ্ঠান পালনে কখনো ভুল করেননি তিনি; তার মেয়াদে সকল শ্রীলঙ্কানকে ঐক্যবদ্ধ করতে তিনি সদাসচেষ্ট ছিলেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে তিনিই প্রথম বৌদ্ধ প্রার্থনা কক্ষ স্থাপন করেন এবং সেটিও ছিলো অত্যন্ত সাদামাটা,যজৌলুসহীন।
১৯২৮ সালের ৮ই মার্চ, গোপালাওয়া সিলাওয়াথি রামবুকওয়েলাকে বিয়ে করেন। তাদের পাঁচ সন্তান ছিলো, যদিও তার মাটালে এতে অবস্থানকালে তাদের একজনের অকাল মৃত্যু হয়। তার জ্যেষ্ঠকন্যা চন্দ্রিকা ইরানগ্যানির বিয়ে হয় সিরিমাভো বন্দরনায়েকের ব্যক্তিগত সচিব ও ভাই ড.ম্যাকি রাতওয়াটের সাথে।তার জ্যেষ্ঠপুত্র অশোকা একজন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী। তার দ্বিতীয় কন্যা চিন্তামনী ছিলেন একজন শিক্ষক ও ভূসম্পত্তির মালিক। তার কনিষ্ঠ পুত্র মন্টি গোপালাওয়া, যার মৃত্যু হয় ২০০৫-এ, ছিলেন একজন আইনসভা এবং রাষ্ট্রপতি চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা (সিরিমাভো বন্দরনায়েকে এর কন্যা) এর মন্ত্রীসভার একজন সজ্জন সদস্য। তার নাতি-নাতনির সংখ্যা ১৩—চন্ধাকা, ধামিকা, মানো, অনুষ্কা, দেবীকা, অবন্তী, সুরেখা, লেখা, শিরন্তনী, অশনী, মহীন, শনিকা ও ডিলানি।
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী স্যার অলিভার আর্নেস্ট গুনেতিলেকে |
সিলনের গভর্নর জেনারেল ১৯৬২–১৯৭২ |
দপ্তর বিলুপ্তিকরণ |
নতুন দপ্তর | শ্রীলঙ্কান রাষ্ট্রপতি ১৯৭২–১৯৭৮ |
উত্তরসূরী জুনিয়াস রিচার্ড জয়াবর্ধনে |