উজ্জ্বল নীল ড্রাগন

উজ্জ্বল নীল ড্রাগন
উজ্জ্বল নীল ড্রাগন , চীনের জাতীয় প্রতীকে। (১৯১৩-১৯২৮)

উজ্জ্বল নীল ড্রাগন (青龍 Qīnglóng), নীলাভসবুজ ড্রাগন বা নীল ড্রাগন (蒼龍 Cānglóng) নামেও পরিচিত। এটি ড্রাগন দেবতাদের মধ্যে পর্বতের প্রতিনিধিত্বকারী অথবা সবচেয়ে শক্তিশালী ঈশ্বরের পাঁচটি রূপের (五方上帝 Wǔfāng Shàngdì) মূল চালিকা শক্তি। চৈনিক জ্যোতির্বিদ্যায় চারটি প্রতিকের মাঝে একটি হল এই ড্রাগন। নীলাভ সবুজ ড্রাগন পূর্বদিক এবং বসন্ত ঋতুকে প্রকাশ করে।[] জাপানে এই ড্রাগনকে সেইরিয়ু এবং কোরিয়াতে ছং-নিয়ং বলে অভিহিত করা হয়। 

ড্রাগনটি প্রচার মাধ্যমে হামেশাই ফেং শুই নামে ডাকা হয়। অন্যান্য সংস্কৃতিতে সবুজ ড্রাগন এবং জাদুর শহরের ড্রাগন বা এভালন ড্রাগন বলা হয়।[] এই ড্রাগনের প্রধান বিশেষণ হলো "পূর্বের লীলাভসবুজ ড্রাগন" (東方青龍 Dōngfāng Qīnglóng or 東方蒼龍 Dōngfāng Cānglóng).

উজ্জ্বল নীল ড্রাগনের সাত অবস্থান

[সম্পাদনা]

অন্যান্য তিনটি প্রতীক ছাড়াও উজ্জ্বল নীল ড্রাগন ও চাঁদের সাতটি অবস্থান রয়েছে। এই সাতটি অবস্থান নির্দেশকারী তারকা ও অবস্থানগুলো নিম্নে তালিকাবদ্ধ করা হল:[][]

পজিশন নং নাম (পিনয়িন) অনুবাদ নির্ণয়কারী তারকা

角 (Jiăo) শিং
স্পিকা

亢 (Kàng) ঘাড় কে ভির

氐 (Dĭ) মূল আলফা লিব

房 (Fáng) কক্ষ পাই (π) স্কো

心 (Xīn) হৃৎপিণ্ড আনতারেস

尾 (Wěi) লেজ মিউ (μ) স্কো

箕 (Jī) ঝাড়া ঝুড়ি
গামা (γ) এসজিয়ার

সাংস্কৃতিক প্রতিকৃতি

[সম্পাদনা]
ইয়ংসানের রাস্তার ফলকে নীলাভসবুজ ড্রাগন

তাং এর গল্পে (Shuo Tang Yanyi),সাদা বাঘের তারকা জেনারেল লুও চেওং (চীনা: 羅成 / চীনা: 罗成) হিসেবে পূণর্জন্ম লাভ করে। তিনি লি শিমিনের হয়ে কাজ করেন।নীলাভসবুজ ড্রাগনের তারকা জেনারেল জেনারেল শান সাওযিন (চীনা: 单雄信) হিসেবে পূণর্জন্ম লাভ করেন এবং ওয়াং শিচং-এর হয়ে কাজ করেন। এই দুই জেনারেলকে ক্বিন শুবাও এর দুই ভাই, চেং ঝিজিই (চীনা: 程知节) এবং ইয়ুচি গোং (চীনা: 尉迟恭) হিসেবে দেখানো হয়েছিল। তাদের মৃত্যুর পর তাদের আত্মারা তাং সাম্রাজ্যের এবং গোগুরিওর নায়কদের উপর ভর করেছিলো বলে কথিত আছে।

তাওদের মন্দিরে নীলাভসবুজ ড্রাগন প্রহরী দেবতা হিসেবে প্রদর্শিত হয়।[][]

প্রভাব

[সম্পাদনা]
শিন্তো ধর্ম মন্দিরের এই কূয়ায় নীলাভ সবুজ ড্রাগন

জাপান

[সম্পাদনা]

জাপানে, নীলাভসবুজ ড্রাগন জাপানের রক্ষাকারী চারটি নিরাপত্তাদানকারী অভিভাবকের মাঝে একটি। পশ্চিমের নিরাপত্তাদানকারী অভিভাবক সাদা বাঘ, পূর্বের কিয়োতো শহর নীলাভসবুজ ড্রাগন্, উত্তরের কালো কচ্ছপ আর দক্ষিণের রক্ষাকারী অভিভাবক হচ্ছে ভেরমিলন পাখি। কিয়োতো শহরের একাধিক মন্দির এই সকল নিরাপত্তাদানকারী অভিভাবকের উদ্দেশ্যে উতসর্গিত। কিয়োতো শহরের পূর্বাঞ্চলের কিয়োমিজু মন্দিরে নীলাভসবুজ ড্রাগন রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, রাতে এই মন্দিরের ঝর্ণা থেকে নীলাভসবুজ ড্রাগন পানি পান করতে আসে। আর এই কথা থেকে প্রতি বছর জাপানের পূর্বাঞ্চলের এই ড্রাগনের আরাধনার উৎসব করা হয়। ১৯৮৩ সালে আসুকা গ্রামে কিতোরা সমাধি স্থাপন করা হয়। সেখানে নীলাভসবুজ ড্রাগনের প্রতিকৃত অঙ্কিত হয়। এটাই এই ড্রাগনের অন্যতম প্রাচীন রেকর্ড।

কোরিয়া

[সম্পাদনা]

কোরিয়ার গোগুরইয়োতে একাধিক ম্যুরালে নীলাভসবুজ ড্রাগনের প্রতিকৃতি রয়েছে।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি

[সম্পাদনা]
  1. Tom 1989, পৃ. 55।
  2. Lee, Ki-Baik; Wagner, Edward W. (১৯৮৪)। A new history of Korea (Translated সংস্করণ)। Cambridge / Seoul: Harvard University Press / Ilchokak। আইএসবিএন 978-0-674-61576-2 
  3. "The Chinese Sky"International Dunhuang Project। ২০১৫-১১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-২৫ 
  4. Sun, Xiaochun (১৯৯৭)। Helaine Selin, সম্পাদক। Encyclopaedia of the History of Science, Technology, and Medicine in Non-Western CulturesKluwer Academic Publishers। পৃষ্ঠা 517। আইএসবিএন 0-7923-4066-3। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-২৫ 
  5. Starr, Kenneth (ডিসেম্বর ১৯৫৭)। "Gift of Chinese Rubbings goes on Special Exhibition" (পিডিএফ)Chicago Natural History Museum BulletinField Museum of Natural History: 4–5। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১২ 
  6. Walravens, Hartmut; Hoshien Tchen; Kenneth Starr; Alice K. Schneider (১৯৮১)। Catalogue of Chinese Rubbings from Field Museum। Chicago: Field Museum of Natural History। ওসিএলসি 185544225। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১২ 
  7. Lee, Ki-Baik; Wagner, Edward W. (১৯৮৪)। A new history of Korea (Translated সংস্করণ)। Harvard University Press / Ilchokak। আইএসবিএন 978-0-674-61576-2 

সূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
  • উইকিমিডিয়া কমন্সে Azure Dragon সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।