উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার (ইংরেজি: Open access বা OA) সাধারণ অর্থে গবেষণার লক্ষ্যে অনলাইনমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণবিহীন উন্মুক্ত প্রবেশের বিশেষ অধিকারকে বোঝায়। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গবেষণার ফলাফলগুলি বিনামূল্যে বা অন্যান্য প্রবেশাধিকার ব্যতীত অনলাইনে বিতরণ করা হয়।[১] কঠোরভাবে সংজ্ঞায়িত (২০০১ সালের সংজ্ঞা অনুসারে) উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার বা বিনামূল্যে প্রবেশাধিকারের সঙ্গে কপিরাইটের জন্য মুক্ত লাইসেন্স প্রয়োগ করে অনুলিপি বা পুনঃব্যবহারে বাধা হ্রাস বা সরিয়ে দেওয়া হয়।[১] উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার দুই প্রকারের হয়ে থাকে। গ্র্যাটিস নামে উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার বিনামূল্যে অনলাইনে যেকোনো নিবন্ধের ব্যবহার আর লিবর্যে বলতে বোঝায় বিনেমূল্যে অনলাইনে তথ্য প্রবেশ ও ব্যবহারের বিশেষ অধিকার।[২]
উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু "সমকক্ষ পর্যালোচনা গবেষণা সাহিত্য"।[৩] ঐতিহাসিকভাবে, এটি মূলত মুদ্রণ-ভিত্তিক শিক্ষায়তনিক জার্নালগুলিতে কেন্দ্র করে এসেছে। মতো প্রবেশাধিকার উপশুল্কের মাধ্যমে প্রকাশনা ব্যয়কে কভার করে। প্রচলিত (অনুনন্মুক্ত প্রবেশাধিকার) জার্নালগুলি সাবস্ক্রিপশন, সাইট লাইসেন্স বা প্রতি-দর্শন-প্রদেয় চার্জের মতো প্রবেশাধিকার উপশুল্কের মাধ্যমে প্রকাশনা ব্যয় বহন করে। উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার সমকক্ষ পর্যালোচিত এবং অসমকক্ষ পর্যালোচিত শিক্ষায়তনিক জার্নাল নিবন্ধ সহ যেকোনো ধরনের প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধ, প্রবন্ধ, রচনা, কনফারেন্স পেপার, থিসিস,[৪] বইয়ের অংশবিশেষ,[১] বিভিন্ন চিত্রসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানে ব্যবহৃত তথ্যসমূহের বিশেষ অধিকার বোঝায়।[৫]
ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধিনে এই সকল প্রবেশ অধিকারের মাত্রা ও প্রকৃতি নিধারিত হয়ে থাকে।[৬] বিজ্ঞান ও মানবিক গবেষণা-জ্ঞান চর্চায় উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারের বার্লিন ঘোষণা অনুসারে লিবর্যে প্রকৃতির উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারকে সঙ্গায়িত করা হয়। দুইভাবে লেখকরা তাদের নিবন্ধ-প্রবন্ধে উন্মুক্ত প্রবেশ অধিকার প্রদান করতে পারেন। গ্রীন ওপেন অ্যাক্সেস বা সবুজ উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার পদ্ধতিতে লেথক নিজেই তার রচনা ওপেন অ্যাক্সেস সংশ্লিস্ট ওয়েবে সংরক্ষণ করতে পারেন। এছাড়াও গোল্ড ওপেন অ্যাক্সেসের মাধ্যমে ওপেন অ্যাক্সেস জার্নালে লেখা প্রকাশ করা যায়।[৭]
১৯৯০ দশক ও ২০০০ দশকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের উন্মুক্ত জন-প্রবেশ বৃদ্ধি পেলে উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার আন্দোলন জনপ্রিয়তা পায়।