উদয়পুর রাজ্য उदयपुर | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্রিটিশ ভারতের দেশীয় রাজ্য | |||||||
১৮১৮–১৯৪৮ | |||||||
![]() ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত উদয়পুর রাজ্যের মানচিত্র | |||||||
আয়তন | |||||||
• ১৯০১ | ২,৭৩২ বর্গকিলোমিটার (১,০৫৫ বর্গমাইল) | ||||||
জনসংখ্যা | |||||||
• ১৯০১ | ৪৫,০০০ | ||||||
ইতিহাস | |||||||
• প্রতিষ্ঠিত | ১৮১৮ | ||||||
১৯৪৮ | |||||||
| |||||||
ম্যালেনসন, গ্রেট. ব্রিটেইন.: এন হিস্টোরিকাল স্কেচ অব দ্য নেটিভ স্টেটেস অব ইণ্ডিয়া, লণ্ডন ১৮৭৫, পুনর্মুদ্রণ দিল্লি ১৯৮৪ |
উদয়পুর রাজ্য ছিলো ব্রিটিশ শাসিত ভারতে অবস্থিত একটি দেশীয় রাজ্য, যা বর্তমানে ভারতের অন্তর্গত৷[১] বর্তমান রায়গড় জেলায় অবস্থিত ধর্মজয়গড় শহরটি ছিল এই রাজ্যের রাজধানী।
ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর উদয়পুর রাজ্যটির সাথে রায়গড়, শক্তি, সারণগড় এবং জশপুর দেশীয় রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে পূর্বতন অবিভক্ত মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রায়গড় জেলা গঠন করা হয়৷ [২] বর্তমানে এটি ছত্তিশগড় রাজ্যের অংশ৷
ভৌগোলিকভাবে উদয়পুর রাজ্যের উত্তর দিকে ছিল সরগুজা এবং জশপুর রাজ্য, পূর্ব দিকে ছিল গঙ্গাপুর রাজ্য এবং ব্রিটিশ ভারতের রাঁচি জেলা, দক্ষিণ দিকে ছিল রায়গড় রাজ্য এবং পশ্চিম দিকে ছিল ব্রিটিশ ভারতের মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলের বিলাসপুর জেলা। ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের নথি অনুসারে ১৯৬ টি গ্রাম সংবলিত রাজ্যটি ২,৭৩২ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে এটির জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৪৫,০০০, যার অধিকাংশই ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
রাজ্যটির অধিকাংশই বনভূমি এবং পর্বত আচ্ছাদিত ছিল। পার্বত্য অঞ্চলে অধিক পরিমাণে কার্বন এর যুক্ত পাথর পাওয়া গেলেও বিপুল কয়লার সম্ভার তখনও আবিষ্কৃত হয়নি। সোনা এবং লোহা পাওয়া গেল তার পরিমাণ ছিল স্বল্প। রাজ্যটির সর্বোচ্চ বিন্দু ছিলো লোট্টা পর্বত যা ছিল ৬৫০ মিটার উঁচু। বনাঞ্চলে পাওয়া যেত শাল, মহুয়া, কুসুম এবং তেন্দু গাছ। এই অঞ্চলের প্রধান নদী ছিলো মহানদীর উপনদী মাঁড় নদী৷[৩]
সরগুজা রাজ্যের রাজবংশীয় প্রশাখা হিসাবে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা পায় উদয়পুর রাজ্য। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দ অবধি শাসকরা ছিলেন রক্সেল চন্দ্র বংশীয় রাজপুত। সরগুজার রাজা মহারাজা অমর সিংহ দেওয়ের কনিষ্ঠ পুত্র এই রাজ্যটির দায়িত্বে ছিলেন। এটি প্রথম শাসক ছিলেন রক্সেল চন্দ্রবংশীয় রাজপুত রাজা বাহাদুর ভিন্দেশ্বরীপ্রসাদ সিংহদেও। জনশ্রুতি অনুযায়ী এই রাজ্যের রাজবংশ ছিল যথেষ্ট প্রাচীন এবং তারা ছিলেন মূলত রাজপুতানার চন্দ্রবংশীয়। তবে বর্তমান শাসকরা পালামৌ অঞ্চলের রাজার অনুরূপ বলে অনুমান করা হয়। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধের পর থেকে এটি ব্রিটিশ করদ রাজ্যে পরিণত হয়।
১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে শাসক এবং তার দুই ভ্রাতার বিরুদ্ধে ব্রিটিশরা হত্যার মামলা দায়ের করে তাদের কারারুদ্ধ করেন। সময় ব্রিটিশ কোম্পানি স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে রাজ্যটিকে আত্মসাৎ করে এবং তারপর থেকেই সরাসরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এই রাজ্যের দায়িত্ব পালন করা শুরু করে। অবশেষে ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে সিপাহী বিদ্রোহের সময় লাল ভিন্দেশ্বরীপ্রসাদ সিংহদেও ইংরেজদের হয়ে বিদ্রোহ দমনে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করলে তাকে এই রাজ্যের পরবর্তী শাসক ঘোষণা করা হয়। ফলস্বরূপ তিনি স্বস্তি শ্রী প্রবলপ্রতাপ উদিতপ্রতাপ সম্পন্ন সিতারে হিন্দ মহারাজাধিরাজ কুমার রাজাধিরাজ শ্রী শ্রীমন্ত রাজা বাহাদুর ভিন্দেশ্বরীপ্রসাদ সিংহদেও নাম পান এবং অর্ডার অব দ্যা স্টার অব ইন্ডিয়া সম্মানে ভূষিত হন। রাজ্যের প্রধান সরগুজার রক্ষণাবেক্ষণ অনুদান হিসাবে একটি ট্র্যাক্টের সদর দফতর প্রতাপপুরে থাকতেন এবং তিনি যথেষ্ট ক্ষমতা ও চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। ১৮৭১ সালে তিনি কেওনঝড় রাজ্য-এর বিদ্রোহের দমনে সহায়তা করেছিলেন, যার জন্য তিনি ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকে ধন্যবাদস্বরূপ এবং স্বর্ণ-সূচিকর্মযুক্ত ট্র্যাপিংস এবং একটি সোনার ঘড়ি এবং শৃঙ্খল সহ একটি হাতি উপহার পেয়েছিলেন। রাজার দুই পুত্র শ্রী রাজা বাহাদুর ধর্মজিৎ সিংহদেও এবং শ্রীলাল সাহেব ধর্মপাল সিংহদেওকে ধৌরপুরে জমিদার নিযুক্ত করা হয়। তাদের নাম অনুসারে ধৌরপুর এবং ধর্মজয়গড় নাম দুটি রাখা হয়। শ্রীলাল সাহেব ধর্মপাল সিংহদেওয়ের পর তার একমাত্র পুত্র শ্রীলাল সাহেব চন্দ্রেশ্বর প্রসাদ সিংহ দেও ধৌরপুরের জমিদারিত্ব গ্রহণ করেন।
উদয়পুর ছিল পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এজেন্সির অন্তর্ভুক্ত দেশীয় রাজ্যগুলির একটি। রাজ্যটির শেষ শাসক ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের পয়লা জানুয়ারি তারিখে ভারতীয় অধিরাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্মতি স্বাক্ষর করেন।[৪]
উদয়পুর দেশীয় রাজ্যের শাসকগণ রাজা বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত হতেন।[৫]
সরগুজা রাজ্যের মহারাজা ইন্দ্রজিৎ সিংহের কনিষ্ঠ ভ্রাতাকে উদয়পুর রাজ্যের রাজা ঘোষণা করা হয়।
তিনি সরগুজা রাজ্যের মহারাজা রামানুজশরণ সিংহদেওয়ের তৃতীয় পুত্রকে দত্তক নেন।
ভারতের অন্তর্ভুক্তির পর নামমাত্র রাজা