উইলিয়াম চার্লস ওসমান হিল | |
---|---|
জন্ম | ১৩ জুলাই ১৯০১ |
মৃত্যু | ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫ | (বয়স ৭২)
জাতীয়তা | ব্রিটিশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | Primates: Comparative Anatomy and Taxonomy |
দাম্পত্য সঙ্গী | যবনী স্ট্রেঞ্জার (বি. ১৯৪৭ – ১৯৭৫) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | |
Author abbrev. (zoology) |
|
ড. উইলিয়াম চার্লস ওসমান হিল এফআরজেডএস এফএলএস এফআরএআই (ইংরেজি: William Charles Osman Hill; ১৩ জুলাই ১৯০১ - ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫) ছিলেন একজন ব্রিটিশ শারীরস্থানবিদ, প্রাইমেটবিজ্ঞানী যিনি প্রাইমেট শারীরস্থান ক্ষেত্রে বিংশ শতাব্দীর একজন অগ্রদূত। স্তন্যপায়ী প্রাণী: তুলনামূলক শারীরস্থান এবং শ্রেণিবিন্যাস শিরোনামের আট-খণ্ডবিশিষ্ট ধারাবাহিক গ্রন্থের জন্য তিনি সুপ্রসিদ্ধ, যাতে তৎকালীন সময়ের সকল জীব ও বিলুপ্তপ্রায় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এবং তার স্ত্রী যবনী গ্রন্থের চিত্রাঙ্কন করেন। তিনি রাজা এডওয়ার্ড ৬ষ্ট ক্যাম্প হিল বালক স্কুল এবং বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেন। তিনি তার কাজের মধ্যে ২৪৮টি প্রকাশ করেন। তিনি স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বিপুল সংখ্যক নমুনা সংগ্রহ করেন যেগুলো বর্তমানে লন্ডন রয়্যাল কলেজ সার্জন-এ সুরক্ষিত আছে।
উইলিয়াম চার্লস ওসমান হিল ১৩ জুলাই ১৯০১ সালে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তিনি বার্মিংহাম এ অবস্থিত রাজা এডওয়ার্ড ৬ষ্ট ক্যাম্প হিল বালক স্কুল এ প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন[২][৩] এবং পরবর্তীতে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী গ্রহণ করেন।[২] মেডিকেল স্কুল এবং বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় পড়ালেখা কালীন সময়ে তিনি তিনবার জুনিয়র ছাত্র পদক অর্জন করেন এবং ধাত্রীবিদ্যা বা প্রসূতিতন্ত্র তে ইংলেবি স্কলারশিপ পান।[২] তিনি ১৯২৪ সালে তার প্রাথমিক মেডিকেল ডিগ্রী অর্জন করেন,[১][২][৩] এবং ঐ বছরই তিনি প্রাণিবিজ্ঞানে ঐ কলেজের প্রভাষক পদে দায়িত্ব নেন।[৪] ওসমান হিল ১৯২৫ সালে স্নাতক শ্রেণীতে এমডি লাভ করেন।[১][২][৩] এর সাথে তিনি মেডিকেল স্কুল থেকে সিএইচ. বি ডিগ্রী ও লাভ করেন।[৪]
স্নাতক শেষ করেই ওসমান হিল বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রভাষক হিসেবে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত শিক্ষাদান চালিয়ে যান, তবে সেখানে তিনি প্রাণিবিজ্ঞানের পরিবর্তে শারীরস্থান বিষয়ে শিক্ষা দিতেন। ১৯৩০ সালে তার জীবন নতুন ভাবে রূপ নেয় যখন তিনি শ্রীলঙ্কা চলে আসেন। এখানে এসে তিনি সিলন মেডিকেল কলেজের (বর্তমানে কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয় এর মেডিসিন অণুষদ বা কলম্বো মেডিকেল কলেজ)-এ শারীরস্থান এর সভাপতি এবং অধ্যাপক উভয় পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।[১][২][৩] তার অবস্থান থেকে তিনি আদিবাসী বেদ্দা জনতা তথা নৃতাত্ত্বিক এবং স্তন্যপায়ীদের তুলনামূলক শারীরস্থান নিয়ে অণুসন্ধানে আগ্রহী হন। ঐ সময়ে তিনি দেশী এবং বিদেশী প্রজাতির একটি ব্যক্তিগত পাণ্ডুলিপি সমষ্টি শুরু করেন।যেটাতে বিভিন্ন প্রজাতির তোতাপাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণী স্থান পায়।[১][৫] তার সংগ্রহে বিভিন্ন ধরনের কাকাতুয়া (Cacatuidae পরিবারভুক্ত), লাল-ডানাওয়ালা তোতা, ইলেক্টাস তোতা, তারকা কচ্ছপ (Geochelone 'গণ' অন্তর্ভুক্ত ) ,চিতাবাঘ কচ্ছপ, গালাপাগোস কচ্ছপ (কালোবর্ণের Chelonoidis), এবং লালবর্ণের নকুল (Herpestes smithii) এর কথা উল্লেখ করা হয়।[৫] ওসমান হিল সিলনে ১৪ বছর অধ্যাপনা করেন। অতঃপর ১৯৪৫ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃতত্ত্বের অধ্যাপক হিসেবে তিনি আবার যুক্তরাজ্যে প্রত্যাবর্তন করেন।[১][২][৩] সিলন থেকে চলে যাবার সময় তার রচনাসমগ্র কে দুইভাগে লন্ডন চিড়িয়াখানা এবং শ্রীলঙ্কা জাতীয় প্রাণীবিদ্যা উদ্যান এর জন্য ভাগ করে দেওয়া হয়।[৫] পাঁচ বছর পর ১৯৫০ সালে তিনি লন্ডন প্রাণিবিজ্ঞান সোসাইটির প্রসেক্টর হন এবং বারো বছর সেখানে অবস্থান করেন।[১][২][৩] তিনি ১৯৬২ সালে যখন লন্ডন চিড়িয়াখানা ছেড়ে চলে আসেন তখন সেখানে যে তার পুরনো প্রসেক্টরিয়াম অফিস ছিল তা বন্ধ হয়ে যায়, যেখানে অনেক সংরক্ষিত জৈবিক নমুনা বাদ পড়ে।অতঃপর আবার রিচার্ড ওয়েন এর সময় থেকে লন্ডন চিড়িয়াখানায় শারীরস্থানবিদ-এর কাজ শুরু হয়।[৩] ১৯৫৭-১৯৫৮ সালে ওসমান হিল জর্জিয়ার এমরি বিশ্ববিদ্যালয় আটলান্টায় পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১] পরবর্তীতে ১৯৫৮ সালে স্তন্যপায়ীবিদ জ্যান গডাল বন্য শিম্পাঞ্জীদের নিয়ে গবেষণা প্রস্তুত করার লক্ষ্যে তার তত্ত্বাবধানে স্তন্যপায়ীদের আচরণ সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ করেন ।[৬] পরিচালকের পদ থেকে সরে আসায়,১৯৬২ সালে ওসমান হিলকে আটলান্টায় ইয়ার্কস [৭] ন্যাশনাল প্রাইমেট রিসার্চ সেন্টার (YNPRC)-এ সহ-পরিচালকের গ্রহণ করতে আহবান করা হয়।[১][২] বিজ্ঞানে অসামান্য অদানের জন্য এডিনবরা রয়াল সোসাইটি ১৯৫৫ সালে তাকে একজন সম্মানিত ফেলো বা সদস্য হিসেবে ঘোষণা করে এবং তাকে স্বর্ণের মেডেল ও ম্যাকডগাল ব্রিসবেন পদক প্রদান করে। ১৯৬৯ সালে YNPRC থেকে অবসর গ্রহণের সময়[৩]লন্ডন রয়াল কলেজ সার্জন তাকে হান্টারিয়ান অছি পরিষদ সদস্য করা হয়।অবসর গ্রহণের পর,ওসমান হিল তার সময় দুভাগে,তার নিজ বাড়ি ফল্কস্টোন এবং তুরিন বিশ্ববিদ্যালয় এ অব্যাহত কাজের মাধ্যমে ভাগ করে নেন। শারীরস্থান এ তার নিরলস পরিশ্রম রোগের ঠিক আগমুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এরপর তিনি ডায়াবেটিস সহ আরো গুরুতর রোগে তিনবছর ভোগেন।[১]
কর্মজীবনে ওসমান হিল তার প্রাথমিকভাবে নিজস্ব পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে ২৪৮টা নিবন্ধ লিখেছেন, যেসব একাডেমীক জার্নাল নিবন্ধ বা পাঠ্যবইয়ে প্রকাশ করা হয়।[১][২] ১৯২৬ সালে তার প্রথম নিবন্ধ প্রকাশিত হয়,যা তুলনামূলক অগ্ন্যাশয় শারীরস্থান নিয়ে বিশ্লেষণ করে। তার নিবদ্ধসমূহ তার মৃত্যুর বছর পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে, যা মানুষ ,প্রাইমেট, এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের শারীরস্থান এবং আচরণের উপর আলোকপাত করে।[২] ওসমান হিল তার প্রাইমেট:তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও শ্রেণিবিন্যাস বইটার জন্য বিখ্যাত।[১][৩] আট খণ্ড সিরিজ বইটার লক্ষ্য ছিল সব জীবিত ও বিলুপ্তপ্রায় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের অন্তর্ভুক্ত করা। ১৯৫৩ এবং ১৯৭৪ সালের মধ্যে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সিরিজ আকারে তার ৫০ বছররে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও চিন্তাধারা প্রকাশিত হয়। প্রতিটি খণ্ড,স্ট্রেপসিরিনি (strepsirrhini) দিয়ে শুরু,এবং তাদের স্থানীয় ও বৈজ্ঞানিক নামকরণ, শারীরিক গঠন, জেনেটিক্স,আচরণ ও প্রত্নজীববিদ্যা সহ আলোচনা করা হয়েছে।[১] তার স্ত্রী যবনী বইগুলোতে অধিকাংশ ফটোগ্রাফি এবং চিত্রাঙ্কন করেন।যদিও বইগুলো পুরোপুরিভাবে সম্পন্ন হয়নি,তবে সেগুলোর প্রসার এবং গভীরতা জন্য পরিচিত ছিল। ওসমান হিল একটি নয়-খণ্ড সিরিজের মহাগ্রন্থ অসমাপ্ত রেখে ১৯৭৫ সালে মারা যান।[১][২] পাঁচটি বিভাগে লিখিত চূড়ান্ত খণ্ডটি শ্রেণিবিন্যাস এর উপাদানের উপর এবং লম্বা লেজওয়ালা একধরনের এশিয়ান বানরের শারীরস্থানের উপর অধিকাংশই লিখা ছিল। মনে করা হয়েছিল তার বিধবা স্ত্রী তার অসমাপ্ত কর্মসংগ্রহ প্রস্তুত এবং প্রকাশ করতে সক্ষম হবেন।[১][৮] তবে তিনি ও এক বছর পর মারা যান।[৩][৭] তার এই সভ্যতা গ্রন্থ টি তার সর্বব্যাপী বিষয়বস্তুর জন্য প্রায়ই প্রশংসিত হয়েছে।তবে মাঝে মধ্যে অর্থ, ত্রুটি, এবং বিশেষত্বের অভাবের জন্য সমালোচিত ও হয়েছে।[৯]
১৯৪৫ সালে ওসমান হিল নিত্তাইবো (Nittaewo) শিরোনামে সিংহলের একটি অমীমাংসিত সমস্যা নিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন; যেখানে তিনি শ্রীলঙ্কার একটি বর্বর বামন-আকৃতির মানবসম্প্রদায়ের (নিত্তাইবো (Nittaewo) নামে) একটি ঐতিহ্যগত ভেদ্দা (Vedda) গল্পের উপর আলোকপাত করেন,এবং তাদের বিচ্ছিন্ন প্রজাতির হোমো ইরেক্টাস বলে বর্ণনা করে তাদের কে আবার জাভা ম্যান বা পিথেকানথ্রপাস (Pithecanthropus) হিসেবে উল্লেখ করেন।[১০][১১] তিনি সুপারিশ করে গেছেন যে ওরাং পেনডেক নামে সুমাত্রার অধরা এবং অত্যধিক সুপরিচিত ক্রিপটিড ই হোমো ইরেক্টাস এর উপযুক্ত বর্ণনা হতে পারে।[১১][১২][১৩] তিনি বন্যজীবনের তুলনা করে দুই দ্বীপের মধ্যে বিভিন্ন অংশের মিল দেখিয়ে তার অবলুপ্ত হাইপোথিসিস এর পক্ষে সমর্থন করেন।[১২] ১৯৫০ সালে তিনি নেপালের পাংবোশে (Pangboche) আশ্রম থেকে পাংবোশে হাত নামে একটি ধ্বংসাবশেষের ছবি নিয়ে চর্চা শুরু করেন,যেটাকে যেটির হাত বলে দাবি করা হয় এবং এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে এটি একটি অজানা মানবসম্প্রদায়ের।[১৪] যাহোক ধ্বংসাবশেষ থেকে কয়েকটি হাড় নেপালের বাইরে পাচার হয় ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তার কাছে আনা হলে তিনি এটাকে মানব হাড় বলে উল্লেখ করেন ।তিনি অবশ্য পরবর্তীকালে তার মত পরিবর্তন করেন এবং এই হাড়টি একটি নিয়ান্ডারথাল (Neanderthal) এর বলে ঘোষণা করেন।[১১] ১৯৬১ সালে ওসমান হিল "জঘন্য তুষারমানব:বর্তমান অবস্থান" বা "Abominable snowmen: The present position" শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন।[১৫] ঐ সময়কার প্রাপ্ত প্রমাণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর, অন্যান্য গবেষকদের সাথে তিনি ও ঘোষণা দেন যে যেটির অস্তিত্ব যেহেতু এখনও বিদ্যমান, সুতরাং এটির অন্তিম প্রমাণ নিষ্প্রয়োজন।[১৪] সময়ের সাথে নতুন প্রমাণের অভাবে এ ব্যাপারে তিনি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।[১৬] ১৯৬০ সালের একটি মার্চ অভিযানের ফলাফলের গবেষণার উপর ভিত্তি করে ওসমান হিল বলেন এটি একটি অসাধারণ শিম্পাঞ্জী "উফিটি(ufiti)", বা বিলি উল্লুক ছিল। মালাবির ঘন অরণ্যের শিম্পাঞ্জিদের পুরনো রিপোর্ট তুলে ধরে তিনি বলেন যে বিলি উল্লুক একটি অনাবিষ্কৃত শিম্পাঞ্জিদের উপজাতির প্রতিনিধিত্ব করে,যা প্রাচ্যদেশীয় শিম্পাঞ্জিদের নিকটতম হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমা শিম্পাঞ্জিদের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।[১১]
আমরা আজ মনে করি যে এই কাঠামোগুলো তাদের ফাংশন থেকে সরানো সম্ভব না;অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ থেকে শারীরবিজ্ঞানী,শারীরবিজ্ঞানী থেকে জীবরসায়নবিদ এবং জীবরসায়নবিদ থেকে পদার্থবিদ হয়েছেন; অ্যানাটমি প্রোব করে উপ-আণবিক। যাইহোক, আমাদের আধুনিক বিশ্ব ওসমান হিলের মতো ব্যক্তিদের কাজের ভিত্তির উপর নির্মিত হয়েছে,তাঁর মতো ব্যক্তিরা এখনও পৃথিবীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
আর. এন. ফিনিস , জার্নাল অব মেডিকেল প্রাইমেটলজি[৩]
ওসমান হিল একজন "বিশিষ্ট শারীরস্থানবিদ" এবং "বিশিষ্ট প্রাইমেটলজিস্ট" হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন, এবং তাকে তৎকালীন সময়ের প্রাইমেট অ্যানাটমির উপর সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে মনে করা হয়[১][২]।যদিও তিনি নিজেকে প্রাইমেটলজিস্ট মনে করতেন না,বরং তিনি নিজেকে ভাবতেন একজন পুরনো-ধারণার শারীরস্থানবিৎ ও প্রকৃতিবিদ,যিনি সমগ্র জৈব বিশ্ব নিয়ে অধ্যয়ন করেছন এবং সেগুলোর যথেষ্টসংখ্যক নিজস্ব পর্যবেক্ষণ এবং রেকর্ডিং বিবেচনা করেছন।এই দিক থেকে, তিনি কৌতূহলী হন এবং প্রাকৃতিক ইতিহাসে তার জ্ঞান বিস্তৃত করেন।[৩]ওসমান হিল ব্যবচ্ছেদ এ তার দক্ষতার জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।তিনি দ্রুততার সাথে নির্ভুলভাবে স্কেচ করার জন্য বিশেষভাবে উল্লেখিত,যা তার শারীর বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন স্কালপেল এ পরিলক্ষিত হয়[৩]।এছাড়াও তিনি একজন "কষ্টকর তদন্তকারী"[১],চিকিৎসক, এবং নৃতত্ত্ববিদ হিসেবে তার কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন[১৭]। তার সম্মানার্থে, দুইটি প্রজাতির নাম,যথা-ওসমান হিলের মাংগাবে (Lophocebus osmani ) এবং কলম্বো নেকড়ে সাপ (Lycodon osmanhilli) নামে নামকরণ করা হয়।এবং তার সম্মানার্থে, গ্রেট ব্রিটেন প্রাইমেট সোসাইটি ওসমান হিল পদক নামে তাদের পুরস্কারের নামকরণ করে[১৭][১৮]।যা প্রাইমেটলজিতে প্রতি দুই বছর অবদানের জন্য দেওয়া হয়[১৯]।তিনি কালো এবং সাদা গলবন্ধক লেমুর (Varecia variegata) নামের একটি উপজাতির বর্ণনা করেন ,এবং ১৯৫২ সালে দক্ষিণাঞ্চলের সাদা ও কালো গলবন্ধক লেমুর (V. v editorum)[২০] এর বর্ণনা করেন।১৯৪২ সালে এক জাতের ক্ষুদ্র টুপিওয়ালা এবং ছোটো লেজওয়ালা বাঁদর (Macaca Sinica),পার্বত্যাঞ্চলের এক জাতের ক্ষুদ্র টুপিওয়ালা এবং ছোটো লেজওয়ালা বাঁদর (M. s. opisthomelas) এর এক উপজাতি[২১][২২];১৯৪২ সালে লাল সরু লোরিস (Loris tardigradus) এর,হর্টন সমতল এর সরু লোরিস (L. t. nycticeboides) এর এক উপজাতির[২৩][২৪];১৯৩২ সালে ধূসর সরু লোরিস (Loris lydekkerianus) এর,পার্বত্যাঞ্চলের সরু লোরিস (L. l. grandis) এর এক উপজাতির[২৫][২৬];এবং ১৯৩৩ সালে শুষ্ক অঞ্চলের সরু লোরিস (L. l. nordicus) এর বর্ণনা করে গেছেন।[২৭][২৮]জৈবিক প্রাইমেটের নমুনা সংবলিত তার বিপুল সংগ্রহ, ইংল্যান্ড রয়্যাল কলেজ সার্জনস্ এ সংরক্ষিত আছে,যেসবে তিনি টিস্যু এবং কঙ্কালতন্ত্র কে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।[১][১৭][১৮]
একজন বন্ধু হারানো সবসময় বেদনাদায়ক,আর এই বন্ধুটি যদি বিজ্ঞান এবং জীবনভর একজন শিক্ষক হন,তাহলে তো কথাই নেই। আমাদের কৃতজ্ঞতা তাদের কাছে যাদের জ্ঞান দ্বারা আমরা সমৃদ্ধ হয়েছি,তারপরেও তাদের জন্য আমাদের বর্ণনাতীত দুঃখ থেকে যায়।
B. Chiarelli,মৃত্যু সম্বন্ধীয় মানব বিবর্তন জার্নাল[৮]
ওসমান হিল ১৯৪৭ সালে তার স্ত্রী যবনী স্ট্রেঞ্জার কে বিয়ে করেন[৩]।হ্যারল্ড স্ট্রেঞ্জার কে.সি,এম.পির একমাত্র কন্যা যবনী, শুধুমাত্র তার অণুগত স্ত্রী ছিলেন না,বরং তার কাজের একজন সহযোগী এবং অঙ্কনশিল্পী ছিলেন[১][৩] ।ঐসময়ে হিল দম্পতি তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুগলদের জন্য একটি ছোটোখাটো নৈশভোজের আয়োজন করেন, এবং সবচেয়ে উন্নতমানের মদ ও বিদেশি ডিশ হিসাবে অজগর সাপের সিদ্ধ মাংসের ডিশ পরিবেশন করেন। যবনী তার স্বামী মারা যাওয়ার এক বছরের খুব কাছাঁকাছি সময়ে মারা যান[৩]। ১৯৮১ সালে একটি আন্তর্জাতিক প্রাইমেটলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি স্মারকলিপিতে ওসমান হিলকে "খাটো এবং গোলাকার,নীল চোখবিশিষ্ট,শান্তশিষ্ট এবং রসবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি" হিসাবে বর্ণনা করা হয়।তরুণ গবেষকদের সাহায্য করার আগ্রহের জন্য তিনি বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন[২]।মেডিকেল প্রাইমেটলজি জার্নালে তাকে একজন "দ্রুত এবং উপস্থিতবুদ্ধি সম্পন্ন বিনোদনের সঙ্গী" হিসাবে বর্ণনা করা হয়[৩]।১৯৭৫ সালে অ্যানাটমি জার্নালে প্রকাশিত অন্য এক স্মারকলিপিতে তাকে "বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহনশীল, একজন উত্তম ব্যক্তিত্ব,উৎসাহী,মানবিক সংস্কৃতির রস বোধসম্পন্ন এবং প্রকৃতিগত ভাবে উত্তম মেজাজের প্রদেশ পুষ্ট; একজন ভাল ইংরেজ " হিসাবে বর্ণনা করা হয়। তাকে সহজ সরল নাগরিকত্ব ও শিক্ষাবিদ হিসাবে মূল্যায়ন করার জন্য তিনি পরিচিত, এবং 'রাজতন্ত্র উচ্ছ্বাসিত'[১] মানুষের প্রতি তার মনোযোগ কম ছিল"। আটলান্টার ইয়ার্কসে,তার কিছু সহকর্মীরা তাকে "আদর্শগত ইংরেজ পণ্ডিত-ভদ্রলোক হিসাবে দেখতেন যিনি 'ব্রিটিশদের অধীনস্থ[৭] পদক্ষেপ হিসেবে 'উপনিবেশ' থেকে ঐসবের উপর দৃষ্টিপাত করেন[৭]।ব্রিটিশ হু'জ হু জীবনীতে(বায়োগ্রাফি) ওসমান হিলের নাম পক্ষীবিজ্ঞান,উদ্ভিদবিজ্ঞান এবং ফটোগ্রাফিতে উল্লেখ করা হয়, এবং বলা হয় যে বিনোদন হিসেবে তিনি ভ্রমণ করতেন[৩]। তার অন্যান্য নৈমিত্তিক কৌতূহলের মধ্যে ড্রাগস্টোর আইসক্রিম, ভাল খাদ্য,পুরনো দালানকোঠা, এবং তার স্ত্রীর সাথে বাগান করা অন্তর্ভুক্ত ছিল।[১]
আট খণ্ডের সিরিজ যেগুলোর জন্য ওসমান হিল স্মরণীয় হয়ে আছেন :[৩][২৯]
শ্রেণিবিন্যাস (১৯৫৩-১৯৭৪)
ওসমান হিলের লিখা আরো যেসব প্রবন্ধ যা ১৯২৩ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয়:[২৯]
|প্রথমাংশ1=
এর |শেষাংশ1=
নেই (সাহায্য)