উদ্ভিদ কিউটিকল হচ্ছে পলিস্যাকারাইড, কিউটিনের কতিপয় ম্যাক্রোমলিকিউল ও পানিতে দ্রবীভূত লিপিড (ওয়াক্স) দ্বারা তৈরি জটিল কাঠামো।
উদ্ভিদ কিউটিকলের গঠনের সাথে পলিস্যাকারাইড কোষপ্রাচীর গঠনের সাদৃশ্য রয়েছে। যদিও পলিস্যাকারাইড কোষ প্রাচীর গঠন ও কিউটল গঠন এক না কিন্তু শারীরবৃত্তীয়ভাবে এদের গঠনের মধ্যে মিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ, কোষ প্রাচীরের লিপিডের বিশেষ রকম পরিবর্তন কিউটিকলে দেখা যায়। উদ্ভিদ কিউটিকল প্রধানত নির্মিত কিউটিন ও ওয়াক্সের সংমিশ্রণ দ্বারা। এটি মূলত মোমের (ওয়াক্স) মোটা একটি স্তর যা এপিডার্মিসের বাইরের অংশ ঢেকে রাখে। কিউটিকলের মধ্যে যে কিউটিন রয়েছে তা প্রস্তুত হয় C16 ও C18 ফ্যাটি হাইড্রোক্সাইড যা নিজেদের সাথে ও গ্লাইসেরোলের সাথে মিশে থাকে। অন্যদিকে, কিউটিকুলার ওয়াক্স দ্রবণে দ্রবীভূত লিপিড থেকে তৈরি হয় যারা সকলেই দীর্ঘ ফ্যাটি এসিড শিকল হতে উদ্ভূত যেমন এলকেন, কিটোন, এলডিহাইড, এস্টার ইত্যাদি।
ওয়াক্স (পানিতে দ্রবীভূত লিপিড) কিউটিকলের ভেতরে এপিকিউটিকুলার ওয়াক্স হিসেবে জমা থাকে। এই এপিকিউটিকুলার ওয়াক্স উদ্ভিদপৃষ্ঠকে স্বতন্ত্র ম্যাক্রোস্কোপিক পৃষ্ঠের যোগান দেয়। এর ফলেই উদ্ভিদের কিছু পাতা ও ফলমূল মসৃণ হয়। উদ্ভিদের বাইরের ত্বকও মসৃণ হয় এর কারনেই। পাশাপাশি এপিকিউটিকুলার ওয়াক্স অনেক বেশি এপোলার৷ যার দরুন এটি প্রচন্ড রুক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে ও প্রস্বেদনিক ক্ষতি থেকে উদ্ভিদকে রক্ষা করে। [১]
উদ্ভিদের কিউটিকল উদ্ভিদের একদম বাইরের স্তর যা সরাসরি বাইরের পরিবেশের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে। এটি উদ্ভিদের পাতা, ফুল, ফল ইত্যাদি বাহ্যিক অংশকে তীব্র তাপমাত্রা, আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি, রাসায়নিক আক্রমণ, যান্ত্রিক আঘাত ও কীট-পতঙ্গের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কিউটিকলের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে উদ্ভিদকে অর্গান ফিউশনের হাত থেকে বাঁচানো যার দরুন জননের সময় উদ্ভিদে অস্বাভাবিক অঙ্গ সৃষ্টি হয় না।
কিউটিকলের নিজেদের ভেতরেও স্বাতন্ত্র্যতা থাকে। যেমনঃ ফলের কিউটিকল পাতার কিউটিকল থেকে অধিক মোটা ও কম স্টোমাটাবিশিষ্ট। এরকম গাঠনিক বৈশিষ্ট্যের ফলে কিউটিকলগুলোর নিজেদের মধ্যে কাজ করতে কোনো প্রকার অসুবিধা হয় না। [২]